}}
'''শেখ মুজিবুর রহমান''' ([[মার্চ ১৭]], [[১৯২০]] - [[আগস্ট ১৫]], [[১৯৭৫]]) বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা যিনি [[পূর্ব পাকিস্তান]] থেকে [[বাংলাদেশ]] প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত। তিনি [[মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী]] প্রতিষ্ঠিত [[আওয়ামী লীগ|আওয়ামী লীগের]] সভাপতি, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং পরবর্তীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জনসাধারণের কাছে তিনি "শেখ মুজিব" এবং "শেখ সাহেব" হিসাবে বেশি পরিচিত এবং তার উপাধি 'বঙ্গবন্ধু'। তার কন্যা [[শেখ হাসিনা ওয়াজেদ]] বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বর্তমান সভানেত্রী এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৪৭-এ ভারত বিভাগ পরবর্পূতী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে শেখ মুজিব ছিলেন ছাত্রনেতা। ক্রমে তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃত্বের উচ্চপদে আসীন হয়েছিলেন। তার বড় গুণ ছিল তুখোড় বক্তৃতা প্রদানের ক্ষমতা। [[সমাজতন্ত্র|সমাজতন্ত্রের]] পক্ষসমর্থনকারী একজন অধিবক্তা হিসেবে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তনের জনগোষ্ঠীর প্রতি সকল ধরণের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। জনগণের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি একসময় [[ছয় দফা|ছয় দফা স্বায়ত্ত্বশাসন পরিকল্পনা]] প্রস্তাব করেন যাকে [[পশ্চিম পাকিস্তান|পশ্চিম পাকিস্তানে]] একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। ছয় দফা দাবীর মধ্যে প্রধান ছিল বর্ধিত প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসন যার কারণে তিনি [[আইয়ুব খান|আইয়ুব খানের]] সামরিক শাসনের অন্যতম বিরোধী পক্ষে পরিণত হন। [[১৯৬৮]] খ্রিস্টাব্দে [[ভারত|ভারত সরকারের]] সাথে যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তার বিচার শুরু হয় এবং পরবর্তীতে তিনি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। [[১৯৭০]] খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করে। তথাপি তাকে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়া হয় নি।
<blockquote>"এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক"।</blockquote>
মুজিবকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফয়সালাবাদের একটি জেলে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়। পাকিস্তানি জেনারেল রহিমুদ্দিন খান মুজিবের মামলার পরিচালনা করেন। মামলার আসল কার্যপ্রণালী এবং রায় কখনোই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় নি।<ref name="REF" /> এ মামলাটি "লায়ালপুর ট্রায়াল" হিসাবে অভিহিত।হিসা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরিচালিত অভিযান অল্প সময়ের মধ্যেই হিংস্রতা ও তীব্র রক্তপাতে রূপ নেয়। রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালি বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ ও ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষকে আক্রমণ করে। বাঙালি ও অবাঙালি হিন্দুদেরকে লক্ষ্য করে বিশেষ অভিযানের কারণে সারা বছরজুড়ে প্রচুর হিন্দু জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম বঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় আশ্রয় গ্রহণ করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ও পুলিশ রেজিমেণ্টে কর্মরত পূর্ব বাংলার সদস্যবৃন্দ দ্রুত বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং লীগ সদস্যবৃন্দ কলকাতায় তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্ব প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তি বাহিনীর নেতৃত্ব বড় রকমের বিদ্রোহ সংঘটিত হতে থাকে। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা স্বত্ত্বেও পাকিস্তানি সরকার মুজিবকে ছেড়ে দিতে এবং তাঁর সাথে সমঝোতা করতে অস্বীকৃতি জানায়।<ref>{{cite book| last = Frank| first = Katherine| authorlink = Katherine Frank| year = 2002| title = Indira: The Life of Indira Nehru Gandhi| publisher = Houghton Mifflin | location = USA| ISBN = 0-395-73097-X| pages = 336}}</ref>
