প্রথম ফয়সাল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, সমস্যা? এখানে জানান
১৯ নং লাইন:
}}
 
'''ফয়সাল বিন হুসাইন বিন আলী আল-হাশেমী''', ([[আরবী]] : فيصل بن حسين بن علي الهاشمي ফয়সাল ইবন হুসাইন; ২০ মে ১৮৮৫ – ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩)<ref>{{cite web|url=http://www.britannica.com/EBchecked/topic/202997/Faysal-I |title=britannica.com |publisher=britannica.com |date=8 September 1933 |accessdate=2 January 2012}}</ref><ref>{{cite web|url=http://rulers.org/indexf1.html#faysa1 |title=rulers.org |publisher=rulers.org |accessdate=2 January 2012}}</ref> [[সিরিয়া আরব রাজতন্ত্র]] বা [[বৃহত্তর সিরিয়া|বৃহত্তর সিরিয়ায়]] ১৯২০ সালে স্বল্প সময়ের জন্য রাজা ছিলেন এবং ২৩ আগস্ট ১৯২১ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত [[ইরাক রাজতন্ত্র|ইরাক রাজতন্ত্রের]](বর্তমান [[ইরাক]]) [[রাজা]] ছিলেন। জন্মগতভাবে তিনি [[হাশিমী গোত্র|হাশিমী]] রাজবংশের সদস্য ছিলেন।
 
ফয়সাল [[সুন্নি]] ও [[শিয়া|শিয়াদের]] মধ্যকার দ্বন্দ্ব ভুলে এক আনুগত্যের অধীনে থাকতে উৎসাহ প্রদান করেন এবং [[ইরাক]], [[সিরিয়া]] এবং [[উর্বর চন্দ্রকলা|উর্বর চন্দ্রকলার]] অবশিষ্টাংশকেও অন্তর্গত করে একটি আরব রাষ্ট্র তৈরীর জন্য [[প্যান-আরবিজম|প্যান-আরবিজমের]] পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি তার প্রশাসনে বিভিন্ন জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোকদের নিযুক্ত করে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা অর্জন করতে তিনি প্রচন্ড চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন কারণ অত্র অঞ্চল তখন ইউরোপীয়দের, বিশেষত ফরাসি ও ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং সেসময়কার অন্যান্য আরব নেতারা তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার ব্যাপারে ব্যস্ত থাকায় এই ধারণার প্রতি বিরূপ ছিলেন। অধিকন্তু, ফয়সালের প্যান-আরব জাতীয়তাবাদ কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।
 
== প্রাথমিক জীবন ==
ফয়সাল [[তাইফ|তাইফে]](বর্তমান [[সৌদি আরব|সৌদি আরবে]]) ১৮৮৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মক্কার শরীফ [[হুসাইন বিন আলী, মক্কার শেরিফ|হুসাইন বিন আলীর]] তৃতীয় পুত্র। তিনি [[ইস্তানবুল|ইস্তানবুলে]] বড় হন। নেতৃত্ব বিষয়ে তিনি তার পিতার কাছে শিক্ষালাভ করেন। ১৯১৩ সালে ফয়সাল [[অটোমান সংসদ|অটোমান সংসদে]] [[জেদ্দা|জেদ্দার]] প্রতিনিধি নির্বাচিত হন।
 
১৯১৬ সালে ইস্তানবুলে একটি মিশনের পথে তিনি [[দামেস্ক]] দুইবার ভ্রমণ করেন। এই ভ্রমণগুলোর একটিতে তিনি [[দামেস্ক প্রটোকল]] লাভ করেন। তিনি [[আল-ফাতাত]] নামক আরব জাতীয়তাবাদীদের দলে যোগ দেন এবং তার পিতা [[হেজাজ রাজতন্ত্র|হেজাজের]] রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।
৩৪ নং লাইন:
১৯১৬ সালের ২৩ অক্টোবর ওয়াদি সাফরার [[হামরা|হামরায়]] ফয়সাল ও ক্যাপ্টেন [[টি ই লরেন্স|টি ই লরেন্সের]] সাক্ষাৎ হয়। লরেন্স কায়রোর একজন জুনিয়র ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। যুদ্ধপরবর্তী আরব রাষ্ট্রের পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই লরেন্সের ছিল এবং এ উদ্দেশ্যে আরব বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সঠিক মানুষকে খুজে নেয়ার প্রয়োজনীয়তাও উপলব্ধি করেন।
 
