হুসাইন বিন আলি, মক্কার শরিফ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Rotlink (আলোচনা | অবদান)
fixing dead links
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
৭ নং লাইন:
| successor = আলী হায়দার পাশা
| succession1 = হেজাজের রাজা
| reign1 = ১০ই জুন, ১৯১৬ – ৩রা অক্টোবর, ১৯২৪ <br />({{age in years and days|1916|6|10|1924|10|3}})
| predecessor1 = None
| successor1 = [[আলী বিন হুসাইন]]
২০ নং লাইন:
| othertitles =
| successor = [[আলী বিন হুসাইন]]
| consort = [[আবিয়া বিনতে আবদুল্লাহ]]<br />[[মাদিহা]]<br />[[আদিলা খানুম]]
| issue = [[আলী বিন হুসাইন]]<br />[[১ম আবদুল্লাহ, জর্ডান|আবদুল্লাহ]]<br />[[প্রিন্সেস ফাতিমা|প্রিন্সেস ফাতিমা বিনতে হুসাইন]] <br />[[প্রথম ফয়সাল, ইরাক|ফয়সাল]]<br />[[প্রিন্সেস সালেহা]]<br />[[প্রিন্সেস সারা]]<br />[[প্রিন্স জায়েদ]]
| dynasty = [[হাশিমী]] রাজবংশ
| father = [[শরীফ]] আলী ইবনে মুহাম্মদ
| mother = সালহা বানি-সাহার<br />(বনী সাহার গোত্রভুক্ত ইয়েমেনী)
| birth_date = ১৮৫৪
| birth_place = [[ইস্তানবুল]], [[উসমানীয় সাম্রাজ্য|অটোমান সাম্রাজ্য]]
৩৫ নং লাইন:
'''সাইয়্যিদ হুসাইন বিন আলী''' (১৮৫৪ - ৪ জুন, ১৯৩১)([[আরবি]] حسین بن علی) ১৯০৮ সাল থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত [[মক্কা|মক্কার]] শরীফ ও [[আমির]] ছিলেন। পরবর্তীতে নিজেকে মক্কার রাজা ঘোষণা করার পর তিনি আন্তর্জাতিক সমর্থন পান। ১ম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৯১৬ সালে তিনি [[উসমানীয় সাম্রাজ্য|উসমানীয় সাম্রাজ্যের]] বিরুদ্ধে [[আরব বিদ্রোহ|আরব বিদ্রোহের]] সূচনা করেন। ১৯২৪ সালে উসমানীয় খিলাফত বিলুপ্ত হলে তিনি নিজেকে মুসলিমদের [[খলিফা]] ঘোষণা করেন। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত তিনি [[হেজাজ|হেজাজে]] শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। [[আব্দ আল আজিজ ইবনে সাউদ|আব্দ আল আজিজ ইবনে সাউদের]] কাছে পরাজিত হওয়ার পর তিনি তার রাজত্ব ও অন্যান্য জাগতিক উপাধি তার জ্যেষ্ঠ পুত্র [[আলী বিন হুসাইন|আলীকে]] প্রদান করেন।
 
== জীবন ==
হুসাইন বিন আলী ১৮৫৩ সালে [[ইস্তানবুল|ইস্তানবুলে]] জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার পিতা শরীফ আলী ইবনে মুহাম্মদ ও মাতা সালহা বানি-সাহারের জ্যেষ্ঠ সন্তান। তিনি ছিলেন অটোমান সুলতান কর্তৃক নিযুক্ত হেজাজের সর্বশেষ হাশিমী গোত্রীয় শাসক<ref>http://www.royalark.net/Arabia/hijaz1.htm</ref>। হাশিমী ও তার অনুসারীরা বিশ্বাস করত যে তারা নবী [[মুহাম্মদ]](স) এর বংশধর তাই তারা মুসলিমদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী সম্মানিত।
 
