ইসলামে নারী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ফয়সল সাইফ (আলোচনা | অবদান)
ফয়সল সাইফ (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৪ নং লাইন:
নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র [[কোরআনের]] সূরা [[আহযাবে]] বলা হয়েছে
{{cquote|"হে নবী, বলুন আপনার স্ত্রী ও কন্যাদেরকে এবং বিশ্বাসী নারীদেরকে যে, তাঁরা যেন তাঁদের বহিরাবরণ পরে থাকে (যখন বাইরে যাবে)। এটা তাঁদের পরিচিতির অত্যন্ত উপযোগী। (তাঁরা যেন পরিচিত হয় বিশ্বাসী নারী হিসেবে) তাহলে আর অহেতুক উৎপিড়ীত হবে না। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল দয়াবান।"33:59<ref name = "ফাহদ">{{cite book |title=পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর)|publisher=খাদেমুল-হারমাইন বাদশাহ ফাহদ, কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প| year=১৪১৩ হিজরী| pages=১৪৮০ পাতা}}</ref>}}
সাধারণত ইসলাম সর্বাবস্থায় [[নারীদের]] ঘরে আবদ্ধ করে রাখার কথা বলে না। এ সম্পর্কে বলাহযরত হয়েছেআয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
{{cquote|"হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন, অবশ্যই প্রয়োজনে তোমাদের (নারীদের) বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।"৪৪৩৬<ref name="সোলায়মান">{{cite book|title=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|publisher=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| year=২০০৬ সন| pages=১১২০ পাতা}}</ref>}}
তবে, সেক্ষেত্রে দূর যাত্রা হলে সাথে [[মাহ্রম]] নিতে হবে। [[মাহ্রম]] হল সাথে কোনো পুরুষ অভিভাবক থাকা। এ সম্পর্কে সহীহ [[বোখারী]] শরীফে হযরত [[ইবনে আব্বাস]] (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
{{cquote|"[[রাসূলুল্লাহ]] (সাঃ) বলেছেন, মাহ্রমের উপস্থিতি ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে না। এক ব্যাক্তি ওঠে দাঁড়িয়ে জিগ্যেস করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার স্ত্রী হজ্বে বেরিয়ে গেছে। এবং অমুক অমুক জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য আমার নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। [[নবী]] (সাঃ) বললেন, ফিরে যাও এবং স্ত্রীর সাথে হজ্ব সমাপন কর।"4857<ref name="সোলায়মান">{{cite book|title=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|publisher=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| year=২০০৬ সন| pages=১১২০ পাতা}}</ref>}}
১৫ নং লাইন:
ইসলামের [[গবেষকরা]] এই আয়াত সমূহ এবং এ সংক্রান্ত হাদিসের ওপর ভিত্তি করে, নারী-পুরুষের পর্দার একটা সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে [[পুরুষের]] জন্য বাধ্যতামূলক হল, কমপক্ষে নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা। আর [[নারীর]] জন্য বাধ্যতামূলক হল, কমপক্ষে দুই হাতের কব্জী এবং মূখ মন্ডল ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখা। কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ বলেন, তাও ঢেকে রাখতে হবে।
এছাড়া পর্দার বাকি শর্তগুলো হল: পরিধেয় পোষাক ঢিলেঢালা হবে। যেন দেহের মূল কাঠামো প্রকাশ না পায়। পোষাক এত পাতলা ও স্বচ্ছ হবে না, যাতে ভেতরটা দেখা যায়। পোষাক বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করার মত আকর্ষণীয় হবে না। পোষাকের ধরণ বিপরীত লিঙ্গের মত হবে না। এবং পোষাকের ধরণ অবিশ্বাসীদের মত হবে না। এই শর্তগুলো নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য একই রকম।
 