লরেন্সের সহায়তায় ফয়সাল [[ব্রিটিশ সেনাবাহিনী|ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে]] সহযোগীতা করেন এবং [[উসমানীয় সাম্রাজ্য|অটোমান সাম্রাজ্যের]] বিরুদ্ধে [[আরব বিদ্রোহ]] সংগঠিত করেন। দীর্ঘ অবরোধের পর [[ফখরি পাশা|ফখরি পাশার]] প্রতিরোধ ভেঙে তিনি [[মদিনা]] জয় করেন।
 
ফয়সালের কিছু সমালোচক তার খ্রিষ্টানদের পাশাপাশি লড়াই করাকে ইসলামের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে গণ্য করে; যা [[আল্লামা ইকবাল|ইকবালকে]] তার বিরুদ্ধে লিখতে উৎসাহিত করে।<ref>http://umersultan.wordpress.com/2009/11/14/allama-iqbals-poetry-on-sincerity-masjid-to-banaadi-shab-bhar-mein/</ref> নবী [[মুহাম্মাদ|মুহাম্মাদের]] (সাঃ) বংশধর হলেও ধর্ম নয় বরং আরব জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীনতা তার মূল লক্ষ্যবস্তু ছিল।
 
ফয়সাল [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|১ম বিশ্বযুদ্ধের]] সময় [[বৃহত্তর সিরিয়া]] জয় ও [[দামেস্ক]] দখল করতে [[মিত্রবাহিনী,১ম বিশ্বযুদ্ধ|মিত্রবাহিনীকে]] সাহায্য করেন। ১৯১৮ সালে তিনি সেখানকার নতুন আরব সরকারের সদস্য হন।
৪৬ নং লাইন:
=== বৃহত্তর সিরিয়া ===
{{মূল নিবন্ধ|সিরিয়া আরব রাজতন্ত্র}}
ব্রিটিশ ও আরব বাহিনী ১৯১৮ সালের অক্টোবরে দামেস্ক দখল করে নেয়। তুর্কি শাসন শেষে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষার অধীনে আরব নিয়ন্ত্রিত বৃহত্তর সিরিয়ায় আরব সরকার স্থাপনে সাহায্য করেন। মে ১৯১৯ এ [[সিরিয়ান জাতীয় কংগ্রেস|সিরিয়ান জাতীয় কংগ্রেসের]] জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
 
=== ফয়সাল-ওয়েইজমেন চুক্তি ===
{{মূল নিবন্ধ|ফয়সাল-ওয়েইজমেন চুক্তি}}
১৯১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ফয়সাল এবং [[ওয়ার্ল্ড জায়নিস্ট অর্গানাইজেশন|ওয়ার্ল্ড জায়নিস্ট অর্গানাইজেশনের]] প্রেসিডেন্ট [[চেইম ওয়েইজমেন|চেইম ওয়েইজমেনের]] মধ্যে আরব-ইহুদী সহযোগীতার জন্য ফয়সাল-ওয়েইজমেন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে ফয়সাল শর্তের ভিত্তিতে [[বেলফোর ঘোষণা]] মেনে নেন। যুদ্ধকালীন সময়ের এই ঘোষণায় ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য আবাসভূমি গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি ছিল। ফয়সাল নিম্নোক্ত বিবৃতি দেন :
 
