চীন-নেপাল যুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
নতুন নিবন্ধ কাজ চলছে
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
'''চীন-নেপাল যুদ্ধ''' ({{zh|c=平定廓爾喀}}, {{lang-ne|चीन-नेपाल युध्द}}) বলতে ১৭৮৮ থেকে ১৭৯২ খ্রিষ্টাব্দে সংগঠিত নেপাল দ্বারা তিব্বতে আক্রমণ অভিযান বোঝানো হয়ে থাকে। নেপাল ও তিব্বতী সেনার মধ্যে এই যুদ্ধ মূলতঃ তিব্বতে পাঠানো নেপালে্র নিম্নমানের ধাতুনির্মিত মুদ্রা থেকে বাণিজতিক বিবাদ থেকে শুরু হয়। প্রথমদিকে নেপালীদের সাফল্য লাভ হলেও [[চিং রাজবংশ]] আসরে নামলে নেপালীরা তাঁদের অধিকৃত জমি থেকে বিতাড়িত হয় এবং একটি শান্তি চুক্তি স্থাপন করতে বাধ্য হয়।
 
==বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপট==
[[মল্ল (নেপাল)|মল্ল]] রাজাদের আমল থেকে তিব্বতীরা নেপালী রৌপ্য মুদ্রা ব্যবহাত করে এসেছেন। নেপালকে একত্রীভূত করার প্রচেষ্টায় [[গোর্খা রাজ্য|গোর্খা রাজ্যের]] [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ]] [[কাঠমাণ্ডু উপত্যপকা|কাঠমাণ্ডু উপত্যপকার]] ওপর অর্থনৈতিক বাঁধা আরোপ করলে [[জয় প্রকাশ মল্ল]] অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে নিম্নমানের তাম্রমুদ্রার প্রচলন শুরু করেন। ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দে [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ]] [[কাঠমাণ্ডু উপত্যপকা]] অধিকার করে [[শাহ রাজবংশ|শাহ রাজবংশের]] শাসন শুরু করে পুনরায় রৌপ্য মুদ্রার প্রচলন করেন। তিব্বতে চালু সমস্ত পুরাতন নেপালী তাম্রমুদ্রার বদলে নূতন রৌপ্য মুদ্রা বদলে নেওয়ার দাবী তিব্বতীরা নেপাল সরকারের কাছে জানান। [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ]] নবপ্রতিষ্ঠ রাজ্যের ওপর এই ধরণের ভারী আর্থিক দায়ভার চাপাতে রাজী ছিলেন না। এরফলে বাজারে দুই ধরণের মুদ্রা চালু থাকে। [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ|পৃথ্বী নারায়ণ শাহের]] মৃত্যুর পর নেপালী বণিকদের সঙ্গে তিব্বতীদের বিবাদ শুরু হয়। নেপালীদের সঙ্গে তিব্বতীদ্রের নিম্নমানের লবণ সরবরাহ নিয়েও বিবাদ বাধে। তিব্বতীদের পাঠানো নিম্নমানের লবণের প্রতিবাদের নেপালী প্রতিনিধিরা দরবার করলেও তিব্বতীরা তা অগ্রাহ্য করে।
 
