দুর্গা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, সমস্যা? এখানে জানান
১৮ নং লাইন:
| Planet =
}}
'''দুর্গা''' ({{lang-sa|दुर्गा}}); অর্থাৎ "যিনি দুর্গ বা সংকট থেকে রক্ষা করেন"; অন্যমতে, "যে দেবী দুর্গম নামক অসুরকে বধ করেছিলেন")<ref>{{cite web|title=Article on Durga About.com Hinduism|url=http://hinduism.about.com/od/hindugoddesses/a/durga.htm|accessdate=2 October 2011}}</ref><ref> ''বাঙ্গালা ভাষার অভিধান'', প্রথম ভাগ, জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ১৯৮৬</ref> হলেন একজন [[হিন্দু]] দেবী। তিনি একজন জনপ্রিয় দেবী। হিন্দুরা তাঁকে [[মহাশক্তি]]র একটি উগ্র রূপ মনে করেন। দেবী দুর্গার অনেকগুলি হাত। তাঁর অষ্টাদশভূজা, ষোড়শভূজা, দশভূজা, অষ্টভূজা ও চতুর্ভূজা মূর্তি দেখা যায়। তবে দশভূজা রূপটিই বেশি জনপ্রিয়। তাঁর বাহন সিংহ (কোনো কোনো মতে বাঘ)। মহিষাসুরমর্দিনী-মূর্তিতে তাঁকে মহিষাসুর নামে এক অসুরকে বধরত অবস্থায় দেখা যায়।
 
[[হিন্দুধর্ম|হিন্দুধর্মে]] [[দেবী]] দুর্গা পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ।<ref> name="ReferenceA">''পৌরাণিকা, প্রথম খণ্ড, অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০১</ref> [[হিন্দু]] [[পুরাণ|পৌরাণিক]] বিশ্বাস অনুসারে তিনি [[শিব|শিবের]] স্ত্রী [[পার্বতী]], [[কার্তিকেয়|কার্তিক]] ও [[গণেশ|গণেশের]] জননী, এবং [[কালী]]র অন্যরূপ।
 
[[দুর্গা]]রদুর্গার [[দুর্গাপূজা|আরাধনা]] [[বঙ্গ|বাংলা]], [[অসম]] এবং [[বিহার|বিহারের]] কোনো কোনো অঞ্চলে প্রচলিত। [[ভারত|ভারতের]] অন্যত্র [[দুর্গাপূজা]] [[নবরাত্র]] উৎসব রূপে উদযাপিত হয়। সম্ভবত খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে [[বঙ্গ|বাংলায়]] দুর্গোৎসব প্রবর্তিত হয়।<ref> ''পৌরাণিকা, প্রথম খণ্ড, অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০১<name="ReferenceA"/ref>
 
দুর্গা মূলত [[শক্তি]] দেবী। [[বেদ|বৈদিক সাহিত্যে]] দুর্গার উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে দুর্গার বিশেষ আলোচনা ও পূজাবিধি [[তন্ত্র]] ও পুরাণেই প্রচলিত। যেসকল পুরাণ ও উপপুরাণে দুর্গা সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে সেগুলি হল: ''[[মৎস্যপুরাণ]],'' ''[[মার্কণ্ডেয় পুরাণ]],'' ''[[দেবীপুরাণ]],'' ''[[কালিকাপুরাণ]]'' ও ''[[দেবী-ভাগবত]]''। তিনি '''জয়দুর্গা''', '''জগদ্ধাত্রী''', '''গন্ধেশ্বরী''', '''বনদুর্গা''', '''চণ্ডী''', '''নারায়ণী''' প্রভৃতি নামে ও রূপে পূজিতা হন। বছরে দুইবার দুর্গোৎসবের প্রথা রয়েছে – [[আশ্বিন]] মাসের শুক্লপক্ষে শারদীয়া এবং [[চৈত্র]] মাসের শুক্লপক্ষে বাসন্তী দুর্গাপূজা।
৩৬ নং লাইন:
</center>
</poem>
অর্থাৎ, ""দ" অক্ষরটি দৈত্য বিনাশ করে, উ-কার বিঘ্ন নাশ করে, রেফ রোগ নাশ করে, "গ" অক্ষরটি পাপ নাশ করে এবং অ-কার শত্রু নাশ করে। এর অর্থ, দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও শত্রুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা।" অন্যদিকে ''শব্দকল্পদ্রুম'' বলেছে, "দুর্গং নাশয়তি যা নিত্যং সা দুর্গা বা প্রকীর্তিতা"। অর্থাৎ, যিনি দুর্গ নামে অসুরকে বধ করেছিলেন, তিনি সব সময় দুর্গা নামে পরিচিত।<ref> ''শব্দকল্পদ্রুম'' ৩।১৬৬৬; ''পূজা-বিজ্ঞান'', স্বামী প্রমেয়ানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, ১৯৯৯, পৃষ্ঠা ৪৪ থেকে উদ্ধৃত</ref> ''শ্রীশ্রীচণ্ডী'' অনুসারে যে দেবী "নিঃশেষদেবগণশক্তিসমূহমূর্ত্যাঃ" (সকল দেবতার সম্মিলিত শক্তির প্রতিমূর্তি), তিনিই দুর্গা।<ref>''শ্রীশ্রীচণ্ডী'' ৪।৩</ref>
 
