ব্ল্যাকবিয়ার্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
+ 8টি বিষয়শ্রেণী হটক্যাটের মাধ্যমে
সম্প্রসারন
২৬ নং লাইন:
 
১৭-শতকে ব্রিটেনে আমেরিকান উপনিবেশ বৃদ্ধি পাওয়া ও ১৮-শতকে আটলান্টিক দাস বানিজ্যের চরম বিকাশ ঘটায় ব্রিস্টল একটি গুরত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরে পরিনত হয় এবং টীচ সম্ভবত ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী ব্রিস্টলের অন্য দশটি যুবকের মত সমুদ্রকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি প্রায় নিশ্চিতভাবেই পড়তে ও লিখতে পারতেন; তিনি বণিকদের সাথে যোগযোগ করতেন ও মৃত্যুর সময় তার কাছে একটি চিঠি ছিল যা ক্যারোলিনা প্রদেশের প্রধান বিচারপতি ও সচিব তাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন। লেখক রবার্ট লি বলেছিলেন, ব্ল্যাকবিয়ার্ড সম্ভবত একটি সম্ভ্রন্ত ও ধনী পরিবারে জন্মগ্রহন করেছিলেন।<ref>{{Harvnb|Lee|1974|pp=4–5}}</ref> তিনি সম্ভবত ১৭-শতকের শেষ বর্ষে একটি দাসদের জাহাজে করে ক্যারিবীয় অঞ্চলে পৌঁছেছিলেন।<ref>{{Harvnb|Konstam|2007|p=19}}</ref> ১৮-শতকের লেখক চার্লস জনসন দাবি করেন ব্ল্যাকবিয়ার্ড কিছুদিন রাণী এ্যানার যুদ্ধের সময় জ্যামাইকার একটি প্রাইভেটিয়র জাহাজের নাবিকের কাজ করেছেন এবং তিনি তার অসাধারন সাহসিকতার জন্য নিজেকে সবার থেকে আলাদা মনে করতেন।<ref name="Johnson 1724 70">{{Harvnb|Johnson|1724|p=70}}</ref>
 
==নিউ প্রোভিডেন্স==
উপনিবেশবাদ, বাণিজ্য ও জলদস্যুতার ইতিহাসে ১৭ ও ১৮-শতকে [[ওয়েস্ট ইন্ডিজ]] ছিল অনেক সামুদ্রিক ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু। এসময় অনেক প্রাইভেটিয়ার জলদস্যুতে পরিনত হয়েছিল। প্রাইভেটিয়ার ও পরবর্তীতে জলদস্যু হেনরি জেনিংস ও তার দলবল মিলে সমুদ্রাভিযান পরিচালনার জন্য নিউ প্রোভিডেন্সের জনবসতিহীন দ্বীপপুঞ্জকে তাদের জলদস্যুতার কেন্দ্রে পরিনত করেছিল। কারন এই অঞ্চলটি ছিল ফ্লেরিডা যাতায়াতের সহজ পথ, এছাড়াও প্রচুর ইউরোপীয়ান বণিক জাহাজ এই পথ দিয়ে আটলান্টিক পাড়ি দিত। নিউ প্রোভিডেন্সের হার্বারে একসাথে শত-শত জাহাজ নোঙ্গর করে রাখা যেত ও রয়াল নেভির জাহাজ এখানে খুব বেশি নোঙ্গর করত না। বর্তমানে এই জায়গা যেমন পর্যটকদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু পূর্বে এমনটি ছিল না, লেখক জর্জ উডবারি বলেন, এই অঞ্চলটি বসবাসের জন্য তখন মোটেও উপযুক্ত ছিল না। সাধারনত লোকজন এখানে সাময়িকভাবে ব্রিশামের জন্য আসত। এখানে স্থায়ী আবাস ছিল শুধুমাত্র স্থানীয় জলদস্যু ও তাদের সঙ্গীদের।<ref>{{Harvnb|Woodbury|1951|pp=71–72}}</ref> এই অঞ্চলে কোন আইন ছিল না এবং রয়াল নেভির কোন নাবিকও এই বন্দরে ভিড়ত না, এখানে শুধু জলদস্যুদের স্বাগতম জানানো হত।<ref>{{Harvnb|Lee|1974|pp=9–11}}</ref>
 
