মানবতাবাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, কোন সমস্যা?
২৬ নং লাইন:
| edition = 2nd
| pages = 474–475}}
</ref>
 
একই সময়ে জার্মানীতে মানবকেন্দ্রীক দর্শনের অর্থে “মানবতাবাদ” শব্দটি তথাকথিত বাম হেগেলবাদীদের দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছিল। আর্নল্ড রুজ এবং কার্ল মার্ক্স স্বৈরাচারী জার্মান সরকারে গির্জার প্রভাবের তীব্র সমালোচক ছিলেন। শব্দটির বিভিন্ন অর্থ নিয়ে অনেক আগে থেকেই বিভ্রান্তি বিরাজমান হয়ে আসছে<ref>An account of the evolution of the meaning of the word ''humanism'' from the point of view of a modern secular humanist can be found in [[Nicolas Walter]]'s ''Humanism{{Ndash}} What's in the Word'' (London: [[Rationalist Press Association]], 1997 ISBN 0-301-97001-7). From the same perspective, but somewhat less polemical, can be found in Richard Norman's ''On Humanism (Thinking in Action)'' (London: Routledge: 2004). For a historical and [[philological]]ly oriented view see Vito Giustiniani, "Homo, Humanus, and the Meanings of Humanism" (1985), cited above.</ref> দার্শনিক মানবতাবাদীরা অনেকটা ভুল করেই মনে করতেন যে অতীতের বিখ্যাত মানবতাবাদী এবং যুক্তিবাদী দার্শনিকরা তাঁদের মত ধর্মবিরোধী মনোভাব পোষণ করতেন।
 
=== প্রাচীণ গ্রিক মানবতাবাদ ===
৩৬ নং লাইন:
=== প্রাচীন এশীয় মানবতাবাদ ===
 
অলৌকিকতাবিরোধী মানবকেন্দ্রীক চিন্তাভাবনা ভারতীয় দর্শনের লোকায়ত ব্যবস্থায়ও দেখা যায়, যা প্রায় এক সহস্র খ্রীষ্টপূর্ব বছর পুরনো। খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে গৌতম বুদ্ধ [[পালি]] সাহিত্যে অলৌকিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।<ref>{{cite web|title=Lesson 1: A brief history of humanist thought|url=http://humanisteducation.com/class.html?module_id=1&page=1|work= Introduction to Humanism: A Primer on the History, Philosophy, and Goals of Humanism|publisher=The Continuum of Humanist Education|accessdate=21 August 2009}}</ref> চীনে হুয়াংদি, ইয়াও, সুং হলেন কয়েকজন বিখ্যাত মানবতাবাদী। [[কনফুসিয়াস]] ধর্মনিরপেক্ষ নৈতিকতার শিক্ষা দিতেন।
 
=== মধ্যযুগীয় আরব মানবতাবাদ ===
৪৮ নং লাইন:
=== রেনেসাঁসের মানবতাবাদ ===
 
রেনেসাঁসের মানবতাবাদ হল মধ্যযুগের শেষ ভাগের এবং প্রাক-আধুনিক যুগের একটি বৌদ্ধিক আন্দোলন। ঊনবিংশ শতকের জার্মান ঐতিহাসিক জর্গ ভয়গত্(১৮২৭-৯১) [[ফ্রাঞ্চেসকো পেত্রারক|পেত্রারককে]] প্রথম রেনেসাঁসের মানবতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেন। [[পল জনসন|পল জনসনও]] স্বীকার করেন যে পেত্রারক ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি বলেছিলেন যে [[রোম|রোমের]] পতন এবং আধুনিক যুগের মধ্যবর্তী শতকগুলো ছিল অন্ধকারের যুগ। পেত্রারকের মতে, বিশিষ্ট ধ্রুপদী লেখকদের কর্মকে অধ্যায়ন ও অনুশীলন করেই কেবল এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। পেত্রার্ক এবং বোক্কাচ্চিওর প্রধান গুরু ছিলেন সিসেরো, যাঁর লেখনশৈলী লাতিন এবং ইতালীয় ভাষার আদর্শ ছিল।
 
