আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (বাংলাদেশ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Buzzzman (আলোচনা | অবদান)
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
৭ নং লাইন:
}}</ref>
 
== ইতিহাস ==
=== ট্রাইব্যুনাল গঠন ===
১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচার বিষয়ে ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলাদেশে বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মাঝে ব্যাপক সচেতনতার সৃষ্টি হয়।<ref>{{Cite news
| title = Dhaka body lists `war criminals’ of 1971
৩৯ নং লাইন:
বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সিলেট-৩ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীসহ সিনিয়র সাংসদরা প্রস্তাবটিকে সমর্থন জানালে স্পিকার তা অনুমোদন দেওয়া হবে কিনা এই প্রশ্ন ভোটে নেন। মৌখিক ভোটে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।<ref>"[http://bdnews24.com/bangla/details.php?id=95717&cid=7 যুদ্ধাপরাধের বিচারে সংসদ সর্বসম্মত]", বিডিনিউজ২৪, ২৯ জানুয়ারি ২০০৯</ref><ref>"[http://www.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=73557 JS passes proposal to try war criminals]", ''The Daily Star'', ৩০ জানুয়ারি ২০০৯</ref>
 
সংসদে গৃহীত প্রস্তাবের বাস্তবায়নে সরকার বিদ্যমান [[আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩|আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস অ্যাক্ট ১৯৭৩]] অনুযায়ী অভিযুক্তদের তদন্ত এবং বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত ঘোষণাটি আসে ২০০৯ সালের ২৫শে মার্চ।<ref>"[http://bdnews24.com/bangla/details.php?id=98248&cid= ৭৩ এর আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে]", বিডিনিউজ২৪, ২৫শে মার্চ ২০০৯</ref>
<ref name="lawcom">{{Cite web
|url= http://www.lawcommissionbangladesh.org/reports/87.pdf
|title=Opinion of the Law Commission on the technical aspects of the International Crimes (Tribunals) Act, 1973 (Act No. XIX of 1973
|accessdate=2010-09-19
}}</ref> বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ এবং শীর্ষ আইনজীবীদের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে সরকার ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সরকার ২০০৯ সালের ২১শে মে বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়ে ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টটি আইন কমিশনে পাঠায়।<ref name="lawcom"/> এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইন কমিশন দেশের বিশেষজ্ঞ আইনজীবী, বিচারপতি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আরও কয়েকজন আইনজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে ১৯৭৩ সালে প্রণীত ট্রাইব্যুনালে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে সংশোধন আনার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেয়।<ref name="lawcom"/><ref>{{Cite news
| title = Int'l law on war crimes trial being updated: Shafiq
| url = http://bdnews24.com/details.php?id=133272&cid=3
৬৪ নং লাইন:
| accessdate = 2010-09-19}}</ref>
 
সংশোধনীর মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকেও বিচারের আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা এবং 'ট্রাইব্যুনাল স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করবে' এই মর্মে সুস্পষ্ট আইনগত বিধান সন্নিবেশ করা সহ আরও কয়েকটি বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়।<ref name="amend"/> অবশেষে স্বাধীনতা লাভের ৩৯ বছর পর যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়।
<ref>{{Cite web
|url= http://www.bgpress.gov.bd/index.php?option=com_docman&task=doc_download&gid=3820&Itemid=
৭২ নং লাইন:
}}</ref> এরই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার এবং তাদের অপরাধের বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেয় ট্রাইব্যুনাল। নাগরিক সমাজের দাবি এবং তাদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুরাতন হাইকোর্ট ভবনকে আদালত হিসেবে প্রস্তুত করা হয়।
 
