গণেশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
২৬ নং লাইন:
* Rao, p. 1.
* Martin-Dubost, pp. 2–4.
* Brown, p. 1.</ref> [[বিশ্বধর্মে গণেশ|জৈন, বৌদ্ধধর্ম এমনকি ভারতের বাইরেও]] গণেশ আরাধনার ব্যাপক প্রচলন আছে।<ref>See:
* Chapter XVII, "The Travels Abroad", in: Nagar (1992), pp. 175–187. For a review of Ganesha's geographic spread and popularity outside of India.
* Getty, pp. 37-88, For discussion of the spread of Ganesha worship to Nepal, Chinese Turkestan, Tibet, Burma, Siam, Indo-China, Java, Bali, Borneo, China, and Japan
৩৩ নং লাইন:
* Pal, p. x.</ref>
 
পুরাণে সর্বত্র গণেশ [[শিব|হর]]-[[দুর্গা|পার্বতীর]] পুত্র। তাঁর রূপ বিভিন্ন শাস্ত্রগ্রন্থে বিভিন্ন প্রকার; তবে সর্বত্রই তিনি গজমুণ্ড মনুষ্যাকার দেবতা। তাঁর বাহন মূষিক বা ইঁদুর; অথবা কোনও কোনও স্থলে সিংহ।<ref>Martin-Dubost, p. 2.</ref> গণেশকে সর্ববিঘ্নহন্তা মনে করা হয়।<ref>See:
* Thapan, p. 254.
* Commentary on {{IAST|Gaṇapati Upaniṣad}}, verse 12 in {{Harvnb|Saraswati|2004|p=80}} for Ganesha's role as an eliminator of obstacles</ref> তিনি সাধারণভাবে প্রারম্ভের দেবতা, বিঘ্নের দেবতা ('''বিঘ্নেশ''' বা '''বিঘ্নেশ্বর'''),<ref name = "Vignesha">These ideas are so common that Courtright uses them in the title of his book, ''Ganesha: Lord of Obstacles, Lord of Beginnings''. For the name ''Vighnesha'', see: {{Harvnb|Courtright|1985|p= 156, 213}}</ref> শিল্পকলা ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক, এবং মহাবল, মেধা ও বুদ্ধির দেবতা।<ref>{{Harvnb|Heras|1972|p=58}}</ref> পূজা ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের সময় গণেশের পূজা সর্বাগ্রে করা কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়। লেখার সময় তাঁকে অক্ষরের পৃষ্ঠপোষকরূপে আবাহন করার রীতি আছে।<ref>Getty, p. 5.</ref> একাধিক [[গণেশের পৌরাণিক উল্লেখ|পৌরাণিক সূত্র]] থেকে তাঁর জন্ম, কীর্তিকলাপ ও মূর্তিতত্ত্বের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। গণেশের অন্যান্য নামগুলি হল '''গণপতি''', '''বিনায়ক''', '''মহাগণপতি''', '''বিরিগণপতি''', '''শক্তিগণপতি''', '''বিদ্যাগণপতি''', '''হরিদ্রাগণপতি''', '''উচ্ছিষ্টগণপতি''', '''লক্ষ্মীবিনায়ক''', '''হেরম্ব''', '''বক্রতুণ্ড''', '''একদন্ত''', '''মহোদর''', '''গজানন''', '''লম্বোদর''', '''বিকট''' ও '''বিঘ্নরাজ'''। দুর্গা(অম্বিকা) এবং চামুণ্ডা, এই দুজনে গণেশকে পালন করেছিলেন বলে তিনি '''দ্বৈমাতুর''' নামেও অভিহিত।
 
পৃথক দেবতা রূপে গণেশের উদ্ভব খ্রিষ্টীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শতাব্দীতে [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্তযুগে]]। যদিও একাধিক বৈদিক ও প্রাক-বৈদিক উৎস থেকেও গণেশের উল্লেখ পাওয়া যায়।<ref>Narain, A. K. "{{IAST|Gaṇeśa}}: The Idea and the Icon" in {{Harvnb|Brown|1991|p=27}}</ref> তাঁর জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং নবম শতাব্দীতে পাঁচ প্রধান [[স্মার্ত]] দেবতার অন্যতম রূপে গণ্য হন গণেশ। এই সময়কে গণেশকে সর্বোচ্চ দেবতা স্বীকার করে [[গাণপত্য]] ([[সংস্কৃত]]: {{lang|sa|गाणपत्य}}; [[:en:International Alphabet of Sanskrit Transliteration|আন্তর্জাতিক সংস্কৃত লিপ্যন্তরণ পদ্ধতি অনুসারে]]: {{IAST|gāṇapatya}}) সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে।<ref>For history of the development of the ''{{IAST|gāṇapatya}}'' and their relationship to the wide geographic dispersion of Ganesha worship, see: Chapter 6, "The {{IAST|Gāṇapatyas}}" in: Thapan (1997), pp. 176–213.</ref> গণেশ সংক্রান্ত প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলি হল ''[[গণেশ পুরাণ]]'', ''[[মুদগল পুরাণ]]'', ও ''[[গণপতি অথর্বশীর্ষ]]''।
 