সুনির্দিষ্টভাবে নারীদের ক্ষেত্রে পর্দা ব্যবস্থা শতভাগ নেতিবাচক এমন ভাবার মত সামাজিক পরিস্থিতি এখনো তৈরী হয়নি। যেমন:
২০১৩ সালে হলিউড তারকাদের আয় বিশ্লেষণ করে দেখেছে নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি। তাঁদের সেই বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে উইমেন্স মিডিয়া সেন্টার নামের একটি সংস্থা। সেখানে দেখা গেছে যতই নারী-পুরুষের সমতার কথা বলা হোক, পুরুষ তারকাদের তুলনায় নারী তারকারা হলিউডে এক রকম অবহেলিতই। পর্দায় তাঁদের উপস্থিতি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অলংকারের মত। কেবল সৌন্দর্য বাড়াতেই ব্যবহার করা হয়। ২০১৩ সালে পুরুষের তুলনায় ছবিতে নারীর বক্তব্যধর্মী চরিত্র ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র ২৯ শতাংশ। শুধু তাই নয়, পর্দায় নারীদের আকর্ষকভাবে ইচ্ছাকৃত উপস্থাপনের প্রবণতাও বেড়েছে। বেড়েছে ঘনিষ্ট দৃশ্য উপস্থাপনের হারও। ২০০৭ সালের তুলনায় যেটি তিন গুণ বেড়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে। বয়সের দিক দিয়েও নারী এবং পুরুষের চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। প্রযোজকদের কাছে পুরুষদের ক্ষেত্রে যেমন বয়স্করাই কাম্য, নারীদের ক্ষেত্রে উল্টো কম বয়সীরাই এগিয়ে। <ref>[http://www.dailymail.co.uk/news/article-2564925/Hollywood-mans-world-stuck-1950s-Angelina-Jolie-woman-break-list-10-highest-paid-actors.html]</ref>
 
==উত্তরাধিকার==
 
উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র [[কোরআনে]] সূরা [[নিসায়]] বলা হয়েছে,
{{cquote|"তোমাদের সন্তানদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদেরকে এই বিধান দিচ্ছেন: পুরুষের অংশ দুই নারীর সমান হবে। যদি দুই জনের বেশি নারী হয়, তাহলে সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ দেয়া হবে। আর একজন নারী হলে মোট সম্পদের অর্ধেক পাবে। মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকলে, তাঁর পিতা-মাতা প্রত্যেকে ছয় ভাগের এক ভাগ করে পাবে। আর সে যদি নিঃসন্তান হয়, পিতা-মাতাই হয় উত্তরাধিকারী, তাহলে মাকে দেয়া হবে তিন ভাগের একভাগ। মৃতের ভাই বোন থাকলে মা সেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে। এসব বন্টন মৃতের কোনো অসীয়ত থাকলে, তা এবং ঋণ থাকলে তা আদায় করার পরে। তোমাদের পিতা-মাতা এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততী, তোমাদের জানা নাই এঁদের মধ্যে তোমাদের কল্যাণের দিক দিয়ে কারা ঘনিষ্টতর। এই বন্টন ব্যবস্থা ফরজ করে দেয়া হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহ তো সব কিছুর ব্যপারেই পূর্ণ অবহিত এবং তিনিই হচ্ছেন বিজ্ঞ, পরম কুশলী। আর তোমাদের স্ত্রীরা যা কিছু রেখে গেছে, তার অর্ধেক তোমরা পাবে যদি তাঁরা নিঃসন্তান হয়। সন্তান থাকলে তোমরা পাবে ত্যক্ত সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ। তাঁদের করে যাওয়া অসীয়ত এবং দেনা থাকলে, তা সব আদায়ের পর। আর তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পদের তাঁরা পাবে চারভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোনো সন্তান না থাকে। সন্তান থাকলে তাঁরা পাবে আট ভাগের একভাগ। তাও কার্যকর হবে তোমাদের কোনো অসীয়ত এবং দেনা থাকলে তা আদায়ের পর। আর যদি এমন কোনো পুরুষ অথবা স্ত্রীলোক, যাঁর না আছে কোনো সন্তান, আর না আছে পিতা-মাতা। আছে এক ভাই অথবা এক বোন তাহলে তাঁদের প্রত্যেকে পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ। আর ভাই বোন যদি দুই এর বেশি হয়, তাহলে তাঁরা সবাই মিলে মোট সম্পদের তিন ভাগের একভাগ পাবে। তাও কোনো অসীয়ত এবং ঋণ থাকলে তা আদায়ের পর। কোনোভাবেই কারো কোনো ক্ষতি করা বা হতে দেয়া যাবে না। (এসব কিছু) আল্লাহর দেয়া উপদেশ মালা। আর আল্লাহ সব কিছুর ব্যাপারেই পূর্ণ অবহিত এবং পরম ধৈর্য্যশীল।"4:11-12<ref name = "ফাহদ">{{cite book |title=পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর)|publisher=খাদেমুল-হারমাইন বাদশাহ ফাহদ, কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প| year=১৪১৩ হিজরী| pages=১৪৮০ পাতা}}</ref>}}
এবং
 