যুদ্ধবর্তী সময়ে মুজিবের পরিবারকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। তাঁর সন্তান শেখ কামাল মুক্তি বাহিনীর একজন গুরুত্বপূর্ণ অফিসার ছিলেন। মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তান বাহিনীর ভিতরে সংঘটিত যুদ্ধটিই [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ]] নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে ভারতীয় সরকারের অংশগ্রহণের পর, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ দলের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং লীগ নেতৃবৃন্দ ঢাকায় ফিরে সরকার গঠন করেন। পাকিস্তানি শাসকবৃন্দ মুজিবকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তিদান করে। এরপর তিনি লণ্ডন হয়ে নতুন দিল্লিতে ফিরে আসেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী [[ইন্দিরা গান্ধী]]’র সাথে সাক্ষাতের পর জনসমক্ষে “ভারতের জনগণ, আমার জনগণের শ্রেষ্ঠ বন্ধু” বলে তাঁকে সাধুবাদ জানান।<ref name="Frank 2002 343">{{cite book| last = Frank| first = Katherine| authorlink = Katherine Frank| year = 2002| title = Indira: The Life of Indira Nehru Gandhi| publisher = Houghton Mifflin | location = USA| ISBN = 0-395-73097-X| pages = 343}}</ref> তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। গান্ধীর সাথে সেদিন তিনি ঢাকায় জড়ো হওয়া প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সামনে বক্তৃতা দেন।<ref name="Frank 2002 343">{{cite book| last = Frank| first = Katherine| authorlink = Katherine Frank| year = 2002| title = Indira: The Life of Indira Nehru Gandhi| publisher = Houghton Mifflin | location = USA| ISBN = 0-395-73097-X| pages = 343}}</ref>
== বাংলাদেশের শাসন ==
শেখ মুজিবর রহমান অল্পদিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭০-এ পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার জন্য নির্বাচিত রাজনীতিবিদরা নতুন রাষ্ট্রের প্রথম সংসদ গঠন করেন। মুক্তিবাহিনী এবং অন্যান্য মিলিশিয়াদের নিয়ে নতুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠিত হয়। তাঁরই অভিপ্রায়ক্রমে ১৭ মার্চ ১৯৭২ ভারতীয় বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ড ত্যাগ করে।<ref name="BAL" />
যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশের প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করেন.টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ ১৭ জানুয়ারি ১৯৭২ ভাষায়
<blockquote>
গত মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর বিশ্বব্যাংকের পরিদর্শকদের একটি বিশেষ টিম কিছু শহর প্রদক্ষিণ করে বলেছিলেন, ওগুলোকে দেখতে ভুতুড়ে নগরী মনে হয়। এরপর থেকে যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত এহেন ধ্বংসলীলার ক্ষান্তি নেই। ৬০ লাখ ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ২৪ লাখ কৃষক পরিবারের কাছে জমি চাষের মতো গরু বা উপকরণও নেই। পরিবহনব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, পুল-কালভার্টের চিহ্নও নেই এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগেও অনেক বাধাবিঘ্ন। এক মাস আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ পর্যন্ত দেশের ওপর নির্বিচার বলাৎকার চলেছে। যুদ্ধের শেষদিকে পাকিস্তানি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো (কার্যত প্রতিটি ব্যবসা ক্ষেত্রই পাকিস্তানিদের দখলে ছিল) তাদের সব অর্থ-সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার করে দেয়। যুদ্ধ শেষে চট্টগ্রামে পাকিস্তান বিমানের অ্যাকাউন্টে মাত্র ১১৭ রুপি জমা পাওয়া গিয়েছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ব্যাংক নোট ও কয়েনগুলো ধ্বংস করে দেয়। ফলে সাধারণ মানুষ নগদ টাকার প্রকট সংকটে পড়ে। রাস্তা থেকে প্রাইভেটকারগুলো তুলে নেওয়া হয়, গাড়ির ডিলারদের কাছে থাকা গাড়িগুলো নিয়ে নেওয়া হয় এবং এগুলো নৌবন্দর বন্ধ হওয়ার আগমুহূর্তে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার করে দেওয়া হয়।</blockquote>
বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভের পর শেখ মুজিব পাকিস্তান, [[ওআইসি]], [[জাতিসংঘ]] ও [[জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন|জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনে]] বাংলাদেশের সদস্যপদ নিশ্চিত করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে ভ্রমণ করে বাংলাদেশের জন্য মানবীয় ও উন্নয়নকল্পের জন্য সহযোগিতা চান।