[[পুরাণ]] ও কাব্যে গণেশের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। তিনি অন্যতম শ্রেষ্ঠ [[ভারতীয় মহাকাব্য]] ''[[মহাভারত]]''-এর লিপিকার রূপে কল্পিত হন। ভারতের সর্বত্রই তাঁর পূজা প্রচলিত। তবে [[মহারাষ্ট্র]] ও তৎসন্নিহিত অঞ্চলে [[গণেশ পূজা]] জাতীয় উৎসব রূপে উদযাপিত হয়। [[পশ্চিমবঙ্গ]] ও [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশে]] [[পয়লা বৈশাখ|বাংলা নববর্ষের]] দিন গণেশ পূজা প্রচলিত। এছাড়াও [[দুর্গোৎসব|দুর্গোৎসবে]] সপরিবার দেবী [[দুর্গা]]র সঙ্গে গণেশও পূজিত হন। গণেশের [[গায়ত্রী]] মন্ত্রটি হল – ''মহৎকায়া বিদ্মহে বক্রতুণ্ডায় ধীমহি তন্নো দন্তী প্রচোদয়াৎ''।
৪৯ নং লাইন:
''গণেশ'' নামটির উৎস [[সংস্কৃত]] ''[[গণ]]'' ({{lang|sa|गण}}; ''{{IAST|gaṇa}}'', অর্থাৎ দল বা গোষ্ঠী) ও ''ইশ'' ({{lang|sa|ईश}}; ''{{IAST|īśa}}'', অর্থাৎ প্রভু) শব্দদ্বয়।<ref>See:
* Narain, A. K. "{{IAST|Gaṇeśa}}: A Protohistory of the Idea and the Icon". Brown, pp. 21–22.
* Apte, p. 395.</ref><ref>বাঙ্গালা ভাষার অভিধান, প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড, জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস সংকলিত ও সম্পাদিত, সাহিত্য সংসদ, [[কলকাতা]], [[১৯৮৬]] সংস্করণ</ref> এই ''[[গণ]]'' প্রকৃতপক্ষে [[শিব|শিবের]] উপদেবতা অনুচরবৃন্দের নাম।<ref>For the derivation of the name and relationship with the {{IAST|gaņas}}, see: Martin-Dubost. p. 2.</ref> সাধারণভাবে এই শব্দটির অর্থ সমূহ, দল বা সমষ্টি।<ref>আকাদেমি বিদ্যার্থী বাংলা অভিধান, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, [[কলকাতা]], ২০০৯</ref><ref name="Apte">Apte, p. 395.</ref> এই কারণে কোনো কোনো ব্যাখ্যাকারী "গণের অধিপতি" কথাটির অর্থ করেন "সমূহের দেবতা" বা "সমষ্টির দেবতা"।<ref>The word gaņa is interpreted in this metaphysical sense by Bhāskararāya in his commentary on the {{IAST|gaṇeśasahasranāma}}. See in particular commentary on verse 6 including names {{IAST|Gaṇeśvaraḥ}} and {{IAST|Gaṇakrīḍaḥ}} in: {{Harvnb|Śāstri Khiste|1991|pp=7–8}}.</ref> ''গণেশ'' শব্দের অপর একটি প্রতিশব্দ ''গণপতি'' ([[সংস্কৃত]]: गणपति; gaṇapati)। ''গণপতি'' শব্দটি ''গণ'' অর্থাৎ দল এবং ''পতি'' অর্থাৎ প্রভু – এই দুই সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত।<ref name="Apte"/> প্রাচীন সংস্কৃত অভিধান ''[[অমরকোষ]]'' গ্রন্থে<ref>See:
* {{Harvnb|Oka|1913|p=8}} for source text of {{IAST|Amarakośa}} 1.38 as {{IAST|vināyako vighnarājadvaimāturagaṇādhipāḥ - apyekadantaherambalambodaragajānanāḥ}}.
* {{Harvnb|Śāstri|1978}} for text of ''{{IAST|Amarakośa}}'' versified as 1.1.38.</ref> ''গণেশ'' নামের আটটি প্রতিশব্দের তালিকা প্রদত্ত হয়েছে: ''বিনায়ক'', ''বিঘ্নরাজ'' (আক্ষরিক প্রতিশব্দে ''বিঘ্নেশ''), ''দ্বৈমাতুর'' (দুই মাতার সন্তান) <ref>Y. Krishan ({{IAST|Gaṇeśa}}:Unravelling an Enigma, p.6): "Pārvati who created an image of {{IAST|Gaṇeśa}} out of her bodily impurities but which became endowed with life after immersion in the sacred waters of the Gangā. Therefore he is said to have two mothers--Pārvati and Gangā and hence called dvaimātura and also Gāngeya."</ref> ''গণাধিপ'' (আক্ষরিক প্রতিশব্দে ''গণেশ'' বা ''গণপতি''), ''একদন্ত'' (যার একটি দাঁত), ''হেরম্ব'', ''লম্বোদর'' (বৃহৎ উদর বিশিষ্ট) ও ''গজানন'' (হস্তীমুণ্ডবিশিষ্ট)।<ref>Krishan p.6</ref>
 
