কামরূপ রাজ্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
PtomelyAsiaDetail.jpg ছবিটিকে Ptolemy_Asia_detail.jpg ছবি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
৭ নং লাইন:
|region = দক্ষিণ এশিয়া
|country = ভারত
|capital = Pragjyotishpur ([[গুয়াহাটি]])<br />Haruppeswara ([[Tezpur]])<br />Durjaya ([[গুয়াহাটি]])
|era = [[ভারতের আদি মধ্যযুগীয় রাজ্যসমূহ|ধ্রুপদী যুগ]]
|status = সাম্রাজ্য
১৬ নং লাইন:
|year_end = ১১৪০
|footnotes =
|today = {{flag|ভারত}}<br />{{flag|বাংলাদেশ}}
}}
'''কামরূপ''' রাজত্ব ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা এবং তৎসংলগ্ন এলাকার সমন্বয়ে গঠিত ছিল। প্রাচীনকালে এর নাম ছিল প্রাগজ্যোতিষ। বর্তমানে [[ভারত‍‌|ভারতের]] [[আসাম]] রাজ্য এবং [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] [[সিলেট]] বিভাগ এর অংশ ছিল।
 
যদিও এই ঐতিহাসিক রাজ্যের সময়কাল চতুর্থ থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে ছিল কিন্তু বহুপর পর্যন্ত এর উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচীন এবং মধ্যযুগে ঐতিহাসিকগণ কামরূপ নামেই এর উল্লেখ করেছেন। কামরূপ রাজ্যের সময়সীমা শেষ হবার পর মুসলিম গ্রন্থসমূহে ''কামরূ'' বা ''কামরূদ'' নামে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। কলিকা পুরাণ এবং সুয়ানচাং এর মতে এই রাজ্যের পশ্চিম সীমানায় করোতয়া নদী এবং পূর্বে সাদিয়ার নিকটবর্তী ''দিক্কারবাসিনী'' মন্দির ছিল<ref name="sircar90">ডি. সি. সরকার, (১৯৯০) ''The Comprehensive History of Assam'' ১ম ভলিউমের ৪র্থ অধ্যায়: Prāgjyotisha-Kāmarūpa, Publication Board Assam, পৃঃ ৬৩-৬৪</ref>। বর্মণ বংশ, ম্লেচ্ছা বংশ এবং পাল বংশ রাজ্যটি দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত শাসন করে যার পর কিনা খেন বংশ রাজধানী আরো পশ্চিমে সরিয়ে নিয়ে যায় এবং রাজ্যের নামকরণ করে কামাতা রাজ্য। সুতরাং কামরূপ রাজ্যের অস্তিত্ব পাল রাজাদের পতনের সাথেসাথে দ্বাদশ শতাব্দীতেই শেষ হয়ে যায়।
 
এই রাজ্যের নাম আজো আসামের কামরূপ জেলার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছে।
২৯ নং লাইন:
== ভৌগোলিক সীমানা ==
কলিক পুরাণ এবং চৈনিক পর্যচক সুয়ানচাং-এর মতে কামরূপের পশ্চিম সীমানায় ঐতিহাসিক করোতয়া নদী<ref name="karatoya">[http://banglapedia.search.com.bd/HT/K_0086.htm Historical Karatoya River] from [http://banglapedia.search.com.bd Banglapedia]</ref> এবং পূর্ব সীমায় তামেশ্বরী দেবীর মন্দির (কলিক পুরাণে উল্লিখিত ''पूर्वाते कामरूपस्य देवी दिक्करवासिनी-পূর্বতে কামরূপস্য দেবী দিক্কারবাসিনী'') যা ছিল আসাম রাজ্যের সর্বপূর্বে অবস্থিত বর্তমান সাদিয়ার নিকট। দক্ষিণ সীমানা ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা এবং ময়মনসিংহ জেলার মধ্যবর্তী এলাকায়। ফলে এটি সমগ্র ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা নিয়ে গঠিত ছিল এবং সময়ে সময়ে বর্তমান সময়ের ভুটান এবং বাংলাদেশের কিছু অংশও এর অধীন ছিল। এর প্রমাণ এই অঞ্চলে প্রাপ্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিলাদি হতে পাওয়া যায়। রাজ্যটি ত্রয়োদশ শতাব্দীর মধ্যে সম্পুর্নরূপে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে পরিণত হয় এবং এগুলোর মধ্য হতেই এই রাজ্যের উত্তরসুরী হিসেবে পশ্চিমে কামাতা রাজ্য এবং পূর্বে অহোম রাজ্যের উথ্থান ঘটে। ১৫৮১ সালে কামাতা রাজ্যের তদানীন্তন শাসক কোচ রাজা নারায়ণ তাঁর রাজ্যকে দুই ভাগ করেন এবং শঙ্কোশ নদীর পশ্চিম অংশ নিজে রেখে পূর্ব অংশ তার ভাইয়ের ছেলে চিলারায়কে উপঢৌকন দেন<ref name="bhuyan49">এস, কে, ভূইঞা (১৯৪৯) ''Anglo-Assamese Relations 1771-1826'', আসামের ইতিহাস এবং প্রাচীনতা শাস্ত্র বিভাগ, গোহাটি, পৃ ২৬০ এবং মানচিত্র</ref>। বর্তমান আসাম-পশ্চিম বঙ্গ সীমানার মধ্যে এই বিভাজনের গভীর ছাপ লক্ষ করা যায়। নারায়ণের শাসনামলের পর ১৬০২ হতে পরবর্তীতে পূর্বকোচ রাজ্য বারংবার মুঘলদের আক্রমণের স্বীকার হয় এবং ১৬১৫ সালে এটি মুঘল এবং অহমদের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয় যা কিনা সপ্তাদশ শতাব্দী পর্যন্ত চলতে থাকে যখন অহোমগণ মুঘলদের শেষবারের মতো পিছু হটতে বাধ্য করে। রাজ্যের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অহোমদের হাতে ‌১৮২৬ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের আগমনের পূর্ব পর্যন্ত অক্ষুন্ন থাকে।
 