<blockquote>
৬০ নং লাইন:
==== রেনেসাঁস মানবতাবাদের পরিণতি ====
 
প্রাচীন পান্ডুলিপিগুলোর পুনঃআবিস্কার অতীতের দার্শনিক মতবাদ সম্পর্কে মানুষের জ্ঞানকে দৃঢ় করেছিল। এপিকুরোসবাদ এবং নব্য-প্লাতোবাদের পৌত্তলিক জ্ঞান এই মানবতাবাদীদের কাছে ঐশী মনে হয়েছিল এবং একারণে তাঁদের কাছে খ্রীষ্টীয় মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়েছিল।<ref>{{cite encyclopedia|title=Humanism|encyclopedia=Encyclopedic Dictionary of Religion|volume=F-N|pages=1733|publisher=Corpus Publications|year=1979|isbn=0-9602572-1-7}} "Renaissance humanists rejoiced in the mutual compatibility of much ancient philosophy and Christian truths", M. A. Screech, ''Laughter at the Foot of the Cross'' (1997), p. 13.</ref> প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাহিত্য ইউরোপে বিজ্ঞানের উন্নয়ন সাধনে ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু রেনেসাঁসের মানবতাবাদীরা, যাঁরা প্রাচীন জ্ঞানে মুগ্ধ ছিলেন, বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে মোটেই আগ্রহী ছিলেন না। ষোড়শ শতাব্দীর মধ্য ও শেষ ভাগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যদিও তারা স্কল্যাসটিসিজমের বিশ্বাস করত, আরিস্ততলের লেখাগুলোকে রেনেসাঁসের শব্দতত্ত্ব অনুযায়ী সম্পাদনা করে অধ্যায়ন করা শুরু করেছিল। এখানেই স্কল্যাসটিসিজমের সাথে গ্যালিলিওর ভবিষ্যত দ্বন্দ্ব্বের মঞ্চ স্থাপিত হয়েছিল।<!-- scholasticism এর বাংলা অনুবাদ করে দিন -->
 
[[লিওনার্দো দা ভিঞ্চি]] যেমন মানবতাবাদী না হয়েও মানবদেহ, প্রকৃতি এবং আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা কে উৎসাহিত করে রেনেসাঁসের শিল্প-সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে চাইতেন, স্প্যানিশ মানবতাবাদী জোয়ান লুই ভিভও পর্যবেক্ষণ, শিল্প-কৌশল ইত্যাদিকে উৎসাহিত করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরিস্ততোলিয় দর্শনের শিক্ষণ-পদ্ধতিকে উন্নত করার প্রয়াস নিয়েছিলেন। এভাবে তাঁরা মধ্যযুগীয় স্কল্যাসটিসিজমকে উৎখাত করতে চেয়েছিলেন।<ref>{{cite book|last=Gottlieb|first=Anthony|title=The Dream of Reason: a history of western philosophy from the Greeks to the Renaissance|publisher=W. W. Norton & Company|location=New York|year=2000|pages=410–411}}</ref> এভাবেই প্রকৃতির দর্শনে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ জায়গা করে নিয়েছিল এবং রেঁনেসা পরবর্তীয় বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের যুগের অবতারণা ঘটাতে সাহায্য করেছিল।<ref>{{cite encyclopedia|last=Alleby|first=Brad|title=Humanism|encyclopedia=Encyclopedia of Science & Religion|volume=1|edition=2nd|publisher=Macmillan Reference USA|year=2003|pages=426–428|isbn=0-02-865705-5}}</ref>
৮০ নং লাইন:
</blockquote><ref>Tony Davies,'' Humanism'' (Routledge, 1997) p. 26-27.</ref>
 
