মহাযান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
১৯ নং লাইন:
 
===উৎস===
মহাযান শাখার উৎস সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় না।<ref name="Hirakawa Akira 1993, p. 260">Akira, Hirakawa (translated and edited by Paul Groner) (1993. ''A History of Indian Buddhism''. Delhi: Motilal Banarsidass: p. 260</ref> প্রথমদিকে পাশ্চাত্য গবেষকেরা মনে করতেন, এটি ছিল তথাকথিত "হীনযান" শাখার একটি বিরোধী শাখা। মহাযান শাখায় বুদ্ধ ও [[বোধিসত্ত্ব]] পূজার প্রবণতা থেকে অনুমান করা হয়, এটি বৌদ্ধধর্মের একটি ভক্তিবাদী ও গৃহস্থকেন্দ্রিক শাখা। [[স্তুপ]] উপাসনার সূচনা মহাযান শাখাতেই শুরু হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়।<ref>Akira, Hirakawa (1993), ''A History of Indian Buddhism: From Sakyamuni to Early Mahayana'': p. 271</ref> এটিকে ইউরোপীয় ধর্মবিশ্বাসের ইতিহাসে [[প্রোটেস্টান্ট]] আন্দোলনের সঙ্গে তুলনাও করা হয়। তবে আধুনিক কালে অনেকগুলি প্রাচীন গ্রন্থ আবিষ্কৃত হওয়ার পর এই ধারণাগুলি পরিত্যক্ত হয়েছে।<ref>e.g. Williams, ''Mahayana Buddhism''</ref> ''[[গণ্ডারখড়্গভীষণ সূত্র]]'' ইত্যাদি বইয়ের ধারণার অনুরূপ কিছু ধারণা, যেমন [[বোধিসত্ত্ব]] পথের প্রতি কঠোর আনুগত্য, নির্জনে কঠোর সন্ন্যাসধর্ম পালন ইত্যাদি প্রাচীনতম মহাযান ধর্মগ্রন্থগুলিতেও পাওয়া যায়।{{refn|group=note|"As scholars have moved away from this limited corpus, and have begun to explore a wider range of Mahayana sūtras, they have stumbled on, and have started to open up, a literature that is often stridently ascetic and heavily engaged in reinventing the forest ideal, an individualistic, antisocial, ascetic ideal that is encapsulated in the apparently resurrected image of “wandering alone like a rhinoceros.” ''Macmillan Encyclopedia of Buddhism'' (2004): p. 494}} মহাযান ভক্তিবাদী ও গৃহস্থকেন্দ্রিক শাখা ছিল বলে যে ধারণা প্রচলিত ছিল, তা আধুনিক কালে ভ্রান্ত বলে পরিত্যক্ত হয়েছে।{{refn|group=note|"One of the most frequent assertions about the Mahayana ... is that it was a lay-influenced, or even lay-inspired and dominated, movement that arose in response to the increasingly closed, cold, and scholastic character of monastic Buddhism. This, however, now appears to be wrong on all counts." ''Macmillan Encyclopedia of Buddhism'' (2004): p. 494}}
 
খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী ও খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে লিখিত [[সূত্রসাহিত্য|সূত্রগুলিতে]] প্রথম "মহাযান" কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায়। জান নাটিয়ার লিখেছেন, ''[[উগ্রপরিপৃচ্চ সূত্র]]'' ইত্যাদি প্রাচীনতম মহাযান সূত্রগুলিতে "মহাযান" শব্দটিকে কোনো পৃথক শাখার নাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়নি বা প্রাচীন শাখাগুলির সঙ্গে এই শাখার কোনো তত্ত্বগত বিরোধও দেখানো হয়নি। "মহাযান" বলতে বোঝানো হয়েছে বোধিসত্ত্বের পথ অনুসরণ করে [[গৌতম বুদ্ধ|গৌতম সিদ্ধার্থের]] বুদ্ধত্ব প্রাপ্তির কঠোর উচ্চাকাঙ্ক্ষাটিকে।<ref name="Nattier, Jan 2003 p. 193-194">Nattier, Jan (2003), ''A few good men: the Bodhisattva path according to the Inquiry of Ugra'': p. 193-194</ref>
 