[[পুরাণ]] ও [[বৌদ্ধ]] তন্ত্রে গণেশকে ''বিনায়ক'' ([[সংস্কৃত]]: विनायक; ''vināyaka'') নামে অভিহিত করা হয়েছে।<ref name="Thapan">Thapan, p. 20.</ref> ''[[অষ্টবিনায়ক]]'' নামে পরিচিত [[মহারাষ্ট্র|মহারাষ্ট্রের]] আটটি বিখ্যাত গণেশ মন্দিরেও গণেশ এই নামে পূজিত হন।<ref>For the history of the {{IAST|aṣṭavināyaka}} sites and a description of pilgrimage practices related to them, see: Mate, pp. 1–25.</ref> ''বিঘ্নেশ'' ([[সংস্কৃত]]: विघ्नेश; vighneśa) ও ''বিঘ্নেশ্বর'' ([[সংস্কৃত]]: विघ्नेश्वर; vighneśvara) নামদুটি হিন্দু পুরাণে বর্ণিত গণেশের প্রাথমিক দায়িত্ব বিঘ্ন অপসারণকে নির্দেশ করে।<ref name = "Krishanvii">For Krishan's views on Ganesha's dual nature see his quote: "{{IAST|Gaṇeśa}} has a dual nature; as Vināyaka, as a ''{{IAST|grāmadevatā}}'', he is ''{{IAST|vighnakartā}}'', and as {{IAST|Gaṇeśa}} he is ''{{IAST|vighnahartā}}'', a ''{{IAST|paurāṇic devatā}}''." Krishan, p. viii.</ref>
 
[[তামিল ভাষা]]য় গণেশকে সাধারণত ''পিল্লে'' বা ''পিল্লাইয়ার'' (ছোটো শিশু) নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে।<ref>Martin-Dubost, p. 367.</ref> এ. কে. নারায়ণ এই দুই শব্দের পার্থক্য নির্দেশ করে লিখেছেন, ''পিল্লে'' কথাটির অর্থ শিশু, কিন্তু ''পিল্লাইয়ার'' কথাটির অর্থ মহান শিশু। তিনি আরও লিখেছেন যে দ্রাবিড় ভাষাগোষ্ঠীতে ''পাল্লু'', ''পেল্লা'' ও ''পেল'' কথাগুলির মাধ্যমে গজদন্ত অথবা সাধারণভাবে হাতিকে নির্দেশ করা হয়।<ref>Narain, A. K. "{{IAST|Gaṇeśa}}: The Idea and the Icon". Brown, p. 25.</ref> অনিতা রাইনা থাপান মনে করেন, ''পিল্লাইয়ার'' কথাটির মূল শব্দ ''পিল্লে'' কথাটির অর্থ সম্ভবত হস্তীশাবক; কারণ [[পালি ভাষা]]য় ''পিল্লাকা'' শব্দের অর্থ হস্তীশিশু।<ref>Thapan, p. 62.</ref>
 
== বিবর্তন ==
৭৬ নং লাইন:
 
