বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
[[Image:Bismillah.svg|thumb|200px|বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম|alt=Written version of the Basmala]]
পবিত্র কোরআন শরীফের ১১৪টি সূরার মধ্যে সূরা তওবা বাদে অন্য বাকি ১১৩টি সূরা শুরু করা হয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দিয়ে যার অর্থ পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। এছাড়া হাদীস থেকে জানা যায়, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বলে শুরু করতেন।<ref name="alhudaonline">[http://alhudaonline.com/?p=386 আল কুরআনই একমাত্র যুক্তিগ্রাহ্য ও বিজ্ঞানসম্মত ধর্মগ্রন্থ], প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ৮, ২০১০।</ref>অনেক কাজে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ বলা বা লেখার নির্দেশনা রয়েছে। বিধানগত বিচারে এটা মাসনূন বা মুস্তাহাব হলেও এর তাৎপর্য অত্যন- গভীর।<ref name="islam.masudkabir">[http://www.alkawsar.com/article/48 একটি অন্যায় কাজঃ ‘বিসমিল্লাহ ‘ ও ‘দরূদ’ অশুদ্ধ বা অসম্পূর্ণ বলা ও লেখা], প্রকাশের তারিখঃ আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ২০০৯।</ref>
 
 
১৮ নং লাইন:
 
== তাৎপর্য ==
[[Image:Bismillah.JPG|right|thumb|200px|The Basmala, artistically rendered in the shape of a pear|alt=White-on-black rendering of the Basmala in the shape of a pear]]
তাফসির-ই-ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে, ‘উসমান বিন আফফান রা: রাসূলুল্লাহ (সা:) কে ‘বিসমিল্লাহ’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তখন তিনি উত্তরে বলেছিলেন, এতে আল্লাহ তায়ালার নাম। আল্লাহর বড় নাম এবং এই বিসমিল্লাহর মধ্যে এতদূর নৈকট্য রয়েছে যেমন রয়েছে চুর কালো অংশ ও সাদা অংশের মধ্যে। ইবনে মরদুওয়াইর তাফসিরে রয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, আমার ওপর এমন একটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যার মতো আয়াত হজরত সুলাইমান ছাড়া অন্য কোনো নবীর ওপর অবতীর্ণ হয়নি। আয়াতটি হলো, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’। হজরত জাবির রা: বর্ণনা করেন, যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন পূর্ব দিকে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, বায়ুমণ্ডলী স্তব্ধ হয়ে যায়, তরঙ্গ বিুব্ধ সমুদ্র প্রশান্ত হয়ে ওঠে, জন্তুগুলো কান লাগিয়ে শয়তানকে বিতাড়ন করে এবং বিশ্বপ্রভু স্বীয় সম্মান ও মর্যাদার কসম করে বলেন, ‘যে জিনিসের ওপর আমার এ নাম নেয়া যাবে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। (তাফসির ইবনে কাসির)<ref name="islam.masudkabir">[http://islam.masudkabir.com/others/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A7%8E%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF/ বিসমিল্লাহর তাৎপর্য], জি এম মুজিবুর রহমান।</ref>
 
বিসমিল্লাহ দিয়েই সব কাজ শুরু করতে হয়। কাজ ও কথার শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। হাদিসে এসেছে, যে কাজ বিসমিল্লাহ দ্বারা শুরু করা না হয় তা কল্যাণহীন ও বরকতশূন্য থাকে। এ জন্য বিসমিল্লাহ সব কাজের সূচনাধ্বনি। এর মাধ্যমে কাজের শুরুতে আল্লাহর আনুগত্য করা হয় এবং মানুষের অমতা ও বিনয় ভাব প্রকাশ পায়। এ বাক্যের মাধ্যমে কর্ম শুরু করলে শয়তানের অসওয়াসা থেকে মুক্ত থাকা যায়।<ref name="islam.masudkabir"></ref>
 
