২,২০০টি
সম্পাদনা
Ashiq Shawon (আলোচনা | অবদান) অ (→উৎস) |
BellayetBot (আলোচনা | অবদান) (Typo fixing, replaced: অন্তর্ভূক্ত → অন্তর্ভুক্ত, দ্বন্দ → দ্বন্দ্ব, ধরণ → ধরন (4), বাড়ী → বাড়ি using AWB) |
||
চিরায়ত বাঙালির সংস্কৃতিতে ধর্ম এবং কর্ম – এই দু’য়েরই রয়েছে সমান অংশগ্রহণ। এদেশের কৃষিজ উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে আমরা দেখতে পাই নৃত্য-গীতের দ্বারা চলে ঈশ্বর আর অবতারদের তুষ্ট করার নিরন্তন প্রক্রিয়া। বাংলা ষড়ঋতুর পরিক্রমায় বসন্তের শেষ ভাগে ও গ্রীস্মের পূর্ব-ভাগে অনুষ্ঠিত হয় গ্রামীন জনপদের অন্যতম প্রধান লোকজ-উৎসব “চৈত্র-সংক্রান্তী”। এসময়ই মূলতঃ বাংলার লোকজ উৎসবের অন্যতম প্রধান ধারা “গাজন”-এর শাখা “নীলের / শিবের গাজন” অনুষ্ঠিত হয় এবং এই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষতঃ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জমে উঠে এক-ধরনের লোকজ মেলার যা চৈত্রের শেষ-তিন দিন বিভিন্ন ধরনের গান ও আচার-অনুষ্ঠানাদি পালনের মাধ্যমে সমাপ্ত করা হয়। আর এ-সময় এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষ তাদের চলমান ঐতিহ্য অনুসারে পরিবেশন করে থাকে অষ্টক গীত / নৃত্যের।<br />
বাংলাদেশের ও পশ্চিমবঙ্গের পূর্বাংশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম একটি প্রধান উপাদান হলো এই অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনা; যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান অবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তার প্রেয়সী শ্রীরাধিকা দেবীর প্রণয়-লীলার পটভূমিতে রচিত। এটি এ-অঞ্চলের অধিবাসীদের অন্যতম প্রধান লোকজ উৎসব “চৈত্র-সংক্রান্তী”-এর সাথেই মূলতঃ সম্পর্কিত তবে এটি শিবের স্থলে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-লীলা বিষয়ক আখ্যান ও লোকপুরাণ অবলম্বনে পরিবেশিত হয়ে থাকে। এর পরিবেশনাতে গ্রামের ছোট ছোট ছেলে-ছোকরারা শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরাধিকা দেবী ও রাধার
“চৈত্র-সংক্রান্তী” উৎসবের কয়েকদিন পূর্ব হতে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির সামনে একদল শিল্পী গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে অর্থ সংগ্রহ করে; যেখানেও আমরা অন্যান্য বিভিন্ন
==উৎপত্তি ও নামকরণ==
ঠিক কি কারণে বা কোথা থেকে “অষ্টক” নামক গীত / নৃত্যের উদ্ভব ঘটেছে সে সম্পর্কে সঠিকভাবে কোনো তথ্য-বৃত্তান্ত জানা যায় না; বরং এই বিষয়ে নান-ধরনের মতামত প্রচলিত রয়েছে। কেউ বলেন, “এতে আটটি বৈষ্ণবীয় প্রসঙ্গ থাকায়”; কেউ বলেন, “প্রতি দলে আট জনে মিলে রাধা-কৃষ্ণের উক্তি-প্রত্যুক্তিমূলক নাট্যধর্মী গীত পরিবেশন করায়”; কারো মতে, “এটি শ্রীকৃষ্ণের অষ্টপ্রহরের লীলা-সংক্রান্ত নাট্যগীতি হওয়ায়”- একে “অষ্টক গীত / নৃত্য” বলা হয়। আবার এ সম্পর্কে কোন কোন গবেষকের মতে, “এ-সব গানে সনাতন ধর্মীদের অষ্ট-অবতার রাধা, কৃষ্ণ, সুবল, বিশাখা, ললিতা, বৃন্দা, বড়িমাই ও বলরাম-এর বিভিন্ন কার্য-চরিত্রের সমন্বয় ঘটেছে বলে এটি অষ্টক গীত / নৃত্য বলে পরিচিত”; বিপরীতে অপর একদল বলেন, “অবতার শ্রীকৃষ্ণ তার অষ্ট বা আটজন সখীকে নিয়ে লীলা করতেন এবং এ-গানে সেই উপাখ্যান আলোচিত হয় বলে একে অষ্টক গীত / নৃত্য বলে”। অন্য-দিকে, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এই গীত / নৃত্যে “বাসলী দেবী”-এর বন্দনাও রয়েছে, যা মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নিদর্শন বড়ু চন্ডীদাস রচিত “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন” কাব্যের ভণিতায়ও