<ref name="BAL" /> তিনি ভারতের সাথে একটি ২৫ বছর মেয়াদী মিত্রতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন যাতে অর্থনৈতিক ও মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যাপক সাহায্যের আশ্বাস দেয়া হয়। চুক্তিতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারী কর্কমর্তাদের প্রশিক্ষণের শর্ত অন্তর্ভুত ছিল। <ref name="Frank 2002 343"/> মুজিব ইন্দিরা গান্ধির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন।<ref name="KF1">{{cite book| last = Frank| first = Katherine| authorlink = Katherine Frank| year = 2002| title = Indira: The Life of Indira Nehru Gandhi| publisher = Houghton Mifflin | location = USA| ISBN = 0-395-73097-X| pages = 388}}</ref> মুজিবের জীবদ্দশায় দুই সরকারের মধ্যে পারষ্পরিক সমঝোতা ছিল।<ref name="KF">{{cite book| last = Frank| first = Katherine| authorlink = Katherine Frank| year = 2002| title = Indira: The Life of Indira Nehru Gandhi | publisher = Houghton Mifflin | location = USA| ISBN = 0-395-73097-X| page = 388}}</ref>
মুজিব তাঁর অন্তর্বর্তী সংসদকে একটি নতুন সংবিধান রচনার দায়িত্ব দেন এবং চারটি মূলনীতি হিসেবে “জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র” ঘোষণা করেন যা মুজিববাদ নামেও পরিচিত।<ref name = "KF"/> মুজিব শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও কোম্পানি রাষ্ট্রীয়করণ করেন এবং ভূমি ও মূলধন বাজেয়াপ্ত করে ভূমি পূনর্বণ্টনের মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্যের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।<ref name="UDDIN">{{cite web | last = Shahzad Uddin| first = A Bangladeshi Soap Opera| date = [[2006-07-07]]| url = http://les.man.ac.uk/ipa97/papers/uddin103.pdf|format=PDF| title = Mujib's policies| format = HTML| accessdate = 2006-07-07}}</ref> মুক্তিযুদ্ধ কালে ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী ১ কোটি শরণার্থীর পূনর্বাসনের জন্য বড় পদক্ষেপ নেয়া হয়। এর ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কট হ্রাস পেতে শুরু করে এবং সমূহ দুর্ভিক্ষ এড়ানো সম্ভব হয়।<ref name = "JSTOR3"/> ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর থেকে নতুন সংবিধান কার্যকর করা হয় এবং ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে [[জাতীয় সংসদ নির্বাচন]] অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে শেখ মুজিব ও তাঁর দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং তিনি বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত সরকার গঠন করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, খাদ্য, স্বাস্থ্য, পানি ও বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটান। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত [[বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চ বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায়]] কৃষি, গ্রামীণ অবকাঠামো ও কুটির শিল্প উন্নয়নে প্রাগ্রাধিকারমূলক সরকারী অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দেয়া হয়।<ref name="UNESCAP">{{cite web | last = UNESCAP| first = Integration of Poverty Alleviation and Social Sector Development into the Planning Process in Bangladesh| date = [[2006-07-07]]| url = http://www.unescap.org/drpad/publication/ldc6_2174/chap4.PDF| title = Mujib's policies| format = PDF| accessdate = 2006-07-07}}</ref>
ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা থাকা স্বত্ত্বেও মুজিব ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইসলামি অনুশাসনের পথে অগ্রসর হন।<ref name = "SAAGI"/> তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে আঁতাতের অভিযোগে ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামিক একাডেমি পুনরায় চালু করেন। ইসলামিক গোত্রগুলোর জোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মদ তৈরি ও বিপণন এবং জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করেন।<ref name = "SAAGI"/> তাঁরই সিদ্ধান্তক্রমে বাংলাদেশ [[অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কনফারেন্স]] ও [[ইসলামিক ডেভেলপমেণ্ট ব্যাংক]]-এর সদস্যপদ গ্রহণ করে। মুজিব ১৯৭৪ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে যান যা পাকিস্তানের সাথে কিছুমাত্রায় সম্পর্ক উন্নয়ন ও পাকিস্তানের স্বীকৃতি পেতে সহায়তা করে।<ref name = "SAAGI"/> জনসাধারণের সামনে উপস্থিতি ও ভাষণের সময় শেখ মুজিব ইসলামিক সম্ভাষণ ও শ্লোগান ব্যবহার বাড়িয়ে দেন এবং ইসলামিক আদর্শের উল্লেখ করতে থাকেন। শেষ বছরগুলোতে মুজিব তাঁর স্বভাবসুলভ “জয় বাংলা” অভিবাদনের বদলে ধার্মিক মুসলিমদের পছন্দনীয় “খোদা হাফেজ” বলতেন।<ref name="SAAGI">{{cite web | last = Raman| first = B.| date = [[2006-08-29]]| url = http://www.saag.org/papers3/paper232.html| title = Mujib and Islam| format = PHP | accessdate = 2006-08-29}}</ref>
