অতীশ দীপঙ্কর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
৫ নং লাইন:
| caption = অতীশ দীপঙ্করের এই স্বাতন্ত্র্যসূচক প্রতিকৃতি [[তিব্বত|তিব্বতের]] কদম্পা আশ্রম থেকে উম্ভূত যা ক্রনস সংগ্রহশালা ১৯৩৩ সালে নিউ ইয়র্কের [[মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম আর্ট]] কে উপহার দেয়। এই গ্রাফিক চিত্রণে দেখা যাচ্ছে অতীশ দীপঙ্কর তার বাম হাতে তাল পাতার একটি দীর্ঘ, পাতলা পাণ্ডুলিপি যা সম্ভবত অনেক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ তিনি লিখেছেন এবং তিনি তার ডান হাত দিয়ে শিক্ষণ এর অঙ্গভঙ্গি করছেন তা প্রতীকায়িত করে।<ref>{{cite web |url=http://www.metmuseum.org/toah/hd/tibu/ho_1993.479.htm |title=Portrait of Atisha [Tibet (a Kadampa monastery)] (1993.479) |accessdate=2008-01-11 |year=2006 |month=October |work=Timeline of Art History |publisher=New York: The Metropolitan Museum of Art, 2000– }}</ref>
| birth_date = ৯৮২
| birth_place = [[বিক্রমপুরী]], [[পাল সাম্রাজ্য]]<br />
| death_date = ১০৫৪
| death_place = চে-থঙ, [[তিব্বত]]<br /> (বর্তমানে [[গণচীন|চীন]])
| religion = [[বৌদ্ধ ধর্ম|বৌদ্ধ]]
| known = [[তিব্বত|তিব্বতের]] [[তিব্বতীয় বৌদ্ধ|সারমা]] প্রতিষ্ঠার প্রধান একজন ব্যক্তিত্ব।
১৯ নং লাইন:
'''অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান''' হলেন একজন প্রখ্যাত পণ্ডিত যিনি পাল সাম্রজ্যের আমলে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধধর্মপ্রচারক ছিলেন।
 
== জন্ম ==
মহামহোপাধ্যায় সতীশ্চন্দ্র বিদ্যাভূষণ ও [[রাহুল সাংকৃত্যায়ন|রাহুল সাংকৃত্যায়নের]] মতানুসারে পালযুগে মগধের পূর্ব সীমান্তবর্তী প্রদেশ অঙ্গদেশের পূর্ব প্রান্তের সামন্তরাজ্য সহোর, যা অধুনা [[ভাগলপুর]] নামে পরিচিত, তার রাজধানী বিক্রমপুরীতে সামন্ত রাজা কল্যাণশ্রীর ঔরসে রাণী প্রভাবতী দেবীর গর্ভে ৯৮২ খ্রিস্টাব্দে অতীশ দীপঙ্করের জন্ম হয়। <ref name="তিব্বতে সওয়া বছর">তিব্বতে সওয়া বছর - রাহুল সাংকৃত্যায়ন, অনুবাদ - মলয় চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশক - চিরায়ত প্রকাশন প্রাইভেট লিমিটেড, ১২ বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০০৭৩, ISBN 81-85696-27-6</ref> কিন্তু কিছু ঐতিহাসিকের মতে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত [[বিক্রমপুর|বিক্রমপুর পরগনার]] বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ।<ref name= Dhaka>"চন্দ্রগর্ভ থেকে শ্রীজ্ঞান" - ত্রৈমাসিক ঢাকা, ১ম বর্ষ, ১ম সংখ্যা, পৃষ্ঠা ১২</ref>
২৭ নং লাইন:
== শিক্ষা ==
 
প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন মায়ের কাছে। তিন বছর বয়সে সংস্কৃত ভাষায় পড়তে শেখা ও ১০ বছর নাগাদ বৌদ্ধ ও অবৌদ্ধ শাস্ত্রের পার্থক্য বুঝতে পারার বিরল প্রতিভা প্রদর্শন করেন তিনি। মহাবৈয়াকরণ বৌদ্ধ পণ্ডিত জেত্রির পরামর্শ অনুযায়ী তিনি [[নালন্দা]]য় শাস্ত্র শিক্ষা করতে যান।<ref name="p-alo"></ref>
 
