ফুসফুস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
Chhondo (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৫ নং লাইন:
 
== শ্বাসপ্রশ্বাস সংক্রান্ত কাজ ==
অ্যারোবিক রেসপিরেশন দ্বারা শক্তি উৎপাদনে অক্সিজেন প্রয়োজন এবং উপজাত হিসাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। ফলে কার্যকরভাবে কোষে অক্সিজেন সরবরাহ এবং [[কোষ]] হতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিষ্কাশন করার প্রযোজনীয়তা তৈরি হয়। ক্ষুদ্রজীবে, যেমন এককোষী ব্যাকটেরিয়ায়[[ব্যাকটেরিয়া]]য়, এই বায়ু বিনিময় পদ্ধতি পুরোপুরিভাবে সরল ব্যপনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বৃহৎ জীবে যা সম্ভব নয়, কারণ বায়ুমন্ডল হতে ব্যপনের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করার জন্য ক্ষুদ্র একটি অংশই মাত্র তার বহিরাবরনের নিকটে থাকে। দুটি প্রধান অভিযোজন জীবের জন্য বহুকোষীয়তা অর্জন সম্ভব করেছে: একটি কার্যকারী সংবহনতন্ত্র (circulatory system) যা দেহের গভীরতম কলাসমূহে রক্তের মাধ্যমে গ্যাসের আদান প্রদান করে, এবং একটি বৃহৎ অভ্যন্তরীণায়ীত শ্বসনতন্ত্র (respiratory system) যা বায়ুমন্ডল হতে অক্সিজেন আহরন করে দেহে সর্বরাহ করার কাজকে কেন্দ্রীভূত করে, যেখান থেকে একে দ্রুত সংবহনতন্ত্রে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
 
বায়ু-শ্বাসী মেরুদন্ডীদের শ্বাসপ্রশ্বাস একটি ধারাবাহিক পর্যায়ে সম্পন্ন হয়। বায়ু শ্বাসনালীর[[শ্বাসনালী]]র মাধ্যমে প্রাণীর ভেতরে প্রবেশ করে- যা সরিসৃপ, পাখী এবং স্তন্যপায়ী প্রানীর ক্ষেত্রে প্রায়শ নাক, [[অন্ননালী|ফ্যারিংক্স]], ল্যারিংক্স, [[ট্রাকিয়া]] (বায়ুনালীও বলা হয়), ব্রাংকাই ও ব্রাংকিওল; এবং শ্বসন বৃক্ষের (respiratory tree) প্রান্তিক প্রশাখা সমূহ দ্বারা গঠিত। স্তন্যপায়ী প্রানীর ফুসফুসগুলো প্রচুর অ্যালভিওলাইয়ের দ্বারা গঠিত, যা বায়ু বিনিময়ের জন্য বৃহৎ পৃষ্ঠতল সরবরাহ করে থাকে। অ্যালভিওলাইয়ের পৃষ্ঠদেশের উপরে সূক্ষ কৌশিকনালীর একটি জালিকার ভেতর দিয়ে রক্ত চলাচল করে। বায়ু হতে প্রাপ্ত অক্সিজেন অ্যালভিওলাইয়ের ভিতরে রক্তপ্রবাহে ব্যপিত হয়, এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড রক্ত হতে অ্যালভিওলাইয়ে ব্যপিত হয়, উভয়ই পাতলা অ্যালভিওলিয় পর্দার (alveolar membrane) ভেতর দিয়ে সম্পন্ন হয়।
 