== বাকশাল ==
স্বাধীনতা পর অচিরেই মুজিবের সরকারকে ক্রমশ বাড়তে থাকা অসন্তোষ সামাল দিতে হয়। তাঁর রাষ্ট্রীয়করণ ও ইণ্ডাস্ট্রিয়াল সমাজতন্ত্রের নীতি প্রশিক্ষিত জনবল, অদক্ষতা, মাত্রাতিরিক্ত দুর্নীতি আর দুর্বল নেতৃত্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।<ref name="UDDIN" /> মুজিব অতিমাত্রায় জাতীয় নীতিতে মনোনিবেশ করায় স্থানীয় সরকার প্রয়োজনীয় গুরুত্ব লাভে ব্যর্থ হয়। আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ করায় গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় তৃণমূল পর্যায়ে কোন নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয় নি।<ref name="PAPER">{{cite web | last = Mohammad Habibur Rahman| first = Decentralization and Access: Theoretical Framework and Bangladesh Experience| date = [[2006-07-07]]| url = http://www.yorku.ca/ycar/papers/MUJIB Decen and Access (Joint-Asian).pdf| title = Party democracy| format = PDF| accessdate = 2006-07-07}}</ref> আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে কমিউনিস্ট এবং ইসলামি মৌলবাদীরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ঘোষণা করায় ইসলামিক গোত্রের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পদে আপনজনদের নিয়োগ দেয়ার জন্য মুজিবের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনা হয়।<ref name = "KF"/> ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ খাদ্য সংকট আরো বাড়িয়ে দেয় এবং অর্থনীতির প্রধান উত্স কৃষিকে ধ্বংশ করে ফেলে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব, দ্রব্যমূল্যের অসামঞ্জস্যতা, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যর্থতার কারণে মুজিবকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।<ref name="UDDIN" />
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সংঘাতের মাত্রা বাড়তে থাকায় মুজিবও তাঁর ক্ষমতা বাড়াতে থাকেন। ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বর মুজিব জরুরি অবস্থা জারি করেন.<ref>Google Newspaper Archive ,News Agency AP Report ,Toledo Blade - Dec 29, 1974 Available at: [http://news.google.com/newspapers?nid=1350&dat=19741229&id=0sgwAAAAIBAJ&sjid=LQIEAAAAIBAJ&pg=4804%2C5908241 http://news.google.com/newspapers?nid=1350&dat=19741229&id=0sgwAAAAIBAJ&sjid=LQIEAAAAIBAJ&pg=4804%2C5908241]. Accessed on Sept 01, 2014.</ref>
১৯৭৫ এ কয়েকটি দল মিলে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ নামের রাজনৈতিক দল গঠন করে। সংক্ষেপে বাকশাল নামে পরিচিত .এই নতুন ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট সরাসরি নির্বাচিত হবে ,একটি নির্বাচিত সংসদ আইন পাস করতে পারেন,<ref name="টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ Feb. 10, 1975">{{cite news| title = BANGLADESH: The Second Revolution| url = http://content.time.com/time/subscriber/article/0,33009,912808,00.html| format = HTML| work = | publisher = টাইম ম্যাগাজিন ইউএসএ Feb. 10, 1975| id = | pages = | page = | date =Feb. 10, 1975| accessdate = 2014-9-01 | quote = Under the new system, executive powers are vested in the President, who will be elected directly every five years, and in a Council of Ministers appointed by him. Although an elected Parliament can pass legislation, the President has veto power and can dissolve Parliament indefinitely. Parliament may remove the President, however, by a three-fourths vote "for violating the constitution or grave misconduct" as well as for physical or mental Incapacity. The amendment also empowers Mujib to set up a single "national party," thus shutting off any political opposition.}}</ref>