মহাযান শাখাটি যে প্রাচীন কালে [[বৌদ্ধ ধর্ম|বৌদ্ধধর্মের]] একটি শাখা বা সম্প্রদায় হিসেবে বিবেচিত হত, তারও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। তখন মহাযান বলতে কিছু আদর্শ ও [[বোধিসত্ত্ব]] ইত্যাদি কিছু পরবর্তীকালে উদ্ভুত মতের সমষ্টি বোঝাত।<ref name="Nattier, Jan 2003 p. 193-194"/> পল উইলিয়ামস লিখেছেন, মহাযান প্রাচীনকালে আলাদা "বিনয়" বা শাখাসম্প্রদায় হিসেবে বিবেচিত হত না। তাই মহাযানপন্থী ভিক্ষু বা ভিক্ষুনিরা আনুষ্ঠানিকভাবে অন্য কোনো একটি প্রাচীন শাখার অন্তর্গত ছিলেন। ওই সব "নিকায়" বা সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের সদস্যপদ বর্তমানকালে পূর্ব এশিয়ায় [[ধর্মগুপ্তক]] নিকায় ও [[তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম|তিব্বতি বৌদ্ধধর্মে]] [[মূলসর্বাস্তিবাদ]] নিকায় অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। তাই মহাযান কখনই প্রাচীন শাখাগুলির থেকে পৃথক বিরোধী শাখা ছিল না।<ref>Williams, Paul (2008) ''Mahayana Buddhism: The Doctrinal Foundations'': pp. 4-5</ref> পল হ্যারিসনের ব্যাখ্যা অনুসারে, মহাযান নিকায়ের অন্তর্গত হলেও, নিকায়ের সকল সদস্য মহাযানপন্থী নন।<ref>Guang Xing. The Concept of the Buddha: Its Evolution from Early Buddhism to the Trikaya Theory. 2004. p. 115</ref> [[ভারত|ভারতে]] আগত চীনা পর্যটক-সন্ন্যাসীদের লেখা থেকে জানা যায়, সেকালে একই মঠে মহাযানপন্থী ও মহাযান-বিরোধী সন্ন্যাসীরা বাস করতেন।<ref>Williams, Paul (2000) ''Buddhist Thought: A Complete Introduction to the Indian Tradition'': p. 97</ref>
 
চীনা সন্ন্যাসী ইজিং খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে ভারতে এসেছিলেন। তিনি মহাযান ও হীনযানের পার্থক্য করতে গিয়ে লিখেছেন:<ref>Williams, Paul (2008) ''Mahāyāna Buddhism: The Doctrinal Foundations'': p. 5</ref>
২৯ নং লাইন:
{{quote|দুই মতবাদই এক বিনয় গ্রহণ করেছে। পাঁচটি নিষেধবাক্য দুই মতবাদেই গৃহীত। দুই-ই [[চার আর্যসত্য|চার আর্যসত্যের]] চর্চা করে। যারা বোধিসত্ত্বদের পূজা করেন এবং মহাযানসূত্রগুলি পড়েন, তাঁদের বলা হয় মহাযানপন্থী এবং যাঁরা এগুলি করেন না, তাঁদের বলা হয় হীনযানপন্থী।}}
 
মহাযান শাখার উৎস সম্পর্কে প্রাচীনতম প্রামাণ্য গ্রন্থগুলি হল মহাযান ধর্মগ্রন্থগুলির [[চীনা ভাষা|চীনা]] অনুবাদ। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী লোকক্ষেমা খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে [[চীন|চীনে]] প্রথম মহাযান ধর্মমত প্রচার করেছিলেন। তিনিই মহাযান সূত্রগুলি [[চীনা ভাষা|চীনা ভাষায়]] অনুবাদ করেন।{{refn|group=note|"The most important evidence — in fact the only evidence — for situating the emergence of the Mahayana around the beginning of the common era was not Indian evidence at all, but came from China. Already by the last quarter of the 2nd century CE, there was a small, seemingly idiosyncratic collection of substantial Mahayana sutras translated into what Erik Zürcher calls 'broken Chinese' by an Indoscythian, whose Indian name has been reconstructed as Lokaksema." ''Macmillan Encyclopedia of Buddhism'' (2004): p. 492}}
[[File:Prajnaparamita Java.jpg|thumb|upright|প্রজ্ঞাপারমিতার মূর্তি, সিংহসারি, [[পূর্ব জাভা]], [[ইন্দোনেশিয়া]]।]]