১২ বছর বয়সে নালন্দায় আচার্য বোধিভদ্র তাঁকে শ্রমণ রূপে দীক্ষা দেন এবং তখন থেকে তাঁর নাম হয় দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বোধিভদ্রের গুরুদেব অবধূতিপাদের নিকট সর্ব শাস্ত্রে পান্ডিত্য অর্জন করেন। ১৮ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি [[বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়|বিক্রমশীলা]] বিহারের উত্তর দ্বারের দ্বারপন্ডিত নাঙপাদের নিকট তন্ত্র শিক্ষা করেন। এরপর মগধের ওদন্তপুরী বিহারে মহা সাংঘিক আচার্য শীলরক্ষিতের কাছে উপসম্পদা দীক্ষা গ্রহণ করেন।<ref name="তিব্বতে সওয়া বছর"/> ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের জন্য তিনি পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণগিরি বিহারে গমন করেন এবং সেখানে প্রখ্যাত পন্ডিত রাহুল গুপ্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বৌদ্ধ শাস্ত্রের আধ্যাত্নিক গুহ্যাবিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণ করে ‘গুহ্যজ্ঞানবজ্র’ উপাধিতে ভূষিত হন।
৩৬ নং লাইন:
[[গুজ]] রাজ্যের দ্বিতীয় রাজা [[ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ]] কয়েক জন দূতের হাতে প্রচুর স্বর্ণ উপঢৌকন দিয়ে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে [[তিব্বত]] ভ্রমনের আমন্ত্রন জানালে দীপঙ্কর সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। এতে নিরাশ না হয়ে [[ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ]] সীমান্ত অঞ্চলে সোনা সংগ্রহের জন্য গেলে [[কারাখানী খানাত|কারাখানী খানাতের]] শাসক তাঁকে বন্দী করেন ও প্রচুর সোনা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করেন। [[ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ]] তাঁর পুত্র ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদকে মুক্তিপণ দিতে বারণ করেন এবং ঐ অর্থ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে [[তিব্বত|তিব্বতে]] আনানোর জন্য ব্যয় করতে বলেন। ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদ [[গুজ]] রাজ্যের রাজা হয়ে গুং-থং-পা নামে এক বৌদ্ধ উপাসককে ও আরো কয়েক জন অনুগামীকে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে [[তিব্বত|তিব্বতে]] আনানোর দায়িত্ব দেন। এরা নেপালের পথে বিক্রমশীলা বিহারে উপস্থিত হন এবং দীপঙ্করের সাথে সাক্ষাৎ করে সমস্ত সোনা নিবেদন করে ভূতপূর্ব রাজা [[ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ|ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদের]] বন্দী হওয়ার কাহিনী ও তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করলে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অভিভূত হন। আঠারো মাস পরে ১০৪০ খৃস্টাব্দে বিহারের সমস্ত দায়িত্বভার লাঘব করে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান [[তিব্বত]] যাত্রার জন্য প্রস্তুত হন। তিনি দোভাষী সহ বারো জন সহযাত্রী নিয়ে প্রথমে [[বুদ্ধগয়া]] হয়ে নেপালের রাজধানীতে উপস্থিত হন এবং নেপালরাজের আগ্রহে এক বছর সেখানে কাটান। এরপর [[নেপাল]] অতিক্রম করে থুঙ বিহারে এলে তাঁর দোভাষী ভিক্ষু গ্য-চোন-সেঙ অসুস্থ হয়ে মারা যান। ১০৪২ খৃস্টাব্দে [[তিব্বত|তিব্বতে]] র পশ্চিম প্রান্তের ডংরী প্রদেশে পৌছন। সেখানে পৌছলে ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদ এক রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করে তাঁকে থোলিং বিহারে নিয়ে যান। এখানে দীপঙ্কর তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ [[বোধিপথপ্রদীপ]] রচনা করেন। ১০৪৪ খৃস্টাব্দে তিনি পুরঙে, ১০৪৭ খৃস্টাব্দে [[সম-য়ে বৌদ্ধ বিহার]] ও ১০৫০ খৃস্টাব্দে বে-এ-বাতে উপস্থিত হন।<ref name="তিব্বতে সওয়া বছর"/>
 
== তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ==
দীপঙ্কর [[তিব্বত|তিব্বতের]] বিভিন্ন অংশে ভ্রমণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন। তিনি [[তিব্বতী বৌদ্ধধর্ম|তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে]] প্রবিষ্ট তান্ত্রিক পন্থার অপসারণের চেষ্টা করে বিশুদ্ধ [[মহাযান]] মতবাদের প্রচার করেন। [[বোধিপথপ্রদীপ]] রচনাকে ভিত্তি করে [[তিব্বত|তিব্বতে]] [[ব্কা'-গ্দাম্স]] নামে এক ধর্ম সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়।
 
== রচনা ==
দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন। [[তিব্বত|তিব্বতের]] ধর্ম, রাজনীতি, জীবনী, স্তোত্রনামাসহ তাঞ্জুর নামে বিশাল এক শাস্ত্রগ্রন্থ সংকলন করেন। বৌদ্ধ শাস্ত্র, চিকিৎসা বিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা বিষয়ে তিব্বতী ভাষায় অনেক গ্রন্থ রচনা করেন বলে তিব্বতীরা তাকে অতীশ উপাধীতে ভূষিত করে। অতীশ দীপঙ্কর অনেক সংস্কৃত এবং পালি বই তিব্বতী ভাষায় অনুবাদ করেন। দীপঙ্করের রচিত গ্রন্থগলির মধ্যে [[বোধিপথপ্রদীপ]], চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ, সত্যদ্বয়াবতার, মধ্যমোপদেশ, সংগ্রহগর্ভ, হৃদয়নিশ্চিন্ত, বোধিসত্ত্বমণ্যাবলী, বোধিসত্ত্বকর্মাদিমার্গাবতার, শরণাগতাদেশ, মহযানপথসাধনবর্ণসংগ্রহ, শুভার্থসমুচ্চয়োপদেশ, দশকুশলকর্মোপদেশ, কর্মবিভঙ্গ, সমাধিসম্ভবপরিবর্ত, লোকোত্তরসপ্তকবিধি, গুহ্যক্রিয়াকর্ম, চিত্তোৎপাদসম্বরবিধিকর্ম, শিক্ষাসমুচ্চয় অভিসময় ও বিমলরত্নলেখনা উল্লেখযোগ্য।<ref>স্বামী অভেদানন্দের কাশ্মীর ও তিব্বত ভ্রমণ - প্রকাশক- শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ, কলকাতা ৭০০০০৬, ISBN 978-81-88446-83-4</ref> বিখ্যাত পন্ডিত [[হরপ্রসাদ শাস্ত্রী]] এবং ইতালির বিখ্যাত গবেষক [[গ্যুসেপ তুচ্চি]] দীপঙ্করের অনেকগুলো বই আবিস্কার করেন।<ref name="bangladeshbarta"></ref>
 
== মৃত্যু ==
[[তিব্বত|তিব্বতে]] বৌদ্ধ ধর্মে সংস্কারের মতো শ্রমসাধ্য কাজ করতে করতে দীপঙ্করের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে ১০৫৪ খৃস্টাব্দে ৭৩ বছর বয়সে [[তিব্বত|তিব্বতে]]র [[লাসা]] নগরের কাছে চে-থঙের দ্রোলমা লাখাং তারা মন্দিরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।<ref name="bangladeshbarta"></ref><ref name="তিব্বতে সওয়া বছর"/>
 
== বহিঃসংযোগ ==
 
* [http://www.anandabazar.com/archive/1111029/29utsav1.html সেই এক বাঙালি বৌদ্ধ]