ভগবদ্গীতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
শরৎ চন্দ্র বর্মন-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Wikitanvir-এর সম্পাদিত সর্ব
Hindu Patriot (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
[[চিত্র:Baghavad Gita battle.PNG|thumb|300px|মহাভারতের যুদ্ধে [[কৃষ্ণ]] [[অর্জুন|অর্জুনের]] রথ চালনা করছেন]]
{{হিন্দুধর্ম}}
[[Image:Krishna and Arjun on the chariot, Mahabharata, 18th-19th century, India.jpg|thumb|300px|[[কুরুক্ষেত্র|কুরুক্ষেত্রে]] [[কৃষ্ণ]] ও [[অর্জুন]], আঠারো-উনিশ শতকের চিত্রকলা]]
'''ভগবদ্গীতা''' ([[সংস্কৃত]] '''भगवद्गीता''', '''Bhagavad Gītā''', " ঈশ্বরের গান ") [[হিন্দু|হিন্দুদের]] অন্যতম প্রধান [[ধর্মগ্রন্থ]]। [[কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে|কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের]] সময় [[পান্ডু|পান্ডুর]] পুত্র [[অর্জুন|অর্জুনকে]] [[শ্রীকৃষ্ণ]] যে উপদেশ দিয়েছিলেন তাই গীতাতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
'''''ভগবদ্গীতা''''' ({{lang-sa|भगवद्गीता}}, {{audio|Bgita.ogg|ˈbʱəɡəʋəd̪ ɡiːˈt̪aː|IPA}}, ''[[ভগবান|ভগবানের]] গান'') বা '''''গীতা''''' একটি ৭০০-শ্লোকের [[হিন্দু]] ধর্মগ্রন্থ। এটি প্রাচীন [[সংস্কৃত]] [[মহাকাব্য]] ''[[মহাভারত]]''-এর একটি অংশ। যদিও ''গীতা'' একটি স্বতন্ত্র ধর্মগ্রন্থ তথা একটি পৃথক [[উপনিষদ্‌|উপনিষদের]] মর্যাদা পেয়ে থাকে। হিন্দুরা ''গীতা''-কে ভগবানের মুখনিঃসৃত বাণী মনে করেন। হিন্দুধর্ম, দর্শন ও সাহিত্যের ইতিহাসে ''গীতা'' এক বিশেষ স্থানের অধিকারী।<ref name="sn-p1">{{Citation|last=Nikhilananda|first=Swami|title=The Bhagavad Gita|chapter=Introduction|page=1}}</ref> ''গীতা''-র কথক [[কৃষ্ণ]] হিন্দুদের দৃষ্টিতে ঈশ্বরের [[অবতার]] [[ব্রহ্মণ|পরমাত্মা]] স্বয়ং।<ref name="sn-p1"/> তাই ''গীতা''-য় তাঁকে বলা হয়েছে "[[ভগবান|শ্রীভগবান]]"।<ref>
{{cite web
| last =
| first =
| authorlink =
| coauthors =
| title = Bhagavan
| work =
| publisher = Bhaktivedanta VedaBase Network (ISKCON)
| date =
| url = http://www.vedabase.net/b/bhagavan
| format =
| doi =
| accessdate = 2008-01-14}}</ref>
 
