ক্যারেবীয় অঞ্চলে জলদস্যুতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান !!!
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, সমস্যা? এখানে জানান
৪ নং লাইন:
 
== কারণ ==
জলদস্যুরা অধিকাংশ সময় থাকতেন নৌ যুদ্ধের সাবেক নাবিক। তাদের বলা হতো বুকেনিয়ার বা বোম্বেটে। জলদস্যুতাকে মাঝে মাঝে “বৈধতা” দেয়া হয় বিশেষ করে ফ্রান্স যতদিন রাজা ফ্রান্সিসের অধীনে ছিল। জলদস্যুতার এই বৈধ অবস্থানকে বলা হতো প্রাইভেটেরিং। ১৫২০ থেকে ১৫৬০ পর্যন্ত বিশাল স্পেনীয় সাম্রাজ্যের বিপক্ষে ফরাসি প্রাইভেটীয়াররা একাই লড়াই করে। পরবর্তীতে তাদের সাথে ডাচ ও ইংরেজ জলদস্যুরা যোগ দেয়।
 
স্পেনের জন্য [[ক্রিস্টোফার কলম্বাস|কলম্বাসের]] নতুন বিশ্ব আবিষ্কারের পর [[ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জ |ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জ]] ইউরোপীয় বাণিজ্য ও উপনিবেশ স্থাপনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। আটলান্টিকে ওঁত পেতে থাকা জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষার জন্য স্পেনীয়রা একধরণের বহর ব্যবস্থা চালু করে যাকে ফ্লোটা বা গুপ্তধনের বহর বলা হতো। এরা স্পেনের সেভিল থেকে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করা নতুন বিশ্ব অর্থাৎ ক্যারেবীয় অঞ্চলে যাতায়াত করত। তারা মুলত যাত্রী, সৈনিক ইউরোপে তৈরি পণ্যসামগ্রী বহন করত। এইসব মালামাল লাভজনক হলেও এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ঐ বছরের সঞ্চিত সকল রূপা ইউরোপে পাঠানো। এর প্রথম ধাপে সকল রূপা রূপার ট্রেন নামের একটি খচ্চরের বহরে করে পেরু এবং নতুন স্পেনে পাঠানো হত। এই ফ্লোটা অর্থাৎ গুপ্তধনের বহর তখন রূপার ট্রেনের সাথে দেখা করত। এটি তখন তার বহনকারী সামাগ্রী, যাত্রীকে গন্তব্যস্থানে নামিয়ে দিত এবং উপনিবেশে বসবাসরত বণিকদের জন্য অপেক্ষা করত যারা এর কাছে সোনা ও রূপোর তৈরি মূল্যবান মালামাল পাঠাবে। এইসব মালামাল ফ্লোটাকে স্পেনে ফিরে যাওয়ার সময় জলদস্যুদের কাছে অত্যন্ত লোভনীয় লক্ষে পরিণত করে।
 
== জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ ==
১২ নং লাইন:
{{main|জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ}}
 
সপ্তদশ শতকের শেষের দিক ও অস্টদশ শতকের শুরুর দিকের (বিশেষ করে ১৭১৬ থেকে ১৭২৬ খ্রিস্টাব্দ) সময়কে অনেক ক্ষেত্রে [[ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জ |ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জে]] “জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ” বলা হয়। এও ধারণা করা হয় যে এই সময় আনুমানিক ২৪০০ জন জলদস্যু সক্রীয় ছিলেন। নতুন বিশ্বের স্পেনীয় সাম্রাজ্যের সামরিক শক্তি রাজা [[স্পেনের চতুর্থ ফিলিপ]]কে অবজ্ঞা করতে শুরু, যিনি রাজা [[দ্বিতীয় চার্লস|দ্বিতীয় চার্লসের]] স্থলভীশক্ত হয়েছিলেন। স্পেনীয় আমেরিকার কিছুটা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল যখন স্পেন ধীরে ধীরে মহাশক্তি থেকে নিচে নেমে আসছিল।
 
ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ডাচ নেদারল্যান্ডস ১৬৬৬০-এর মধ্যে স্বনির্ভরভাবে নতুন বিশ্বের শক্তিঘরে পরিণত হয়। ডাচ প্রজাতন্ত্র দুশ্চিন্তার মুখে ছিল যতদিন না পর্যন্ত তার বিপুল বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। এই বাণিজ্যিক সফলতা আসে ওয়েস্টফেলিয়া চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এবং এরই মধ্যে ইংল্যান্ড তাদের সাথে বাণিজ্যিক লড়াইয়ে জড়িয়ে পরে। ইংরেজ সংসদ নিজেরাই দুটি বাণিজ্যিক ধারা প্রবর্তন করে। এর মধ্যে ন্যাভিগেশন এক্টস ১৬৫১ সালে ও দ্যা স্টেপল এক্টস ১৬৬৩ সালে। যার মধ্যে বলা হয় ইংরেজ উপনিবেশের জন্য বহনকারী মালামাল শুধুমাত্র ইংরেজ জাহাজে বহন করা হবে এবং ইংরেজ উপনিবেশ ও বিদেশীদের মধ্যে বাণিজ্যের একটি সীমা নির্ধারণ করে আইন জারি করা হয়। এই আইনগুলো দ্রুত বর্ধনশীল ডাচ বাণিজ্যকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছিল যা মূলত মুক্ত বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল ছিল।
 
