মৈত্রেয় বুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধ
১ নং লাইন:
আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধ
{{wikify}}
{{unref|date=জুলাই ২০১৩}}
বৌদ্ধ ধর্মের অনাগত বুদ্ধকে '''আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধ''' নামে অভিহিত করা হয়।
 
১৯ ⟶ ১৮ নং লাইন:
 
=== জন্ম ===
আর্য মৈত্রে্য বুদ্ধ কেতুমতী রাজ্যর এক বিখ্যাত ব্রাক্ষণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করবেন।তাঁর পিতার নাম হবে সুব্রক্ষ।তিনি চক্রবর্তী রাজা শঙ্খের প্রধান পুরোহিত হবেন।তাঁর মাতার নাম হবে ব্রক্ষবর্তী।আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধের গৃহী নাম হবে অজিত।আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধ কেতুমতী নগরের এক অরণ্যে জন্মগ্রহণ করবেন।তাঁর মাতা ব্রক্ষবতীর দন্ডায়মান অবস্থায় বুদ্ধের জন্ম হবে।তিনি যখন মাতৃকুক্ষি হতে নিষ্ক্রান্ত হবেন,প্রথমে দেবগণ তাঁকে গ্রহণ করবেন।মাতৃকুক্ষি হতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে ভূমিস্পর্শে আসার আগে দেবগণ তাঁকে গ্রহণ করে তাঁর মাতার সম্মুখে স্থাপন করে ব্লবেনঃ-দেবী!সুপ্রসন্ন হউন,আপনার মহাশক্তি সম্পন্ন পুত্র জন্মগ্রহণ করেছেন।বোধিসত্ত্ব যখন তাঁর মাতৃকুক্ষি হতে নিষ্ক্রান্ত হবেন তখন তিনি সুনির্মল থাকবেন;জল,শ্রেষ্মা,রুধির অথবা কোন প্রকার অশুচি দ্বারা লিপ্ত হবেন না।মাতৃকুক্ষি হতে নিষ্ক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে অন্তরীক্ষ হতে দুটা জল ধারা নির্গত হবে একটা শীতল,অপরটা উষ্ণ।এই জল ধারায় বোধিসত্ত্ব ও তাঁর মাতার প্রক্ষালন কার্য সম্পন্ন হবে।তারপর তিনি সমপাদদোপরি স্থিত হবেন এবং উত্তরাভিমুখী হয়ে সপ্ত পদ গমন করবেন।দেবগণ তাঁর মস্তকপরি শ্বেতছত্র ধারণ করবেন।তিনি সর্বদিকে দৃষ্টিপাতপূর্বক এই মহত্ব ব্যঞ্জক বাক্য উচ্চারণ করবেন-এই পৃথিবীতে আমি অগ্র,আমি জ্যেষ্ঠ এবং আমি শ্রেষ্ঠ।ইহাই আমার সর্বশেষ জন্ম আর আমার পুনঃজন্ম নাই।বোধিসত্ত্বের জন্মের সাথে দেবলোক,মারভুবন,ব্রক্ষলোক এবংশ্রমণ ব্রাক্ষণ ও দেব-মনুষ্য সহিত এই পৃথিবীতে দেবগণের দেবানুভাব অতিক্রম করে অপ রিমেয় বিপুল দীপ্তি বিশ্বে প্রাদুর্ভূত হবে।অনন্ত ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন লোকান্তরিক নিরয় যে স্থানে মহাবলশালী চন্দ্র ও সূর্যের কিরণ ও প্রবেশ করতে অক্ষম,সে স্থানেও দেবগণের দেবানুভাব অতিক্রম করে অপরিমেয় বিপুল দীপ্তি প্রাদুর্ভূত হবে।