== পাদটীকা ==
{{Reflist}}
 
 
== গ্রন্থপঞ্জি ==
;'''বাংলা'''
* " শ্রী [[দেবী ভাগবত]]" [[মার্কণ্ডেয় পুরাণ]]
 
;'''ইংরেজি'''
৬৪ ⟶ ৬৩ নং লাইন:
* [http://www.calcuttaweb.com/puja/ Durga Puja (calcuttaweb.com)]
* {{dmoz|Society/Religion_and_Spirituality/Hinduism/Gods_and_Goddesses/Durga/|Durga}}
* [http://www.stutimandal.com/gif_devi/durga_shatnaam.htm 108 names of Durga] Quelle Source: [[Durgāsaptaśatī]]
 
{{অসম্পূর্ণ}}
৭৪ ⟶ ৭৩ নং লাইন:
শরৎ আসে শারদা মায়ের আগমনী বার্তা নিয়ে। বাংলার চিত্তলোক আলোকিত করে মা আবিভূত হন বাংলার পর্ণ কুটিরে। বাংলার মন্দির-মণ্ডপ মুখরিত হয় পূজা উৎসবের ঔজ্জ্বল্যে। মাতৃ-বন্দনায় ভক্তরা নিজেদের সঁপে দেয় মায়ের চরণতলে। মাতৃকরুণায়। অভিসিঞ্চিত হয় ভক্তহৃদয়।
 
‘পূজার’ অর্থ হলো ঈশ্বরের আরাধনা, অর্চনা বা উপাসনা। পূজার তাৎপর্য বিরাট এবং ব্যাপক। শুধু প্রতিমা তৈরি করে তার সামনে মন্ত্রপাঠ বা ভোগারতির ব্যবস্থা করাই পূজার আসল উদ্দেশ্য নয়। পূজার আসল উদ্দেশ্য হলো মৃন্ময়ী মূর্তির ভেতর দিয়ে চিন্ময়ীর উদ্দেশ্যে নিঃশর্তে আত্মনিবেদন, অনন্ত মহাশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে তার আর্শীবাদ কামনা।
 
পূজোর মন্দির, মঙ্গলঘট, বিগ্রহ বা প্রতিমা, পূজার নানাবিধ উপকরণ, ধূপ-ধুনোর মনমাতানো সুগন্ধি, আরতি, বাদ্যি-বাজনা, শংখধ্বনি, আলোকসজ্জা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বিচিত্র ঝকঝকে পোশাক সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় এক মহাপবিত্র আবেগ উদ্বেলিত আনন্দময় পরিবেশ।
 
মহানন্দের এই আবহ বার্তা পবিত্র ও নির্মল। ভক্তের শ্রদ্ধা, পূজারীর নিষ্ঠা আর প্রতিমার দীপ্তি মিলে গড়ে ওঠে এক স্বর্গীয় সুষমা। এতে একদিকে যেমন জেগে ওঠে ধর্মীয়ভাব, অন্যদিকে রচিত হয় মানুষে মানুষে সম্প্রিতি ও ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন।
 
প্রতিমা তৈরি, মণ্ডপ সাজানো, সাজ-সজ্জায় ও অলংকরণে বিকশিত হয় শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থনীতি এককথায় শারদীয়া দুর্গোৎসব বাঙালির সবচেয়ে বড় মিলন মেলা, যা দেশ-কালের গণ্ডি পেরিয়ে বলতে গেলে গোটা বিশ্বে পরিব্যাপ্ত। এই পূজো-পার্বণকে ঘিরে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে তৈরি হয় ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বিশ্বজনীন বন্ধন।
 
