সমুদ্রগুপ্ত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, কোন সমস্যা?
৩০ নং লাইন:
|}}
 
'''সমুদ্রগুপ্ত''' (রাজত্বকাল খ্রিস্টীয় [[৩৩৫]] – [[৩৮০]] অব্দ) ছিলেন গুপ্তসম্রাট [[প্রথম চন্দ্রগুপ্ত|প্রথম চন্দ্রগুপ্তের]] পুত্র, উত্তরাধিকারী এবং [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত সাম্রাজ্যের]] শ্রেষ্ঠ রাজা। শুধু গুপ্ত বংশেরই নন, তিনি ছিলেন ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সামরিক শাসক। সম্ভবত তিনি পিতার প্রথম সন্তান ছিলেন না, কিন্তু শৌর্য ও বীর্যের কারণে প্রথম চন্দ্রগুপ্ত তাঁকেই উত্তরসূরি নির্বাচিত করেন। সমগ্র উত্তর ভারতকে নিজের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে আনেন ও দক্ষিণ ভারতের [[চেন্নাই|মাদ্রাজ]] অঞ্চল অবধি রাজ্যসমূহকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের করদ রাজ্যে পরিণত করেছিলেন সমুদ্রগুপ্ত। সিংহলের রাজাও তাঁর সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেছিলেন।
 
সমুদ্রগুপ্তের সভাকবি [[হরিষেণ]] রচিত [[এলাহাবাদ প্রশস্তি]] থেকে তাঁর ও তাঁর রাজ্যজয় ও রাজত্বকাল সম্পর্কে বহু তথ্য জানা যায়। সমুদ্রগুপ্তের সমসাময়িক মুদ্রাগুলিতে তাঁর শিকাররত ও বীণাবাদনরত মূর্তি দেখে অনুমিত হয় যে তিনি ছিলেন একাধারে মৃগয়াপ্রিয় ও সংগীতরসিক। [[পাটলিপুত্র]] ছিল তাঁর রাজধানী। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পৃষ্ঠপোষক হলেও সমুদ্রগুপ্ত ছিলেন পরমতসহিষ্ণু। সেযুগের বিশিষ্ট বৌদ্ধ পণ্ডিত বসুবন্ধু ছিলেন তাঁর মন্ত্রী ও সুহৃদ।
 
== জীবন ==
সমুদ্রগুপ্তের জীবন ও রাজত্বকালের ইতিহাস মূলত জানা যায় তাঁর চারটি শিলালেখ থেকে। এগুলি হল – এলাহাবাদ প্রশস্তি, [[মধ্যপ্রদেশ|মধ্যপ্রদেশের]] [[মালব|মালবে]] স্থিত এরানে প্রাপ্ত শিলালেখ, [[নালন্দা|নালন্দায়]] প্রাপ্ত তাম্রলেখ (রাজত্বকালের পঞ্চম বর্ষে রচিত) ও [[গয়া|গয়ায়]] প্রাপ্ত তাম্রলেখ (রাজত্বকালের নবম বর্ষে রচিত),এই শিলালিপিগুলির ঐতিহাসিকতা আধুনিক ঐতিহাসিকগণ স্বীকার করেন। এছাড়া সমুদ্রগুপ্তের মুদ্রা থেকে তাঁর রাজত্বের বহু তথ্য জানা যায়; বৌদ্ধ গ্রন্থ আর্যমঞ্জুশ্রীকল্প-এও তাঁর নামোল্লেখ করা হয়েছে ও অন্যান্য তথ্য আলোচিত হয়েছে।
 
সমুদ্রগুপ্ত ছিলেন গুপ্তসম্রাট প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ও লিচ্ছবি রাজকন্যা কুমারদেবীর সন্তান। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য এলাহাবাদ প্রশস্তির ২৯ সংখ্যক ছত্রে সমুদ্রগুপ্তকে ‘লিচ্ছবি-দৌহিত্র’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। তৎসঙ্গে এও বলা হয়েছে যে তিনি ছিলেন লিচ্ছবি বংশের কন্যা মহাদেবী (মহারানি) কুমারদেবীর পুত্র (‘মহাদেব্যাং কুমারদেব্যামুপন্তস্য মহারাজাধিরাজ শ্রীসমুদ্রগুপ্তস্য’), এলাহাবাদ প্রশস্তি ছাড়াও গুপ্ত যুগের অন্যান্য শিলালিপিগুলিতেও এই তথ্য উল্লিখিত আছে। <ref>''ভারতবর্ষের ইতিহাস : প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগ'', গোপাল চন্দ্র সিন্‌হা, প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, [[কলকাতা]], তৃতীয় সংস্করণ, ২০০৩, পৃ. ৫৯৩</ref>
 