[[চিত্র:Weizmann and feisal 1918.jpg|thumb|left|ফয়সাল(ডানে) এবং [[চেইম ওয়েইজমেন]] (বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে আরব পোষাক পরিহিত), সিরিয়া, ১৯১৮।]]
৫৬ নং লাইন:
''“আমরা আরবরা … গভীর সহানুভূতির সাথে জায়নিস্ট আন্দোলনের উপর দৃষ্টিপাত করি। প্যারিসে শান্তি সম্মেলনে আমাদের প্রতিনিধিদল গতকাল জায়নিস্টদের উত্থাপিত প্রস্তাব সম্পর্কে অবগত এবং আমরা একে সহনীয় ও যথার্থ মনে করি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা করব, যতদূর এভাবে সাহায্য করে আমরা উদ্বিগ্ন; আমরা ইহুদিদেরকে অন্তর থেকে ঘরে ফেরার অভিনন্দন জানাই। আমি ও আমার জনগণ এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে তাকাই যেখানে আমরা পরস্পরকে সাহায্য করব। এতে আমরা সেসব দেশের ব্যাপারে পারস্পরিকভাবে আগ্রহী তা আবার বিশ্বের সভ্য জনগণের মধ্যে স্থান করে নেবে।”''
 
এই প্রতিশ্রুতিগুলো তাৎক্ষনিকভাবে পূরণ হয়নি। কিছু ক্ষেত্রে এমনকি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরও।<ref name="promises">[http://www.jewishvirtuallibrary.org/jsource/History/faisal_balfour.html Faisal's Acceptance of the Balfour Declaration] Jewish Virtual Library</ref><ref name="UN19470708">[http://unispal.un.org/UNISPAL.NSF/0/364A6AC0DC52ADA785256E8B00716662 Official records of the Second Session of the General Assembly (A/364/Add.2 PV.21)], United Nations, 8 July 1947</ref> কিন্তু ফয়সাল-ওয়েইজমেন চুক্তির বহু বছর পর যখন আরব রাষ্ট্রগুলো ইউরোপীয় শক্তির কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে এবং নতুন রাষ্ট্রগুলো ইউরোপীয় ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়, ওয়েইজমেন দাবি করেন যে যেহেতু দাবিগুলো শেষপর্যন্ত পূরণ হয়েছে তাই ফিলিস্তিনে ইহুদি আবাসভূমি তৈরীর চুক্তি এখনও বহাল আছে।<ref name="UN19470708"/> কিন্তু আরব রাষ্ট্রগুলো ফিলিস্তিনে ইহুদি ও আরব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একে ভাগ করার জাতিসংঘের পরিকল্পনাকে সহিংসভাবে প্রতিহত করায় এবং ইসরাইলীদেরকে আক্রমণ করায় এই অংশীদারিত্ব কায়েম হয়নি।
 
== ইরাক ও সিরিয়ার রাজা ==
১৯২০ সালের ৭ মার্চ, হাশিম আল-আতাসসির ফয়সাল সিরিয়ান জাতীয় কংগ্রেস সরকার কর্তৃক ফয়সালকে [[সিরিয়া আরব রাজতন্ত্র|সিরিয়া আরব রাজতন্ত্রের]] রাজা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯২০ এর এপ্রিলে [[সান রেমো সম্মেলনে]] [[ফ্রান্স|ফ্রান্সকে]] [[সিরিয়া ও লেবাননে ফরাসি মেন্ডেট|সিরিয়ার মেন্ডেট]] দেয়া হয় যার ফলশ্রুতিতে [[ফরাসি-সিরিয়ান যুদ্ধ]] সংঘটিত হয়। ১৯২০ সালের ২৪ জুলাই [[মায়সালুনের যুদ্ধ|মায়সালুনের যুদ্ধে]] ফরাসিরা জয়ী হয় এবং ফয়সাল সিরিয়া থেকে বহিষ্কৃত হয়। সেই বছরের আগস্টে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাসের জন্য যান।
 
১৯২১ সালের মার্চে [[কায়রো সম্মেলন (১৯২১)|কায়রো সম্মেলনে]] ব্রিটিশরা ফয়সালকে [[ইরাকে ব্রিটিশ মেন্ডেট|ইরাকে ব্রিটিশ মেন্ডেটের]] শাসনের জন্য যোগ্য প্রার্থী হিসেবে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেসময় ইরাকে বসবাসকারী খুব অল্প মানুষই তার সম্পর্কে জানত। যদিও তিনি সেখানে জনপ্রিয় নন তবুও বিরোধীদের অনুপস্থিতি শাসক হিসেবে টিকে থাকার ব্যাপারে সহায়ক হত।
 
