বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধিত) আইন, ১৯৭৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
তৃতীয় তফসিল
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
১ নং লাইন:
'''বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধিত) আইন, ১৯৭৪''' বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|স্বাধীনতা]] পরবর্তী [[গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার]] অনুমোদিত প্রথম আইন।<ref name="banglapedia">[http://www.banglapedia.org/httpdocs/HT/W_0062.HTM Acts, Regulations and Conventions relating to wildlife], '''Wildlife''', Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh.</ref> ১৯৭৩ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিবুর রহমানের]] আদেশক্রমে "বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ, ১৯৭৩" জারি করা হয়। আদেশটি প্রেসিডেন্ট আদেশ ২৩ নামে পরিচিত। এটি ১৭ জুলাই প্রথম দফায় সংশোধন করা হয়। প্রেসিডেন্ট আদেশ ২৩ এরপর একই বছর আগস্ট মাসে জাতীয় সংসদে যায়। পরের বছর ১৯৭৪ সালে আদেশটি দ্বিতীয় দফা সংশোধিত হয় এবং '''বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধিত) আইন, ১৯৭৪''' হিসেবে অনুমোদিত হয়।<ref name="কণ্ঠ">[http://www.kalerkantho.com/print_news.php?pub_no=132&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&index=7 বন ও বন্য প্রাণী রক্ষায় কঠোর হচ্ছে আইন], বিপ্লব রহমান, দৈনিক কালের কণ্ঠ।</ref> মূল আইনটি [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি ভাষায়]] রচিত।
 
== বিবরণ ==
 
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধিত) আইনে মোট ৪৮টি বিধি (Article) এবং ৪৯টি ধারা (Clause) আর বহু উপধারা (Sub-clause) রয়েছে। এসব বিধির বলে বাংলাদেশে বসবাস ছিল বা আছে এমন সব [[বিলুপ্ত]] ও বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইন অমান্য করলে ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ছয় মাস থেকে দুই বছর কারাগারে অবস্থান করার বিধান রাখা হয়েছে।<ref name="কণ্ঠ"/> দেশীয় বেশিরভাগ বন্যপ্রাণী ধরা, মারা, শিকার বা আহত করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইনে এমন বিধান রয়েছে যাতে বাংলাদেশ সরকার ইচ্ছে করলে যে কোন সরকারী ও বেসরকারী অঞ্চল "[[অভয়ারণ্য|বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য]]" (Wildlife Sanctuary), "[[জাতীয় উদ্যান]]" (National Park), "[[সংরক্ষিত এলাকা]]" (Game Reserve) এবং "[[চিত্তবিনোদন উদ্যান]]" (Recreation Park) হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।
৭ নং লাইন:
বন্যপ্রাণী আইনের আওতায় একটি "বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা পরিষদ" গঠনের জন্য বিধি রয়েছে। এই আইনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল তিনটি তফসিলে বর্ণিত বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর নাম। কোন তফসিলে বর্ণিত কোন প্রাণীকে হত্যা করা যাবে বা যাবে না তার উল্লেখ রয়েছে। এটি বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী সংরক্ষণের জন্য একটি বলিষ্ঠ অধ্যায়।
 
=== সংরক্ষণ তফসিল ===
 
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধিত) আইন, ১৯৭৪ এ মোট তিনটি তফসিল রয়েছে। এসব তফসিলে বর্ণিত রয়েছে কোন প্রজাতি শিকারযোগ্য এবং কোনটি শিকারযোগ্য নয়।
 
==== প্রথম তফসিল ====
 
প্রথম তফসিলটি মোট দুইটি খণ্ডে বিভক্ত।
 
===== প্রথম খণ্ড =====
[[Fileচিত্র:Baer's Pochard RWD4.jpg|thumb|[[বেয়ারের ভুতিহাঁস]], [[মহাবিপন্ন]] প্রজাতি হলেও এই আইনে প্রজাতিটিকে লাইসেন্সের মাধ্যমে শিকার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।]]
প্রথম খণ্ডে কিছু কিছু দেশীয় প্রজাতির [[পাখি]], [[সরীসৃপ]] ও [[স্তন্যপায়ী প্রাণী|স্তন্যপায়ী প্রাণীর]] তালিকা রয়েছে যেগুলো শিকারের যোগ্য। এসব প্রজাতি সাধারণ গেম হান্টিং লাইসেন্সের আওতায় শিকার করা যাবে। এই তফসিলে হাঁসজাতীয় পাখিদের মধ্যে রয়েছে [[ধূসর রাজহাঁস]], [[দাগি রাজহাঁস]], [[ছোট সরালী]], [[চখাচখি]], [[উত্তুরে লেঞ্জা হাঁস]], [[উত্তুরে খুন্তেহাঁস]], [[পিয়াং হাঁস]], [[লালশির]], [[বেয়ারের ভুতিহাঁস]], [[পাতি ভুতিহাঁস]], [[রাঙ্গামুড়ি]] সহ আরও অনেক প্রজাতি। বক গোত্রের পাখিদের মধ্যে রয়েছে [[কানি বক]], [[গোবক]] ও ছোট সাদা বক। ডুবুরি গোত্রের মধ্যে [[ডুবুরি (পাখি)|ছোট ডুবুরি]] ও কাস্তেচরা গোত্রের মধ্যে [[ইউরেশীয় চামচঠুঁটি]] এই খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। আরও রয়েছে কয়েক প্রজাতির চাপাখি, বাটান ও চ্যাগা এই খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে [[খেঁকশিয়াল]], [[শশক]] বা খরগোশ (''Lepus nigricollis''), মাউস হেয়ার (''Ochotona roylei'') এবং [[বন্য বরাহ|বন্য শূকরও]]।
 