''গীতা''-র বিষয়বস্তু [[কৃষ্ণ]] ও [[পাণ্ডব]] রাজকুমার [[অর্জুন|অর্জুনের]] কথোপকথন। [[কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ|কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ]] শুরু ঠিক আগে শত্রুপক্ষে আত্মীয়, বন্ধু ও গুরুকে দেখে অর্জুন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলেন। এই সময় কৃষ্ণ তাঁকে ক্ষত্রিয় যোদ্ধার ধর্ম স্মরণ করিয়ে দিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকার [[যোগশাস্ত্র]]<ref>[http://yoga.about.com/od/bhagavadgita/a/thegita.htm Introduction to the Bhagavad Gita]</ref> ও [[বেদান্ত|বৈদান্তিক]] দর্শন ব্যাখ্যা করে তাঁকে যুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করেন। তাই ''গীতা''-কে বলা হয় [[হিন্দু ধর্মতত্ত্ব|হিন্দু ধর্মতত্ত্বের]] একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ এবং হিন্দুদের জীবনচর্যার একটি ব্যবহারিক পথনির্দেশিকা। যোগশাস্ত্র ব্যাখ্যার সময় কৃষ্ণ নিজের "[[স্বয়ং ভগবান]]" রূপটি উন্মোচিত করেন এবং বিশ্বরূপে অর্জুনকে দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করেন।
এটি [[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত ভাষায়]] লেখা।এটি সংস্কৃত [[মহাভারত|মহাভারতের]] [[ভীষ্মপর্ব|ভীষ্মপর্বের]] অন্তর্গত এবং [[উপনিষদ]] শ্রেণীর গ্রন্থ। [[দ্বাপর যুগ|দ্বাপর যুগে]] কুরু-পাণ্ডবের মধ্যে সংঘটিত কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে অর্জুন প্রতিপক্ষে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনদের দেখে স্নেহমমতায় মোহগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তখন [[সারথি]] [[শ্রীকৃষ্ণ]] [[ক্ষত্রিয়]] বীরের কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অন্যায়-অত্যাচার থেকে পৃথিবীকে মুক্ত করা এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য অর্জুনকে যে উপদেশ দেন, তা-ই '''শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা''', সংক্ষেপে '''ভগবªগীতা''' বা শুধু '''গীতা''' নামে পরিচিত। ভীষ্মপর্বের অন্তর্গত আঠারোটি অধ্যায় নিয়ে গীতার কলেবর রচিত। এখানে রয়েছে সাতশ [[শ্লোক]]; এজন্য গীতাকে '''সপ্তশতী'''ও বলা হয়। গীতার প্রবক্তা শ্রীকৃষ্ণ, আর শ্রোতা অর্জুন।
 
অর্জুন ছাড়া প্রত্যক্ষভাবে কৃষ্ণের মুখ থেকে ''গীতা'' শুনেছিলেন [[সঞ্জয়]] (তিনি যুদ্ধের ঘটনা [[ধৃতরাষ্ট্র|ধৃতরাষ্ট্রের]] কাছে বর্ণনা করার জন্য বেদব্যাসের কাছ থেকে দিব্য দৃষ্টি লাভ করেছিলেন), [[হনুমান]] (তিনি অর্জুনের রথের চূড়ায় বসে ছিলেন) ও [[ঘটোৎকচ|ঘটোৎকচের]] পুত্র [[বর্বরিক]] (তিনি কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সব ঘটনা দেখেছিলেন)।
গীতা একাধারে [[ধর্ম]], [[দর্শন]] ও [[কাব্যগ্রন্থ]]। ভারতীয় দর্শনের অন্যতম ভিত্তি ভগবদ্গীত। এতে [[বেদ]] , [[বেদান্ত]] , [[উপনিষদ]] প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত দার্শনিক তত্ত্বের সার সংগৃহীত হয়েছে। এছাড়া [[ধর্মতত্ত্ব]], [[জ্ঞানতত্ত্ব]], [[সমাজতত্ত্ব]], [[রাজনীতি]], [[গার্হস্থ্যনীতি]] ইত্যাদি সম্পর্কেও আলোচনা রয়েছে। তাই একে সকল ধর্মগ্রন্থের সারগ্রন্থও বলা হয়। কর্ম-জ্ঞান-ভক্তি-যোগ প্রভৃতি অনুশীলনের মাধ্যমে মানুষ যাতে অভীষ্ট ঈশ্বর বা মুক্তি লাভ করতে পারে তার দিকনির্দেশনা রয়েছে এই গীতা গ্রন্থে।
 
