পরশুরাম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sakkhar21 (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Sakkhar21-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Munirujjaman-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
১৪ নং লাইন:
| Planet =
}}
'''পরশুরাম''' ([[সংস্কৃত]]: परशुराम) [[বিষ্ণু|বিষ্ণুর]] [[দশাবতার|ষষ্ঠ অবতার]]। তিনি [[ত্রেতা যুগ|ত্রেতা যুগে]] বর্তমান ছিলেন। পরশুরামের পিতা [[জমদগ্নি]] [[ব্রাহ্মণ]] হলেও, মা রেণুকা ছিলেন [[ক্ষত্রিয়]]। কঠোর তপস্যা করে তিনি শিবের নিকট হতে [[পরশু]] লাভ করেন এবং যুদ্ধবিদ্যা শেখেন। কথিত আছে, তিনি সমুদ্রের আগ্রাসন থেকে [[কোঙ্কণ]] ও [[মালাবার]] অঞ্চলকে রক্ষা করেছিলেন। এই কারণে কেরল ও কোঙ্কণ উপকূলীয় অঞ্চলকে পরশুরাম ক্ষেত্র বলা হয়। পরশুরাম ছিলেন ব্রহ্মক্ষত্রিয়। তিনিই ছিলেন প্রথম যোদ্ধা সন্ত। তাঁর মা অযোধ্যার সূর্যবংশের সন্তান ছিলেন। উল্লেখ্য, এই বংশেই [[রাম|রামচন্দ্রের]] জন্ম হয়।
==জন্ম==
[[পরশুরাম]] জমদগ্নীর ঔরসে রণুকার গর্ভে জন্মেছিলেন। তাদের পাঁচ পুত্রের মধ্যে [[পরশুরাম]] ছিলেন কনিষ্ঠ। অপর চার পুত্ররা হলেন– বসু, বিশ্ববসু, বৃহদ্ভানু, বৃহত্কণ্ব। উদ্ধত ক্ষত্রিয়দের হাত থেকে ব্রাহ্মণদের রক্ষা করার জন্য [[বিষ্ণু]] [[পরশুরাম]] হিসাবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ভৃগু বংশে জন্ম বলে ইনি ভার্গব নামে পরিচিতি লাভ করেন।
==যুদ্ধবিদ্যা==
কঠোর তপস্যা করে [[পরশুরাম]] শিবের নিকট হতে [[পরশু]] লাভ করেন এবং যুদ্ধবিদ্যা শেখেন। কথিত আছে, তিনি সমুদ্রের আগ্রাসন থেকে [[কোঙ্কণ]] ও [[মালাবার]] অঞ্চলকে রক্ষা করেছিলেন। এই কারণে কেরল ও কোঙ্কণ উপকূলীয় অঞ্চলকে পরশুরাম ক্ষেত্র বলা হয়। পরশুরাম ছিলেন ব্রহ্মক্ষত্রিয়। তিনিই ছিলেন প্রথম যোদ্ধা সন্ত। তাঁর মা অযোধ্যার সূর্যবংশের সন্তান ছিলেন। উল্লেখ্য, এই বংশেই [[রাম|রামচন্দ্রের]] জন্ম হয়।
==মাতৃ হত্যা==
একবার চিত্ররথ নামক রাজাকে সস্ত্রীক জলবিহার করতে দেখে [[পরশুরাম]] এর মা রেণুকা কামার্তা হয়ে পড়েন। জমদগ্নি এই দৃশ্য দেখে, তাঁর পুত্রদেরকে মাতৃহত্যার জন্য আদেশ করেন। তার চার পুত্রের ভিতর একমাত্র [[পরশুরাম]] পিতার আদেশে কুঠার দিয়ে তাঁর মায়ের শিরোশ্ছেদ করেন। এতে জমদগ্নি খুশি হয়ে [[পরশুরাম|পরশুরামকে]] বর প্রার্থনা করতে বললে– [[পরশুরাম]] মায়ের পুনর্জন্ম, মাতৃহত্যাজনিত পাপ এবং মাতৃহত্যা স্মৃতি বিস্মৃত হওয়া, ভাইদের জড়ত্বমুক্তি, নিজের দীর্ঘায়ু ও অজেয়ত্ব লাভের বর প্রার্থনা করেন। জমদগ্নি তাঁকে সেই বরই প্রদান করেন। মাতৃহত্যাজনিত পাপে, [[পরশুরাম]] এর হাত কুঠার এর হাতের সাথে সংযুক্ত হয়ে গিয়েছিল। ব্রহ্মকুণ্ডে স্নান করার পর, তাঁর হাত থেকে এই কুঠার বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। পরে [[পরশুরাম]] মানুষের কল্যাণের জন্য ব্রহ্মকুণ্ডের জল মুক্ত করে দেন। এই প্রবাহিত জলই পরবর্তী সময়ে [[ব্রহ্মপুত্র]] নামে পরিচিতি লাভ করে। এরপর একদিন জমদগ্নির পুত্রদের অনুপস্থিতিতে, কার্তবীর্য আশ্রমে এসে হেমধেনুর বাছুর অপহরণ করে এবং আশ্রম তছনছ করে। পরশুরাম ফিরে এসে এই ঘটনা শুনে কার্তবীর্যকে অনুসরণ করে আক্রমণ করেন এবং ভল্লের আঘাত কার্তবীর্যকে হত্যা করেন। এর ফলে কার্তবীর্যের পুত্ররা পুনরায় আশ্রমে হানা দিয়ে তপোমগ্ন জমদগ্নিকে হত্যা করে।<ref>http://www.onushilon.org/myth/hindu/paromp.htm#পরশুরাম-পৌ</ref>