বাকশাল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ৪টি বাদে সকল সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করা হয়। দলটি প্রত্যন্ত জনসাধারণ, কৃষক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেদের বিবেচিত করে রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। দলটি বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করে। সরকারি বাহিনীর সাথে সমর্থকদের নিয়ে গঠিত জাতীয় রক্ষী বাহিনীর সহায়তায় মুজিব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করেন এবং সারাদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন।<ref name="JSTOR" /><ref name="US">{{cite web | last = Country Studies| first = Bangladesh| date = [[2006-09-12]]| url = http://countrystudies.us/bangladesh/19.htm| title = Mujib's fall| format = HTML| accessdate = 2006-09-12}}</ref> রক্ষী বাহিনী এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও রাজনৈতিক হত্যার অভিযোগ ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারীরা মুজিবের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠেন <ref>[http://www.akhonsamoy.com/back/Vol10/102/pages/Page_01.htm Ziaur Rahman informed Sheikh Mujibur Rahman about earlier coup threat]</ref> এবং তাঁর কর্মকাণ্ডকে গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারবিরোধী বলে গণ্য করেন।<ref name = "KF"/> মুজিবের বিরোধীরা অসন্তোষ ও সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে ওঠে।কিন্তু তার এই নীতির ফলে অবস্থা কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং দুর্নীতি,কালোবাজারী এবং অবৈধ মজুদদারি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যায়।
== হত্যাকাণ্ড ==
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে রাষ্ট্রপতির ধানমণ্ডিস্থ বাসভবন ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিব, তাঁর পরিবার এবং তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের হত্যা করে।<ref name="REF" /><ref name = "KF"/> কেবল তাঁর দুই মেয়ে [[শেখ হাসিনা]] ও শেখ রেহানা পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে বেঁচে যান। তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।<ref>{{cite book| last = Frank| first = Katherine| authorlink = Katherine Frank| year= 2002| title = Indira: The Life of Indira Nehru Gandhi| publisher = Houghton Mifflin | location = USA| ISBN = 0-395-73097-X| pages = 389}}</ref> সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সামরিক কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিবের প্রাক্তন সহকর্মী [[খন্দকার মোশতাক আহমেদ]], যিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন.
সংকীর্ন রাজনৈতিক দৃষ্টিভংগীর অধিকারী খন্দকারকে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক,পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ চর বলে ও সন্দেহ করেন । পাকিস্তানের ভুট্টো সরকারই প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছে এই নতুন সরকারকে<ref>টাইম সাময়িকী USA মুজিব।। স্থপতির মৃত্যু ২৫ আগষ্ট ১৯৭৫ Available at: [http://content.time.com/time/subscriber/article/0,33009,913420-2,00.html http://content.time.com/time/subscriber/article/0,33009,913420-2,00.html]. Accessed on Sept 01, 2014.</ref>
২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ তারিখে মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে খন্দকার মোশতাক সরকার ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন এবং জেনারেল জিয়াউর রহমান ও পাকিস্তানপন্থী প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে তার বৈধতা দেয়া হয়। যা ১২ অগাস্ট, ১৯৯৬ তারিখে সংসদে রহিত করা হয়।। সংবাদ মাধ্যমে এ হত্যা কান্ডের ইন্ধনদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সেণ্ট্রাল ইণ্টেলিজেন্স এজেন্সি সিআইএ-কে দায়ী করা হয়।<ref name="CIA">{{cite web | last = | first = Deccan Herald| date = [[2006-07-07]]| url = http://www.deccanherald.com/deccanherald/aug172005/national1941362005816.asp | title = Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman| format = HTML| accessdate = 2006-07-07}}</ref> বাংলাদেশে অবস্থিত তৎকালীন রাষ্ট্রদুত ইউজিন দিয়ে লরেন্স লিফসুল্জ সিআইএ-কে অভ্যুত্থান ও গণহত্যার জন্য দোষারোপ করেন।<ref>Lifschultz L. The long shadow of the August 1975 ''coup''. The Daily Star. Vol. 5 Number 434. Available at: [http://www.thedailystar.net/2005/08/15/d5081501033.htm http://www.thedailystar.net/2005/08/15/d5081501033.htm]. Accessed on June 8, 2007.