এইরকম রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জে অবস্থানরত উপনিবেশ গভর্নরদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন করে তোলে। শুধুমাত্র আধিপত্য বজায় রাখাকে কেন্দ্র করে নেদারল্যান্ডের চিনির দ্বীপ সিন্ট ইউস্টেসোশের মালিকানা ১৬৪ থেকে ১৬৭৪-এর মধ্যে ইংরেজ ও ডাচদের মধ্যে দশবার পরিবর্তিত হয়। ইউরোপে বিভিন্ন যুদ্ধের মধ্যেই, শক্তিধর রাষ্ট্ররা তাদের উপনিবেশে পুণরায় শক্তিবৃদ্ধি শুরু করে; ফলে ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জের উপনিবেশ গভর্নররা বুকেনিয়ারদের ভাড়াটে সৈনিক হিসেবে এবং প্রাইভেটিয়ারদের উপনিবেশ পাহারা ও সেই সব শক্তিধর দেশের বর্তমান শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উত্তরোত্তর ব্যবহার শুরু করেন।
 
১৭শ শতকের শেষের দিকে ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জের স্পেনীয় শহরগুলো উন্নতি লাভ করা শুরু করে এবং স্পেনেও ধীরে, অনিয়মিতভাবে পুনরুদ্ধার শুরু করে কিন্তু স্পেনের সমস্যার কারণে সামরিক বাহিনী নীচু মানের প্রতিরক্ষা উপযোগীই থেকে যার ফলে অনেকে সময়ই তারা জলদস্যু ও প্রাভেটিয়ারদের সহজ শিকারে পরিণত হয়। ইংল্যান্ডের ইউরোপে উদীয়মান শক্তি হিসেবে অবস্থান পাওয়ার ফলে ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জে ইংরেজদের উপস্থিতি দিন দিন বিস্তৃত হতেই থাকে। ১৬৫৫ সালে ইংরেজরা [[জামাইকা]] দ্বীপপুঞ্জ স্পেন থেকে নিজেদের অধীনে আনে এবং এর কেন্দ্রস্থল [[পোর্ট রয়েল]] স্পেনীয় সাম্রাজ্যের মধ্যস্থলে ইংরেজ বুকেনিয়ারদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়।
 
অর্থনৈতিকভাবে সপ্তদশ শতকের শেষ থেকে অষ্টদশ শতাব্দীর শুরু ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জের সকল রাষ্ট্রেরই সম্পদ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। অস্টদশ শতকের দিকেই [[বাহামা দ্বীপপুঞ্জ]] ব্রিটিশ উপনিবেশের জন্য নতুন ঠিকানা হয়ে দ্বারায়। [[নাসাউ|নাসাউ বন্দর]] জলদস্যুদের শেষ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়।
২৪ নং লাইন:
== স্বর্ণযুগের জলদস্যু ==
 
স্বর্ণযুগের অনেক জলদস্যু সম্পর্কে জানা যায় যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে আক্রমণে সফল হয়েছেন। যদিও তাদের অনেকেই বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতেই মৃত্যুবরণ করেন।
 
=== ব্ল্যাকবিয়ার্ড ===
{{main|ব্ল্যাকবিয়ার্ড}}
এডওয়ার্ড টীচ বা ড্রুমন্ড নাম নিয়ে তার জন্ম ১৬৮০-এর দিকে ইংল্যান্ডে। তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূল ও বিশেষ করে ক্যারেবীয় দ্বীপপুঞ্জের [[বাহামা দ্বীপপুঞ্জ| বাহামা দ্বীপপুঞ্জে]] <ref name="Arian, 2002"/> অবস্থান করতেন এবং দক্ষিণ ক্যারোলিনার কার্লিস্টোন বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি জলদস্যু জোট গঠন করেন।<ref name="Max 2009">{{cite journal |last=Boot |first=Max |authorlink=Max Boot |title=Pirates, Then and Now |work=Foreign Affairs |volume= 88 |number=4 |year=2009 |pages=94–107}}</ref> তার জলদস্যু জীবনের অধিকাংশ সময় [[বেঞ্জামিন হর্নিগোল্ড|ক্যাপ্টেন বেঞ্জামিন হর্নিগোল্ড]] তার সহকর্মী ছিলেন। বেঞ্জামিনও ছিলেন আরেক জলদস্যু সর্দার। ব্ল্যাকবিয়ার্ডের জাহাজের নাম ছিল [[কুইন অ্যানি’স রিভেঞ্জ]] যার ওজন ছিল ২০০ টনেরও বেশী।
 
