গৌতম বুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৬৫ নং লাইন:
বোধিলাভের পর গৌতম বুদ্ধের সঙ্গে [[তপুস্স ও ভল্লিক]] নামক [[বলখ]] অঞ্চলের দুইজন ব্যবসায়ীর সাক্ষাত হহয়, যারা তাঁকে মধু ও বার্লি নিবেদন করেন। এই দুইজন বুদ্ধের প্রথম সাধারণ শিষ্য। বুদ্ধ তার প্রাক্তন শিক্ষক [[আলার কালাম]] ও [[উদ্দক রামপুত্ত|উদ্দক রামপুত্তের]] সাথে সাক্ষাত করে তাঁর নবলব্ধ জ্ঞানের কথা আলোচনার জন্য উৎসাহী ছিলেন, কিন্তু তাঁদের দুইজনেরই ততদিনে জীবনাবসান হয়ে গেছিল। এরপর তিনি [[বারাণসী|বারাণসীর]] নিকট [[সারনাথ|ঋষিপতনের মৃগ উদ্যানে]] যাত্রা করে তাঁর সাধনার সময়ের পাঁচ প্রাক্তন সঙ্গী, যারা তাঁকে একসম পরিত্যাগ করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন ও তাঁদেরকে তাঁর প্রথম শিক্ষা প্রদান করেন, যা বৌদ্ধ ঐতিহ্যে [[ধর্মচক্রপ্রবর্তন]] নামে খ্যাত। এই ভাবে তাঁদের নিয়ে ইতিহাসের প্রথম বৌদ্ধ [[সংঘ]] গঠিত হয়।
 
এরপর [[মহাকশ্যপ]] নামক এক অগ্নি-উপাসক ব্রাহ্মণ ও তাঁর অনুগামীরা সংঘে যোগদান করেন। বুদ্ধ সম্রাট [[বিম্বিসার|বিম্বিসারকে]] দেওয়া প্রতিশ্রুতিমতো বুদ্ধত্ব লাভের পরে [[রাজগির|রাজগৃহ]] যাত্রা করলে [[সঞ্জয় বেলাঢ্বিপুত্ত|সঞ্জয় বেলাঢ্বিপুত্তের]] দুইজন শিষ্য [[সারিপুত্ত]] ও [[মৌদ্গল্যায়ন]] সংঘে যোগদান করেন। বুদ্ধত্ব লাভের এক বছর পরে [[শুদ্ধোধন]] তাঁর পুত্রকে কপিলাবস্তু শহরে আমন্ত্রণ জানান। একদা রাজপুত্র গৌতম রাজধানীতে সংঘের সাথে ভিক্ষা করে খাদ্য সংগ্রহ করেন। কপিলাবস্তুতে তাঁর পুত্র [[রাহুল]] তাঁর নিকট শ্রমণের দীক্ষাগ্রহণ করেন। এছাড়া [[আনন্দ (বৌদ্ধ ভিক্ষু)|আনন্দ]] ও [[অনুরুদ্ধ]] নামক তাঁর দুইজন আত্মীয় তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। [[মহাকশ্যপ]], [[সারিপুত্ত]], [[মৌদ্গল্যায়ন]], [[আনন্দ (বৌদ্ধ ভিক্ষু)|আনন্দ]], [[অনুরুদ্ধ]] ও [[রাহুল]] ছাড়াও [[উপলি]], [[মহাকাত্যায়ন]], [[পুণ্ণ]] ও [[সুভূতি]] বুদ্ধের দশজন প্রধান শিষ্য ছিলেন।
 
তিন বছর পরে [[রোহিণী নদী|রোহিণী নদীর]] জলের অংশ নিয়ে শাক্যদের সাথে কোলীয় গণের একটি বিবাদ উপস্থিত হলে বুদ্ধ সেই বিবাদের মীমাংসা করেন। এর কয়েকদিনের মধ্যে [[শুদ্ধোধন]] মৃত্যুবরণ করলে গৌতম বুদ্ধের বিমাতা [[মহাপজাপতি গোতমী]] সংঘে যোগদানে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। গৌতম প্রথমে নারীদের সংঘে যোগদানের ব্যাপারে অমত প্রকাশ করলেও [[আনন্দ (বৌদ্ধ ভিক্ষু)|আনন্দের]] উৎসাহে তিনি সংঘ গঠনের পাঁচ বছর পরে সংঘে নারীদের ভিক্ষুণী হিসেবে প্রবেশের অনুমতি দেন।
 
