উসুলে ফিকহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ibrahim Husain Meraj ব্যবহারকারী উসুলে ফিকহ পাতাটিকে উসুল আল ফিকহ শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন: সঠিক বানান
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
{{Usul al-fiqh}}
'''উসুলেউসুল আল ফিকহ''' ({{lang-ar|أصول الفقه}}) (আক্ষরিকভাবে: ''আইনি তত্ত্ব''<ref>Hallaq,Wael Sharī'a: Theory, Practice, Transformations, p.73</ref> or ''আইনশাস্ত্রের মূলনীতি'') উত্স, সূত্র এবং নীতিমালার উপর গবেষণা যার উপর ভিত্তি করে [[ইসলামী আইনশাস্ত্র]] (বা ফিকহ) প্রতিষ্ঠিত। সরু অর্থে, এটা কেবল ইসলামী আইন উৎস কি প্রশ্নটি বোঝায়। বর্ধিত অর্থে, এটি আইনের দার্শনিক যুক্তিপূর্ণ ও পদ্ধতি অধ্যয়নের অন্তর্ভুক্ত যার দ্বারা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন উত্স থেকে পাওয়া যায়।
 
উসুলে ফিকহের== সংজ্ঞা ও আলোচ্য বিষয়ঃবিষয় ==
উসুল আল ফিকহের সংজ্ঞা গবেষক আলেমগন দুই ভাবে প্রদান করেছেন। [[শাফী মাজহাব|শাফী মাজহাবের]] আলেমদের মতে, “ফিকহ শাস্ত্রের দলিল-প্রমান জানা, দলিল-প্রমান থেকে মাসালা উদ্ঘাটন করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা, বান্দার অবস্থা জানার ইলমের নাম উসুলে ফিকহ”। দ্বিতীয় সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে [[মালিকি]], [[হানাফি]] ও [[হামবালি]] মাজহাবের আলেমদের মাধ্যমে। তাদের মতে, “উসুলে ফিকাহ সেই সকল মুলনীতির নাম যার মাধ্যমে [[শরিয়াত|শরিয়াতের]] বিস্তারিত উতস থেকে হুকুম-আহকাম উদ্ঘাটন করা যায়”।
 
হানাফি আলেমদের মতে উসুলেউসুল আল ফিকহের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শারিয়াতেরশরিয়াতের হুকুম-আহকাম অর্থাৎ [[ওয়াজিব]], [[মুস্তাহাব]], [[হারাম]], [[মাকরুহ]], মুবাহ।[[মুবাহ]]। হানাফি মাজহাবের আরেকদল আলেমের মতে আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শারিয়াতেরশরিয়াতের দলিল-প্রমান যার মাধ্যমে হুকুম-আহকাম সাব্যস্ত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে অধিকাংশ আলেমের মতে আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শারিয়াতেরশরিয়াতের দলিল-প্রমান বা উৎসের প্রকার, তাদের তারতম্য বা স্তর, এই উতসউৎস থেকে হুকুম উদ্ঘাটন বা ইসতিমবাত করার পদ্ধতি। এবংউসুল উসুলেআল ফিকহের প্রকৃতির দিকে খেয়াল করে বলা যায় যে, এই তৃতীয় মতটাই অধিক গ্রহনযোগ্য। এর উদাহরন হিসাবে উল্লেখ করা যায় যে, উসুলবিদ এই আলোচনা করে থাকেন যে, সামনে উল্লেখিত আয়াতে বর্নিত “আমর” উজুবের অর্থ সাব্যস্ত করেঃ
 
আবারউসুল কখনোআল তারা আলোচনা করেন যে, “মুমিনুন” আম শব্দটি ইমানদার বলতে যত মানুষ আছেন তাদের সবাইকে বুঝিয়ে থাকে, (রাকাবাহ) এই মুতলাক শব্দটি যে কোন রাকাবার অর্থকেই অন্তর্ভুক্ত করে, এখানে ইমানের শর্ত অন্তর্ভুক্ত করে না। এই ধরনের মুলনীতি ব্যাপক মুলনীতি, প্রথম প্রকারের মুলনীতির মত বিশেষ কোন অবস্থার সাথে সীমাবদ্ধ না। তাই দেখা যায় যে, উসুলে ফিকহার কিতাবেফিকহতে সাধারনত শারয়িশরয়তি হুকুম, হাকিম, মাহকুম-আলাইহি, মাহকুম-ফিহ, শারিয়াতেরশরিয়াতের মূল ও আনুসংগিকআনুসঙ্গিক (মুত্তাকাফ-মুখতালাফ ফিহ) উতসউৎস, উৎসের প্রামানিকতা, সেখান থেকে মাসালা ইসতিমবাত করার শর্তাবলী, মাসালা ইসতিমবাত করার পদ্ধতি অর্থাৎ ভাষা ভিত্তিক মুলনীতিমূলনীতি, নসুসের মুলনীতিমূলনীতি, ইজতিহাদ-তাকলিদ, মুজতাহিদ-মুকাল্লিদ, এদের অবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকে। শারিয়াতেরশরিয়াতের মৌলিক উতসউৎস হচ্ছেঃ কুরান[[কুরআন]], [[হাদিস]], [[ইজমা]], [[কিয়াস]] আর অমৌলিক উতসউৎস হচ্ছে একাধিক তবে প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে সাতটি যথাঃ মাসালিহে মুরসালা, ইসতিহসান, উ’রফ, সাহাবীর বক্তব্য, পুর্ব্বর্তীপুর্ববর্তী শারিয়াতশরিয়াত, সাদ্দে-যারাইয় ও ইসতিসহাব। আর ফিকাহের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কুরান-হাদিসের মাধ্যমে প্রমানিত বান্দার আমল, অর্থাৎ [[নামাজ]], [[রোজা]], [[যাকাত]] ইত্যাদি।
 