ব্রহ্মাপুরাণ পাঠে আমরা জানতে পারি, প্রজা সৃষ্টির অভিপ্রায়ে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ধর্ম, রুদ্র, মনু, সনক ভৃগু প্রমুখ কয়েকজন মানসপুত্রের সৃষ্টি করেন। তার দক্ষিণ অঙ্গ থেকে উৎপত্তি হয়েছিল প্রজাপতি দক্ষের। দক্ষের কনিষ্ঠা কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করেন দেবী সতী, যিনি পতিরূপে গ্রহণ করেছিলেন, দেবাদিদেব মহাদেবকে।
 
মহাদেবের প্রতি প্রজাপতি দক্ষ ছিলেন অত্যন্ত বিরূপ। ভৃগু ঋষি এবং অন্যান্য প্রজাপতি কর্তৃক অনুষ্ঠিত মহাযজ্ঞে একমাত্র দেবাদিদেব শিব ও ব্রহ্মা ছাড়া অন্য দেবতারা প্রজাপতি দক্ষের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেছেন।
 
এর ফলে দেবাদিদেব মহাদেবের উপর ক্রুদ্ধ হয়ে প্রজাপতি দক্ষ এই অভিসম্পাত দিয়েছিলেন যে, শিব অন্যান্য দেবতার মতো যজ্ঞভাগের অধিকারী হবেন না। পরবর্তী সময়ে ব্রহ্মা কর্তৃক দক্ষ সকল প্রজাপতির রাজা নির্বাচিত হওয়ার আনন্দে ও গর্বে দক্ষ আয়োজন করেছিলেন এক মহাযজ্ঞের।
 
ত্রিভুবনের সকলেই এই মহাযজ্ঞে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন, শুধু কন্যা সতী ও কন্যা জামাতা শিব রইলেন নেমন্তন্নের বাইরে। পুরাণ পাঠে আমরা জানতে পারি, যজ্ঞস্থলে পিতার মুখে পতি শিবের নিন্দাবানী ও কটুক্তি শুনে ক্রোধে ও ক্ষোভে অধীরা সতী দেহত্যাগ করেছিলেন এবং শিবকে আবার পতিরূপে পাওয়ার আকাঙ্খায় গিরীরাজ হিমালয়ের কন্যা পার্বতীরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
 
মঙ্গলকাব্যগুলোতে পার্বতীর পিতৃগৃহের অবস্থানের আনন্দময় দিনগুলোর এবং তার বিবাহিত জীবনের মিষ্টি-মধুর মুহূর্তগুলোর অপূর্ব বর্ণনা দেখতে পাওয়া যায়। এসব মঙ্গলকাব্যে একদিকে যেমন ফুটে উঠেছে কন্যা বিরহে কাতরা মা মেনকার গভীর অপত্যস্নেহ, অন্যদিকে তেমনি চিত্রিত হয়েছে স্বামী সোহাগিনী পার্বতীর গর্ব ও আনন্দের উচ্ছাস।
 
গৌরী একাধারে জগজ্জননী এবং বাংলার জননীদের কাছে কন্যাসমা। এক কথায়, বাঙালি জগন্মতাকে করে নিয়েছে নিকট আত্মীয়ের মত একান্ত আপন করে, তাদের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার ডালা সাজিয়ে, পরম মমতাভরা আঁচল বিছিয়ে।
 
শ্রী শ্রী চণ্ডীপাঠে আমরা জানতে পারি, দুর্গা পূজার প্রথম প্রচলন হয়েছিল বসন্ত ঋতুতে রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি কতৃক। বসন্তকালে দেবীর পূজার অনুষ্ঠান হওয়ার কারণে এই পূজা ‘বাসন্তী পূজা’ নামে অভিহিত। রাজ্যচ্যুত সুরথ এবং সংসারতাড়িত সমাধি যখন মহামণি মেধসের কাছে আপন আপন দুঃখ-দুর্দশার বিবরণ দিয়ে প্রতিকারের উপায় প্রার্থনা করেছিলেন, তখন মনিবর তাদের মহামায়ার আরাধনায় ব্রতী হওয়ার উপদেশ দিয়েছিলেন।
 
মহাদেবী মহামায়ার স্বরূপ বর্ণনা করে মহর্ষি বলেছিলেন, তিনি নিত্য, আদি জননী, নিখিল ব্রহ্মান্ডের সৃজয়িনী। তিনিই জগৎপালিকা, জগদ্ধাত্রী এবং এবং অন্নদাত্রী অন্নপূর্ণা। তিনিই সৃষ্টি-স্থিতি প্রলয়ের কারণ। তিনি প্রকৃতরূপিনী ব্রহ্ম; নব নব সৃষ্টির উল্লাসে কখনো পুরুষ, কখনো প্রকৃতি, আবার একাধারে তিনি পুরুষ ও প্রকৃতি উভয়ই।
 