=== মহাপরিনির্বাণ ===
[[File:Death of the Buddha BM.jpg|thumb|গৌতম বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ]]
[[মহাপরিনিব্বাণ সুত্ত]] অনুসারে গৌতম বুদ্ধের বয়স যখন আশি বছর, তখন তিনি তাঁর আসন্ন মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন। পওয়া নামক একটি স্থানে অবস্থান করার সময় [[চণ্ড (বৌদ্ধ)|চণ্ড]] নামক এক কামার তাঁকে ভাত ও ''শূকরমদ্দভ'' ইত্যাদি খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এই খাবার খাওয়ার পরে গৌতম [[আমাশয়]] দ্বারা আক্রান্ত হন। [[চণ্ড (বৌদ্ধ)|চণ্ডের]] দেওয়া খাবার যে তাঁর মৃত্যু কারণ নয়, [[আনন্দ (বৌদ্ধ ভিক্ষু)|আনন্দ]] যাতে তা [[চণ্ড (বৌদ্ধ)|চণ্ডকে]] বোঝান, সেই ব্যাপারে বুদ্ধ নির্দেশ দেন। <ref group = web>{{Citation | publisher = Access insight | chapter-url = http://www.accesstoinsight.org/tipitaka/dn/dn.16.1-6.vaji.html | chapter = Maha-parinibbana Sutta | title = [[Digha Nikaya]] | number = 16 | at = verse 56}}.</ref> এরপর [[আনন্দ (বৌদ্ধ ভিক্ষু)|আনন্দের]] আপত্তি সত্ত্বেও অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় তিনি [[কুশীনগর]] যাত্রা করেন। এইখানে তিনি [[আনন্দ (বৌদ্ধ ভিক্ষু)|আনন্দকে]] নির্দেশ দেন যাতে দুইটি শাল বৃক্ষের মধ্যের একটি জমিতে একটি কাপড় বিছিয়ে তাঁকে যেন শুইয়ে দেওয়া হয়। এরপর শায়িত অবস্থায় বুদ্ধ উপস্থিত সকল ভিক্ষু ও সাধারণ মানুষকে তাঁর শেষ উপদেশ প্রদান করেন। তাঁর অন্তিম বাণী ছিল “বয়ধম্মা সঙ্খারা অপ্পমাদেন সম্পাদেথা”, অর্থাৎ “সকল জাগতিক বস্তুর বিনাশ আছে। অধ্যবসায়ের সাথে আপনার মুক্তির জন্য সংগ্রাম কর।”
 
বিভিন্ন পুঁথিতে অনুবাদবিভ্রাট ও লিখনশৈলীর পার্থক্যের জন্য গৌতম বুদ্ধের অন্তিম আহার্য্য বস্তু সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। [[আর্থার ওয়েলি|আর্থার ওয়েলির]] মতে [[থেরবাদ]] ঐতিহ্যানুসারে ''শূকরমদ্দভ'' বলতে শূকরের নরম মাংস বোঝানো হয়। যদিও [[কার্ল ইউজিন নিউম্যান]] এই শদের অর্থ করেছেন শূকরের নরম আহার। [[কার্ল ইউজিন নিউম্যান|নিউম্যান]] ও [[আর্থার ওয়েলি|ওয়েলি]] আবার এও মত প্রকাশ করেছেন যে এই আহারের সাথে শূকর শব্দটি যুক্ত হলেও হয়তো এটি একটি শুধুমাত্র একটি উদ্ভিদ, যাকে আহার হিসেবে ব্যবহাতর করা হত। পরবর্তীকালে কয়েক শতাব্দী পরে বুদ্ধের জীবনী রচনার সময় এই শব্দের অর্থ সাধারণ ব্যবহারে অপ্রচলিত হয়ে পড়ায় ''শূকরমদ্দভ'' শব্দটি শূকরের নরম মাংস হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে।{{sfn|Waley|1932|pp= 343–54}} [[অস্কার ভন হিনুবার]] মত প্রকাশ করেছেন যে, বুদ্ধের মৃত্যু খাদ্যে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে হয় নি, বরং [[সুপিরিয়র মেসেন্ট্রিক আর্টারি সিন্ড্রোম]] নামক বার্ধক্যের সময়ের একটি রোগের কারণে হয়েছিল।{{sfn|Mettanando| 2000}}<ref group = web>{{cite web | last = Mettanando |url=http://www.buddhanet.net/budsas/ebud/ebdha192.htm | title =Buddha net |date= 2001-05-15|accessdate= 25 December 2012}}{{dead link|date=May 2014}}</ref>