==মহাভারতে পরশুরাম==
[[ভীষ্ম]] ও দ্রোণ [[পরশুরাম|পরশুরামের]] কাছে অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করেন। তাঁর ভাই বিচিত্রবীর্যের বিবাহের জন্য, কাশীরাজ এর তিন কন্যাকে (অম্বা, অম্বিকা ও অম্বালিকা) ভীষ্ম স্বয়ংবর সভা থেকে অপহরণ করেন। এর ভিতর ঘটনাক্রমে অম্বা [[ভীষ্ম]]কে জানান যে- ইনি পূর্বেই শাম্বরাজকে মনে মনে পতিত্বে বরণ করেছেন। [[ভীষ্ম]] অম্বাকে শাম্ববরাজের কাছে যাবার অনুমতি দিলেও, অপহৃতা কন্যা বলে শাম্বরাজ তাঁকে প্রত্যাখান করেন। এরপর অম্বা [[ভীষ্ম|ভীষ্মের]] কাছে ফিরে এসে তাঁকে বিবাহ করতে অনুরোধ করলে, [[ভীষ্ম]] তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর অম্বা [[পরশুরাম|পরশুরামের]] শরণাপন্ন হন। [[পরশুরাম]] এসে [[ভীষ্ম|ভীষ্মকে]] এই বিয়েতে রাজী করাতে ব্যর্থ হলে, [পরশুরাম|পরশুরামের]] সাথে [[ভীষ্ম|ভীষ্মের]] ঘোরতর যুদ্ধ হয়। বহুদিন যুদ্ধের পরও [[পরশুরাম]] [[ভীষ্ম|ভীষ্মকে]] পরাজিত করতে অসমর্থ হয়ে পুনরায় মহেন্দ্র পর্বতে ফিরে যান এবং অস্ত্রলাভের জন্য মহাদেবের তপস্যা করেন। তপস্যায় খুশি হয়ে মহাদেব [[পরশুরাম|পরশুরামকে]] জগতের কল্যাণের জন্য ও মহাদেবের সন্তুষ্টির জন্য দেব-শত্রুদের ধ্বংস করার আশীর্বাদ প্রদান করেন। এরপর তিনি মহাদেবের আজ্ঞায় বহু দানব হত্যা করেন। সে কারণে, মহাদেব তুষ্ট হয়ে তাঁকে পরশু নামক অস্ত্র দান করেন। নীচ জাতীয় পুরুষ বিবেচনায় দ্রৌণাচার্য কর্ণকে শিষ্য হিসাবে গ্রহণ না করায়, ইনি ব্রাহ্মণের বেশে পরশুরামের কাছে ব্রহ্মাস্ত্র শিক্ষার জন্য যান। একবার [[পরশুরাম]] [[কর্ণ|কর্ণের]] উরুতে মাথা রেখে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় [[কর্ণ|কর্ণকে]] অলর্ক কীট আক্রমণ করে। গুরুর ঘুম ভেঙে যাবার ভয়ে [[কর্ণ]] যন্ত্রণা নিরবে সহ্য করতে থাকেন। পরে [[পরশুরাম]] ঘুম ভেঙে উঠে সকল বিষয় দেখে এবং [[কর্ণ|কর্ণের]] কষ্ট সহিষ্ণুতা লক্ষ্য করে তাঁর প্রকৃত পরিচয় জানতে চান। অবশেষে [[কর্ণ]] ব্রাহ্মণ নয় জেনে এবং গুরুকে প্রতারণা করার জন্য অভিশাপ দিয়ে বললেন যে, কপট উপায়ে ব্রহ্মাস্ত্র লাভের জন্য কার্যকালে কর্ণ এই অস্ত্রের কথা ভুলে যাবেন।<ref>http://www.ebanglalibrary.com/mahabharata/?p=381</ref>
==শেষ জীবন==
রামায়ণে আছে- বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের মৃত্যুর পূর্বেই সপ্তম অবতার [[রাম|রামের]] জন্ম হয়। রামচন্দ্রের হরধনু ভঙ্গের পর সীতাসহ যখন অযোধ্যায় ফিরে আসছিলেন, তখন [[পরশুরাম]] হরধনু ভঙ্গের সংবাদ লোকমুখে শুনতে পান। এতে ইনি রাগান্বিত হয়ে [[রাম|রামের]] মুখোমুখি হন এবং গর্বের সাথে বলেন যে- তাঁর কাছে বৈষ্ণব ধনু আছে এবং এই বৈষ্ণব ধনু ভঙ্গ করে প্রকৃত বীরত্ব দেখানোর জন্য [[রাম|রামকে]] আহ্বান করেন। একই সাথে তিনি বলেন যে- [[রাম]] এতে অসমর্থ হলে- তাঁর সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে। রাম পরশুরামের কাছ থেকে বৈষ্ণব ধনু নিয়ে পরশুরামের তপস্যার্জিত সমস্ত লোক বিনষ্ট করেন। ফলে পরশুরামের তেজ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এরপর ইনি নির্বীর্য হয়ে রামচন্দ্রকে পূজা ও প্রদক্ষিণ করে, আবার মহেন্দ্র পর্বতে ফিরে যান।
== পাদটীকা ==
{{reflist}}
 
{{মহাভারত}}
{{বাংলা ভাষায় মহাভারত অনুবাদক}}
{{হিন্দু মহাকাব্য}}
[[বিষয়শ্রেণী:হিন্দু পৌরাণিক চরিত্র]]
 
[[বিষয়শ্রেণী:বিষ্ণুর রূপভেদ]]