ইরাকের মেন্ডেটধারী ব্রিটিশ সরকার এখানের অস্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। তারা সরাসরি শাসনকার্য থেকে পিছিয়ে আসে এবং ইরাকে একটি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। তবে ইরাকের উপর তাদের মেন্ডেট বহাল ছিল। ৯৬% পক্ষে রায় হওয়া একটি গণভোটের পর ফয়সাল রাজা হতে রাজি হন। তবে গণভোটের ফলাফল যথার্থ ছিল না বরং এটি ব্রিটিশ মন্ত্রীপরিষদের বানানো ছিল। তারা ফয়সালকে ক্ষমতায় বসাতে চাইতেন। ১৯২১ সালের আগস্টে তিনি [[ইরাকের রাজাদের তালিকা|ইরাকের রাজা]] হন।
[[চিত্র:King Faisal's statue at the end of Haifa street.jpg|thumb|right|[[বাগদাদ|বাগদাদের]] [[হাইফা সড়ক|হাইফা সড়কের]] শেষপ্রান্তে ফয়সালের নামে নামকৃত চত্বরে তার ভাস্কর্য।]]
 
সিরিয়া থেকে বহিষ্কৃতদের তিনি ইরাকি-সিরিয়ান সুসম্পরকের জন্য উৎসাহিত করতেন। শিক্ষার উন্নতির জন্য তিনি চিকিৎসক ও শিক্ষকদের নিয়োগ দেন। দামেস্কের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী [[সাতি আল-হুসরি|সাতি আল-হুসরিকে]] তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন। এই নিয়োগ ইরাকের সিরিয়ান ও লেবানিজদের মধ্যে যথেষ্ট বিরক্তির জন্ম দেয়।
 
ফয়সাল [[বাগদাদ]] থেকে [[দামেস্ক]] এবং বাগদাদ থেকে [[আম্মান]] পর্যন্ত মরুভূমির মধ্য দিয়ে মোটর রুটের উন্নয়ন করেন। এর ফলে [[মসুল|মসুলের]] তেলক্ষেত্র যথেষ্ট লাভবান হয়। তার পরিকল্পিত ভূমধ্যসাগরীয় বন্দরে তেলের পাইপলাইন বসানোর কাজেও এটি সহায়ক হিসেবে কাজ করে। আরবে ইরাকের প্রভাব বৃদ্ধির আশায় সহায়ক হয়। ফয়সাল তার শাসনকালে ইরাকি সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে জোর প্রচেষ্টা করেন। তিনি বাধ্যতামূলক সামরিক বাহিনীতে যোগদানের বিষয়ে চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। কারো মতে এটা তার প্যান-আরব পরিকল্পনার অংশ ছিল।
[[চিত্র:Royal Standard of the King of Syria (1920).svg|thumb|left|সিরিয়ার রাজা থাকাকালীন রাজকীয় পতাকা।]]
[[চিত্র:Royal Standard of Iraq (1930-1958).svg|thumb|left|ইরাকের রাজা থাকাকালীন রাজকীয় পতাকা।]]
১৯২৫ সালে সিরিয়ান দ্রুজদের উত্থানের সময় ফরাসি সরকার ফয়সালের সাথে সিরিয়ার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে। দামেস্কে [[হাশিমী গোত্র|হাশিমী]] শক্তিকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর জন্য ফরাসিদেরকে উপদেশ দেন। ইরাকে তার সাফল্যের জন্য ফরাসিরা তার সাথে আলোচনার ব্যাপারে উৎসাহিত হয়েছিল।
 
