রাশিয়া: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আশিক (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
আশিক (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১০৩ নং লাইন:
}}
 
'''রাশিয়া''' {{IPAc-en|audio=en-us-Russia.ogg|ˈ|r|ʌ|ʃ|ə}} or {{IPAc-en|ˈ|r|ʊ|ʃ|ə}} ({{lang-rus|Россия|Rossiya|rɐˈsʲijə|Ru-Россия.ogg}}), সরকারিভাবে রাশিয়ান ফেডারেশন নামে পরিচিত '''<ref>"The names Russian Federation and Russia shall be equal". {{cite web |title=The Constitution of the Russian Federation |work=(Article 1) |url=http://www.constitution.ru/en/10003000-02.htm |accessdate=25 June 2009}}</ref> ({{lang-rus|Российская Федерация|r=Rossiyskaya Federatsiya|p=rɐˈsʲijskəjə fʲɪdʲɪˈrat͡sɨjə|a=Ru-Rossiyskaya Federatsiya.ogg}}) '''যেটা উত্তর ইউরোশিয়াতে অবস্থিত।'''<ref name="britannica">{{cite web |url=http://www.britannica.com/EBchecked/topic/513251/Russia |title=Russia |publisher=Encyclopædia Britannica |accessdate=31 January 2008}}</ref>''' এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তরপশ্চিম থেকে দক্ষিণপূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিলিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং স্ত্রেইটের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন জন বসবাস করে। উত্তর এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ৯টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে। দেশটির ইতিহাস শুরু হয় ৩য় ও ৮ম খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ইস্ট স্লাভদের মাধ্যমে যারা ইউরোপের একটি স্বীকৃত জাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ভারাঞ্জিয়ান যোদ্ধা ও তাদের বংশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও শাসিত হয় এবং নবম শতকে দেশটির উত্থান শুরু হয়। ৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য থেকে গোঁড়া খ্রিস্টান রীতি গৃহীত হয়। এর ফলে বাইজান্টাইন ও স্লোভাক সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটে জা পরবর্তী সহস্রাব্দ পর্যন্ত বহাল থাকে। রাশিয়া অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ জমি মঙ্গোলদের আক্রমণের জন্য পদদলিত হয় ও যাযাবরদের জন্য স্বর্গ হয়ে ওঠে। মস্কোর গ্র্যান্ড ডিউকের জমিদার শেষ পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী রাশিয়ান অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেন ও যাযাবরদের কাছে থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেন। তারা মূলত কিয়েভান রাশিয়ার রাজনীতি ও সংস্কৃতিকে শাসন করেন। ১৮ শতক পর্যন্ত এই জাতিটি বিজয়, আত্মসাৎ, এবং অন্বেষণ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে জায়গা সম্প্রসারণ করে ইউরোপের পোল্যান্ড থেকে উত্তর আমেরিকার আলাস্কা পর্যন্ত যা ছিল ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম সাম্রাজ্য। রাশিয়ান বিপ্লবের পর রাশিয়ান সোভিয়েত ফেডারেটিভ সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক সোভিয়েত ইউনিয়নের বৃহত্তম, নেতৃস্থানীয় ও প্রয়োজনীয় সদস্য হয়ে ওঠে যা সংবিধান অনুযায়ী একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ। এসময় এটি অত্যন্ত শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা পালন করে। সোভিয়েত যুগ ২০তম শতকের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত সাফল্য পেয়েছিল যার মধ্যে ছিল বিশ্বের প্রথম মহাকাশযান ও প্রথম নভোচারী। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর এস এফ এস আর রাশিয়ান ফেডারেশন হিসেবে গঠিত হয় এবং একক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হয়। রাশিয়ান অর্থনীতির তথাকথিত জিডিপি ও সমক্রয় ক্ষমতা বিশ্বের মধ্যে অষ্টম বৃহত্তম। রাশিয়ার ব্যাপক খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ একে বিশ্বের বৃহত্তম মজুদদার হিসেবে তৈরি করেছে। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। দেশটি পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন পাঁচটি স্বীকৃত দেশের মধ্যে অন্যতম এবং দেশটির বিশ্বের বৃহত্তম ধ্বংসাত্মক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। রাশিয়া একটি পরাক্রমশালী রাষ্ট্র যেটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং জি ৮, জি ২০, দি কাউন্সিল অফ ইউরোপ, দি এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনোমিক কোঅপারেশন, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, ইউরেশীয় অর্থনৈতিক কমিউনিটি, ইউরোপ নিরাপত্তা সংগঠন কাউন্সিল (ও এস সি ই) ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য। রাশিয়া কমনওয়েলথ অফ ইনডিপেন্ডেন্ট স্টেটস এর অন্যতম সদস্য।
'''রাশিয়া''' ({{lang-ru|Россия ''রসিয়া'' [[আ-ধ্ব-ব]]: [rʌ'sʲi.jə]}}) [[পূর্ব ইউরোপ]] জুড়ে বিস্তৃত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। রাশিয়ার আয়তন দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডার আয়তনের প্রায় দ্বিগুণ। দেশটির সরকারী নাম '''রাশিয়ান ফেডারেশন''' (রুশ: Российская Федерация ''রসিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া'' আইপিএ: rʌ'sʲi.skə.jə fʲɪ.dʲɪ'ra.ʦɪ.jə)। রাশিয়ার মত এত বেশি খনিজ সম্পদ বিশ্বের অন্য কোন দেশের নেই। রাশিয়ার চার-পঞ্চমাংশ জনগণ এর পূর্ব ইউরোপীয় অংশে, [[উরাল পর্বতমালা|উরাল পর্বতমালার]] পশ্চিমে, বাস করে। ২০০৩ সালে দেশটির জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪৫ লক্ষের কিছু বেশি। রাশিয়ার রাজধানী [[মস্কো]] দেশটির প্রশাসনিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। রাশিয়া বর্তমানে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। দেশটিতে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়; দিমিত্রি মেদভিয়েদিয়েভ বর্তমানে দেশটির রাষ্ট্রপতি। দেশের বেশিরভাগ জনগণ [[রুশ ভাষা|রুশ ভাষায়]] কথা বলে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর [[সেন্ট পিটার্সবার্গ]] (''সাংক্‌ত পেতেরবুর্গ''), যা সোভিয়েত শাসনামলে [[লেলিনগ্রাদ]] নামে পরিচিত ছিল।
 