{{cquote|"তাঁরা আপনার কাছে ফতোয়া জানতে চায়। বলুন, আল্লাহ তোমাদেরকে ফতোয়া দিচ্ছেন, নিঃসন্তান ও পিতৃ-মাতৃহীন মৃত ব্যক্তির সম্পদ বন্টন সম্পর্কে। যদি এমন ব্যক্তি মারা যায়, যাঁর কোনো সন্তান নেই, আছে এক বোন। তাহলে সে পাবে সম্পদের অর্ধেক আর যদি বোন মারা যায় তাহলে ভাই পুরো সম্পদের উত্তরাধিকারী হবে। মৃতের উত্তরাধিকারী যদি দুই বোন হয়, তাহলে ত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দুই ভাগ তাঁরা পাবে। আর যদি কয়েকজন ভাই-বোন হয়, তাহলে পুরুষেরা পাবে দুই ভাগ, আর নারীরা পাবে এক ভাগ। আল্লাহ স্পষ্ট করে দিচ্ছেন তোমাদের জন্য যেন তোমরা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে না যাও। প্রত্যেকটি জিনিস সম্পর্কেই আল্লাহ পূর্ণ অবহিত।"4:176<ref name = "ফাহদ">{{cite book |title=পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর)|publisher=খাদেমুল-হারমাইন বাদশাহ ফাহদ, কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প| year=১৪১৩ হিজরী| pages=১৪৮০ পাতা}}</ref>}}
 
৩৯ ⟶ ৩৬ নং লাইন:
{{cquote|"হে ঈমানদারগণ, যদি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য তোমরা একে অপরের সাথে লেনদেন কর, তাহলে তা লিখে নিয়ো। অতঃপর তোমাদের নিজেদের মধ্যের দুজন পুরুষকে স্বাক্ষী বানাও। তখন যদি দুজন পুরুষের আয়োজন না করা যায়, তাহলে একজন পুরুষ এবং যাঁদের স্বাক্ষীর ব্যপারে তোমরা আস্থাশীল এমন দুজন নারী বেঁচে নাও। যেন, একজন ভূল করলে অন্যজন স্মরণ করিয়ে দিতে পারে।"২৮২<ref name = "ফাহদ">{{cite book |title=পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর)|publisher=খাদেমুল-হারমাইন বাদশাহ ফাহদ, কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প| year=১৪১৩ হিজরী| pages=১৪৮০ পাতা}}</ref>}}
সাধারণত [[ইসলাম]] [[পর্দার]] বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। তাই [[ইসলাম]] [[নারীদের]] ওপর কোনো [[আর্থিক]] বাধ্যবাধকতা বা দায়দায়িত্ব আরোপ করেনি। যেসব ক্ষেত্রে ঘটনার প্রকৃতি [[আর্থিক]] এর মত (ইসলামী মতে যা অধিক পুরুষ সংশ্লিষ্ট) সেসব ক্ষেত্রে নারীদের তুলনায় পুরুষ স্বাক্ষীর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
 
==বিয়ে==
 
ইসলাম ধর্ম অনুসারে [[নারীরা]] এক সাথে একাধিক [[স্বামী]] গ্রহণ করতে পারবে না। তবে, একাধিক [[নারী]] এক সাথে একজন [[পুরুষের]] সাথে [[বিবাহে]] আবদ্ধ হতে পারবে।"4703<ref name="সোলায়মান">{{cite book|title=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|publisher=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| year=২০০৬ সন| pages=১১২০ পাতা}}</ref>}}
তবে, পুরুষদের মতই একজন নারী তার পছন্দের সৎপুরুষের কাছে নিজেকে বিয়ের জন্য পেশ করতে পারবে।"4703<ref name="সোলায়মান">{{cite book|title=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|publisher=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| year=২০০৬ সন| pages=১১২০ পাতা}}</ref>}}
কোনো অভিভাবক বা পুরুষ কোনো বিধবা অথবা কুমারী মহিলাকে তাঁর অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করতে বা দিতে পারবে না।"4764<ref name="সোলায়মান">{{cite book|title=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|publisher=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| year=২০০৬ সন| pages=১১২০ পাতা}}</ref>}}
এমনকি নারীর অনুমতি ব্যতীত অভিভাবক তাঁকে বিয়ে দিলে তা বাতিল করা যাবে। এ সম্পর্কে হযরত খানসা বিনতে খিযাম আল আনসারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
{{cquote|"যখন তিনি বয়স্কা ছিলেন তখন তাঁর পিতা তাঁকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তাঁর পছন্দ ছিল না। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে গেলে তিনি তা বাতিল করে দেন।"4766<ref name="সোলায়মান">{{cite book|title=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|publisher=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| year=২০০৬ সন| pages=১১২০ পাতা}}</ref>}}