উমাইয়া খিলাফত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৯৯ নং লাইন:
মুয়াবিয়ার রাজবংশ “সুফয়ানি” (আবু সুফিয়ানের বংশধর) ৬৬১ থেকে ৬৮৪ পর্যন্ত শাসন করে। মুয়াবিয়ার শাসনকালকে আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও বাহ্যিক বিস্তৃতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সাম্রাজ্যের ভেতরে শুধু একটি বিদ্রোহের রেকর্ড আছে। হুজর ইবনে আদি কুফ্যার এই বিদ্রোহ করেন। হুজর ইবনে আদি নিজের আলির বংশধরদের খিলাফতের দাবিদার বলে সমর্থন জানান। কিন্তু ইরাকের গভর্নর [[জিয়াদ ইবনে আবু সুফিয়ান]] তার আন্দোলন সহজেই দমন করেন।
 
মুয়াবিয়া সিরিয়ার খ্রিষ্টানদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে উৎসাহিত করেন<ref>{{cite book|last=R h o d e s|first=Bryan|title=JOHN DAMASCENE IN CONTEXT An Examination of "The Heresy of the Ishmaelites" with special consideration given to the Religious, Political, and Social Contexts during the Seventh and Eighth Century Arab Conquests|page=105|url=http://www.stfrancismagazine.info/ja/images/stories/7.%20Bryan%20Rhodes%20SFM%20April%202011.pdf}}</ref> এবং তার একজন ঘনিষ্ট উপদেষ্টা ছিলেন [[জন অব ডেমাস্কাসের]] পিতা সারজুন। একই সময় তিনি [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের]] বিরুদ্ধে ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যান। তার শাসনামলে [[রোডস]] ও [[ক্রিট]] অধিকৃত হয় এবং [[কনস্টান্টিনোপল|কনস্টান্টিনোপলের]] বিরুদ্ধে বেশ কিছু আক্রমণ পরিচালিত হয়। ব্যর্থ হওয়ার পর এবং বড় ধরনের খ্রিষ্টান উত্থানের ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার পর তিনি বাইজেন্টাইনদের সাথে শান্তি অবস্থায় আসেন। মুয়াবিয়া উত্তর আফ্রিকা ([[কাইরাওয়ান|কাইরাওয়ানের]] প্রতিষ্ঠা) ও মধ্য এশিয়া ([[কাবুল]], [[বুখারা]] ও [[সমরকন্দ]] জয়) সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন।
 
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর তার পুত্র [[প্রথম ইয়াজিদ]] তার উত্তরাধিকারি হন। অনেক নামকরা মুসলিম ইয়াজিদের ক্ষমতালাভের বিরোধী ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মুহাম্মদ (সা) এর এক সাহাবির ছেলে [[আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের]] ও চতুর্থ খলিফার পুত্র [[হুসাইন ইবনে আলি]]। ফলশ্রুতিতে ঘটে যাওয়া সংঘাত দ্বিতীয় ফিতনা বলে পরিচিত।
 
৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের মক্কার উদ্দেশ্যে মদিনা ত্যাগ করেন। ইয়াজিদের বিপক্ষে হুসাইনের অবস্থানের কথা শুনে কুফার জনগণ হুসাইনের কাছে তাদের সমর্থন নেয়ার জন্য আবেদন জানায়। হুসাইন তার চাচাত ভাই মুসলিম বিন আকিলকে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঠান। এ খবর ইয়াজিদের কাছে পৌছলে তিনি বসরার শাসক উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদকে কুফার জনগণকে হুসাইনের নেতৃত্বে সমবেত হওয়া থেকে নিবৃত্ত করার দায়িত্ব দেন। উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ মুসলিম বিন আকিলের পাশে থাকে জনতাকে প্রতিহত করতে সক্ষম এবং তাকে গ্রেপ্তার করেন। উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদের উপর হুসাইনকে প্রতিহত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শুনে মুসলিম বিন আকিল তাকে অনুরোধ করেন যাতে হুসাইনকে কুফায় না আসার ব্যাপারে জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়। তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং উবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ মুসলিম বিন আকিলকে হত্যা করেন। আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের আমৃত্যু মক্কায় থেকে যান। হুসাইন সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার পরিবারসহ কুফায় যাবেন। সমর্থনের অভাবের বিষয়ে তার এসময় জানা ছিল না। হুসাইন ও তার পরিবারকে ইয়াজিদের সেনাবাহিনী রুখে দেয়। এসময় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন আমরু বিন সাদ, শামার বিন জিয়ালজোশান ও হুসাইন বিন তামিম। তারা হুসাইন ও তার পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সাথে লড়াই করে হত্যা করে। হুসাইনের দলে ২০০ জন মানুষ ছিল যাদের অধিকাংশ ছিল নারী। এদের মধ্যে হুসাইনের বোন, স্ত্রী, মেয়ে ও তাদের সন্তানরা ছিল। নারী ও শিশুদেরকে যুদ্ধবন্ধী হিসেবে দামেস্কে ইয়াজিদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। হুসাইনের মৃত্যু ও তার পরিবারের বন্দী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণের সমর্থন তার দিক থেকে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বন্দী করে রাখা হয়। এরপর তাদের মদিনা ফিরে যেতে দেয়া হয়। বেঁচে যাওয়া একমাত্র পুরুষ সদস্য ছিলেন [[আলি বিনইবনে হুসাইন বিন হযরত ইমাম জয়নুল আবেদীন (র)আবেদিন]]। অসুস্থতার কারণে কাফেলা আক্রান্ত হওয়ার সময় তিনি লড়াই করতে পারেননি।<ref>''Kitab Al-Irshad'' by Historian Sheikh Mufid</ref>
 
মক্কায় অবস্থান করলেও হুসাইনের মৃত্যুর পর আবদুল্লাহ ইবনুল জুবায়ের আরো দুটি প্রতিপক্ষ দলের সাথে যুক্ত হন। এর একটি মদিনা ও অন্যটি বসরা ও আরবের খারিজিরা সংঘটিত করে। মদিনা ছিল হুসাইনসহ মুহাম্মদ (সা) ও তার পরিবারের বাসস্থান, তার মৃত্যু ও পরিবারের বন্দী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিরাট আকারে প্রতিপক্ষ সৃষ্টি হয়। ৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দে ইয়াজিদ আন্দোলন দমন করতে সেনাবাহিনী পাঠান। [[হাররাহর যুদ্ধে]] সেনারা মদিনার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে। মদিনার মসজিদে নববী ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ইয়াজিদের সেনারা এগিয়ে গিয়ে মক্কা অবরোধ করে। অবরোধের এক পর্যায়ে আগুনে কাবার ক্ষতি হয়। কাবা ও মসজিদে নববীর ক্ষতিসাধনের ঘটনা পরবর্তী ইতিহাসবিদদের কাছে বেশ সমালোচনার বিষয়ে পরিণত হয়।