</ref> তাঁর মরদেহ তাঁর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সামরিক তত্ত্বাবধানে দাফন করা হয়। অন্যান্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মুজিবের মৃত্যু বাংলাদেশকে বহু বছরের রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে টেনে নেয়। সেনাঅভ্যুত্থানের নেতারা অল্পদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ হয়ে যান এবং অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান আর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দেশ অচল হয়ে পড়ে।<ref name="JSTOR" /> ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর আরেকটি সেনা অভ্যুত্থানের ফলশ্রতিতে [[জিয়াউর রহমান|মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান]] ক্ষমতা আসীন হয়।
সেনাঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতা কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমানসহ ১৪ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিরা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন।<ref name="REF" /><ref name = "Trial"/>
== সমালোচনা ও কৃতিত্ব ==
[[চিত্র:Bangabandhu Square Monument.A.M.R.jpg|thumb|right|150px|বঙ্গবন্ধু স্কয়ার ভাস্কর্য]]
কিছু কিছু ঐতিহাসিকদের মতে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভিতরের সংঘাত ও বৈষম্যগুলোকে শেখ মুজিবও তাঁর দল অতিরঞ্জিত করেছিল এবং স্বাধীনতা বাংলাদেশকে শিল্প ও মানবসম্পদের ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন করে।<ref name="BNS">{{cite web | last = Baxter| first = Craig | date = [[2006-07-11]]| url = http://www.questia.com/PM.qst?a=o&d=27169589| title = Bangladesh: From a Nation to a State| format = HTML| accessdate = 2006-07-11
}}</ref> [[সৌদি আরব]] ও [[চীন|চীনা]] সরকার শেখ মুজিবের সমালোচনা করে এবং মুজিবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনেক দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি।<ref name="BNS">{{cite web | last = Baxter| first = Craig | date = ২০০৬-০৭-১১| url = http://www.questia.com/PM.qst?a=o&d=27169589| title = Bangladesh: From a Nation to a State| format = HTML| accessdate = 2006-07-11}}</ref>
অনেক ইতিহাসবিদ মুজিবকে বিদ্রোহে মদদদাতা নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তাঁদের মতে তিনি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে প্ররোচিত করলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় অদক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন।<ref name="JSTOR" /> বাংলাদেশের নেতা হিসেবে শাসনকালে, মুসলিম ধর্মীয় নেতারা মুজিবের তীব্র সমালোচনা করেন তাঁর ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির কারণে। ভারতীয় সরকারের কাছ থেকে ব্যাপক সহযোগিতা গ্রহণ এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও পররাষ্ট্রনীতিতে ভারতের সাথে একাত্মতার কারণে অনেকে মুজিবের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠেন। সমালোচকদের অনেকে আশঙ্কা করেন বাংলাদেশ ভারতের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে একটি স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হবে।<ref name="JSTOR3">{{cite web | last = Rounaq Jahan | first = Bangladesh in 1972: Nation Building in a New State | date = [[2006-07-07]]| url = http://links.jstor.org/sici?sici=0004-4687(197302)13%3A2%3C199%3ABI1NBI%3E2.0.CO%3B2-6| title = Governance | format = HTML| accessdate = 2006-07-07}}</ref> মুজিবের একদলের শাসন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দমন জনগণের একটি বড় অংশের অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতান্ত্রের চর্চাকে দীর্ঘসময়ের জন্য কক্ষচ্যুত করে।<ref name="JSTOR3">{{cite web | last = Rounaq Jahan | first = Bangladesh in 1972: Nation Building in a New State | date = [[2006-07-07]]| url = http://links.jstor.org/sici?sici=0004-4687(197302)13%3A2%3C199%3ABI1NBI%3E2.0.CO%3B2-6| title = Governance | format = HTML| accessdate = 2006-07-07}}</ref>