=== জন্মকথা ===
* '''শিবপুরাণ''' – ''শিবপুরাণ''-এ উল্লিখিত উপাখ্যান অনুসারে, [[পার্বতী]] একদিন [[নন্দী|নন্দীকে]] দ্বারী নিযুক্ত করে স্নান করতে যান। এমন সময় শিব সেখানে উপস্থিত হলে, তিনি নন্দীকে তিরষ্কার করে পার্বতীর স্নানাগারে প্রবেশ করেন। এতে পার্বতী অপমানিত ও ক্ষুব্ধ হন। অবশেষে সখী জয়া ও বিজয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি জল থেকে পাঁক তুলে একটি সুন্দর পুত্রের মূর্তি নির্মান করেন ও সেই মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তাকে নিজের বিশ্বস্ত অনুচর নিয়োগ করেন। এরপর একদিন এই কুমারকে দ্বারী নিয়োগ করে পার্বতী স্নানে গমন করলে শিব তথায় উপস্থিত হন। কুমার শিবকে যেতে বাধা দেন। এতে প্রথমে প্রমথগণের সঙ্গে তার বিবাদ ও পরে পার্বতীর ইঙ্গিতে যুদ্ধ হয়। প্রমথগণ, শিব ও সকল দেবতা এই যুদ্ধে পরাজিত হন। তখন [[নারদ|নারদের]] পরামর্শে [[বিষ্ণু]] কুমারকে মোহাচ্ছন্ন করেন ও শিব শূলের দ্বারা তাঁর মস্তক ছিন্ন করেন। এই সংবাদ শুনে পার্বতী ক্রুদ্ধ হয়ে বিশ্বসৃষ্টি বিনষ্ট করতে উদ্যোগী হন। নারদ ও দেবগণ তাঁকে শান্ত করেন। পার্বতী তাঁর পুত্রের পুনর্জীবন দাবি করেন ও ইচ্ছা প্রকাশ করেন যেন এই পুত্র সকলের পূজ্য হয়। কিন্তু কুমারের মুণ্ডটি তখন আর পাওয়া যায় না। শিব তখন প্রমথগণকে উত্তরমুখে প্রেরণ করেন এবং যাকে প্রথমে দেখা যাবে তারই মস্তক নিয়ে আসতে বলেন। তারা একটি একদন্ত হস্তিমুণ্ড নিয়ে উপস্থিত হন ও দেবগণ এই হস্তিমুণ্ডের সাহায্যেই তাঁকে জীবিত করেন। অনন্তর শিব তাঁকে নিজপুত্র রূপে স্বীকার করেন। দেবগণের আশীর্বাদে এই কুমার সকলের পূজ্য হন ও গণেশ নামে আখ্যাত হন। <ref>শিবপুরাণ, ৩২।১৬।১৮</ref>
 
* '''স্কন্দপুরাণ''' – ''স্কন্দপুরাণ''-এ গণেশের জন্ম বিষয়ে একাধিক উপাখ্যান বর্ণিত হয়েছে। এই পুরাণের গণেশ খণ্ডে আছে, সিন্দূর নামে এক দৈত্য পার্বতীর গর্ভে প্রবেশ করে গণেশের মস্তক ছিন্ন করে। কিন্তু এতে শিশুটির মৃত্যু ঘটে না, বরং সে মুণ্ডহীন অবস্থাতেই ভূমিষ্ট হয়। জন্মের পরে, নারদ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে গণেশ তাঁকে ঘটনাটি জানান। নারদ এরপর তাকে এর একটি বিহিত করতে বললে, সে নিজের তেজে [[গজাসুর|গজাসুরের]] মস্তক ছিন্ন করে নিজের দেহে যুক্ত করে। <br />''স্কন্দপুরাণ''-এর ব্রহ্মখণ্ডে আছে, পার্বতী নিজের গাত্রমল থেকে একটি সুন্দর ও পূর্ণাঙ্গ পুতুল নির্মান করে তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন। এরপর পার্বতী তাঁকে নিজের স্নানাগারের দ্বাররক্ষকের দায়িত্ব অর্পণ করেন। শিব স্নানাগারে প্রবেশ করতে গেলে বালক-কুমার তাঁকে বাধা দেন। শিবের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ হয় ও শিব ত্রিশূলে তাঁর মস্তক ছিন্ন করেন। <ref>স্কন্দপুরাণ ১২।১৮</ref> এরপর গজাসুরকে সামনে পেয়ে শিব তার মস্তক ছিন্ন করেন তার মস্তক কুমারের স্কন্ধে যুক্ত করেন।<br />''স্কন্দপুরাণ''-এর অর্বুদ খণ্ডে বলা হয়েছে, পার্বতী গাত্রমল দিয়ে একটি মুণ্ডহীন পুতুল তৈরি করেন। তারপর [[কার্তিকেয়|স্কন্দকে]] বলেন, পুতুলটির মাথা তৈরির জন্য একতাল কাদা আনতে; এই পুতুল হবে তাঁর ভাই। স্কন্দ কাদা না পেয়ে একটি হাতির মাথা কেটে আনেন। পার্বতী আপত্তি করলেও দৈবযোগে এই মুণ্ডটিই পুতুলের স্কন্ধে যুক্ত হয়। এরপর শক্তিরূপিনী পার্বতী পুতুলটির জীবনদান করেন। গজমুণ্ডযুক্ত পুতুলের দেহে এক বিশেষ নায়কের ভাব ফুটে ওঠে। এই কারণে শিবের বরে ইনি ‘মহাবিনায়ক’ নামে পরিচিত হন। শিব বলেন, এই কুমার [[গণাধিপতি]] হবে ও সকল কাজের আগে এঁর পূজা না করলে কার্যসিদ্ধি হবে না। স্কন্দ এঁকে অস্ত্র কুঠার দান করেন, পার্বতী দেন মোদকপূর্ণ সুগন্ধযুক্ত ভোজনপাত্র। মোদকের গন্ধে ইঁদুর এঁর বাহন হয়।
১৫৮ নং লাইন:
অর্থাৎ, “দেবরাজ ইন্দ্রের মস্তকে বিরাজিত মন্দারপুষ্পের পরাগসমূহের দ্বারা রক্তিম হেরম্বের পাদপদ্মের রেণুসমূহ আমার বিঘ্নহরণ করুক।” <ref name="ReferenceA"/>
 
