শাফায়াত জামিল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৪৪ নং লাইন:
[[১৯৭১]] সালের [[নভেম্বর ২৬|২৬ নভেম্বর]] ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫/৫ গোর্খা রেজিমেন্টের তিনটি কোম্পানি [[সিলেট জেলা|সিলেটের]] রাধানগরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ করে। কিন্তু তাদের সেই আক্রমণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। পাকিস্তানিদের পাল্টা আক্রমণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে তারা রণে ভঙ্গ দিতে বাধ্য হয়। তাঁদের একজন কোম্পানি অধিনায়কসহ দেড় শতাধিক নিহত ও শতাধিক আহত হন। এরপর মিত্রবাহিনীর জেনারেল গিল নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর ৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক শাফায়াত জামিলের ওপর দায়িত্ব দিলেন সিলেটের রাধানগর এলাকার ছোটখেল মুক্ত করার। শাফায়াত জামিল সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি নিজেই ওই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন। প্রথাগত সামরিক যুদ্ধে এক কোম্পানি বা তার কম সেনা থাকলে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক সাধারণত যুদ্ধের ময়দানে যান না। কয়েকজন তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন। যোদ্ধা হিসেবে গোর্খাদের সুনাম পৃথিবীব্যাপী। ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্ট যা পারেনি, তা বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা [[১৯৭১]] সালে সম্ভব করেন। অকৃত্রিম দেশপ্রেম, মমত্ব ও দেশকে শত্রুমুক্ত করার দৃঢ় সংকল্প এবং অন্যদিকে শাফায়াত জামিলের অদম্য ও অটল মনোভাব সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী যোদ্ধায় রূপান্তর করেছিল। [[নভেম্বর ২৭|২৭ নভেম্বর]] গভীর রাতে শুরু হলো সেই ঐতিহাসিক অভিযান। ধানখেতের মধ্য দিয়ে প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা এগিয়ে চললেন পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থানের দিকে। সবার সামনে শাফায়াত জামিল ও কোম্পানি অধিনায়ক এস আই নূরুন্নবী খান। সমরে জয় অথবা মৃত্যু, সম্মুখযুদ্ধে যোদ্ধাদের যেকোনো একটি বেছে নিতে হয়। শাফায়াত জামিলের প্রত্যয় তা-ই। পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থানের কাছাকাছি গিয়ে তিনি অগ্রসর হলেন বাঁ দিক থেকে এবং এস আই নূরুন্নবী ডান দিক দিয়ে। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে গুলি করতে করতে তাঁরা পাকিস্তানি সেনাদের বিভিন্ন বাংকারের দিকে এগিয়ে চললেন। কয়েকটি বাংকারে হাতাহাতি যুদ্ধ হলো। তাঁরা তখন অজেয়, অপ্রতিরোধ্য। প্রচণ্ড আক্রমণের তীব্রতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তানি সেনারা সেখান থেকে পালিয়ে গেল। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই ছোটখেল মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে এল। নিহত হলো অসংখ্য পাকিস্তানি সেনা। কয়েকজন তাঁদের হাতে ধরা পড়ল। তখনো আশপাশে বিক্ষিপ্ত গোলাগুলি চলছে। চারদিকে মৃত পাকিস্তানি সেনাদের লাশ, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। ভোরের আলোয় শাফায়াত জামিল তদারক করছেন অবস্থান সুদৃঢ় করার কাজ। এমন সময় তাঁর ডান কোমরে গুলি লাগে। ছিটকে পড়েন তিনি, গুরুতর আহত হন। সহযোদ্ধারা তাঁকে ফিল্ড হাসপাতালে পাঠান। পরে যুদ্ধ জখমের কারণে জামিল পরবর্তীতে ভারতের শিলং সামরিক হাসপাতাল, শিলং, থেকে চিকিৎসা গ্রহন করেন।
==যুদ্ধের পরে==
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে, জামিল লে কর্নেল এবং উন্নীত হন বীর বিক্রম (তৃতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশ নাগরালিgallantry পুরস্কার) পদক লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ঢাকা সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঢাকা সেনানিবাস ৪৬ পদাতিক ব্রিগেডের এর ব্রিগেড কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। নভেম্বর ৩, ১৯৭৫ তারিখে [[খন্দকার মোশতাক আহমেদ|খন্দকার মোস্তাক আহমদের]] শাষনের বিরুদ্ধে একটি সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করার জন্য তিনি ব্রিগেডিয়ার [[খালেদ মোশাররফ|খালেদ মোশাররফকে]] সহায়তা করেছিলেন এবং তারা বঙ্গভবনের দিকে ধাবিত হন। ৭ নভেম্বর এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, খালেদ মুশাররফকে হত্যা করা হয়েছিলে এবং কর্নেল জামিল গ্রেফতার হয়েছিলেন। ৬ নভেম্বর পরিবর্তন এসেছিল মোস্তাক রাষ্ট্র দায়িত্ব থেকে সরে দাড়ান এবং বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম তার স্থলাভিসিক্ত হন।<ref> http://www.thedailystar.net/magazine/2007/08/03/perspective.htm</ref> তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরে তিনি ব্যবসাকে পেশা হিসাবে গ্রহন করেন। তিনি ঢাকা, বাংলাদেশে বসবাস করতেন।
 
==পুরস্কার ও সম্মাননা==