১৯৯৬ সালে পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পূর্বে মুজিবের মৃত্যুর পরবর্তী সরকারগুলোর মুজিব বিরোধীতার কারণে তাঁর সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়। তাঁর ভাবমূর্তি আবার ফিরে আসে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে ফিরে আসার পর। ১৫ আগস্টকে [[জাতীয় শোক দিবস]] হিসেবে পালন করা হয়। তিনি এখনো আওয়ামী লীগের আদর্শগত প্রতীক হয়ে আছেন এবং দলটি মুজিবের সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা ধারণ করে চলেছে। মুজিব বাংলাদেশ, ভারত ও বিশ্বের বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং পাকিস্তানের গোষ্ঠীগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বাঙালিদের আন্দোলনকে স্বাধীনতার পথে ধাবিত করার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত।<ref name="Trial">{{cite web |last= | first = The Hindu | date = [[2006-07-07]]| url = http://www.hinduonnet.com/fline/fl1524/15240040.htm| title = Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman| format = HTML| accessdate = 2006-07-07}}</ref>
২০০৪ সালে বিবিসি'র বাংলা রেডিও সার্ভিসের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বে যে জরিপ চালানো হয়, তাতে মুজিব ''সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি'' হিসেবে বিবেচিত হন।<ref>Listeners name 'greatest Bengali'. BBC. Retrieved 23-04-2008. http://news.bbc.co.uk/2/hi/south_asia/3623345.stm</ref>
টাইম সাময়িকী ইউএসএ ভাষায় ( ২৫ আগষ্ট ১৯৭৫ মুজিব।। স্থপতির মৃত্যু)
"তাঁর প্রশংসনীয় উদ্যোগঃস্বাধীনতার পরের তিনবছরে ৬০০০ হাজারের ও বেশী রাজনৈতিক হত্যাকান্ড ঘটে । সহিংসতা সারাদেশব্যাপি ছড়িয়ে পরার আশংকা তৈরী হলে মুজিব রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থা ঘোষনা করেন । চরমবাম ও চরম ডানপন্থী সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করা হয়, পত্রিকাগুলোকে নিয়ে আসা হয় সরকারী নিয়ন্ত্রনে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয় ।এ উদ্যোগগুলো বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে গৃহীত হলেও অনেকেই সমালোচনামুখর হয়ে উঠেন । সমালোচকদের উদ্দেশ্যে মুজিব তার স্বভাবসুলভ ভংগীতে বলেনঃ-'ভুলে যেওনা আমি মাত্র তিনবছর সময় পেয়েছি । এই সময়ের মধ্যে তোমরা কোনো দৈব পরিবর্তন আশা করতে পারোনা' ।যদি ও শেষ সময়ে তিনি নিজেই হতাশ ও বিরক্ত হয়ে কোন দৈব পরিবর্তন ঘটানোর জন্য অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলেন ।সন্দেহাতীতভাবেই মুজিবের উদ্দেশ্য ছিলো তার দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়ন ঘটানো । শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত মুজিব একটা 'সোনার বাংলা' গড়তে চেয়েছিলেন, যে 'সোনার বাংলা'র উপমা তিনি পেয়েছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে, ভালোবেসে মুজিব সেই 'সোনার বাংলা'র স্বপ্নকে তার দেশের জাতীয় সংগীত নির্বাচন করেছিলেন ।"
== আত্মজীবনী ==
* অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রকাশকাল : ২০১২, প্রকাশনী : দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড। ইংরেজিতে The Unfinished Memoirs নামে অনূদিত।
== তথ্যসূত্র ==
{{Reflist|2}}
== বহিঃসংযোগ ==
# [http://www.albd.org/bangabandhu/7thmarchspeechb.pdf সাতই মার্চের ভাষণ (বাংলা)]
# [http://www.albd.org/bangabandhu/bangabandhu.htm জীবনী-আওয়ামী লীগের ওয়েব সাইট হতে]
# [http://bangabandhu.net বঙ্গবন্ধু অনলাইন মিউজিয়াম]
{{বাক্স-ছক শুরু}}
{{ধারাবাহিকতা ছক|পদবী=[[বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি]]| পূর্বসূরী=''নেই''|উত্তরসূরী=[[আবু সাঈদ চৌধুরী]]|বছর=[[এপ্রিল ১১]], [[১৯৭১]] – [[জানুয়ারি ১২]], [[১৯৭২]]}}
{{ধারাবাহিকতা ছক|পদবী=[[বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী]]| পূর্বসূরী=[[তাজউদ্দীন আহমেদ]]|উত্তরসূরী=[[মোঃ মনসুর আলী]] |বছর=[[জানুয়ারি ১২]], [[১৯৭২]] - [[জানুয়ারি ২৬]], [[১৯৭৫]]}}
{{বাক্স-ছক শেষ}}
{{বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি}}
{{বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী}}
{{স্নায়ুযুদ্ধের ব্যক্তি}}
{{অসম্পূর্ণ}}
[[বিষয়শ্রেণী:১৯২০-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৭৫-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী]]
[[বিষয়শ্রেণী:আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ]]
[[বিষয়শ্রেণী:জাতির জনক]]
[[বিষয়শ্রেণী:শেখ মুজিবুর রহমান]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি রাজনীতিবিদ]]
{{Link GA|sr}}
|