বায়ু টানা এবং ছাড়া ঘটে থাকে পেশীর দ্বারা; আদিযুগের চতুশ্পদ্বীদের ক্ষেত্রে, ফুসফুসে বায়ু টেনে নিত ফ্যারিন্জিয় পেশী, পক্ষান্তরে সরীসৃপ, পাখী এবং স্তন্যপায়ীরা আরও জটিল পেশীকংকালতন্ত্র ব্যবহার করে। স্তন্যপায়ীতে একটি বড় পেশী, মদ্ধোচ্ছদা[[মধ্যচ্ছদা|ডায়াফ্রাম]] (তদুপরি অন্তস্থঃ আন্তঃপাজরীয় পেশীসমূহ), বায়ু চলাচল চালায় পর্যায়ক্রমিকভাবে আন্তঃবক্ষীয় (intra-thoracic) আয়তন ও চাপ পরিবর্তনের মাধ্যমে; আয়তনের বৃদ্ধি ঘটালে এবং সেকারনে ভেতরের চাপ কমে গিয়ে বায়ুপথ দিয়ে বায়ু ভিতরে প্রবেশ করে, এবং আয়তন হ্রাস ও চাপ বাড়িয়ে এর বিপরীত ঘটনা ঘটান হয়। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসে, শ্বাসত্যাগ একটা অক্রিয় ঘটনা যেখানে কোন পেশী সংকোচন হয় না (মদ্ধোচ্ছদা শিথিল থাকে)।
 
এই বায়ু টেনে নেওয়া এবং ছাড়ার আরেক নাম বায়ুচলন (ventilation)। সর্বোচ্চ পরিমাণ বায়ু টেনে নেওয়ার পর সর্বোচ্চ যে পরিমাণ বায়ু একজন ব্যক্তি নৃঃসৃতনিঃসৃত করতে পারে তাকে অপরিহার্য ধারনক্ষমতা (Vital capacity) বলা হয়। একজন ব্যক্তির অপরিহার্য ধারনক্ষমতা স্পাইরোমিটারের (spirometry) সাহায্যে নির্ণয় করা যায়। অন্যান্য শরীরবৃত্ত্বিয় পরিমাপের সমন্নয়ে, অপরিহার্য ধারনক্ষমতা ফুসফুসের রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে।
 
== শ্বাসপ্রশ্বাস ছাড়া অন্যান্য কাজ ==
বায়ু বিনিময় ও হাইড্রজেন আয়ন ঘনত্ব নিয়ন্ত্রনের মত শ্বাসপ্রশ্বাস সংক্রান্ত কাজ ছাড়াও ফুসফুস আরও যেসকল কাজ করে থাকে সেগুলো হলো:
* ধমনীয়[[ধমনী]]য় রক্তে ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত ‘প্রানীদেহে কার্যকর সক্রিয় বস্তু’ ও ‘ঔষধ-উপাদানের ঘণত্ব’ প্রভাবিত করে।
* শিরায়[[শিরা]]য় তৈরি হওয়া ছোট [[রক্ত]] পিন্ড অপসারন করে।
* হৃৎপিন্ডের প্রতিরক্ষার জন্য নরম, ঘাতসহ স্তর হিসাবে ব্যবহৃত হয়, যা প্রায় চারপাশে হতে হৃৎপিন্ডকে[[হৃৎপিন্ড]]কে ঘিরে থাকে।
== স্তন্যপায়ীর ফুসফুস ==
স্তন্যপায়ীর ফুসফুসের বুনট স্পঞ্জের মত এবং এপিথেলিয়ামের স্তর দ্বারা গঠিত এর কুন্চিত অন্তস্থঃতল বহিস্থঃতল অপেক্ষা অনেক বড়। মানুষের ফুসফুস এজাতীয় ফুসফুসের প্রতিনিধিত্বকারী।
২৪ নং লাইন:
 