যে সকল প্রানী ঐ স্থানে উৎপন্ন হয়েছে তারাও এই আলোকে পরস্পরকে জানতে সক্ষম হবে ওহে,অন্যান্য প্রাণীও এই স্থানে উৎপন্ন হয়েছে।দশ সহস্র জগৎ সম্পন্ন ব্রক্ষান্ড কম্পিত হবে,প্রকম্পিত হবে,সঞ্চারিত হবে।দেবতাগণের দেবতানুভাব অতিক্রম করে অপরিমেয় বিপুল দীপ্তি বিশ্বে প্রাদুর্ভূত হবে।আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্বের জন্মের পর নৈমিত্তিক ব্রাক্ষণ তাঁকে দেখে তাঁর বত্রিশ মহাপুরুষ লক্ষণের প্রতি আকৃষ্ট হবেন।এই বত্রিশ মহাপুরুষ লক্ষণ সমন্বিত ব্যক্তির মাত্র দুই গতি,অন্য গতি নাই।যদি তিনি গৃহবাসী হন,তাহলে তিনি চক্রবর্তী রাজা হবেন,ধার্মিক ধর্মরাজ চতুরন্ত বিজেতা হন,তাঁর রাজ্য শান্তি দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত হয়,তিনি সপ্ত রত্নের অধিকারী হন,যথা-চক্ররত্ন,হস্তীরত্ন,অশ্বরত্ন,মনিরত্ন,স্ত্রীরত্ন,গৃহপতিরত্ন ও মন্ত্রীরত্ন।তিনি সুর বীর শত্রু সেনা মর্দনক্ষম সহস্রাধিক পুত্র লাভ করেন।তিনি এই সসাগরা পৃথিবী দন্ড ও অস্ত্রবিনা ধর্ম্মানুসারে জয় করে বাস করেন।যদি তিনি গৃহত্যাগ করে প্রবজ্যা আশ্রয় নেন,তাহলে জগতে তিনি মায়াবরণ মুক্ত অর্হৎ সম্যক সম্বুদ্ধ হন।নৈমিত্তিক ব্রাক্ষণদের ভবিষ্যৎ বাণী শুনে বোধিসত্ত্বের পিতা সুব্রক্ষ তাঁকে যাতে সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসী হতে না পারেন তজ্জন্য সচেষ্ট হবেন।তিনি তাঁর ভোগ বিলাসের বিবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

===গৃহীজীবন===
আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্ব আট হাজার বৎসর গৃহী জীবন যাপন করবেন।তাঁর জন্য চারটা প্রাসাদ নির্মাণ করা হবে।যথা-(১) শ্রীবদ্ধ,(২)বর্দ্ধমান,(৩)সিদ্ধার্থ ও (৪)ছন্দক।তাঁর শত সহস্র নর্তকী পরিচারিকা থাকবে। আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্বের স্ত্রীর নাম হবে চন্দ্রমুখী এবং তাঁর পুত্রের নাম হবে ব্রক্ষবর্ধন।

===চারনিমিত্ত দর্শন এবং মহাভিনিষ্ক্রমণ===
আট হাজার বৎসর গৃহীজীবন যাপনের পর একদিন আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্ব কেতুমতী নগরের উদ্যানভূমি দর্শনার্থে সারথী নিয়ে রথে যাত্রা করবেন।তাঁর রথ স্বর্গীয় সুষমন্ডিত প্রাসাদের মত দেখাবে।তিনি চার প্রকার নিমিত্ত দেখে সংসার জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হবেন।চারনিমিত্ত হল-(১)জরাগ্রস্থ বৃদ্ধ ব্যক্তি,(২)ব্যাধিগ্রস্থ জীর্ণ ব্যক্তি,(৩)মৃত ব্যক্তি শ্মশানের দিকে বহন করার দৃশ্য ও (৪)প্রব্রজিত সন্ন্যাসী।