''গীতা''-কে '''''গীতোপনিষদ''''' বলা হয়। অর্থাৎ, ''গীতা'' [[উপনিষদ্‌]] বা [[বেদান্ত|বৈদান্তিক]] সাহিত্যের অন্তর্গত।<ref>The phrase marking the end of each chapter identifies the book as ''{{IAST|Gītopanishad}}.'' The book is identified as "the essence of the ''Upanishads''" in the ''Gītā-māhātmya'' 6, quoted in the [http://vedabase.net/bg/introduction/en introduction] to the book by the founder of ISKCON {{Citation
গীতায় ক্ষত্রিয় অর্থাৎ যোদ্ধার কর্তব্য এবং আত্মার অবিনাশিতা ধর্ম সম্পর্কে কৃষ্ণ অর্জুনকে যে উপদেশ দিয়েছেন তার দ্বারা বিশ শতকে ভারতীয় বিপ্লবী ও স্বাধীনতাকামীরা প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকের হাতেই একখানা করে গীতা থাকত। গীতাপাঠে তাঁরা দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গে শক্তি সঞ্চয় করতেন; মৃত্যুকে তুচ্ছ জ্ঞান করে মাতৃভূমির শৃঙ্খল মুক্ত করতে আত্মবিসর্জনে উদ্বুদ্ধ হতেন।
| last = Bhaktivedanta Swami Prabhupada
 
| first = A.C.
গীতার শিক্ষা হচ্ছে ধর্মে উদারতা, কর্মে নিষ্পামতা, জ্ঞানে ব্রহ্মভাব ও সর্বভূতে ভগবদ্ভাব, যোগে বা ধ্যানে ভগবানে চিত্তসংযোগ, ভক্তিতে ভগবদ্‌শরণাগতি, নীতিতে সাম্যদৃষ্টি, উপাসনায় ভগবদ্‌কর্ম, জীবসেবা ও স্বধর্ম পালন এবং সাধনায় ত্যাগানুশীলন।
| title = Bhagavad-gītā As It Is
 
| publisher = The Bhaktivedanta Book Trust
গীতা হিন্দুদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। নিত্য গীতাপাঠ, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গীতাপাঠ ও ব্রাহ্মণকে গীতাদান হিন্দুসমাজে পুণ্যকর্ম বলে বিবেচিত হয়। এছাড়া নিয়মিত বেতার-টেলিভিশনে এবং জাতীয় অনুষ্ঠানমালায়ও গীতা পাঠ করা হয়।
| year = 1983
| location = Los Angeles
| url = http://vedabase.net/bg
| id = }}.</ref>
 
"উপনিষদ্‌" নামধারী ধর্মগ্রন্থগুলি [[শ্রুতিশাস্ত্র|শ্রুতিশাস্ত্রের]] অন্তর্গত হলেও, ''মহাভারত''-এর অংশ বলে ''গীতা'' [[স্মৃতিশাস্ত্র|স্মৃতিশাস্ত্রের]] অন্তর্গত।<ref>{{cite journal |first=Thomas B. |last=Coburn |title='Scripture' in India: Towards a Typology of the Word in Hindu Life |journal=Journal of the American Academy of Religion |volume=52 |issue=3 |year=1984 |pages=435–459 |jstor=1464202 }}</ref><ref>Tapasyananda, p. 1.</ref> আবার উপনিষদের শিক্ষার সারবস্তু ''গীতা''-য় সংকলিত হয়েছে বলে একে বলা হয় "উপনিষদ্‌সমূহের উপনিষদ্‌"।<ref name="bansi"/> ''গীতা''-কে ''মোক্ষশাস্ত্র'' নামেও অভিহিত করা হয়।<ref>{{Citation|last=Nikhilananda|first=Swami|title=The Bhagavad Gita|publisher=Advaita Ashrama|year=1944|chapter=Introduction|page=xxiv}}</ref>
ভারতীয় মণীষীদের পাশাপাশি [[অ্যালডাস হাক্সলি]], [[অ্যালবার্ট আইনস্টাইন]], [[জে. রবার্ট ওপেনহাইমার]],<ref>[http://www.amphilsoc.org/sites/default/files/Hijiya.pdf] "The
Gita of J. Robert Oppenheimer" by JAMES A. HIJIYA, Professor of History, University of Massachusetts Dartmouth (PDF file)</ref> [[রালফ ওয়াল্ডো এমারসন]], [[কার্ল জাং]], [[হেনরিক হিমার]] ও [[হারমান হেস]] প্রমুখ পাশ্চাত্য মণীষীরাও ''গীতা''-র উচ্চ প্রশংসা করেছেন।<ref name="bansi">{{Citation|last=Pandit|first=Bansi |title=Explore Hinduism|page=27}}</ref><ref>{{Citation|last=Hume|first=Robert Ernest |title=The world's living religions|year=1959|page=29}}</ref>
== সময় ==
{{main|মহাভারত}}