== কামরূপ রাষ্ট্র ==
কামরূপ রাষ্ট্রের গঠন কামরূপ রাজাগণের ফেলে যাওয়া বিভিন্ন তাম্র শিলালিপি সুয়ানচাং-এর মতো বিভিন্ন পর্যটকের বর্ণনা হতে পাওয়া যায়।<ref name="chudhury1959">পি, সি, চৌধুরী (১৯৫৯) ''The History of Civilization of the People of Assam'', গোহাটি</ref>
 
'''রাজা রাজরা এবং রাজদরবার''': রাজাকে ঐশী উৎস হতে উপলব্ধ বলে মনে করা হতো। বংশ পরম্পরায় রাজা হবার প্রচলন ছিল, তবে দুটি প্রধান ঘটনার কারণে পৃথক পৃথক শাসক বংশের উৎপত্তি হয়। দ্বিতীয় ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রীগণ ব্রহ্মপাল নামীয় রাজাকে নির্বাচিত করেন যেহেতু পূর্ববর্তী রাজাগণ কোনো উত্তরাধিকারী ছাড়াই মৃত্যুবরণ করেন। রাজদরবার ''রাজগুরু'', কবি, শিক্ষিত লোকজন এবং চিকিৎসকদের দ্বারা ভর্তি থাকত। বিভিন্ন মহাকাব্যীয় উৎস হতে রাজদরবারের বিভিন্ন রাজকর্মচারীর উল্লেখ পাওয়া যায়: ''মহাবরধিপতি'', ''মহাপ্রতিহরা'', ''মহাল্লকাপ্রৌধিকা'', ইত্যাদি।
৪৬ নং লাইন:
'''প্রশাসন''': পুরো রাজ্য আধিপত্যপরম্পরাভিত্তিক প্রশাসনিক অংশে বিভক্ত ছিল যা উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ''ভুক্তি'', ''মণ্ডল'', ''বিষয়'', ''পুর'' (শহর) এবং ''অগ্রহরা'' (গ্রামেসমূহের সমষ্টি) নামে আখ্যায়িত ছিল।
 
এই সমস্ত অংশের প্রশাসনিক কার্যে ''ন্যায়করণিক'', ''ব্যবহারিক'', ''কায়স্থ'' সমুখ কর্মকর্তাগণ একজন ''অধিকর''-এর অধীনে নিয়োজিত থাকত। তারা আইনি কার্যেও নিয়োজিত থাকত, যদিও রাজাই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী থাকত। আইনের প্রয়োগ এবং শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা ''দণ্ডিক'' (ম্যাজিস্ট্রেট) এবং ''দণ্ডপশিক'' (যারা ''দণ্ডিক''গণের আদেশ নির্বাহ করত) নামীয় কর্মকর্তাদের ওপর ন্যস্ত থাকত।
 
== শাসকগণ ==
৫২ নং লাইন:
 
== ভৌম বংশ ==
ঐতিহাসিক রাজাদের শাসন শুরু হয় গুপ্ত রাজা সমুদ্রগুপ্তের সমসাময়িক বর্মণ (ভৌম) বংশের পুশ্যবর্মণের (৩৫০-৩৭৪ খ্রীঃ) মাধ্যমে। কামরূপের ভৌম রাজাদের মধ্যে সবচাইতে ঘটনাবহুল ছিলেন ভাস্করবর্মণ (৬০০-৬৫০ খ্রীঃ), যার শাসনকালে সুয়ানচাং রাজ্য ভ্রমণে আসেন। প্রকৃত রাজধানী ছিল প্রাগজ্যোতিষপুরে যা বর্তমান গোহাটির আশেপাশের জাতীয় এবং দিসপুর এলাকার অধীন<ref name="sircar90_c">Sircar (1990), pp 72</ref>, যেখান হতে স্থিতবর্মণ রাজধানী ব্রহ্মপুত্র নদীর নিকটবর্তী এলাকায় নিয়ে আসে।
 
ভাস্করবর্মণ অবিভক্ত বঙ্গের প্রথমদিককার শাসক শশাঙ্কের ওপর হামলা চালানোর জন্য হর্ষবর্ধনের সাথে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ হয়। যদিও শশাঙ্ক ছিলেন অজেয়, তবে তার মৃত্যুর পর তার রাজ্যকে হর্ষবর্ধন এবং ভাস্করবর্মণ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। নিধিনপুরে (সিলেট জেলা, বাংলাদেশ) প্রাপ্ত ভাস্করবর্মণের শিলালিপি হতে রাজ্যের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে ৬ষ্ঠ থেকে ৭মশতকে। এই তাম্রলিপি ভুটিবর্মণের ধ্বংশপ্রাপ্ত লিপিকে স্থলাভিষিক্ত করে। ইহা মনে করা হয় যে ভাস্করবর্মণ চীনের সহিত সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। তিনি সুয়ানচাংকে একটি চীনা গান শুনিয়েছিলেন যা তার রাজ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। একটি চীনা ভাষ্যমতে হর্ষের মৃত্যুর পর তিনি চীন হতে আগত ওয়াং হিউয়েন সু -এর নেতৃত্বে পরিচালিত একটি লক্ষ অর্জনে সাহায্য করেছিলেন। তার সময়কালে রাজ্যে বহু মেধাসম্পন্ন লোকজন অধ্যয়নের জন্য ভ্রমণ করতে আসত।
 
== ম্লেচ্ছা বংশ ==