=== সিংহাসনারোহণ ===
এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকে জানা যায়, প্রথম চন্দ্রগুপ্ত তাঁর একাধিক অপত্যের মধ্য থেকে সমুদ্রগুপ্তকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করেন। তাঁর সিংহাসনারোহণের বছর কোনটি – এই প্রশ্নে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে। হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী কোনও কারণ ব্যতিরেকেই ৩২৫ খ্রিস্টাব্দকে সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যারোহণের বছর হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। <ref name="ReferenceA">''ভারতবর্ষের ইতিহাস : প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগ'', গোপাল চন্দ্র সিন্‌হা, প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, [[কলকাতা]], তৃতীয় সংস্করণ, ২০০৩, পৃ.৫৯৮</ref> [[রমেশচন্দ্র মজুমদার|ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদারের]] মতে ৩৪০ থেকে ৩৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনও এক সময়ে সমুদ্রগুপ্ত সিংহাসনে আরোহণ করেন। অধিকাংশ ঐতিহাসিক এই মতেরই অনুসারী। ডক্টর আর কে মুখোপাধ্যায়ের মতে, সমুদ্রগুপ্ত ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন। এ-কালের ঐতিহাসিকগণ ৩৩৫ খ্রিস্টাব্দকেই সমুদ্রগুপ্তের সিংহাসনারোহণের বছর রূপে চিহ্নিত করে থাকেন। <ref>''ভারতবর্ষের ইতিহাস : প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগ'', গোপাল চন্দ্র সিন্‌হা, প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, [[কলকাতা]], তৃতীয় সংস্করণ, ২০০৩, পৃ.৫৯৮<name="ReferenceA"/ref>
 
এলাহাবাদ প্রশস্তির বিবরণী অনুযায়ী, প্রথম চন্দ্রগুপ্ত প্রকাশ্যে সমুদ্রগুপ্তকে উত্তরাধিকার নির্বাচিত করলে তাঁর ‘তুল্য-কুলজ’ বা আত্মীয়বর্গ অসন্তুষ্ট হন। <ref>''ভারতের ইতিহাস'' (প্রাচীন যুগ হইতে ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত), অতুল চন্দ্র রায় ও প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়, মৌলিক লাইব্রেরি, [[কলকাতা]], ১৯৯৯, পৃ.১০২-০৩</ref> এই কারণে অনেকে মনে করেন প্রথম চন্দ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর সিংহাসনকে কেন্দ্র করে কোনও জ্ঞাতিবিরোধের সূত্রপাত ঘটে থাকবে। এই সময়কার কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রায় কচ নামে এক রাজার উল্লেখ পাওয়া যায়। কোনও কোনও ঐতিহাসিক মনে করেন, কচ ছিলেন সমুদ্রগুপ্তের প্রতিদ্বন্দ্বী ভ্রাতা এবং তাঁকে হত্যা করেই সমুদ্রগুপ্ত সিংহাসন অধিকার করেছিলেন। তবে অপর এক শ্রেণির মুদ্রা বিশেষজ্ঞ ও ঐতিহাসিকেরা সমুদ্রগুপ্তের মুদ্রা ও কচের মুদ্রার সাদৃশ্য দর্শিয়ে উভয় ব্যক্তিকে একই ব্যক্তি বলে প্রমাণ করতে প্রয়াসী। তাঁদের বক্তব্য সমুদ্রগুপ্তেরই পূর্বনাম ছিল কচ এবং পরে তিনি ‘সমুদ্রগুপ্ত’ নাম ধারণ করেন। [[রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়]] অবশ্য এই মত সমর্থন করেননি। তাঁর মতে কচ ছিলেন সমুদ্রগুপ্তের ভ্রাতা। সাম্প্রতিককালে ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ও মনে করেন, গুপ্ত শাসকেরা যেখানে একক ব্যক্তিগত নামের অধিকারী ছিলেন, সেখানে সমুদ্রগুপ্তের দুটি নাম থাকা অসম্ভব। <ref>''The Oxford History of India'', By Late Vincent A. Smith, C.I.E., Fourth Edition, Edited by Percival Spear, Oxford University Press, Chennai, 1981, p.166</ref> <ref>''ভারতবর্ষের ইতিহাস : প্রাচীন ও আদি মধ্যযুগ'', গোপাল চন্দ্র সিন্‌হা, প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, [[কলকাতা]], তৃতীয় সংস্করণ, ২০০৩, পৃ.৫৯৯</ref>
 
=== দিগ্বিজয় ===
৬৮ নং লাইন:
== পাদটীকা ==
<references/>
 
 
{{s-start}}