== আরব বিদ্রোহ ==
১৯১৬ সালের আগে হুসাইন বিন আলী [[আরব জাতীয়তাবাদ|আরব জাতীয়তাবাদে]] উদ্বুদ্ধ ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া না গেলেও অটোমান সাম্রাজ্যে তুর্কি জাতীয়তাবাদ যা ১৯০৮ সালের [[যুব তুর্কি বিপ্লব|যুব তুর্কি বিপ্লবের]] সময় সর্বোচ্চ সীমায় পৌছায়, তা হাশিমীদেরকে অসন্তুষ্ট করে এবং ফলশ্রুতিতে অটোমান বিপ্লবীদের সাথে তাদের দ্বন্দ্বের সূচনা হয়<ref name="Lion of Jordan">{{cite book |isbn=978-0-141-01728-0 |author=Avi Shlaim |title=Lion of Jordan |publisher=Penguin Books, Ltd}}</ref>। [[১ম বিশ্বযুদ্ধ|১ম বিশ্বযুদ্ধের]] প্রাক্কালে হুসাইন অটোমানদের সাথে মিত্রতা বজায় রাখলেও তার পুত্র [[১ম আবদুল্লাহ, জর্ডান|আবদুল্লাহর]] পরামর্শে গোপনে [[ব্রিটিশ|ব্রিটিশদের]] সাথে আলোচনা চালিয়ে যান। আবদুল্লাহ ১৯১৪ সালে অটোমান সংসদে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিশ্বাস করতেন যে ক্রমান্বয়ে জাতীয়তাবাদী হয়ে উঠা অটোমান প্রশাসন থেকে আলাদা হওয়া উচিত<ref name="Lion of Jordan"/>। অটোমান সরকার যুদ্ধ শেষে হুসাইনকে পদচ্যুত করার পরিকল্পনা করে যা হাশিমী-ব্রিটিশ মিত্রতাকে পোক্ত করে তোলে{{Citation needed|date=March 2011}}। ব্রিটিশ যুদ্ধমন্ত্রী [[লর্ড কিচনার]] মিত্রশক্তিকে সাহায্য করার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। ১৯১৫ সালে হুসাইন এই সুযোগ গ্রহণ করেন এবং হেজাজ ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য এলাকা নিয়ে একটি আরব জাতি সেই সাথে আরব খিলাফতের দাবি তোলেন<ref name="Lion of Jordan"/>। ব্রিটিশ হাইকমিশনার [[হেনরি ম্যাকমোহন]] তা গ্রহণ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে সাহায্যের জন্য [[কুয়েত]], [[এডেন]] ও [[সিরিয়া|সিরিয়ার]] উপকূলে রাজকীয় গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ব্যতিত [[মিশর]] থেকে [[পারস্য]] পর্যন্ত আরব সাম্রাজ্য প্রদানের মাধ্যমে তাকে পুরষ্কৃত করা হবে। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার পর দুই পক্ষ স্পষ্ট শর্তে পৌছতে সক্ষম না হওয়ায় (যার মধ্যে [[ফিলিস্তিন]] বিষয়টিও ছিল)<ref name="Lion of Jordan"/> হুসাইন অধৈর্য হয়ে পড়েন এবং ১৯১৬ সালে আরব বিদ্রোহের সূচনা করেন।
 
== ১ম বিশ্বযুদ্ধ ==
যুদ্ধের পর আরবরা শতাব্দী প্রাচীন অটোমান সালতানাত থেকে মুক্ত হয় এবং [[ফ্রান্স]] ও [[যুক্তরাজ্য|যুক্তরাজ্যের]] ম্যান্ডেট শাসনের অধীনে আসে। ম্যান্ডেট শেষ হলে হুসাইনের পুত্ররা [[ট্রান্সজর্ডান]](পরবর্তীতে [[জর্ডান]]), [[সিরিয়া]] ও [[ইরাক|ইরাকের]] রাজা হয়। সিরিয়ার রাজত্ব স্বল্পস্থায়ী হলেও হুসাইনের পুত্র ফয়সাল এরপর নবগঠিত ইরাকের রাজত্ব লাভ করেন।
 
== হেজাজের রাজা ==
নিজেকে [[হেজাজ|হেজাজের]] রাজা ঘোষনা করার সাথে সাথে হুসাইন নিজেকে আরবদের রাজা (মালিক বিলাদ-আল-আরব) ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা [[আব্দ আল আজিজ ইবনে সাউদ|ইবনে সৌদের]] সাথে তার সংঘাতকে বৃদ্ধি করে। ধর্মীয় দিক থেকে ভিন্ন মতাদর্শের জন্য বিশ্বযুদ্ধের আগেও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। ১৯১০ সালে হুসাইন ওয়াহাবি বিরোধী অটোমানদের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ তুরস্কের গ্রান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলী কর্তৃক তুর্কি খিলাফত বিলুপ্ত হওয়ার দুইদিন পর হুসাইন ট্রান্সজর্ডানের শুনাহতে তার পুত্র আবদুল্লাহর শীতকালীন ক্যাম্পে নিজেকে খলিফা ঘোষণা করেন<ref>Teitelbaum, 2001, p. 243.</ref>। এই ঘোষণা মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং দ্রুত সৌদিরা তাকে আরব থেকে বিতাড়িত করে। সৌদিদের খিলাফতে আগ্রহ ছিল না। সৌদ ১৯২৪ সালে হুসাইনকে পরাজিত করেন। হুসাইন খলিফা পদবী বজায় রাখেন এবং ট্রান্সজর্ডানে বাস করতে থাকেন।
 
