আসাম আন্দোলন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Cat+ Ref+
২ নং লাইন:
==ইতিহাস==
১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের সময় বহুসংখ্যক মানুষ [[ভারত]] তথা [[অসম|অসমে]] আশ্রয় নিয়েছিল। [[বাংলাদেশ]] স্বাধীন হওয়ার পর অনেকে বাংলাদেশ ফিরে গেলেও অনেকে এখানেই থেকে যান। ১৯৭৮ সালে প্রথমবার অনুপ্রবেশকারীর সমস্যা অসমের স্থানীয় লোকের দৃষ্টি আকর্ষন করে। ১৯৭৮ সালের ২৮ মার্চে লোকসভার সদস্য হীরালাল পাটোয়ারীর মৃত্যুর ফলে মঙ্গলদৈ লোকসভা সমষ্টিতে উপ-নির্বাচনের প্রয়োজন হয়। ১৯৭৮ সনের ২৭ এপ্রিল ভোটার তালিকা সংশোধন কার্যে জানা যায় যে মঙ্গলদৈ সমষ্টিতে ৪৫০০০ সন্দেহযুক্ত বাংলাদেশী ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত আছে।<ref name=barua>সংক্ষিপ্ত অসমীয়া বিশ্বকোষ (প্ৰথম খণ্ড), শান্তনু কৌশিক বরুয়া</ref> ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে [[সদৌ অসম ছাত্র সংস্থা|সদৌ অসম ছাত্র সংস্থার]] সভায় [[প্রফুল্ল কুমার মহন্ত]] ও [[ভৃগু কুমার ফুকন]] ক্রমে সভাপতি ও সম্পাদকের পদে নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালের ২৭ জুন সদৌ [[সদৌ অসম ছাত্র সংস্থা|সদৌ অসম ছাত্র সংস্থার]] নেতৃত্বে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপ্রবেশকারীর সমস্যার সমন্ধে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। উক্ত সভায় জাতীয়তাবাদী দল অসমে অনুপ্রবেশকারীর সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অসমে নির্বাচন বন্ধ করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান।<ref name=barua/> [[সদৌ অসম ছাত্র সংস্থা]] “বিদেশী বহিস্কারের” দাবিতে আন্দোলন করার সিন্ধান্ত নেয়। ফলে ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শ্রেণী বর্জন ও ধর্ণা কার্যসূচী পালন করা হয়। অন্যদিকে মুখ্য নির্বাচন আয়োগ ১৯৭৮ সালের ভোটার তালিকা মতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য আদেশ দেন। বিদেশী অন্তর্ভুক্ত তালিকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য অসমের স্থানীয় ব্যক্তিরা ক্ষিপ্ত হয় ও হিংসাত্মক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ১৯৮০ সালের ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনে আবেদেনকারী প্রার্থীকে বাধা দেওয়ার ফলে ভবানীপুরে খড়্গেশ্বর তালুকদারের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি ছিলেন অসম আন্দোলনের প্রথম শহীদ।<ref name=barua/> অসম আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ্র ও তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী [[ইন্দিরা গান্ধী]] এই সমন্ধে একটি আলোচনা সভার আ্য়োজন করেছিলেন। আন্দোলনকারীরা ১৯৫১ সালের ভোটের তালিকাকে ভিত্তি করে বিদেশী বহিস্কারের দাবি জানায় কিন্তু ভারত সরকার ১৯৬৬ সালের ভোটের তালিকাকে ভিত্তি করার প্রস্তাব দেন ফলে আলোচনা অসমাপ্ত থাকে। ১৯৮০ সালের শেষের দিকে কেন্দ্রীয় সরকার এই আন্দোলনের প্রতি কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। এই সময়ে অসমের বিভিন্ন স্থানে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে থাকে। ১৯৮৩ সালে জনসাধারনের কঠোর বিরোধ থাকা সত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও নির্বাচনে [[হিতেশ্বর শইকিয়া]] মুখ্যমন্ত্রী হন। এই আন্দোলনে অসমের নগাওয়ের নেলী নামক স্থানে অবৈধ বাংলাদেশী ব্যক্তিদের হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ড [[নেলীর হত্যাকান্ড]] নামে পরিচিত। নেলীর হত্যাকান্ডে প্রায় ১৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল ও আন্দোলনের সময়ে ৮৫৫ জন ছাত্র সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল।<ref name=nchro>[http://www.nchro.org/index.php?option=com_content&view=article&id=6610:it-is-26-years-since-nellie-massacre-victims-still-await-justice-&catid=12:stateviolations&Itemid=7]It is 26 years since Nellie massacre:victims still await justice</ref> ১৯৮৪ সনে [[ইন্দিরা গান্ধী|ইন্দিরা গান্ধীর]] মৃত্যুর পর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী [[রাজীব গান্ধী]] এই সমন্ধে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেন। অবশেষে ১৯৮৫ সনের ১৫ আগষ্ট আন্দোলনকারী নেতা ও রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লীতে [[অসম চুক্তি]] সাক্ষর করেন।
অসম চুক্তির শর্তগুলো হচ্ছে:
*১৯৬১ সালের পুর্বে বাংলাদেশ থেকে অসমে আসা ব্যক্তিদের পূর্ননাগরিকত্ব প্রদান ও ভোটাধিকারের সুবিধা প্রদান।
*১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে অসমে আসা ব্যক্তিদের ভোটাধিকার সুবিধা বাতিল করা ও অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রদান করা ।
*১৯৭১ সালের পরে অসমে আসা বাংলাদেশী ব্যক্তিদের সনাক্ত করা ও অসম থেকে বহিষ্কার করা ।
অসম চুক্তির পর [[হিতেশ্বর শইকিয়া]]র নেতৃত্বে থাকা সরকার পদত্যাগ করেন ও আন্দোলনকারী নেতারা একত্রিত হয়ে [[অসম গণ পরিষদ]] নামক রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি করেন। ১৯৮৫ সালের নির্বাচনে এই দল সংখ্যাগরিষ্ঠ লাভ করে সরকার গঠন করেন ও [[প্রফুল্ল কুমার মহন্ত]] মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন।
 
==অসম আন্দোলনের ফলাফল==