== নামগত উৎপত্তি ==
১৯২২ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত রাশিয়া ছিল [[সোভিয়েত ইউনিয়ন|সোভিয়েত ইউনিয়নের]] সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র। সে সময় অনেকে [[সোভিয়েত ইউনিয়ন]]কে রাশিয়া নামে চিনলেও আসলে রাশিয়া ছিল [[সোভিয়েত ইউনিয়ন|সোভিয়েত ইউনিয়নের]] ১৫টি অংশের একটি। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠার পূর্বে রাশিয়ায় [[রাজতন্ত্র]] প্রচলিত ছিল। রাশিয়ার রাজপ্রধানকে [[জার]] (tsar বা czar) বলা হত।
রাশিয়া নামটি রাশ নামক মধ্যযুগীয় একটি রাষ্ট্র থেকে এসেছে যেখানকার অধিকাংশ জনগণই ছিল ইস্ট স্লাভ গোত্রের অন্তর্গত। পরবর্তী ইতিহাসে এই নামটি আরও বিশিষ্ট হয়ে ওঠে দেশটিকে এর জনগন "Русская Земля" (russkaya zemlya) বলে ডাকতো যার অর্থ দাড়ায় রাশিয়ান ভূমি বা রাশ এর ভূমি। রাশিয়া ও এই রাষ্ট্র হতে উদ্ভূত রাষ্ট্রের নামের পার্থক্য করারা জন্য আধুনিক ইতিহাসে একে কিয়েভান রাশ বলে ডাকা হয়। রাশ নামটি রাশ নামের একটি গোত্র থেকে এসেছে যারা ছিল মূলত ভারাঞ্জিয়ানদের একটি দল (সম্ভবত সুইডিশ ভাইকিং) এবং এরাই প্রথম রাশ (Русь) নামে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। রাশ শব্দটির পুরনো ল্যাটিন ভাষার একটি সংস্করণ ছিল রুথেনিয়া যেটি দক্ষিন ও পশ্চিম রাশে বেশি ব্যবহার করা হত এবং এই অঞ্চলটা ক্যাথলিক ইউরোপ সংলগ্ন ছিল। দেশটির বর্তমান নাম Россия (Rossiya) কিয়েভান রাশ এর বাইজান্টাইন গ্রীক শব্দ Ρωσσία Rossía (বানান- Ρωσία) (Rosía উচ্চারিত হবে [roˈsia]) থেকে এসেছে। রাশিয়ার অধিবাসীদের রাশিয়ান (Rossiyane) বলা হয়।
 
খ্রিস্টধর্ম রাশিয়ার প্রধান ধর্ম। রুশ খ্রিস্টানদের নিজস্ব [[গির্জা]] রয়েছে যা [[রুশ অর্থোডক্স গির্জা]] নামে পরিচিত।
 
১৪শ ও ১৫শ শতকে মস্কোকে ঘিরে একটি শক্তিশালী রুশ রাষ্ট্র গঠিত হতে শুরু করে। সম্রাট মহান পিটারের সময় রাশিয়া বিশ্বের বুকে এক বিরাট শক্তি হিসেবে প্রথম আবির্ভূত হয়। পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুরাগী পিটার ১৭১২ সালে সাংকত পেতেরবুর্গকে তাঁর নতুন রাজধানী বানান। বিশালকায় রুশ সাম্রাজ্য ১৯১৪ সালে তার সর্বোচ্চ বিস্তারে পৌঁছে। ১৯১৭ সালে [[রুশ বিপ্লব|রুশ বিপ্লবে]] [[বলশেভিক|বলশেভিকেরা]] রুশ রাজবংশের পতন ঘটায় এবং মস্কো আবার রাশিয়ার রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯২২ সালে বলশেভিকেরা বিশ্বের প্রথম সাম্যবাদী রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনয়ন প্রতিষ্ঠা করে।
 
সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিস্ট পার্টি ছিল একমাত্র রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি। সমস্ত ভূমি ও কোম্পানি সরকারের দখলে ছিল এবং অর্থনীতির বেশির ভাগ দিক সরকার নিয়ন্ত্রণ করত। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে রাশিয়া মুক্ত বাজার ও গণতন্ত্রকে স্বাগত জানায়। কিন্তু এই পরিবর্তনের ফলে বহু রাশিয়ান নাগরিকের জীবনযাত্রার মান গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাশিয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে বর্তমানে পূর্বের চেয়ে অধিকতর সক্রিয়।
 
== ইতিহাস ==