১৯৩০ সালের [[ইঙ্গ-ইরাকি সন্ধি]] ইরাককে রাজনৈতিক স্বাধীনতা দিলেও একে তিনি তার প্যান-আরব এজেন্ডার সামনে বাধা হিসেবে দেখতেন। তিনি এই সন্ধিকে সমাপ্ত হিসেবে দেখতে চাইতেন কারণ এটি সিরিয়া ও ইরাককে আরো বিভক্ত করে ফেলছিল। এর ফলে দুটি প্রধান আরব অঞ্চলের একতা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল। ফয়সালের প্যান-আরব এজেন্ডায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইরাকের [[আরব জাতীয়তাবাদ|আরব জাতীয়তাবাদীদের]] কাছে এই এই চুক্তি ইতিবাচক ছিল। তারা একে অগ্রগতি হিসেবে দেখত। সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে অবস্থার তুলনায় একে উত্তম বলে মনে হত।
[[চিত্র:Faisal I of Iraq and Mustafa Kemal Ankara Depot on 1931.jpg|thumb|[[তুরস্ক]] সফর, পাশে [[কামাল আতাতুর্ক|মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক]]]]
১৯৩২ সালে ব্রিটিশ মেন্ডেট শেষ হয়। ৩ অক্টোবর ইরাক [[জাতিপুঞ্জ|জাতিপুঞ্জে]] যোগ দেয়।
 
একই বছরে ফয়সাল স্বপ্ন দেখেন যে [[সাহাবী]] [[হুযাইফা ইবনে আল-ইয়ামান]] তাকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, “ হে রাজা! [[জাবির ইবনে আবদুল্লাহ আনসারি]] ও আমাকে [[টাইগ্রিস]] নদীর তীর থেকে সরিয়ে অন্যত্র কোথাও নিরাপদ স্থানে সমাহিত করুন কারণ আমার কবর ইতিমধ্যে পানিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে আর জাবিরের কবরে ধীরে ধীরে পানি প্রবেশ করছে।” সেই বছরে বিপুল সংখ্যক মুসলিম এবং অমুসলিম, রাজা, গ্র্যান্ড মুফতি, প্রধানমন্ত্রী এবং মিশরের যুবরাজ ফারুক এই দুই সাহাবীর মরদেহ উত্তোলনের সময় উপস্থিত হন। বলা হয় যে দুজনের শরীরই অক্ষত ছিল। তাদের খোলা চোখ থেকে স্বর্গীয় আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছিল যার ফলে দর্শকদের চোখ ঝলসে উঠে। অধিকন্তু, তাদের কফিন, কাপড় ও কাফন পর্যন্ত অক্ষত ছিল। প্রথম দেখায় মনে হচ্ছিল যেন তারা জীবিত। দুজনের মরদেহ বাগদাদের ৩০ মাইল দূরে সালমান পার্কে আরেক সাহাবী [[সালমান আল ফারিসী|সালমান ফারসির]] কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
৮৪ নং লাইন:
১৯৩৩ সালের জুলাইয়ে মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বে ফয়সাল লন্ডনে যান। সেখানে তিনি আরব-ইসরাঈলী সংঘর্ষের ফলে আরবদের বর্তমান অবস্থা এবং ফিলিস্তিনে ইহুদিদের অভিবাসনের হার নিয়ে তার শঙ্কা প্রকাশ করেন। এসবের ফলে আরবদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। ইহুদি অভিবাসন ও ভূমি বিক্রয় সীমাবদ্ধ করার ব্যাপারে তিনি ব্রিটিশদের দাবি করেন। তার ভয় ছিল অন্যথায় নিকট ভবিষ্যতে আরবরা ফিলিস্তিন থেকে বিতারিত হবে নাহয় অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পর্যুদস্ত হবে।
 
সুইজারল্যান্ডের [[বের্ন|বের্নে]] অবস্থানকালীন ফয়সাল হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ১৯৩৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র [[গাজি,ইরাকের রাজা|গাজি]] তার উত্তরাধিকারী হন।
 
[[বাগদাদ|বাগদাদের]] [[হাইফা সড়ক|হাইফা সড়কে]] তার নামে একটি চত্বর রয়েছে। চত্বরে ঘোড়ার পিঠে আরোহী অবস্থায় তার একটি ভাস্কর্য আছে। ১৯৫৮ সালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদের সময় ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলা হলেও পরবর্তীতে পুনরায় স্থাপন করা হয়।
১৪৩ নং লাইন:
|PLACE OF DEATH= [[বের্ন]], সুইজারল্যান্ড
}}
 
{{DEFAULTSORT:ইরাকের প্রথম ফয়সাল}}
[[বিষয়শ্রেণী:১৮৮৫-এ জন্ম]]