গণেশের প্রথম দিকের মূর্তিগুলিতে দেখা যায়, গণেশ তাঁর ভগ্ন দাঁতটি স্বহস্তে ধরে আছেন। গণেশ লম্বোদর গুপ্তযুগ থেকেই। ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ মতে, তাঁর উদরে সমগ্র জগৎসংসারের অবস্থান বলেই তিনি লম্বোদর। <ref>ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ, ২।৩।৪২।৩৪</ref> গণেশের হস্তসংখ্যা ও অস্ত্র নিয়ে নানা মতদ্বৈধ দেখা যায়। সচরাচর গণেশের চতুর্ভূজ মূর্তি অধিক পূজিত হলেও স্থানবিশেষে দ্বিভূজ থেকে ষড়ভূজ গণেশও দেখা যায়। গণেশের হাতে সাধারণভাবে পাশ-অঙ্কুশ, বরাভয় ও মোদকই দেখা যায়। তবে বাঙালি বিশ্বাসে গণেশ বিষ্ণুর মতো শঙ্খচক্রগদাপদ্মধারী। এই প্রসঙ্গে ''ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ''-এ কথিত পার্বতীর কৃষ্ণরূপী পুত্রলাভের উপাখ্যানটি স্মর্তব্য। গণেশের বাহন মুষিক বা ইঁদুর। ইঁদুর ধর্মের অবতার; মহাবল ও পূজাসিদ্ধির অনুকূল। অন্যমতে, [[সংস্কৃত]] মুষিক শব্দটি ‘মুশ’ ধাতু থেকে উৎপন্ন, যার অর্থ চুরি করা। মনে করা হয়, গণেশের পদতলে ইঁদুর, গণেশ কর্তৃক বিঘ্নবিজয়ের প্রতীকমাত্র। ''বৃহদ্ধর্ম পুরাণ'' ও ''ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ'' অনুসারে পৃথিবী গণেশকে মুষিক বাহন দিয়েছিলেন।
 
=== রূপভেদ ===
১৬৭ নং লাইন:
* '''মহাগণপতি''' – মহাগণপতি গণেশের একটি তান্ত্রিক রূপ। এঁর সঙ্গে শক্তি বিরাজমান এবং পরস্পর পরস্পরের উপস্থ স্পর্শ করে আছেন। এই মূর্তি শক্তিগণপতি বা বিরিগণপতির মতো আদিরসাশ্রিত।
 
* '''হেরম্ব-গণপতি''' – হেরম্ব-গণপতি ''তন্ত্রসার''-এ উল্লেখিত। তিনি পঞ্চানন। মধ্যের মাথাটি আকাশের দিকে ঊর্ধ্বমুখ। হাতে বর, অভয় , মোদক, নিজদন্ত, টাঙ্গি, মুণ্ডমালা, মুদগর, অঙ্কুশ ও ত্রিশূল। হেরম্ব শব্দের অর্থ দীন পালক। বাহন সিংহ। যদিও [[নেপাল|নেপালে]] হেরম্ব-গণপতির বাহন ইঁদুরই।
 
* '''নৃত্যগণেশ''' – নৃত্যগণেশ আটহাতে নৃত্যরত। তাঁর হাতে অস্ত্র নেই। তিনি নাচের মুদ্রা দেখাচ্ছেন।
'https://bn.wikipedia.org/wiki/গণেশ' থেকে আনীত