<!--উসুলে ফিকহঃ পরিচয়, ইতিহাস ও ধারা
১৪ ⟶ ২১ নং লাইন:
(আলোচনাটি তৈরীতে “তারিখে ইলমে উসুলিল ফিকহ – ডঃ তাহির আল-আতবানী” ও “উসুলুল ফিকহ ওয়া মাদারিসুল বাহসি ফিহি- ডাঃ ওয়বাহ জুহাইলি” প্রবন্ধ থেকে সাহায্য নেওয়া হয়েছে)
 
অর্থাৎ ফিকাহ শাস্ত্রের দলিল-প্রমান জানা অর্থ এই বিষয় জানা যে, কুরান-হাদিস, ইজমা-কিয়াসের মাধ্যমে শারিয়াতেরশরিয়াতের বিধান সাব্যস্ত হয়, শারিয়াতেরশরিয়াতের নসুস বা ভাষ্যে উল্লেখিত “আমর” ওয়জিবের জন্যে, “নাহি” তাহরিমের জন্যে – যদি এই আমর-নাহীর সাথে অন্যে কোন আলামাত যুক্ত না হয়। নসুসের “আম” শব্দের মাধ্যমে তার সকল সদস্যকে বুঝানো হয় –তাতে “তাখসিস” না হলে ইত্যাদি বিষয় বুঝানো হয়েছে।
উসুলে ফিকহের সংজ্ঞা ও আলোচ্য বিষয়ঃ
উসুলে ফিকহের সংজ্ঞা গবেষক আলেমগন দুই ভাবে প্রদান করেছেন। শাফী মাজহাবের আলেমদের মতেঃ
هو معرفة دلائل الفقه إجمالاً، وكيفية الاستفادة منها، وحال المستفيد
অর্থঃ “ফিকহ শাস্ত্রের দলিল-প্রমান জানা, দলিল-প্রমান থেকে মাসালা উদ্ঘাটন করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা, বান্দার অবস্থা জানার ইলমের নাম উসুলে ফিকহ”।
অর্থাৎ ফিকাহ শাস্ত্রের দলিল-প্রমান জানা অর্থ এই বিষয় জানা যে, কুরান-হাদিস, ইজমা-কিয়াসের মাধ্যমে শারিয়াতের বিধান সাব্যস্ত হয়, শারিয়াতের নসুস বা ভাষ্যে উল্লেখিত “আমর” ওয়জিবের জন্যে, “নাহি” তাহরিমের জন্যে – যদি এই আমর-নাহীর সাথে অন্যে কোন আলামাত যুক্ত না হয়। নসুসের “আম” শব্দের মাধ্যমে তার সকল সদস্যকে বুঝানো হয় –তাতে “তাখসিস” না হলে ইত্যাদি বিষয় বুঝানো হয়েছে।
 
দলিল-প্রমান থেকে মাসালা উদ্ঘাটন করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা এর মাধ্যমে এই দিকে ইংগিত করা হয়েছে যে, এই সমস্ত দলিল-প্রমান থেকে কিভাবে শারিয়াতেরশরিয়াতের প্রয়োগিক মাসালা উদ্ঘাটন করতে হয় তার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। সুতরাং ইসতিদলাল-ইসতিমবাত সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে, যেমন “নস” “জাহিরের” উপর প্রাধান্য পাবে, “মুতাওয়তির” “আহাদের” উপর প্রাধান্য পাবে ইত্যাদি।
 
বান্দার অবস্থা জানা, অর্থাৎ বান্দা মুজতাহিদ হলে তার কি শর্ত আর মুজতাহিদ না হয়ে মুকাল্লিদ হলে তার কি শর্ত এই সকল শর্ত নিয়ে এই শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ কখন একজন মুজতাহিদের ইজতিহাদ করা মাসায়িল আমাদের জন্যে বা মুকাল্লিদের জন্যে অনুসরন করা অপরিহার্য হবে ইত্যাতি বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা হয়ে থাকে।
সুতরাং উসুলে ফিকহের সংজ্ঞা হবে “ফিকাহ শাস্ত্রের দলিল-প্রমান সম্পর্কে জানা, এরপর সেই দলিল-প্রমান থেকে হুকুম-আহকাম উদ্ঘাটন করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা এবং কারা মাসায়া উদ্ঘাটন করতে পারবে বা কাদের উদ্ঘাটন করা মাসালা সাধারন মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য হবে সেই সম্পর্কে জানা”।
 
