হরপ্রসাদ শাস্ত্রী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Shupty (আলোচনা | অবদান)
ফিক্স
Suvray (আলোচনা | অবদান)
১ নং লাইন:
'''মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী''' ([[৬ ডিসেম্বর]], [[১৮৫৩]][[১৭ নভেম্বর]], [[১৯৩১]]) ছিলেন বিখ্যাত [[বাঙালি]] ভারততত্ত্ববিদ, [[সংস্কৃত]] বিশারদ, সংরক্ষণবিদ ও [[বাংলা সাহিত্য|বাংলা সাহিত্যের]] [[ইতিহাস]] রচয়িতা। তাঁর আসল নাম ছিল '''হরপ্রসাদ ভট্টাচার্য'''। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন [[চর্যাপদ|চর্যাপদের]] আবিষ্কর্তা।
 
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ]] বাংলা প্রদেশের [[খুলনা]] জেলার কুমিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁদের আদি নিবাস ছিল উত্তর [[পরগনা|চব্বিশ পরগনা]] জেলার [[নৈহাটি|নৈহাটিতে]]। তাঁর পারিবারিক পদবী ছিল ভট্টাচার্য। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর হরপ্রসাদ [[কলকাতা|কলকাতার]] [[সংস্কৃত কলেজ]] ও [[প্রেসিডেন্সি কলেজ|প্রেসিডেন্সি কলেজে]] পড়াশোনা করেন। কলকাতায় তিনি তাঁর বড়দা নন্দকুমার ন্যায়চঞ্চুর বন্ধু তথা বিশীষ্টবিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক ও পণ্ডিত [[ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর|ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের]] সঙ্গে থাকতেন।<ref name=banglapedia>{{cite web |url= http://banglapedia.net/HT/S_0124.HTM |title= Shastri, Haraprasad |accessdate=2008-04-07 |last= Chowdhury |first= Satyajit |work=[[Banglapedia]] |publisher=Asiatic Society of Bangladesh }}</ref><ref name = "Bose612">{{cite book| editor=Subodh Chandra Sengupta and Anjali Bose (eds.) | year=1998 | title=Sansad Bangali Charitabhidhan | volume=Vol. I | edition=4th | publisher=Sahitya Samsad | pages=612–613 | isbn=8185626650| author=edited by Subodhchandra Sengupta.}} {{Bn icon}}</ref> ১৮৭১ সালে হরপ্রসাদ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৭৩ সালে পাস করেন ফার্স্ট আর্টস পরীক্ষা। ১৮৭৬ সালে বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৮৭৭ সালে সংস্কৃতে সাম্মানিক হন। পরে এম.এ. পরীক্ষায় পাস করে তিনি 'শাস্ত্রী' উপাধি লাভ করেন। উক্ত পরীক্ষায় হরপ্রসাদই ছিলেন প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ একমাত্র ছাত্র। এরপর ১৯৭৮ সালে তিনি হেয়ার স্কুলে শিক্ষক রূপেশিক্ষকরূপে যোগদান করেন।<ref name=banglapedia/><ref name = "Bose612"/>
 
১৮৮৩ শালে তিনি সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। এই সময়ই বাংলা সরকার তাঁকে সহকারী অনুবাদক নিযুক্ত করে। ১৮৮৬ থেকে ১৮৯৪ সাল পর্যন্ত সংস্কৃত কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি বেঙ্গল লাইব্রেরিতে গ্রন্থাগারিকের দায়িত্বও পালন করেন। ১৮৯৫ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজের সংস্কৃত বিভাগীয় প্রধান হন।<ref name=banglapedia/><ref name = "Bose612"/> এরপর ১৯০০ সালে তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন। ১৯০৮ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে অবসর নিয়ে তিনি সরকারের তথ্যকেন্দ্রে যোগ দেন। ১৯২১ থেকে ১৯২৪ পর্যন্ত ছিলেন [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] [[বাংলা]] ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান।<ref name=banglapedia/><ref name = "Bose612"/> অধ্যাপনা ও সরকারি কাজের পাশাপাশি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দু বছর এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি, বারো বছর [[বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ|বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের]] সভাপতি এবং লন্ডনের [[রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি|রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটির]] সাম্মানিক সদস্য ছিলেন।<ref name=banglapedia/><ref name = "Bose612"/>
 
হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর প্রথম গবেষণাপত্রটি ''ভারত মহিলা'' নামে [[বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]] সম্পাদিত ''[[বঙ্গদর্শন]]'' [[সংবাদপত্র |পত্রিকায়]] প্রকাশিত হয়। সেই সময় তিনি ছিলেন ছাত্র। পরে হরপ্রসাদ এই পত্রিকার নিয়মিত লেখকে পরিণত হন এবং নানা বিষয় নিয়ে লেখালিখি শুরু করেন। হরপ্রসাদকে ভারততত্ত্ব বিষয়ে আগ্রহী করে তোলেন বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ [[রাজেন্দ্রলাল মিত্র]]। তিনি রাজেন্দ্রলালের ''দ্য সংস্কৃত বুদ্ধিস্ট লিটারেচার অফ নেপাল'' গ্রন্থে সংকলিতসঙ্কলিত [[বৌদ্ধ]] পুরাণগুলির অনুবাদ শুরু করেন। এশিয়াটিক সোসাইটিতে তিনি রাজেন্দ্রলালের সহকারী ছিলেন। রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর সোসাইটিতে সংস্কৃত [[পুঁথি]] অন্বেষণ বিভাগের পরিচালক হন।<ref name=banglapedia/><ref name="Bhatacharyya">{{cite journal| last=Bhatacharyya | first=Ritwik | title=Time-citations: Haraprasad Shastri and the 'Glorious Times' | journal=Cerebration | url=http://www.cerebration.org/ritwikbhattacharyya.html | accessdate=2008-04-12}}</ref> অল্প কয়েক জনকয়েকজন সহকারী নিয়ে হরপ্রসাদ এশিয়াটিক সোসাইটির দশ হাজার পুঁথির ক্যাটালগ প্রস্তুত করেন।<ref name=banglapedia/> এই ক্যাটালগের যে দীর্ঘ মুখবন্ধটি তিনি রচনা করেছিলেন, তা সংস্কৃত সাহিত্যের একটি মূল্যবান ইতিহাস। সংস্কৃত পুঁথি নিয়ে চর্চা করতে করতেই হরপ্রসাদ বাংলা পুঁথির বিষয়েও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পুঁথির সন্ধানে তিনি অনেক বারঅনেকবার [[নেপাল]] গিয়েছিলেন। সেখানেই ১৯০৭ সালে তিনি আবিষ্কার করেন চর্যাগীতি বা চর্যাপদের পুঁথি।<ref name=banglapedia/> এই পুঁথিগুলি নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন এগুলিই বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন।<ref name=banglapedia/> ১৯১৬ সালে এই পুঁথি নিয়ে রচিত তাঁর গবেষণাপত্র ''হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় রচিত বৌদ্ধ গান ও দোঁহা'' নামে প্রকাশিত হয়।<ref name="EIL">{{cite encyclopedia| author=S. D. | year=1987 | title=Charyapada (Bengali) | encyclopedia=Encyclopaedia of Indian Literature | volume=Vol. 1 | publisher=[[Sahitya Akademi]] | isbn=8126018038 | pages=646– }}</ref><ref name = "Bose612"/> হরপ্রসাদ অনেক প্রাচীন গ্রন্থ সংগ্রহ করে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বহু গবেষণাপত্রও রচনা করেন। তিনি ছিলেন এক খ্যাতনামা হিস্টোরিওগ্রাফার। স্বীয় কাজের স্বীকৃতি স্বরূপস্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেছিলেন বহু পুরস্কার ও সম্মান।<ref name=banglapedia/> তাঁর বিখ্যাত বইগুলি হল ''বাল্মীকির জয়'', ''মেঘদূত ব্যাখ্যা'', ''বেণের মেয়ে'' (উপন্যাস), ''কাঞ্চনমালা'' (উপন্যাস), ''সচিত্র রামায়ণ'', ''প্রাচীন বাংলার গৌরব'' ও ''বৌদ্ধধর্ম''।<ref name = "Bose612"/> তাঁর উল্লেখযোগ্য ইংরেজি রচনাগুলি হল ''মগধান লিটারেচার'', ''সংস্কৃত কালচার ইন মডার্ন ইন্ডিয়া'' ও ''ডিসকভারি অফ লিভিং বুদ্ধিজম ইন বেঙ্গল''।
 
==তথ্যসূত্র==
{{reflist}}
 
[[বিষয়শ্রেণী:১৮৫৩-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৩১-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি লেখক]]
[[category:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]]
[[category:বাঙালি শিক্ষাবিদ]]
 
 
 
[[en:Haraprasad Shastri]]