== অবকাঠামো ==
=== ট্রাইব্যুনাল-১ ===
২০১০ সালের ২৫শে মার্চ [[আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩]]-এর ৬ ধারার বলে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। সেই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক এবং অন্য দুজন বিচারক ছিলেন বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এ কে এম জহির আহমেদ। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২২শে মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হওয়ার পর এটিএম ফজলে কবীর প্রথম ট্রাইব্যুনাল থেকে সরে গিয়ে দ্বিতীয়টির চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করেন।<ref name="formation">[http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-03-26/news/51693 "যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু"], দৈনিক প্রথম আলো, ২৬ মার্চ ২০১০</ref> তার স্থলাভিষিক্ত হন হাইকোর্টের বিচারপতি আনোয়ারুল হক।<ref name="ict2"/> এর মধ্যে নিজামুল হক ও ফজলে কবীর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের কর্মরত বিচারপতি এবং জহির আহমেদের জেলা পর্যায়ে ৩০ বছর বিচারক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।<ref ="malum">"[http://icsforum.org/blog/icsf/text-of-speech-before-the-eu-parliaments-delegation-by-ict-prosecutor/ ICT Prosecutor’s Speech before South Asian Committee of EU Parliament]", Meeting on Bangladesh: Exchange of Views on War Crimes Trials and on Accountability Issues, ৩১ জানুয়ারি ২০১২</ref>
 
=== ট্রাইব্যুনাল-২ ===
বিচার প্রক্রিয়া আরও গতিশীল করতে তিন সদস্যবিশিষ্ট নতুন আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয় ২০১২ সালের ২২শে মার্চ। এর নাম হয় ট্রাইব্যুনাল-২ বা ICT-2. দ্বিতীয় এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন প্রথম ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর। অন্য দুজন সদস্য ছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও প্রথম ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার শাহিনুর ইসলাম।<ref name="ict2">[http://icsforum.org/mediarchive/2012/03/23/another-tribunal-formed/ "আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন"], দৈনিক কালের কণ্ঠ, ২৩ মার্চ ২০১২</ref>
 
=== বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেল ===
২০১০ সালের ২৫শে মার্চ প্রথম ট্রাইব্যুনালের জন্য ১২-সদস্যবিশিষ্ট একটি আইনজীবী প্যানেল গঠন করা হয়েছিল। প্যানেলের প্রধান তথা চিফ প্রসিকিউটর ছিলেন গোলাম আরিফ। বাকি ১১ জন আইনজীবী ছিলেন সৈয়দ রেজাউর রহমান, গোলাম হাসনাইন, রানা দাশগুপ্ত, জহিরুল হক, নুরুল ইসলাম, সৈয়দ হায়দার আলী, খন্দকার আবদুল মান্নান, মোশারফ হোসেন, জিয়াদ-আল-মালুম, সানজিদা খানম ও সুলতান মাহমুদ।<ref name="formation"/>
 
=== তদন্তকারী সংস্থা ===
ট্রাইব্যুনাল ও আইনজীবী প্যানেল গঠনের পাশাপাশি প্রাক্তন জেলা জজ ও আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব আবদুল মতিনের সমন্বয়ে ৭ সদস্যের একটি তদন্তকারী সংস্থা নিয়োগ দেয়া হয়েছিল একই দিনে। সংস্থার অন্য সদস্যরা ছিলেন: পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আবদুর রহিম, সাবেক উপমহাপরিদর্শক কুতুবুর রহমান, মেজর (অব.) এ এস এম সামসুল আরেফিন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মীর শহীদুল ইসলাম, একই বিভাগের পরিদর্শক নুরুল ইসলাম ও আবদুর রাজ্জাক খান।<ref name="formation"/>
 
=== বিচারালয় ===
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত পুরাতন হাইকোর্ট ভবনকে আদালত হিসেবে প্রস্তুত করে একে ট্রাইব্যুনালের বিচারালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়।<ref name="formation"/>
 
== অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ ==
{| class="wikitable sortable"
|-
১১৭ নং লাইন:
 
== যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবীতে গন-আন্দোলন ==
৫ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ তারিখে ট্রাইব্যুনাল যুদ্বাপরাধী [[আব্দুল কাদের মোল্লা]]কে ৩টি মামলায় ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ২টি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। এই রায় কিছু মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। কাদের মোল্লাসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবীতে ওইদিনই ছাত্র, শিক্ষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষ জড় হতে থাকে ঢাকার শাহবাগ চত্বরে। [[২০১৩ শাহবাগ আন্দোলন|শাহবাগের এই প্রতিবাদ]] অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন অংশে। শাহবাগসহ সারা বাংলাদেশেই 'যুদ্ধাপরাধী'র ফাঁসির দাবীতে গঠিত হয় গনজাগরণ মঞ্চ<ref>[http://www.clickittefaq.com/ দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইট]</ref>।কিন্তু শাহবাগে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে রয়েছে নাস্তিক ব্লগাররা, এই অভিযোগে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক [[শাহ আহমদ শফী]]র নেতৃত্বে [[হেফাজতে ইসলাম]] নামক একটি সংগঠন সক্রিয় হয়ে উঠে<ref>[http://www.thedailystar.net/beta2/news/hefajat-demands/ the dailystar website]</ref>। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে শাহবাগ আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে<ref>[http://archive.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=269336]</ref>। কিন্তু তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে [[দৈনিক ইনকিলাব]] ও এর পরপরই [[দৈনিক আমার দেশ]] ধারাবাহিক আকারে কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে দাবী করা হয় যে ব্লগার রাজীব মুসলমানদের শেষ নবী [[মুহাম্মদ]] সম্পর্কে কটুক্তি করেছে<ref>[http://archive.thedailystar.net/newDesign/news-details.php?nid=270794 the dailystar website]</ref> । এর পরপর হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফা দাবী এবং এরকম কটুক্তিকারীদের ফাঁসির দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। এ সময়ই শাহবাগ আন্দোলন ও হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়<ref>[http://www.firstpost.com/topic/place/bangladesh-bangladesh-hefajat-e-islam-try-to-attacked-shahbag-gonojagor-video-3yMmttIQjYM-1247-1.html]</ref>।
 
== বিচারের বিরূদ্ধে সমালোচনা ==
এছাড়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা [[হিউম্যান রাইটস্‌ ওয়াচ|হিউম্যান রাইটস ওয়াচ]] এ ট্রাইব্যুনালের কাজের বিরোধীতা করে বলেছে, <b>'''Bangladesh: Death Sentence Violates Fair Trial Standards</b>'''<ref>[http://www.hrw.org/news/2013/09/18/bangladesh-death-sentence-violates-fair-trial-standards Human Rights Watch Website]</ref> । তদুপরি <b>'''যুক্তরাজ্যের হাউজ অব লর্ডস</b>''' সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে<ref>[http://bdinn.com/news/bk-lawer-lord-calile-asked-un-to-act-on-deterotrating-rigths-situation-in-bangladesh/ UK House of Lords Disapproved The Verdict of SQ Chowdhury]</ref> । ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী ব্রিটিশ লর্ড কার্লাইল এ রায় প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেন<ref>[http://progressbangladesh.com/press-statement-lord-carlie-on-ict/ Lord Carlile Calls the Verdict "Disturbing"]</ref> ।
 
মার্চ ২০১৩ সালে [[দ্য ইকোনমিস্ট]] সাপ্তাহিক এই বিচার ব্যবস্থায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের হস্তক্ষেপ, প্রতিরক্ষার জন্য যথেষ্ঠ সময় না দেওয়া, প্রতিরক্ষার সাক্ষী পাচার এবং নিরপেক্ষতা বিতর্কে বিচারকদের পদত্যগ উল্লেখ করে সমালোচনা করে।<ref>[http://www.economist.com/news/leaders/21573990-bangladeshs-war-crimes-tribunal-sullying-its-judicial-and-political-systems-another-kind Another kind of crime]</ref>
 
== আরও দেখুন ==
* [[২০১৩-র_শাহবাগ_আন্দোলনর শাহবাগ আন্দোলন]]
* [[আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কালপঞ্জি]]
* [[১৯৭১ বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড]]
১৩২ নং লাইন:
* [[রাজাকার]]
 
== তথ্যসূত্র ==
{{reflist|2}}
 
== বহিসংযোগ ==
* [http://supremecourt.gov.bd/act_files/act_435.html আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনালস) আইন ১৯৭৩] সুপ্রিম কোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে।
* [http://icsforum.org/library/files/277_2010.pdf Source link of aforementioned Judgment delivered by Mr Justice Mamnoon Rahman and Lady Justice Syeda Afsar Jahan]