বিভিন্ন অঞ্চলে একে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়; যেমনঃ ওপার বাংলার মুর্শিদাবাদ ও মালদহ অঞ্চলে “অষ্টকগান” নামে, এপার বাংলার বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলে ‘‘অষ্টগান’’ নামে, ফরিদপুর / বরিশাল অঞ্চলে “অষ্টক গীত / নৃত্য” নামে এটি পরিচিত।<br />
==অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনার সময়-কাল==
সাধারণত এই গীত / নৃত্য নীলের / শিবের গাজন উপলক্ষে প্রচলিত “চৈত্র-সংক্রান্তি”-এর সময় পরিবেশিত হয়। এতে মধ্যাহ্ন সূর্যকে গীত / নৃত্যের মাধ্যমে বন্দনা করতে হয় বলে এটি সাধারণত দিনের বেলায় পরিবেশন করা হয়; তবে আমাদের দেশের কিছু কিছু অঞ্চল, যেমনঃ নড়াইল ও খুলনায় এটি রাতের বেলায়ও যাত্রা-পালার ন্যায় পরিবেশিত হয়। “চৈত্র-সংক্রান্তি”-এর সময় অনুষ্ঠিত চড়ক পূজার একটি অন্যতম অঙ্গ হলো অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনা; যদিও চড়ক পূজা শিবের তুষ্টি ও পূণ্যার্থে অনুষ্ঠিত হয়, তবুও এর অঙ্গ হিসেবে কি কারণে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম-লীলার বর্ণনামূলক অষ্টক গীত / নৃত্যের
==পরিবেশনা খুটি-নাটি==
===পরিবেশনার ধরণ===
অষ্টক গীত / নৃত্য পরিবেশনার দুটি
===গানের ভাব ও ভাষা===
অষ্টক গীত / নৃত্যে গানের ভাষা আটপৌরে ও অতি সাধারণ হলেও এর আবেগ ও ভাবের প্রকাশ খুব হৃদয়গ্রাহী ও মনোমুগ্ধকর। এই গান সাধারণতঃ খেয়ালের ঢঙে গাওয়া হয় এবং গানে স্থায়ী ও অন্তরা নামক দুটি স্তবক থাকে; যাতে অন্তরাগুলি ভগ্ন ত্রিপদীর আঙ্গিকে রচিত। শিব ও অন্যান্য অবতারদের সম্পর্কে গাওয়া গানগুলোতে হালকা রসের মাধ্যমে শিব-পার্বতীর দাম্পত্য জীবনের
===পরিবেশক দল===
১০ থেকে ১২ জন শিল্পী নিয়ে অষ্টক গীত / নৃত্য দল গঠিত হয়; আর তারা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে থাকে। এতে একজন প্রধান গায়েন (যিনি সূত্রধর বা “সরকার” নামে পরিচিত), একজন করে
===ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র===
==পরিবেশনার পদ্ধিত==
অষ্টক গীত / নৃত্যের সূচনার পূর্বে উঠান বা মঞ্চের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বাদ্যযন্ত্রীরা প্রথমে জনপ্রিয় কোনো-একটি দেশাত্মবোধক গানের সুরে সম্মিলিত বাদ্য বাদন শুরু করেন এবং এর সঙ্গে সঙ্গে উঠানের একপাশ থেকে কৃষ্ণ, রাধা ও তার অষ্ট
==পরিবেশনা-স্থল==
অষ্টক গীত / নৃত্যের শিল্পী ও বাদ্যকরেরা সবক্ষেত্রেই দাঁড়িয়ে থেকেই এর পরিবেশনা প্রদর্শন করে থাকে। রাত্রিকালীন অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনার জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে মঞ্চ ব্যবহার করা হয় যার সুনির্দিষ্ট কোনো আকৃতি নেই; সাধারণ যাত্রা-পালার মঞ্চেই এটি পরিবেশিত হয়। আর দিনের বেলায় পরিবেশনার ক্ষেত্রে কুশীলররা
==কুশীলবদের সাজ-সজ্জা==
অষ্টক গীত / নৃত্যের পরিবেশনার সাথে যুক্ত শিল্পীরা সাজসজ্জায় বিভিন্ন
==শ্রোতা-দের শ্রেণী==
==শিল্পী-দের কথা==
অষ্টক গীত ও নৃত্য এদেশের অস্তায়মান লোকজ উৎসবের একটি অন্যতম প্রধান উপাদান; অতীতে এর পরিবেশক কয়েকজন প্রখ্যাত শিল্পী থাকলেও বর্তমানে এদের প্রচার ও প্রসার বলতে গেলে প্রায়
যদিও সনাতন ধর্মানুসারী জনসাধারণ তাদের অন্যতম-প্রধান লোকজ উৎসব “চৈত্র-সংক্রান্তি”-তে অষ্টক গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে থাকেন, কিন্তু ক্ষেত্র-বিশেষ তাদের পরিবেশনায় মুসলমান দু’একজন বাদ্যকর / কুশীলবকে অংশ নিতে দেখা যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০০০ সালের দিকে কুষ্টিয়া জেলার কিছু অঞ্চলে অষ্টক গীত ও নৃত্যের পরিবেশক কয়েকটি মুসলমান দলের উদ্ভব ঘটেছে যারা বিভিন্ন পালা-পার্বনে অষ্টক গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে।<br />
|
সম্পাদনা