টীচ ছিল তাদের মধ্যে একজন যিনি এই দ্বীপের সুযোগ-সুবিধা গ্রহন করেছিল। সম্ভবত প্রাইভেটিয়ার হিসেবে নাম লেখানোর পর জ্যামাইকা থেকে তিনি যুদ্ধে অংশ নিতে এই দ্বীপে এসেছিলেন এবং অন্য অনেকের সাথে জলদস্যুতাতে যোগ দিয়েছিলেন। মনে করা হয়, ১৭১৬-এর দিকে তিনি বেঞ্জামিন হর্নিগোল্ডের জাহাজে কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। হর্নিগোল্ড ছিলেন আরেক কুখ্যাত জলদস্যু যিনি নিউ প্রোভিডেন্সের জলসীমায় তার জলদস্যুতা পরিচালনা করতেন। ১৭১৬ সালে হর্নিগোল্ড টীচকে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া একটি ছোট জাহাজের ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত করেন।<ref>{{Harvnb|Lee|1974|pp=11–12}}</ref> ১৭১৭-এর প্রথম দিকে হার্নিগোল্ড ও টীচ দুজন মিলে মেইনল্যান্ডের দিকে যাত্রা করেন। তারা হাভানার বাইরে ১২০ ব্যারেল ময়দা বহনকারী একটি নৌকা দখল করে ও এর কিছুদিন পরই বারমোডার বাইরে থেকে ১০০ ব্যারেল ওয়াইনসহ একটি ছোট জাহাজ লুট করে। তারও কিছুদিন পর তারা মাদিরা থেকে দক্ষিন ক্যারোলিনার চার্লসস্টোন-এর দিকে যাত্রা করা একটি ভেসেল আটক করেন। এই সময়ের মধ্যে টীচ ও তার সহযোগী উইলিয়াম হাওয়ার্ড{{#tag:ref|Benjamin Hornigold may at this time have already parted company with Teach and his two vessels. If this was the case, William Howard would have been left in command of Teach's other sloop.|group="nb"}} সম্ভবত তার ক্রুদের সামলাতে ব্যাস্ত হয়ে পরে।
 
হার্নিগোল্ডের সাথে সমুদ্রাভিযানের সময় থেকেই সম্ভবত টীচ জলদস্যু হিসেবে তার নিজের কর্তৃত্ত প্রতিষ্ঠা করতে থাকে ও ক্রুদের বড় একটি অংশর উপর নিজের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়। ক্যাপ্টেন ম্যাথিও মান্টে যিনি জলদস্যু দমনে পরিচিত ছিলেন তিনি বলেন, “টীচ ছয়টি বন্দুক ব্যবহার করত ও তিনি ৭০ জন জলদস্যুর সর্দার ছিলেন।”<ref>{{Harvnb|Konstam|2007|p=64}}</ref> সেপ্টেম্বরে হার্নিগোল্ড ও টীচ স্টিডি বোনেট-এর জাহাজ দখল করে ও তাকে তাদের দলে নিয়ে নেন। স্টিডি বোনেট ছিলেন সম্ভ্রান্ত ও ধনী ব্যবসায়ী এবং আর্মি অফিসার যিনি পরবর্তীতে কুখ্যাত জলদস্যুতে পরিনত হন। বোনেটের জাহাজের ৭০ জন নাবিক তার ক্যাপ্টেনের প্রতি ছিল বিরক্ত ও খুব সহজেই টীচ তার জাহাজ ও ক্রুদের নিজের নিয়ন্ত্রনে নেন। এসময় এই জলদস্যুদের দখলে তিনটি জাহাজ হয়ে যায়, একটি হল রিভেঞ্জ, টীচের পুরোনো ছোট জাহাজ ও হার্নিগোল্ডের জাহাজ। অক্টোবরের মধ্যে অরেকটি জাহাজ আটক করে তারা নিজেদের বহরে যুক্ত করে।<ref>{{Harvnb|Konstam|2007|pp=78–79}}</ref> ২২ অক্টোবর, ১৭১৭ সালে তারা গুড ইনটেন্ট অফ ডাবলিন জাহাজ আটক করে ও জাহাজের মালামাল লুট করে।<ref>{{Harvnb|Lee|1974|pp=13–14}}</ref>
 
হার্নিগোল্ড সাবেক প্রাইভেটিয়ার ছিলেন বলে তিনি শুধু তার পুরোনো শত্র জাহাজ লুট করতেন কিন্তু তার ক্রদের চোখে পণ্য বোঝাই ইংরেজ জাহাজ কোন ক্ষতি ছাড়াই ছেড়ে দিতেন বলে ১৭১৭ সালের শেষের দিকে তার ক্ররা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ও তাকে হীনপদস্থ করা হয়। যাইহোক এই সিদ্ধান্তের সাথে টীচের কোন ধরনের সম্পৃক্ততা অজানা<ref>{{Harvnb|Konstam|2007|pp=66–67}}</ref> কিন্তু এই ঘটনার পরপরই হার্নিগোল্ড জলদস্যুতা থেকে অবসর নেন। যাওয়ার সময় তিনি তার সাথে রেঞ্জার ও একটি ছোট জাহাজ নিয়ে যান এবং টীচের জন্য রিবেঞ্জ ও একটি ছোট পাল তোলা জাহাজ রেখে যান।<ref>{{Harvnb|Konstam|2007|p=79}}</ref> এরপর আর কখনোই তাদের দুজনের মধ্যে সাক্ষাত হয়নি এবং নিউ প্রোভিডেন্সের অন্য অনেক ঘটনার মতই হার্নিগোল্ড পরের বছর জুনে রাজকীয় ক্ষমা পান।<ref>{{Harvnb|Woodbury|1951|p=155}}</ref>
 
==তথ্যসূত্র==