ভিক্টোরীয় ঔপন্যাসিক ম্যারি এন ইভান্স, সারা বিশ্বে যিনি [[জর্জ এলিয়ট]] হিসেবে পরিচিত, স্ট্রসের Das Leben Jesu(যীশুর জীবন, ১৮৪৬) এবং [[লুটভিগ ফয়েরবাখ|লুটভিগ ফয়েরবাখের]] Das Wesen Christianismus(খ্রীষ্টধর্মের মর্মবাণী) অনুবাদ করেছিলেন। এক বন্ধুর কাছে তিনি পত্র লিখেন,
 
<blockquote>
৮৬ নং লাইন:
</blockquote><ref>উদ্ধৃত করা হয়েছে Davies (1997), পৃ ২৭ এ</ref>
 
এলিয়ট এবং তাঁর বৃত্তের জর্জ হেনরী লিউয়ী, সমাজতাত্ত্বিক হ্যারিয়ট মারটিনিউ সহ আরও অনেকেই [[ওগুস্ত কোঁত|ওগুস্ত কোঁতের]] [[প্রত্যক্ষবাদ]] দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। কোঁত একটি নাস্তিক্য দল শুরু করেছিলেন- একটি ধর্মনিরপেক্ষ মানবধর্ম(মৃতরা এই ধর্মের উপাস্য ছিল, কারণ বেশিরভাগ মানুষ যারা একসময় বেঁচে ছিলেন, পরে মারা গিয়েছেন), যার একটা নিজস্ব বর্ষপুঞ্জ ছিল। কোঁতের এই ধর্ম অনেকটা ক্যাথলিক ধর্মেরই একটি মলিন রুপ ছিল।৩৮ এলিয়ট এবং মারটিনিউর মত কোঁতের ইংরেজ অনুসারীরা যদিও তাঁর দর্শন পুরোপুরি গ্রহণ করেননি, তাঁরা মানবধর্মের ধারণাটিকে ঠিকই পছন্দ করেছিলেন। কোঁতের নির্মোহ বিশ্বদর্শন, তাঁর আদর্শবাণী "vivre pour altrui"(“অন্যের জন্য বেঁচে থাকো”, এখান থেকেই altruism শব্দটি এসেছে) এবং নারীর প্রতি তাঁর ইতিবাচক চিন্তাভাবনা জর্জ এলিয়ট, [[ম্যাথিউ আর্নল্ড]] এবং [[থমাস হার্ডি|থমাস হার্ডির]] মত অনেক ভিক্টোরীয় সাহিত্যিকের কর্মে প্রতিফলিত হয়েছে।
 
''দ্যা ব্রিটিশ হিউম্যানিস্টিক রিলিজিয়াস এসোসিয়েশন'' ১৮৫৩ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যা ছিল সমকালীন মানবতাবাদী সংগঠণগুলোর অগ্রপথিক। এই সংগঠণটি গণতান্ত্রিক কাঠামো মেনে চলত। নারী ও পুরুষ সদস্যরা ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃবর্গ নির্বাচন করত। সংগঠণটি বিজ্ঞান, দর্শন ও শিল্পকলাকে উৎসাহিত করত।<ref>{{cite book
৯৯ নং লাইন:
| isbn = 978-0-931779-16-2}}</ref>
 
১৮৭৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শব্দটি প্রথমবারের মত নেতিবাচক অর্থে আমেরিকায় ব্যবহার করা হয়েছিল, মূলত ফেলিক্স এডলারের প্রতি ইঙ্গিত করার জন্যই। এডলার এই শব্দটি পছন্দ করেননি, তিনি তাঁর আন্দোলনের জন্য “নৈতিক সংস্কৃতি” শব্দটি নির্বাচন করেছিলেন- এই আন্দোলনটি এখনও ''নিউ ইয়র্ক সোসাইটি ফর এথিক্যাল কালচার'' এ বিদ্যমান।<ref>[http://www.nysec.org New York Society for Ethical Culture]</ref><ref>{{cite web |url=http://www.nysec.org/sitemap/about-ethical-culture/history/ |title=History: New York Society for Ethical Culture |accessdate=2009-03-06 |year=2008 |publisher=New York Society for Ethical Culture }}</ref>
 