এই চারনিমিত্ত দেখে সংসারত্যাগের জন্য অত্যন্ত উদগ্রীব হবেন।আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্ব সোভিত,পদুমুত্তর,ধর্মদর্শী এবং কশ্যপ বুদ্ধের মত আপন প্রাসাদ নিয়ে মহাভিনিষ্ক্রমন করবেন।বুদ্ধবংশ অর্থকথায় উল্লেখ আছে যে,উদ্বায়ী ভাসমান প্রাসাদ আকাশে,উড্ডীয়মান হয় এবং যে বোধিবৃক্ষ মূলে বোধিসত্ত্ব বুদ্ধ হবেন সেই বৃক্ষে পরিবেষ্টিত হয়ে পৃথিবীতে নেমে আসেন।প্রাসাদের মহিলাবৃন্দ নিজ নিজ ইচ্ছামত প্রাসাদ ত্যাগ করে চলে যায়।বোধিসত্ত্ব বোধিবৃক্ষ মূলে একাকী ধ্যান মগ্ন হন।আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্ব প্রাসাদে অবস্থান করে যখন অভিনিষ্ক্রয়মনের কথা চিন্তা করবেন,এই প্রাসাদ আকাশে উত্থিত হবে এবং বোধিসত্ত্বের সপরিষদ এই প্রাসাদে অবস্থান করবেন।তখন দশ সহস্র চক্রবালে দেবগণ পুষ্প দিয়ে তাঁকে পূজা করবেন।জম্বুদ্বীপের ৮৪ হাজার নগরের এবং দেশের জনগণ তাঁকে ফুল সুগন্ধি দিয়ে পূজা করবেন,অসুর পুরীর রাজাগণ আর্য মৈত্রেয় বোধিসত্ত্বের প্রাসাদ পাহাড়া দেবেন। নাগরাজগণ বোধিসত্ত্বকে মূল্যবান মনি দিয়ে পূজা করবেন।সুপর্ণ রাজাগণ তাদের গলার মনিরত্ন খচিত মালা উপহার দেবেন।গন্ধর্বগণ তাঁকে নৃত্য বাদ্য সহকারে সম্মান প্রদর্শন করবেন।বোধিসত্ত্বের সহিত কেতুমতী রাজ্যের চক্রবর্তী রাজসহ সকল রাজপরিষদ থাকবেন।চক্রবর্তী রাজা ও মহাসত্ত্বের মহিমায় সকল পরিষদ প্রবজ্যা গ্রহণ করবেন।তারা মহাসত্ত্বের সহিত বোধিবৃক্ষের মূলে সমবেত হবেন তখন মহাব্রক্ষা ষাট লীগ বিশিষ্ট শ্বেতছত্র নিয়ে বোধিসত্ত্বের মস্তকোপরি উত্তোলন করবেন।দেবরাজ শক্র বিজুত্তর শঙ্খধ্বনি করবেন।যাম স্বর্গের দেব রাজ সুযাম চমরীধেনুর পূচ্ছানির্মিত পাখা দিয়ে বোধিসত্ত্বকে পূজা করবেন।তুষিত স্বর্গের দেবপুত্র সন্তষিত মনিরত্নময় পাখা ধরবেন।গন্ধর্বরাজ পঞ্চসিখ স্বর্গীয় বীণা বেলুপণ্ড নিয়ে বাজাতে থাকবেন।চতুর্মহারাজিক দেবগণ প্রাসাদের চারদিকে বেষ্টন করে অবস্থান করবেন এবং প্রাসাদ পাহাড়া দেবেন।এই স্থানের দেবগণ,মনুষ্যগণ,গন্ধর্বগণ,যক্ষগণ,নাগগণ,সুপর্ণগণ বোধিসত্ত্বের সম্মুখে পশ্চাতে পাশে থেকে তাঁর সহিত গমন করবেন।এইভাবে মহাজাকজমকে বোধিসত্ত্ব দেব মনুষ্য পরিবেষ্টিত হয়ে আকাশে প্রাসাদোপরি অবস্থান করবেন।এই সময়ে মহাব্রক্ষা ব্রক্ষলোক হতে অবতরণ করবেন এবং তাঁর ঋদ্ধিবলে অষ্টপরিষ্কার (৩৬) সৃষ্টি করে বোধিসত্ত্ব্কে অর্পণ করবেন।