ভার্জিনিয়ার শাসক স্পাউড্‌স তার সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর নাবিক ও সৈন্যদের সমন্বয়ে একটি বাহিনী গঠন করে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে ধরতে অভিযান চালান। যার নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেনান্ট রবার্ট ম্যানার্ড। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে টীচ হার মানতে বাধ্য হন। রবার্ট ম্যানার্ড তাকে তার তার নাবিকদের সাহায্যে হত্যা করেন। কথিত রয়েছে যে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে হত্যা করার জন্য পাঁচবার গুলি করতে হয় এবং বিশবার কাটারি দিয়ে আঘাত করতে হয়।
 
এডওয়ার্ড টীচকে ব্ল্যাকবিয়ার্ড নামটি দেওয়া হয়েছিল তার লম্বা কালো দাড়ি ও ভীতিকর চেহারার জন্য। এই কথা প্রচলিত রয়েছে যে, তিনি তার বিখ্যাত কালো দাড়িতে ঘষে আগুন ধরাতে পারতেন।
৩৭ নং লাইন:
{{main|বার্থোলুমিউ রবার্টস}}
 
বার্থোলুমিউ রবার্টস বা ব্ল্যাক বার্ট ছিলেন ওয়েলসের একজন জলদস্যু। যিনি জলদস্যুতায় খুব সফল ও অভিজ্ঞ ছিলেন। এও জানা যায় তিনি ৪০০-এর মত জাহাজ লুণ্ঠন করেছিলেন এবং অন্যান্য জলদস্যু ক্যাপ্টেনের মত তিনি এতে খুশিই ছিলেন। তিনি ১৭১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে [[গিনি উপসাগর|গিনি উপসাগরে]] স্বাধীনভাবে জাহাজ চালানো শুরু করেন এবং সেই সময়ই ক্যাপ্টেন হুওয়েল ডেভিসের নেতৃত্বে একদল জলদস্যু তাদের জাহাজ আক্রমণ করে এবং তাকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান। ক্যাপ্টেন পদে উন্নতি লাভ করা পর ক্যারেবীয় অঞ্চলে চলে আসেন। ১৭২২ এর ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সেখানে থেকে তিনি আফ্রিকায় ফিরে আসেন। যেখানে তার নাবিকদের আটক করা হয় এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
 
=== চার্লস ভেন ===
{{main|চার্লস ভেন}}
 
চার্লস ভেন ছিলেন অন্যান্য আরও অনেক জলদস্যুদের মতই যিনি [[বাহামা দ্বীপপুঞ্জ| বাহামা দ্বীপপুঞ্জের]] [[নাসাউ, বাহামা দ্বীপপুঞ্জ|নাসাউকে]] কেন্দ্র করে অবস্থান করতেন। ভেনই একমাত্র জলদস্যু ক্যাপ্টেন ছিলেন যে কিনা ক্যাপ্টেন উড রোজার্সকে প্রতিহত করতে সক্ষম হন। ভেনের কুয়ার্টার মাস্টার [[ক্যালিকো জ্যাক|ক্যালিকো জ্যাক রেকহাম]] যে কিনা তাকে পদচ্যুত করে। পরে ভেন নতুন নাবিকদের নিয়ে শুরু করেন, কিন্তু তাকে ধরে ফেলা হয় ১৭২০ সালে জামাইকায় ফাঁসি দেয়া হয়।
 
== রবার্তো কফরেসি – ঊনবিংশ শতাব্দীর জলদস্যু ==
 
== বয়সি সিং - বিংশ শতাব্দীর জলদস্যু ==
“রাজা”, “বয়সি” অথবা “বয়সি সিং” নামে পরিচিত [[জন বয়সি সিং]]-এর জন্ম ত্রিনিদাদের পোর্ট অফ স্পেন, উডব্রুকে ১৯০৮ সালের ৫ এপ্রিল এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৫৭ সালে নিজের ভাগ্নী হাতি ওয়ার্ককে হত্যার দায়ে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
 
জলদস্যুতায় যোগ দেয়ার পুর্বে মাস্তান ও জুয়াড়ি হিসেবে তার দীর্ঘ ও সফল জীবন ছিল। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত প্রায় দীর্ঘ দশ বছর তিনি এবং তার দোসরেরা ত্রিনিদাদ থেকে ভেনেজুয়েলার জলসীমা পর্যন্ত সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। ধারণা করা তারা আনুমানিক চারশো মানুষকে হত্যার জন্য দায়ী। বয়সি [[ত্রিনিদাদ ও টোবাগো|ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর]] মানুষের কাছে বেশ পরিচিত।