প্রথমে বলেছিলাম যে, উসুলে ফিকহের সংজ্ঞা দুইভাবে প্রদান করা হয়েছে। প্রথম সংজ্ঞা ইতিপুর্বে উল্লেখ করেছি, এবার দেখি দ্বিতীয় সংজ্ঞা কিভাবে প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে মালিকি, হানাফি ও হামবালি মাজহাবের আলেমদের মাধ্যমে। তাদের মতেঃ
 
هو القواعد التي يوصل البحث فيها إلى استنباط الأحكام من أدلتها التفصيلية، أو هو العلم بهذه القواعد
অর্থঃ “উসুলে ফিকাহ সেই সকল মুলনীতির নাম যার মাধ্যমে শারিয়াতের বিস্তারিত উতস থেকে হুকুম-আহকাম উদ্ঘাটন করা যায়”।
 
এই সংজ্ঞার মাধ্যমে এই দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, একজন উসুলবিদ কোন বিশেষ নস বা নসের ইসতিদলাল নিয়ে আলোচনা করেন না। অর্থাৎ উসুলবিদের আলোচনাতেই এই প্রসংগ আসবে না যেঃ
৪০ ⟶ ৪২ নং লাইন:
 
উসুলে ফিকহের আলোচ্য বিষয়ঃ
 
হানাফি আলেমদের মতে উসুলে ফিকহের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শারিয়াতের হুকুম-আহকাম অর্থাৎ ওয়াজিব, মুস্তাহাব, হারাম, মাকরুহ, মুবাহ। হানাফি মাজহাবের আরেকদল আলেমের মতে আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শারিয়াতের দলিল-প্রমান যার মাধ্যমে হুকুম-আহকাম সাব্যস্ত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে অধিকাংশ আলেমের মতে আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শারিয়াতের দলিল-প্রমান বা উৎসের প্রকার, তাদের তারতম্য বা স্তর, এই উতস থেকে হুকুম উদ্ঘাটন বা ইসতিমবাত করার পদ্ধতি। এবং উসুলে ফিকহের প্রকৃতির দিকে খেয়াল করে বলা যায় যে, এই তৃতীয় মতটাই অধিক গ্রহনযোগ্য। এর উদাহরন হিসাবে উল্লেখ করা যায় যে, উসুলবিদ এই আলোচনা করে থাকেন যে, সামনে উল্লেখিত আয়াতে বর্নিত “আমর” উজুবের অর্থ সাব্যস্ত করেঃ
{وأقيموا الصلاة}
অর্থঃ কারন এখানে আমরের মৌলিক অর্থের সাথে অন্য কোন আলামত যুক্ত হয়নি। দ্বিতীয় উদাহরনঃ সামনের আয়াতে বর্নিত “নাহি” হুরমাতের অর্থ প্রদান করছে, কারন এখানেও নাহির মুল অর্থের সাথে অন্য কোন আলামাত যুক্ত হয়নি।
{ولا تقتلوا النفس}
আবার কখনো তারা আলোচনা করেন যে, “মুমিনুন” আম শব্দটি ইমানদার বলতে যত মানুষ আছেন তাদের সবাইকে বুঝিয়ে থাকে, (রাকাবাহ) এই মুতলাক শব্দটি যে কোন রাকাবার অর্থকেই অন্তর্ভুক্ত করে, এখানে ইমানের শর্ত অন্তর্ভুক্ত করে না। এই ধরনের মুলনীতি ব্যাপক মুলনীতি, প্রথম প্রকারের মুলনীতির মত বিশেষ কোন অবস্থার সাথে সীমাবদ্ধ না। তাই দেখা যায় যে, উসুলে ফিকহার কিতাবে সাধারনত শারয়ি হুকুম, হাকিম, মাহকুম-আলাইহি, মাহকুম-ফিহ, শারিয়াতের মূল ও আনুসংগিক (মুত্তাকাফ-মুখতালাফ ফিহ) উতস, উৎসের প্রামানিকতা, সেখান থেকে মাসালা ইসতিমবাত করার শর্তাবলী, মাসালা ইসতিমবাত করার পদ্ধতি অর্থাৎ ভাষা ভিত্তিক মুলনীতি, নসুসের মুলনীতি, ইজতিহাদ-তাকলিদ, মুজতাহিদ-মুকাল্লিদ, এদের অবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকে। শারিয়াতের মৌলিক উতস হচ্ছেঃ কুরান, হাদিস, ইজমা, কিয়াস আর অমৌলিক উতস হচ্ছে একাধিক তবে প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে সাতটি যথাঃ মাসালিহে মুরসালা, ইসতিহসান, উ’রফ, সাহাবীর বক্তব্য, পুর্ব্বর্তী শারিয়াত, সাদ্দে-যারাইয় ও ইসতিসহাব। আর ফিকাহের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কুরান-হাদিসের মাধ্যমে প্রমানিত বান্দার আমল, অর্থাৎ নামাজ, রোজা, যাকাত ইত্যাদি।
 
উসুলে ফিকহের উতস মুলঃ