আব্দুল জলিল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sikbd (আলোচনা | অবদান)
লিমন২০১০ (আলোচনা | অবদান)
Sikbd (আলাপ)-এর সম্পাদিত 1368180 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে
৫৬ নং লাইন:
==মৃত্যু==
দীর্ঘ দিন যাবৎ তিনি কিডনির সমস্যায় এবং হৃদরোগে ভুগছিলেন। তাঁর হৃৎপিণ্ডের তিন-তিনবার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। ২০১৩ খ্রীস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে নওগাঁয় অবস্থানকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে ঢাকায় নেয়া হলে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। ২৬ ফেব্রুয়ারি উন্নততর চিকিৎসার লক্ষ্যে তাঁকে [[সিঙ্গাপুর|সিঙ্গাপুরে]] মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৪ মার্চ সোমবার তাঁর হৃৎপিণ্ডে পুনর্বার অস্ত্রোপচার করা হয়, কিন্তু তিনি অস্ত্রোপচার করাতে চাচ্ছিলেন না। পাঁচ ঘণ্টা স্বায়ী অস্ত্রোপচার সফল হয়। তিনি জ্ঞান ফিরে কথা বলেছিলেন। কিন্তু বৃক্কে ডায়ালাইসিসজনিত জটিলতায় ৬ মার্চ ভোর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়া হয়। ঐ দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সময় সাড়ে ছয়টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এসময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বৎসর।<ref>{{cite news|url=http://bangla.bdnews24.com/politics/article598870.bdnews|title=আব্দুল জলিল লাইফ সাপোর্টে|publisher=bdnews24.com|date=৬ মার্চ ২০১৩|accessdate=৭ মার্চ ২০১৩}}</ref><ref>{{cite news|url=http://prothom-alo.com/detail/date/2013-03-07/news/334505|title=চলে গেলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক আব্দুল জলিল|publisher=Prothom Alo|date=৭ মার্চ ২০১৩|accessdate=৭ মার্চ ২০১৩}}</ref>
গভীর শ্রদ্ধা-ভালবাসা ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা মোঃ আব্দুল জলিলের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ৮ মার্চ , ২০১৩, শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়ি নওগাঁ শহরের চকপ্রাণ মহল্লায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা ও মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
৮ মার্চ , ২০১৩, শুক্রবার সকাল থেকেই নওগাঁ সদরসহ ১১ উপজেলার আশেপাশের এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার-হাজার মানুষ তাদের প্রিয় জন আব্দুল জলিলকে শেষ বারের মত দেখতে ছুটে আসেন নওগাঁয়। জলিলের প্রিয়জনদের আহাজারি, রাজনৈতিক অনুসারীদের কান্নায় নওগাঁর আকাশ ভারী হয়ে ওঠে। কেউই ধরে রাখতে পারেনি চোখের জল।
এলাকার প্রবীনরা জানান, আব্দুল জলিল ছিলেন তাদের অহংকার ও গর্বের মানুষ। নিরহংকারী জলিল নওগাঁবাসীকে ভাল বাসতেন তাঁর প্রাণের চেয়েও বেশী। তিনি ছিলেন জাতীয় নেতা। গোটা দেশের মানুষের নেতা।
কিন্তু এলাকার মানুষের প্রতি তাঁর ছিল গভীর ভালবাসা। তাই এলাকার মানুষের সুখে দু:খে ছুটে আসতেন এলাকায়। অসুস্থ্য শরীরেও তিনি মাসে অন্তত দুবার আসতেন নওগাঁয়। জলিল নওগাঁয় আসলে সরব হয়ে ওঠতো গোটা শহর।
নিরহংকারী, পরোপকারী ও সদাহাস্যজ্জ্বল আব্দুল জলিল ছিলেন এলাকার সকলের অভিভাবক। তাঁর মৃত্যুতে নওগাঁর মানুষ হারালেন তাঁদের প্রিয় অভিভাবক। এলাকার মানুষের হৃদয়ে যে বড় শূন্যতার সৃষ্টি হলো তা কোনদিনই পূরণ হবার নয়।
জলিলের সহযোদ্ধা প্রিয়ভাজন ছিলেন নওগাঁ জেলা পরিষদের প্রসাশক এ্যাড. ফজলে রাব্বি। জলিলের মৃত্যুর শোকে নিথর হয়ে পরেছেন তিনি। কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না প্রিয়জনকে হারানোর কথা।
অশ্রুশিক্ত নয়নে স্মৃতিচারণ করে ফজলে রাব্বি বলেন, জলিল ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তিনি ছিলেন সকল ধর্ম ও দলের উর্দ্ধে। তিনি ভালবাসতেন সকলকেই সমান ভাবে। আর তাই তাঁকেও ভালবাসেন সব শ্রেণী পেশা ও মতাদর্শের মানুষ। যে কোন সমস্যায় সবাই ছুটে যেতেন তাঁর কাছে।
ছোট বেলা থেকেই জলিল ছিলেন দেশপ্রেমী। এলাকার মানুষকে নিয়ে তাঁর ভাবনা ছিলো গভীর। আর সেই ভাবনা থেকেই তিনি সারাটা জীবন কাজ করেছেন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে লন্ডন থেকে ব্যারিষ্টারী পড়া লেখা ছেড়ে চলে আসেন দেশে। মুক্তিযুদ্ধে কাজ করেন সংগঠক হিসেবে।
নওগাঁ এলে এক মুহুর্তও একা থাকতেন না জলিল। সব সময় দলের নেতা কর্মি ও সাধারন মানুষকে সাথে নিয়ে তিনি এলাকার উন্নয়নের পরামর্শ দিতেন। সবসময় মিশে থাকতেন সব মানুষের সাথে।
শুক্রবার দুপর ২টায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে নেতার মরদেহ আনা হয় নওগাঁ ষ্টেডিয়াম মাঠে। এ সময় কাঁন্নার শব্দে সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
লাশ গ্রহণের সময় সাংসদ সাধন চন্দ্র মজুমদার, শহীদুজ্জ্মান সরকার, ইসরাফিল আলম, ইমাজ উদ্দীন প্রামানিক, ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী, শাহীন মনোয়ারা হক, রাজশাহীর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির, নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো: এনামূল হক, পুলিশ সুপার কাইয়ুমুজ্জামান খাঁন উপস্থিত ছিলেন । জানাজার সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
লাশ সঙ্গে ঢাকা থেকে তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের মধ্যে নওগাঁয় আসেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুব-উল-হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন প্রমূখ।
দুপূর আড়াই টার দিকে জলিলের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নওগাঁ শহরের চকদেব মহল্লায় তাঁর বাসভবন ফয়েজ ভিলায়।
বিকাল ৩ টার দিকে নওগাঁ শহরের এটিম মাঠে নিয়ে যাওয়া হয় তার মরদেহ। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ জলিলের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও গার্ড অব অনার প্রদান শেষে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
যানাযায় উত্তরাঞ্চলের প্রায় সকল জেলার আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, নওগাঁর বিএনপির নেতাকর্মী ও তার অঙ্গ সংগঠন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পাটি, বাসদের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের লক্ষাধিক লোক নির্র্বীশেষে অংশগ্রহণ করেন।
৮ মার্চ , ২০১৩, সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আব্দুল জলিলের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সদর উপজেলার নিজ গ্রাম চকপ্রাণে। সেখানেও জানাযা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
 
== তথ্যসূত্র ==