== এ্যানাটমী ==
মানবদেহে [[শ্বাসনালী|ট্রাকিয়া]] দুই ভাগ হয়ে দুটি প্রধান ব্রংকাই গঠন করেছে যা ফুসফুসদ্বয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছে। ফুসফুসের ভেতর ব্রংকাই আরো বহুবার বিভক্ত হয়ে ব্রংকিওল গঠন করে। ব্রংকিয়াল ট্রি আরও বিভক্ত হয়ে টারমিনাল ব্রংকিওলে গিয়ে শেষ হয়, যা অ্যালভিওলার স্যাকের সাথে যুক্ত। প্রতিটি অ্যালভিওলার স্যাক আঙ্গুরের ঝোপার মত অ্যালভিওলাইয়ের গুচ্ছের সমন্নয়ে গঠিত। প্রতিটি অ্যালভিওলাই রক্তনালীর দ্বারা আষ্টেপৃষ্ঠে মোরানো থাকে এবং প্রকৃতপক্ষে এখানেই গ্যাস বিনিময় হয়ে থাকে। অক্সিজেনশূন্য রক্ত হৃৎপিন্ড হতে পালমোনারী ধমনীর মধ্য দিয়ে ফুসফুসে সঞ্চালিত হয়, যেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইডের বিনিময়ে অক্সিজেন রক্তের[[লোহিত ইরাথ্রসাইটেররক্তকণিকা]]র হিমোগ্লবিনে ব্যপিত হয়। অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত পালমোনারী শিরার মধ্য দিয়ে হৃৎপিন্ডে পৌছে এবং সেখান হতে তা সিস্টেমিক সারকুলেশনে (তান্ত্রিক রক্তসঞ্চালন) সঞ্চালিত হয়।
 
[[চিত্র:Illu bronchi lungs.jpg|thumbnail|[[ব্রংকাই]], ব্রংকিয়াল ট্রি, এবং ফুসফুস. (নিচে বাঁমদিকে হৃৎপিন্ডিয় খাজ দেখান হয়েছে।)|350px]]
মানব ফুসফুস হৃৎপিন্ডের দুপাশে অবস্থিত।অবস্থিত যা [[প্লুরা]] পর্দা দ্বারা আবৃত। এক রকম দেখতে হলেও, ফুসফুস দুটি হুবহু অনুরুপ নয়। উভয়ই কতগুলো লোব-এ বিভক্ত, ডানে তিনটি এবং বামে দুটি। প্রতিটি লোব কতগুলো লোবিউলে বিভক্ত, যা খালি চোখে দৃষ্টিগোচর ফুসফুসের খুদ্রতম ষড়ভুজাকৃতি অংশ। ধুমপায়ী ও শহুরে মানুষদের লোবিউলকে বিভক্তকারী কানেক্টিভ টিস্যু (যোজক কলা) প্রায়শ কালচে রং ধারন করে। ডান ফুসফুসের মধ্যবর্তী সীমারেখা প্রায় উল্লম্ব, যেখানে বাম ফুসফুসে একটি কার্ডিয়াক নচ (হৃদ খাঁজ) থাকে। কার্ডিয়াক নচ হলো হৃৎপিন্ডের আকার অনুযায়ী তাকে ধারন করার উপযোগী একটি অবতল জায়গা। ফুসফুসগুলো ক্ষেত্র বিশেষে “অতিগঠিত” এবং এদের সংরক্ষিত আয়তন বিশ্রামাবস্থায় নির্ধারীত অক্সিজেন বিনিময়ের আয়তন হতে অনেক বেশী। এ কারণেই ফুসফুসের ক্ষমতা লক্ষণীয়ভাবে না কুমেওকমেও কোন ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধুমপান করে যেতে পারেন। এধরনের ক্ষেত্রে ফুসফুসের একটি ক্ষুদ্র অংশেই গ্যাস বিনিময়ের জন্য রক্ত সরবরাহ হয়ে থাকে। ব্যায়ামের ফলে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেলে, ফুসফুসের অপেক্ষাকৃত বৃহৎ অংশে রক্ত সরবহৃত হয়, যা শরীরের প্রয়োজনীয় CO2/O2 বিনিময়কে সম্ভব করে তোলে।
 
ফুসফুসের অন্তর্ভাগ অতন্ত আর্দ্র, যা ব্যাক্টেরিয়ার বৃদ্ধিতে উপযোগী। অনেক শ্বাসতান্ত্রীক অসুস্থতার জন্য ফুসফুসের এই ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত প্রদাহ দায়ী।