বোধিসত্ত্ব তাঁর মাথার কেশ কর্তন করে আকাশের দিকে ছুঁড়ে দেবেন।তারপর তিনি মহাব্রক্ষা প্রদত্ত অষ্টপরিষ্কার পরিধান করে প্রবজ্জিতরূপে সজ্জিত হবেন।এই বোধিবৃক্ষস্থলে বোধিসত্ত্ব সাতদিন কঠোর সাধনা করবেন।বোধিসত্ত্বের সহিত আগত মনুষ্যগণ প্রবজ্যা গ্রহণ করে নিজ নিজ স্থানে অবস্থান করে সাধনায় মগ্ন হবেন।আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধের বোধিবৃক্ষ হবে নাগেশ্বর বৃক্ষ।এই বৃক্ষ উচ্চতায় ১২০ হাত এবং চার প্রধান শাখা থাকবে উহাদের ১২০ হতে ১৩০ হাত হবে।তাহা ছাড়া এই বৃক্ষের দুই হাজার ছোট ছোট শাখা থাকবে।এই শাখাগুলি অগ্রভাগ নিম্নমুখী থকবে এবং সর্ব সময়ে নড়তে থাকবে।এই বৃক্ষে চক্রের মত বড় বড় নাগফুলে শোভিত থাকবে।এই পুষ্পের পুষ্পরেণু স্বর্গীয় সুগন্ধে সুবাসিত করে রাখবে।এই সুবাসিত সুগন্ধ বাতাসের অনুকূলে প্রতিকূলে প্রবাহিত হয়ে দশ লীগ বেষ্টিত এলাকায় বিস্তৃত থাকবে।এই বৃক্ষের পত্রগুলি সকল ঋতুতে গাঢ় সবুজ থাকবে এবং পুষ্প মানুষের দিকে বিস্তৃত থাকবে।আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধ তাঁর পরিবারের লোকজনসহ বন্ধু-বান্ধব ও রাজপরিষদকে সঙ্গে নিয়ে এই অভিনিষ্ক্রমণ করবেন।তাদের মধ্যে চতুরঙ্গ সেনা এবং চর্তুবর্ণ পরিষদ থাকবে এবং তারা প্রবজ্যা গ্রহণ করবে।তাঁর সহিত ৮৪ হাজার রাজপুত্র এবং ৮৪ হাজার ত্রিদেবজ্ঞ ব্রাক্ষণও থাকবেন।বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে ইসিদত্ত ও পুরাণ ভ্রাত্রদ্বয়,জাতিমিত্র ও বিজয় অপরিমিত প্রাজ্ঞদ্বয়,সুদ্ধিক গৃহপতি,সুদত্ত জনৈক মহৎ ব্যক্তি,বিসাখ ও যশবতী দম্পতি প্রভৃতি থাকবেন।তাহা ছাড়া সামাজিক বিভিন্ন পদবিধারী লোকজন তাঁর সহিত থাকবেন।বুদ্ধদের চারটি অপরিবর্তিত স্থান থাকে।যথাঃ-(১)সম্বোধিলাভের স্থান বুদ্ধগয়া,(২)ধর্মচক্র প্রবর্তনের স্থান ঋষিপতন,(৩)অভিধর্ম দেশনার প্র মর্তে অবতরণের স্থান সাংকাশ্য ও (৪)শ্রাবস্তীর বুদ্ধের দীর্ঘকাল অবস্থানের স্থান গন্ধকুটি বিহার।
 
=== বুদ্ধত্ব লাভ ও ধর্মপ্রচার ===
২৯ ⟶ ৩৪ নং লাইন:
=== বুদ্ধের ধর্মের আয়ুষ্কাল ===
অনাগত বংশে উল্লেখ আছে যে,আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধের ধর্মের আয়ুষ্কাল হবে ১ লক্ষ ৮০ হাজার বৎসর।কিন্তু অর্থকথায় উল্লেখ আছে যে,আর্য মৈত্রেয় বুদ্ধের ধর্ম ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বৎসর বিদ্যমান থাকবে।
 
===তথ্যসূত্র===
১।ভদ্রকল্পের পঞ্চম ও শেষ বুদ্ধ - ডা. সিতাংশু বিকাশ বড়ুয়া।