== বহিষ্কার ও মৃত্যু ==
আরব বিদ্রোহের শুরু থেকে ব্রিটিশরা হুসাইনকে সমর্থন করলেও সৌদি আক্রমণ ঠেকানোর ব্যাপারে কোনো সাহায্য করেনি। ফলে সৌদিরা [[মক্কা]], [[মদীনা]] ও [[জেদ্দা]] দখল করে নেয়। তাকে [[সাইপ্রাস|সাইপ্রাসে]] পালাতে বাধ্য করা হয়। সেখানে তিনি [[আর্মেনীয় গির্জা]] নির্মাণে অর্থসহায়তা দেন। তিনি ট্রান্সজর্ডানের [[আম্মান|আম্মানে]] বসবাস করতে থাকেন। তার পুত্র আবদুল্লাহ সেসময় ট্রান্সজর্ডানের রাজা ছিলেন। তার পরে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র [[আলী বিন হুসাইন|আলী]] সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য [[হেজাজ|হেজাজের]] ক্ষমতায় ছিলেন কিন্তু তাকেও [[আব্দ আল আজিজ ইবনে সাউদ|ইবনে সৌদ]] ও তার [[ওয়াহাবী]] বাহিনীর কারণে পালাতে হয়। হুসাইনের অপর পুত্র [[প্রথম ফয়সাল, ইরাক|ফয়সাল]] কিছুকাল [[সিরিয়া|সিরিয়ার]] রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং পরবর্তীতে [[ইরাক|ইরাকের]] রাজা হন।
 
== বিয়ে ও সন্তান ==
হুসাইনের চারজন স্ত্রী ছিল। তার পুত্র ও তিন কন্যা ছিল। প্রথম স্ত্রী আবিয়া বিনতে আবদুল্লাহ ও তার সন্তানরা হল:
* [[আলী বিন হুসাইন|প্রিন্স আলী]], হেজাজের শেষ রাজা, [[নাফিসা বিনতে আবদুল্লাহ|নাফিসা বিনতে আবদুল্লাহকে]] বিয়ে করেন।
* [[প্রথম আবদুল্লাহ, জর্ডান|প্রিন্স আবদুল্লাহ]], [[ট্রান্সজর্ডান|ট্রান্সজর্ডানের]] আমির(পরবর্তীতে রাজা), [[মুসবাহ বিনতে নাসের]], [[সুযদিল হানুম]] ও [[নাহদা বিনতে উমান|নাহদা বিনতে উমানকে]] বিয়ে করেন।
* [[প্রিন্সেস ফাতিমা]], ফ্রান্সের একজন ইউরোপীয় মুসলিম ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন।
* [[প্রথম ফয়সাল, ইরাক|প্রিন্স ফয়সাল]], [[ইরাক]] ও [[সিরিয়া|সিরিয়ার]] রাজা, [[হুযাইমা বিনতে নাসের|হুযাইমা বিনতে নাসেরকে]] বিয়ে করেন।
 
দ্বিতীয় স্ত্রী মাদিহা ও হুসাইনের সন্তান হল:
* [[প্রিন্সেস সালেহা]], [[আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ|আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদকে]] বিয়ে করেন।
 
তৃতীয় স্ত্রী আদিলা খানুম ও হুসাইনের সন্তানরা হল:
* [[প্রিন্সেস সারা]], ১৯৩৩ সালের জুলাইয়ে [[মুহাম্মদ আতা আমিন|মুহাম্মদ আতা আমিনকে]] বিয়ে করেন, সেপ্টেম্বরে তাদের বিচ্ছেদ হয়।
* [[জাইদ বিন হুসাইন|প্রিন্স জাইদ]], ১৯৫৮ সালে ইরাকের রাজা [[২য় ফয়সাল, ইরাক|২য় ফয়সাল]] আততায়ীর হাতে নিহত হলে তার উত্তরাধীকারী হন, কিন্তু [[ইরাক]] [[প্রজাতন্ত্র|প্রজাতন্ত্রে]] পরিণত হওয়ায় ক্ষমতা লাভ করেননি। তিনি [[ফাখরেলনিসা কাবাগাশি|ফাখরেলনিসা কাবাগাশিকে]] বিয়ে করেন।
 
== চলচ্চিত্র ==
১৯৬২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লরেন্স অব আরাবিয়া চলচ্চিত্রে হুসাইনের পুত্র [[প্রথম ফয়সাল, ইরাক|ফয়সালকে]] প্রভাবশালী চরিত্র হিসেবে দেখা যায়।
 
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}