দেবী দুর্গা ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ-এই চুতুবর্গ। তিনি মহাবীর্জবতী ও মহাতেজস্বিনী। তিনি বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে অপরাজেয়া এবং অপ্রতিরোধ্যা, তিনি এক এবং অদ্বিতীয়া মহাশক্তি। শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠে জানা যায়, কালান্তরে বল-গর্বী ও অত্যাচারী দৈত্য সম্রাট মহিষাসুর নিধনের জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটেছিল এই মর্ত্যলোকে।
 
স্বর্গ থেকে বিতাড়িত ক্রুদ্ধ দেবতাদের দেহ নিঃসৃত সম্মিলিত তেজরাশি থেকে আবির্ভূতা হয়েছিলেন, অগ্নিবর্ণা, মহাতেজস্বিনী পরম রূপবতী মহাদেবী। আনন্দাকুল দেবতার, মা দুর্গাকে সুসজ্জিতা করেছিলেন মনের মাধুরী মিশিয়ে নানাবিধ অলংকারে এবং অস্ত্র-শস্ত্রে।
 
এই অস্ত্র দ্বারা দেবী দুর্গা বধ করেছিলেন ত্রিলোকত্রাস মহাপরাক্রমশালী মহিষাসুরকে। দুর্গতিনাশিনী দুর্গা অসুরদলিনী। তিনি ‘শুভদা’ ও সর্বমঙ্গলা। তার অমল স্পর্শে মুছে যায় সকল প্রকার মলিনতা, তার আরাধনায় মাতৃসাধকরা অধিকারী হন নির্মল হৃদয় এবং পবিত্র জীবনের।
 
আত্মশুদ্ধি, আত্মিক উন্নতি এবং সুপ্ত আত্মিক শক্তির জাগরণ ও বিকাশ সাধনই হচ্ছে মাতৃ-আরাধনার প্রধান লক্ষ্য। দেবী ভাগবত ও কালিকাকাপুরাণে উল্লেখ আছে, শরৎকালে শ্রীরামচন্দ্র দুর্গা পূজা করেছিলেন রাবণ বধের নিমিত্তে। এজন্য একে, ‘অকালবোধনও’ বলা হয়ে থাকে।
 
শ্রীরামচন্দ্র কর্তৃক দুর্গা পূজার পুণ্যস্মৃতিবাহী পূজা-অর্চনাই বাঙালির শারদীয়া দুর্গোৎসব। বাঙালি হিন্দু সমাজে শারদীয়া দুর্গা পূজা মহাপূজারূপে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় এক বৃহৎ জনগোষ্ঠীর, বলতে গেলে গোটা বছরের আবেগজড়িত প্রস্তুতি।
 
এটা এক প্রকারের সার্বজনীন মহাযজ্ঞের উদ্বোধন। আনন্দ-উল্লাস, ভক্তি-অর্ঘ সমুজ্জল বর্ণময় মহামিলনের আয়োজন। এ উৎসব পরিণত হয় বাঙালির প্রধান পার্বণ উৎসবে, যার পরিধি আজ সারা পৃথিবীব্যাপি। মহিষাসুর মানুষের দেহস্থ প্রবল রিপুর প্রতীক।
 
দেহের ও মনের পশু শক্তিকে বিনাশ করা এবং সমাজের অসুর শক্তিকে পরাভূত করার মাধ্যমে শুভ শক্তির উন্মেষের কামনায় দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ দুর্গা পূজায় সম্পৃক্ত হন।
 
মহামায়া দেবীর প্রতি ভক্তি নিবেদন, দৃষ্টিনন্দন, প্রতিমার শিল্প রূপ দর্শন করতে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি উপভোগ করে পারস্পারিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ দুর্গা পূজায় অংশগ্রহণ করে একে অপরের আনন্দ-উল্লাসের সমদর্শী হয়ে একে দান করে এক সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য।
 
এটাই বাঙালির দুর্গা পূজার বিশ্বজনীন বৈশিষ্ট্য। মাতৃ আরাধনার এই পবিত্র লগ্নে মাতৃচরণে প্রার্থনা, শুধু বাইরের রূপে নয়, আমরা যেন রূপান্তরিত হই অন্তরের ঐশ্বর্যে। আমরা কেবল জীবনযুদ্ধেই জয়ী হতে চাই না, চাই, সুকর্মের দ্বারা যশ বা খ্যাতি অর্জন করতে।