গন্ধক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Smettems (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
Smettems-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে EmausBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
১ নং লাইন:
{{তথ্যছক গন্ধক}}
 
'''গন্ধক''' তথা '''সালফার''' (Sulfur or sulphur (IPA: /ˈsʌlfə/)) প্রাচীনকাল থেকে পরিচিত একটি মৌলিক পদার্থ। বৈশিষ্টপূর্ণ হলুদ রঙের কারণে একে সহজেই চেনা যায়। [[অজৈব রসায়ন|অজৈব]] এবং [[জৈব|জৈব রসায়ন]] উভয় [[রসায়ন|রসায়নে]] এর গুরুত্ব অপরিসীম। গন্ধকসালফার জীবনের জন্যে অপরিহার্য। কুড়িটি মোট [[অ্যামিনো অ্যাসিড|অ্যামিনো অ্যাসিডের]] মধ্যে দুটি [[অ্যামিনো অ্যাসিড|অ্যামিনো অ্যাসিডে]] গন্ধকসালফার আছে।
 
গন্ধকসালফার একটি বহুযোজী অধাতব রাসায়নিক পদার্থ। এর পারমাণবিক সংখ্যা ১৬ ও চিহ্ন "S"। গন্ধকসালফার প্রকৃতিতে বিশুদ্ধ রূপে অথবা সালফাইড বা সালফেট রূপে পাওয়া যায়। বহু ধাতব খনিজ প্রাকৃতিতে প্রধানতঃ সালফাইড রূপে বিদ্যমান (যেমন [[পাইরাইট]], [[চাল্কোপাইরাইট]])।
 
বিশুদ্ধ সালফারের তিনটি রুপভেদঃ
* হলুদ গন্ধকসালফার
* লাল গন্ধকসালফার
* কালো গন্ধকসালফার
এদের মধ্যে হলুদ গন্ধকসালফার সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। বিশুদ্ধ হলুদ গন্ধকসালফার নিজে হলুদ বর্ণের গন্ধহীন স্বাদহীন কেলাসিত পদার্থ। কিন্তু সালফাইড বিশেষ করে [[হাইড্রোজেন সালফাইড]] "পচা" গন্ধ বিশিষ্ট (খুব সম্ভবতঃ গন্ধক নামের উৎস) এবং সায়ানাইডের থেকেও বিষাক্ত।
 
সার কারখানায় সবচেয়ে বেশী ব্যাবহার হলেও, সালফারের অন্যান্য ব্যাবহারগুলির মধ্যে কয়েকটি হল
১৯ নং লাইন:
 
== আবিষ্কারের ইতিহাস ==
অনেক আগে থেকেই মানুষ গন্ধকের কথা জানতো। এর বেশ কিছু প্রমাণ রয়েছে। যেমন, প্রাচীন গ্রিসে মহাকবি [[হোমার|হোমারের]] সময়ে গন্ধকসালফার পুড়িয়ে প্রাপ্ত পদার্থ দ্বারা ঘরবাড়ি জীবাণুমুক্ত করা হতো। এই দহনের ফলে যে প্রকৃতপক্ষে [[সালফার ডাই অক্সাইড]] উৎপন্ন হতো তা কিন্তু তারা জানতো না। এ হিসেবে গন্ধকসালফার তথা গন্ধক অনেক প্রাচীন। এমনকি প্রাচীনকাল থেকে গন্ধকের সঞ্চয়ের কথাও মানুষ জানতো। [[প্লিনি দ্য এল্‌ডার]] তার রচনায় [[ইতালি]] এবং [[সিসিলি|সিসিলিতে]] গন্ধকের সঞ্চয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। তখনকার সময়ে গন্ধকের আরও কিছু ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে রঙ্জন বস্তু প্রস্তুতিতে, সুতোর উপর বিশেষ প্রলেপ তৈরীতে এবং [[আতসবাজী|আতসবাজীর]] কাজে। শেষোক্ত ব্যবহারটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ধারণা করা হয় [[বাইজানটিয়াম]] অঞ্চলে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে [[গ্রিক-ফায়ার]] নামে একটি বস্তু উদ্ভাবিত হয় যা আতসবাজীতে ব্যবহৃত হতো। এর উপাদানের মধ্যে ছিল একভাগ চূর্ণীত গন্ধক, দুই ভাগ [[কয়লা]] এবং ৬ ভাগ [[সোরা]]। বর্তমানকালে যে ধোঁয়াসৃষ্টিকারী কৃষ্ণ বর্ণের বারুদ প্রস্তুত করা হয় তার সাথে সেই পদার্থের উপাদানের বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।
 
মধ্যযুগেও গন্ধক ব্যবহারের একটি বিশেষ তাৎপর্য ছিল। কারণ এটি দাহ্য এবং যেকোন পদার্থের সাথে সহজেই যুক্ত হতে পারে। [[কিমিয়া|কিমিয়াবিদরা]] মনে করতেন গন্ধক একটি দাহ্য মৌল এবং সমস্ত ধাতুর মৌলিক উপাদান। অনেকে এর এমন ধর্মের কথা উল্লেখ করেছেন যা কখনই সম্ভব নয়। অবশ্য অনেক কিমিয়াবিদই আবার এর ধর্মের উপযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদানে সমর্থ হয়েছিলেন। তবে এর প্রকৃত ব্যাখ্যা প্রদান সম্ভব হয় উনবিংশ শতাব্দীতে। এ সময় বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ের প্রথম নির্ধারণ করেন যে এটি মৌলিক পদার্থ। কিন্তু এর সঠিক গাঠনিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সন্দেহ রয়েই গিয়েছিল। [[১৮০৮]] সালে বিজ্ঞানী ''এইচ. ডেভি'' পরীক্ষা করে দেখতে পান, সসাধারণ অবস্থায় সব গন্ধকের সাথেই সামান্য পরিমাণ [[অক্সিজেন]] এবং [[হাইড্রোজেন]] যুক্ত থাকে। এতে এর মৌলিকত্ব নিয়ে আবার প্রশন তোলা হয়। অবশেষে [[১৮০৯]] সালে ''গে-লুস্যাক'' নিঃসন্দেহে প্রমাণ করেন যে এটি মৌলিক। ডেভির সন্দেহের কারণ ছিল বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত গন্ধকের মধ্যে অক্সিজেনের পরিমাণের পার্থক্য হতো। আধুনিক রসায়নের ভিত্তিতে বলা যায়, ডেভি গন্ধকের সাথে যে অক্সিজেন পেয়েছিলেন তা গন্ধকের অক্সাইড থেকে পাওয়া যায়নি, বরং তা তিনি পেয়েছিলেন ধাতব অক্সিসালফাইড যৌগ থেকে।