বিঠাবাই নারায়ণগাঁওকর

ভারতীয় অভিনেত্রী

বিঠাভাই ভাউ মাঙ্গ নারায়ণগাঁওকর (জুলাই ১৯৩৫ - ১৫ই জানুয়ারি ২০০২) একজন ভারতীয় নৃত্যশিল্পী, গায়ক এবং তামাশা শিল্পী ছিলেন।

বিঠাভাই নারায়ণগাঁওকর
জন্মজুলাই ১৯৩৫
মৃত্যু১৫ জানুয়ারি ২০০২(2002-01-15) (বয়স ৬৬)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাপরিবেশন শিল্পী

প্রাথমিক জীবন এবং পেশাজীবন সম্পাদনা

বিঠাবাই শিল্পীদের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বেড়ে উঠেছিলেন। তিনি মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলার পণ্ঢরপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা এবং কাকার দ্বারা পরিচালিত পারিবারিক একটি দল ছিল ভাউ-বাপু মঙ্গ নারায়ণগাঁওকার। তাঁর ঠাকুরদাদা নারায়ণ খুদে দলটি স্থাপন করেছিলেন। তিনি ছিলেন পুনে জেলার শিরুর তালুকের কাভাঠে ইয়ামাই গ্রামের বাসিন্দা।[১] শৈশবকাল থেকেই বিঠাবাই দেবী লাবণ্য, গাভলান, ভেডিক প্রভৃতি গানের বিভিন্ন রূপের সংস্পর্শে এসেছিলেন। ছাত্র হিসাবে তিনি বিদ্যালয়ে খুব ভাল ফল করেননি, যদিও তিনি কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই খুব অল্প বয়স থেকেই মঞ্চে অনায়াস সৌন্দর্যে অভিনয় করতে পারতেন।[২]

তাঁঁর জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো তাঁঁর সন্তানের জন্ম। তিনি তার দর্শকদের জন্য তাঁঁর অনুষ্ঠান করার সময় ৯ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। অনুষ্ঠানের সময়ই তিনি জানতে পেরেছিলেন যে তিনি প্রসব করতে চলেছেন। স্বাচ্ছন্দ্য, ধৈর্যশীলতা ও সাহসিকতা দেখিয়ে তিনি মঞ্চের পিছনে গিয়ে বাচ্চা প্রসব করেন, একটি পাথর দিয়ে নাভিরজ্জু কাটেন এবং আবার অভিনয়ে যোগ দিতে প্রস্তুত হন। শ্রোতারা হঠাৎ তাঁর স্ফীতোদর অনুপস্থিত হয়ে যাওয়ায় অবাক হয়ে যায়। তখন অনুসন্ধান করে তাঁঁর সাহসিকতা এবং আত্মোৎসর্গের কথা জানতে পারায় অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করার দৃঢ় সংকল্পের জন্য শ্রোতারা তাঁঁর প্রশংসা করেছিলেন, তবে শ্রদ্ধার সাথে তাঁকে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন।

তিনি তাঁর শিল্পের জন্য ১৯৫৭ এবং ১৯৯০ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদক পেয়েছিলেন।[৩] লিখিত আছে যে তাঁঁর খ্যাতি এবং সম্মান অর্জনের পরেও তিনি আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিলেন এবং তাঁঁর যত্ন নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়।[৪] মৃত্যুর পরে তাঁঁর হাসপাতালের খরচ বিভিন্ন দাতাদের অবদানের দ্বারা পূরণ করা হয়েছিল।[৫]

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি সম্পাদনা

তিনি উচ্চ প্রশংসা অর্জন করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে তাঁর দলটি তামাশা ঘরানার শিল্পের জন্য সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রপতির পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। তাঁর ভক্তরা তাঁকে "তামাশা সম্রাদিনী" (তামাশা সম্রাজ্ঞী) নামে অভিহিত করতেন এবং সরকার তাঁকে সম্মানিতও করেছিলেন।[৫][৬]

তাঁর স্মরণে মহারাষ্ট্র সরকার ২০০৬ সাল থেকে বার্ষিক "বিঠাবাই নারায়ণগাঁঁওকর জীবনগৌরব পুরস্কার" চালু করেছে। তামাশা শিল্প সংরক্ষণ ও প্রচারে যাঁরা ব্যাপক অবদান রেখেছিলেন তাদের এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২০০৬ সাল থেকে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে এবং পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে স্বনামধন্যরা হলেন শ্রীমতি কান্তাভাই সাতারকার, বসন্ত অবসরিকর, শ্রীমতি সুলোচনা নালাভাডে, হরিভাউ বাধে, শ্রীমতী মঙ্গলা বনসোড় (বিঠাবাইয়ের কন্যা), সাধু পাটসুটে, অঙ্কুশ খাড়ে, প্রভা শিবনেকর, ভীম সাঙ্গাবিকার, গঙ্গারাম কাভাঠেকর, শ্রীমতী রাধাবাই খোড়ে নাসিক্কর, মধুকর নেরালে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Abp Majha (২০১৬-০৯-০৮), माझा कट्टा: लावणी सम्राज्ञी मंगला बनसोडे, সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-১৮ 
  2. Lakshmi, C.S. (৩ ফেব্রুয়ারি ২০০২)। "Life and times of a kalakaar"The Hindu। ২৫ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১২ 
  3. "Bowing out - Indian Express"archive.indianexpress.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-১৮ 
  4. Bendix, Regina F.; Hasan-Rokem, Galit (২০১২-০৩-১২)। A Companion to Folklore (ইংরেজি ভাষায়)। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 9781444354386 
  5. "Lavani Legend Vithabai is no more"The Times of India। Pune, India। Times News Network। ১৭ জুলাই ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১২ 
  6. "लाज धरा पाव्हणं..."marathibhaskar। ২০১২-০৩-০৩। ২০১৬-১২-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-১৮