১৯২৯ সালে [[চার্লস ফ্রান্সিস পটার]] [[নিউ ইয়র্ক]] শহরের প্রথম মানবতাবাদী সংগঠণটি প্রতিষ্ঠা করেন, যার উপদেষ্ঠা পরিষদে জুলিয়ান হাক্সলি, জন দিউয়ি, আলবার্ট আইন্সটাইন এবং থমাস ম্যানের মত ব্যক্তিরা ছিলেন। পটার একজন একত্ববাদী যাজক ছিলেন এবং ১৯৩০ এর দশকে তিনি তাঁর পত্নী ক্লারা কুক পটারের সাথে মিলে হিউম্যানিজম: এ নিউ রিলিজিয়ন গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। এই সময়টায় পটার নারী অধিকার, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও তালাক বিধানের পক্ষে এবং মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে জোড় প্রচারনা চালান।<ref>{{cite web |last=Stringer-Hye |first=Richard |title=Charles Francis Potter |work=Dictionary of Unitarian and Universalist Biography |publisher=Unitarian Universalist Historical Society |url=http://wWorldWarII5.uua.org/uuhs/duub/articles/charlesfrancispotter.html |accessdate=2008-05-01}}</ref>
 
রেমন্ড বি. ব্র্যাগ, ''দি নিউ হিউম্যানিস্ট'' এর সহযোগী সম্পাদক, লিওন মিলটন বার্কহেড, চার্লস ফ্রান্সিস পটার সহ পশ্চিম একত্ববাদী সমাবেশের বিভিন্ন সদস্যদের লেখা ছাপানো শুরু করেন। এসব লেখাগুলই পরে ১৯৩৩ সালে ''হিউম্যানিস্ট মেনিফেস্টো'' এর প্রকাশনার পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। পটারের বই এবং এই মেনিফেস্টোই আধুনিক মানবতাবাদের ভিত্তিপ্রস্তরে রুপান্তরিত হয়; আধুনিক মানবতাবাদ বলে, “কোন ধর্ম যদি মানুষের উন্নতি সাধন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই যুগের সাথে তাল মেলাতে হবে। এরকম একটি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমানের দাবি”। মেনিফেস্টোটি তারপর এই নতুন ধর্মের মূলনীতি হিসেবে ১৫টি প্রতিপাদ্য প্রকাশ করে।
 
১৯৪১ সালে ''আমেরিকান হিউম্যানিস্ট এসোসিয়েশন'' প্রতিষ্ঠা করা হয়। [[আইজাক আসিমভ]] ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯২ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত্য এই সংগঠণটির সভাপতি ছিলেন। [[গোর ভিদাল]] ২০০৯ সালে সম্মানসূচক সভাপতির আসন গ্রহণ করেন।
 
[[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ|দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের]] পর তিনজন বিখ্যাত মানবতাবাদী জাতিসংঘের তিনটি বিভাগের প্রথম পরিচালকের পদ গ্রহণ করেন: [[ইউনেস্কো|ইউনেস্কোতে]] ছিলেন [[জুলিয়ান হাক্সলি]], [[বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা|বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতে]] ছিলেন ব্রক খ্রিসহোম এবং খাদ্য ও কৃষী সংস্থায় ছিলেন জন বয়ড-অর।<ref>[http://www.americanhumanist.org/publications/morain/chapter-8.html American Humanist Association]</ref>
১৫৬ নং লাইন:
 
==== সাম্প্রতিক মানবতাবাদী মেনিফেস্টো এবং বিবৃতি ====
 
* [http://www.americanhumanist.org/who_we_are/about_humanism/Humanist_Manifesto_I Humanist Manifesto I] (১৯৩৩)
* [http://www.americanhumanist.org/who_we_are/about_humanism/Humanist_Manifesto_II Humanist Manifesto II] (১৯৭৩)
১৭৪ ⟶ ১৭৩ নং লাইন:
* [[ধর্মনিরপেক্ষতা]]
* [[সংশয়বাদ]]
 
 
 
== তথ্যসূত্র ==