== প্রথম আক্রমণ==
{{Infobox military conflict
| conflict = প্রথম আক্রমণ
২২ ⟶ ১৬ নং লাইন:
| casualties2 = অজানা
| notes = }}
১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে [[বাহাদুর শাহ (নেপাল)|বাহাদুর শাহ]] [[দামোদর পাণ্ডে]] এবং বম সিংহের নেতৃত্বে তিব্বত আক্রমণ করার জন্য গোর্খা সেনাবাহিনী পাঠান। এই সৈন্যবাহিনী কুতি হয়ে ৪১০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে [[ব্ক্রা-শিস-ল্হুন-পো বৌদ্ধবিহার|ব্ক্রা-শিস-ল্হুন-পো]] পৌছয়। শিকারজোং নামক স্থানে একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধ ঘটে যাতে তিব্বতীরা সাংঘাতিকভাবে পরাজিত হয়। [[সপ্তম পাঞ্চেন লামা]] শান্তির জন্য মধ্যস্থতা করলে গোর্খা বাহিনী শিকারজোং ছেড়ে কুতি ও গ্যিরোং চলে যায়। [[চিং রাজবংশ|চিং সম্রাট]] [[চিয়ানলোং]] নেপালের আক্রমণের সংবাদ পেলে তিনি সেনাপতি চাঞ্চুর নেতৃত্বে একটি বিশাল চীনা সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে খিরু নামক স্থানে তিব্বতী ও নেপালী প্রতিনিধিরা শান্তির জন্য বৈঠক করতে সম্মত হয়। এই বিবাদের সূত্রপাতের জন্য তিব্বতীদের দায়ী করা হয় এবং যুদ্ধের জন্য নেপালকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। এই যুদ্ধে সকল অধিকৃত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিবর্তে নেপালীরা প্রতিবছর ৫০,০০১ টাকা দিতে বাধ্য থাকে। প্রথম বছর নেপালীদের এই অর্থ প্রদান করা হলে নেপালীরা অধিকৃত এলাকা ফিরিয়ে দিয়ে প্রত্যাবর্তন করে। কিন্তু পরের বছর থেকে তিব্বতীরা অর্থ প্রদানে অসম্মত হলে লড়াইয়ের সম্ভাবনা বজায় থাকে।
 
==দ্বিতীয় আক্রমণ==
{{Infobox military conflict
| conflict = দ্বিতীয় আক্রমণ
| image = [[File:Capture of Xiebulu.jpg|400px]]
| caption = Fuk'anggan storms the fortress of Xiebulu
| date = 1792১৭৯২ - 1793১৭৯৩
| place = [[Tibetতিব্বত]], [[Nepalনেপাল]]
| result = [[চিং রাজবংশ|চিং সাম্রাজ্যের]] বিজয়, নেপালের পরাজয় ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, বেত্রবতী চুক্তি
| result = [[Qing]] victory, Nepal submits and pays tribute to Qing Empire, Treaty of Betravati
| status =
| combatant1 = {{flagicon|Qing dynasty}}[[চিং রাজবংশ|চিং সাম্রাজ্য]]
৪২ ⟶ ৩৩ নং লাইন:
| casualties2 = অজানা
| notes = }}
'''চীন-নেপাল যুদ্ধ''' ({{zh|c=平定廓爾喀}}, {{lang-ne|चीन-नेपाल युध्द}}) বলতে ১৭৮৮ থেকে ১৭৯২ খ্রিষ্টাব্দে সংগঠিত নেপাল দ্বারা তিব্বতে আক্রমণ অভিযান বোঝানো হয়ে থাকে। নেপাল ও তিব্বতী সেনার মধ্যে এই যুদ্ধ মূলতঃ তিব্বতে পাঠানো নেপালে্র নিম্নমানের ধাতুনির্মিত মুদ্রা থেকে বাণিজতিক বিবাদ থেকে শুরু হয়। প্রথমদিকে নেপালীদের সাফল্য লাভ হলেও [[চিং রাজবংশ]] আসরে নামলে নেপালীরা তাঁদের অধিকৃত জমি থেকে বিতাড়িত হয় এবং একটি শান্তি চুক্তি স্থাপন করতে বাধ্য হয়।
 
==বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপট==
[[মল্ল (নেপাল)|মল্ল]] রাজাদের আমল থেকে তিব্বতীরা নেপালী রৌপ্য মুদ্রা ব্যবহাত করে এসেছেন। নেপালকে একত্রীভূত করার প্রচেষ্টায় [[গোর্খা রাজ্য|গোর্খা রাজ্যের]] [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ]] [[কাঠমাণ্ডু উপত্যপকা|কাঠমাণ্ডু উপত্যপকার]] ওপর অর্থনৈতিক বাঁধা আরোপ করলে [[জয় প্রকাশ মল্ল]] অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে নিম্নমানের তাম্রমুদ্রার প্রচলন শুরু করেন। ১৭৬৯ খ্রিষ্টাব্দে [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ]] [[কাঠমাণ্ডু উপত্যপকা]] অধিকার করে [[শাহ রাজবংশ|শাহ রাজবংশের]] শাসন শুরু করে পুনরায় রৌপ্য মুদ্রার প্রচলন করেন। তিব্বতে চালু সমস্ত পুরাতন নেপালী তাম্রমুদ্রার বদলে নূতন রৌপ্য মুদ্রা বদলে নেওয়ার দাবী তিব্বতীরা নেপাল সরকারের কাছে জানান। [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ]] নবপ্রতিষ্ঠ রাজ্যের ওপর এই ধরণের ভারী আর্থিক দায়ভার চাপাতে রাজী ছিলেন না। এরফলে বাজারে দুই ধরণের মুদ্রা চালু থাকে। [[পৃথ্বী নারায়ণ শাহ|পৃথ্বী নারায়ণ শাহের]] মৃত্যুর পর নেপালী বণিকদের সঙ্গে তিব্বতীদের বিবাদ শুরু হয়। নেপালীদের সঙ্গে তিব্বতীদ্রের নিম্নমানের লবণ সরবরাহ নিয়েও বিবাদ বাধে। তিব্বতীদের পাঠানো নিম্নমানের লবণের প্রতিবাদের নেপালী প্রতিনিধিরা দরবার করলেও তিব্বতীরা তা অগ্রাহ্য করে।
 
== প্রথম আক্রমণ==
১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে [[বাহাদুর শাহ (নেপাল)|বাহাদুর শাহ]] [[দামোদর পাণ্ডে]] এবং বম সিংহের নেতৃত্বে তিব্বত আক্রমণ করার জন্য গোর্খা সেনাবাহিনী পাঠান। এই সৈন্যবাহিনী কুতি হয়ে ৪১০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে [[ব্ক্রা-শিস-ল্হুন-পো বৌদ্ধবিহার|ব্ক্রা-শিস-ল্হুন-পো]] পৌছয়। শিকারজোং নামক স্থানে একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধ ঘটে যাতে তিব্বতীরা সাংঘাতিকভাবে পরাজিত হয়। [[সপ্তম পাঞ্চেন লামা]] শান্তির জন্য মধ্যস্থতা করলে গোর্খা বাহিনী শিকারজোং ছেড়ে কুতি ও গ্যিরোং চলে যায়। [[চিং রাজবংশ|চিং সম্রাট]] [[চিয়ানলোং]] নেপালের আক্রমণের সংবাদ পেলে তিনি সেনাপতি চাঞ্চুর নেতৃত্বে একটি বিশাল চীনা সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে খিরু নামক স্থানে তিব্বতী ও নেপালী প্রতিনিধিরা শান্তির জন্য বৈঠক করতে সম্মত হয়। এই বিবাদের সূত্রপাতের জন্য তিব্বতীদের দায়ী করা হয় এবং যুদ্ধের জন্য নেপালকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। এই যুদ্ধে সকল অধিকৃত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিবর্তে নেপালীরা প্রতিবছর ৫০,০০১ টাকা দিতে বাধ্য থাকে। প্রথম বছর নেপালীদের এই অর্থ প্রদান করা হলে নেপালীরা অধিকৃত এলাকা ফিরিয়ে দিয়ে প্রত্যাবর্তন করে। কিন্তু পরের বছর থেকে তিব্বতীরা অর্থ প্রদানে অসম্মত হলে লড়াইয়ের সম্ভাবনা বজায় থাকে।
 
==দ্বিতীয় আক্রমণ==
তিব্বতীরা অর্থপ্রদানে অসম্মত হলে [[বাহাদুর শাহ (নেপাল)|বাহাদুর শাহ]] ১৭৯১ খ্রিষ্টাব্দে [[দামোদর পাণ্ডে|দামোদর পাণ্ডের]] অধীনে একটি সেনাবাহিনী কুতির দিকে এবং [[অভিমান সিং বস্নেত|অভিমান সিং বস্নেতের]] অধীনে অপর একটি সেনাবাহিনী কেরুংয়ের দিকে প্রেরণ করেন।