[[File:Basmalah-1wm.png|left|thumb|200px|Thuluth script Arabic Calligraphy|alt=Black-on-white Arabic calligraphy]]
বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করলে আল্লাহ তাকে করুণা করেন, হেফাজতে রাখেন ও কাজে বরকত দান করেন।
আনাস রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে বের হলাম, আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম, আমার কোনো উপায় নেই, মতা নেই আল্লাহ ছাড়া’ তখন তাকে বলা হয় তুমি পথ পেলে, উপায় পেলে ও রা পেলে। তারপর শয়তান তার থেকে দূর হয়ে যায়। তখন আর এক শয়তান এ শয়তানকে বলে, তুমি লোকটিকে কেমন পেলে? তখন সে বলে, তাকে হেদায়েত দেয়া হয়েছে, পথ দেয়া হয়েছে ও রা করা হয়েছে’ (মিশকাত হা-২৪৪৩)<ref name="islam.masudkabir"></ref>
২৮ ⟶ ৩০ নং লাইন:
জাবির (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘বিসমিল্লাহ বলে তুমি তোমার দরজা বন্ধ করো। কারণ শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। বিসমিল্লাহ বলে বাতি নিভিয়ে দাও। একটু কাঠখড়ি হলেও আড়াআড়িভাবে বিসমিল্লাহ বলে পাত্রের মুখ ঢেকে রাখো। বিসমিল্লাহ বলে পানির পাত্র ঢেকে রাখো।’ (বুখারি হা-৩২৮০, মুসলিম হা-২০১২, আবু দাউদ হা-৩৭৩১, তিরমিজি হা-২৮৫৭)<ref name="islam.masudkabir"></ref>
 
[[File:The Bismillah India.jpg|thumb|Bismillah calligraphy from the [[Mughal Empire]].]]
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করে, সে বলবে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবিনাশ শায়তানা অজান্নিবিশ শায়তানা মা রাজাকতানা’ (অর্থাৎ) আল্লাহর নামে মিলন শুরু করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের শয়তান থেকে দূরে রাখো এবং শয়তানকে দূরে রাখো, আমাদের মাঝে কোনো সন্তান নির্ধারণ করলে শয়তান কখনো তার কোনো তি করতে পারবে না।’ (বুখারি হা-১৪৩৪, আবু দাউদ হা-২১৬১, তিরমিজি হা-১০৯২, ইবনু মাজাহ হা-১৯১৯)।<ref name="islam.masudkabir"></ref>
 
৩৬ ⟶ ৩৯ নং লাইন:
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস বলেন, ‘জিবরাইল আ: সর্বপ্রথম মুহাম্মদ সা:-এর প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন, তা হচ্ছে জিবরাইল আ: বললেন, হে মুহাম্মদ! আপনি আশ্রয় চান। মুহাম্মদ সা: বললেন, আমি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞাতা আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় চাই। অতঃপর জিবরাইল আ: বললেন, হে নবী! আপনি বলুন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। অতঃপর জিবরাঈল আ: বললেন, ইক্রা বিসমি… অর্থাৎ আপনি পড়–ন, আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা: বলেন, এটাই প্রথম সূরা, যা আল্লাহ তায়ালা জিবরাইল আ: এর মাধ্যমে মুহাম্মদ সা:-এর প্রতি অবতীর্ণ করেন।’ (ত্বাবারি, তাফসির ইবনু কাছির হা-২৬৩)<ref name="islam.masudkabir"></ref>
 
[[File:Basmalah.gif|thumb|Calligraphy Illustrations Bismi-Llāhi en-Raħmāni en-Raħīmi the name of God the Merciful]]
‘বিসমিল্লাহ’ হলো সব কাজের সূচনাবাক্য। আল্লাহর নির্দেশিত ও ইসলামি বিধান মতে সমর্থিত কাজ শুরুর প্রাক্কালেই ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হয়। তাই বলে অন্যায় কাজ ও ইসলামবহির্ভূত কর্মের জন্য ‘বিসমিল্লাহ’ বলা হাস্যকর ও আল্লাহদ্রোহিতার শামিল। অমূল্য ও অতুলনীয় এই বাক্যের মাধ্যমে আলাহর আনুগত্য ও মুমিন হৃদয়ের অমতা সহজে প্রকাশ পায়। সুন্দর ও মাধুর্যমণ্ডিত এই শব্দমালা কর্মের আগে প্রকাশ করার মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্ত আমল সম্পাদন করা এবং ইসলামী সংস্কৃতির অনুসরণ করা যায়। এটিকে অস্বীকার বা মানা না হলে কর্ম অর্থহীন হয়ে যায়।<ref name="islam.masudkabir"></ref>