তফসিলে বর্ণিত বন্যপ্রাণীর ইংরেজি ও [[দ্বিপদ নাম|বৈজ্ঞানিক নাম]] দেওয়া হয়েছে। কোন কোন প্রজাতির প্রচলিত বাংলা নাম বর্ণিত হয়েছে। কোথাও পরিবার বা বর্গের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এসব নামের বানানে অসংখ্য ভুল রয়েছে। এসব নাম সংযোজন করার ক্ষেত্রে কোন শ্রেণীবিন্যাস নীতিও অনুসরণ করা হয় নি। উপরন্তু এমন কিছু প্রজাতির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাদের বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। মাউস হেয়ার (''Ochotona roylei'') কোন কালেই বাংলাদেশের সীমানায় ছিল না, তবুও তফসিলে প্রাণীটি অন্তর্ভুক্ত।<ref name="রেজা">ডাঃ মোঃ আলী রেজা খান, ''বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী: তৃতীয় খণ্ড'' (ঢাকা: বাংলা একাডেমী, ১৯৮৭), পৃ. ১০৯।</ref> এছাড়া কিছু কিছু প্রজাতিকে লাইসেন্সের মাধ্যমে শিকার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে যারা [[আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ]] কর্তৃক [[মহাবিপন্ন]] বলে ঘোষিত হয়েছে, যেমন- [[বেয়ারের ভুতিহাঁস]]।
 
===== দ্বিতীয় খণ্ড =====
 
এই খণ্ডে বিশেষ কোন প্রাণীর নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশের সেই সব প্রাণীর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ হয়েছে যাদের মারার জন্য বিশেষ পরিস্থিতি ও অনুমতি লাগবে। যদি দেখা যায় যে কোন একটি প্রজাতির সংখ্যা কোন একটি অঞ্চলে এমনভাবে বেড়ে গেছে যে তা ঐ অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় অথবা জনজীবনের উপর হুমকি হয়ে দাঁড়ায় (যেমন মানুষখেকো বাঘ, পাগলা হাতি ইত্যাদি) তখন প্রধান বন্যপ্রাণী সংরক্ষক (চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন) সেসব প্রাণী শিকারের জন্য অনুমতি দেবেন। তিনি আরও বলে দেবেন কোন মৌসুমে ও কোন এলাকায় ঐসব প্রাণী শিকার করা যাবে।<ref name="রেজা"/>
 
==== দ্বিতীয় তফসিল ====
 
এই তফসিলটিতেও কোন সুনির্দিষ্ট তালিকা রাখা হয় নি। এতে আছে সেই সব প্রাণীর নাম ও বৈশিষ্ট্য যাদের বহন করা, অধীনে রাখা বা আমদানি করার জন্য আইনানুগ অনুমতিপত্র বা রসিদ থাকতে হবে। তাদের ট্রফি এবং মাংসের ক্ষেত্রেও একই আইন প্রযোজ্য হবে। তফসিলে চারটি বিষয়ে নজর রাখা হয়েছে:
৩৪ নং লাইন:
# [[ভালুক]], [[উদবিড়াল]], [[বাঘ]], [[চিতাবাঘ]], [[বনবিড়াল]], [[গুইসাপ]], [[হরিণ]], [[সম্বর হরিণ]], [[বনরুই]], [[কুমির]] এবং [[অজগর|অজগরের]] চামড়া।
 
==== তৃতীয় তফসিল ====
 
এই তফসিলে ২২ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪৮৭ প্রজাতির পাখি এবং ৬৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম সংযোজিত রয়েছে। এসব প্রজাতিকে "[[সংরক্ষিত প্রাণী]]" হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রাণী শিকার করা, মারা বা ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এছাড়া তফসিলে আরও বলা হয়েছে:
৪২ নং লাইন:
# মানুষখেকো বাঘিনী ও পাগলা হস্তিনী প্রথম তফসিলের দ্বিতীয় খণ্ডের সকল প্রাণী তৃতীয় তফসিলের অন্তর্ভূক্ত।
 
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist}}
 
== বহিঃসংযোগ ==
 
* [http://bdlaws.minlaw.gov.bd/pdf/452___Schedule.pdf "বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ, ১৯৭৩"; তফসিলসমূহ]