বিজয় ১৯৭১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ

বিজয় ১৯৭১ ভাস্কর্যটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দক্ষিণ বিলোনিয়ার চোত্তাখোলায় অবস্থিত ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যান’-এর কেন্দ্রীয় আকর্ষণ।[] এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বীরত্বের নিদর্শন হিসেবে নির্মিত হয়েছে।

বিজয় ১৯৭১
বিজয় ১৯৭১ ভাস্কর্য
শিল্পীমাহমুদুল হাসান সোহাগ[]
সম্পন্ন২০১৬
উপজীব্যমুক্তিযুদ্ধ
অবস্থানচোত্তাখোলা, ত্রিপুরা, ভারত[]
স্থানাঙ্ক২৩°০৩′০৯″ উত্তর ৯১°২৬′৫৩″ পূর্ব / ২৩.০৫২৫° উত্তর ৯১.৪৪৮১° পূর্ব / 23.0525; 91.4481
মালিকভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যান

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। ত্রিপুরার জনগণ এবং সরকার এই সময়ে বাংলাদেশি শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার মাধ্যমে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিল। এই উদ্যান প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল ভারতবাংলাদেশের মধ্যকার মৈত্রীর বন্ধন আরও দৃঢ় করা এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে সম্মান জানানো।[] ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এই উদ্যানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।[] দীর্ঘ সাত বছর পর, ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে ত্রিপুরার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার উদ্যানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।[]

বর্ণনা

সম্পাদনা

বিজয় ১৯৭১ ভাস্কর্যটি মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসকে চিত্রিত করে। এটির মাধ্যমে ভাস্কর্যের নকশায় মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতীকী উপস্থাপনা এবং যুদ্ধকালীন দৃশ্যগুলিকে এই ভাস্কর্যে অত্যন্ত শিল্পসুলভভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।[] উদ্যানের মধ্যে আরও কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মূর্তি, যা দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বকে প্রতিফলিত করে। এছাড়াও এখানে রয়েছে টেরাকোটার মাধ্যমে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের দৃশ্যাবলি, যা এই সময়ের ঘটনাবলির একটি চিত্রাঙ্কন করে।[][]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Bharat-Bangladesh Maitri Udyan : 'ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যান', মুক্তির আবাহন"voiceekattor.com। ১৫ জুলাই ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২৫বিজয় ১৯৭১ শিল্পী মাহমুদুল হাসান সোহাগ 
  2. রায়চৌধুরী, বাপি (১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিতে সাজছে চোত্তাখোলা"আনন্দবাজার পত্রিকা। ২১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২৫ 
  3. হাসান, মাহামুদ (৩১ আগস্ট ২০২০)। "বিদেশে প্রথম সংরক্ষিত হলো মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থান"রাইজিংবিডি.কম 
  4. করিম, আনোয়ারুল (১১ নভেম্বর ২০১০)। "ত্রিপুরায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পার্কের নির্মাণ শুরু বৃহস্পতিবার"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২৫পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বুধবার দুপুরে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় আসেন। 
  5. "ত্রিপুরায় বিজয় উৎসব পালনের উদ্যোগ বাংলাদেশ হাইকমিশনের"। ১০ ডিসেম্বর ২০১৭। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন দুই ’দেশের মৈত্রী উদ্যানটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার উদ্বোধন করবেন। 
  6. "শরণার্থীদের আশ্রয়ে মানবিক ইন্দিরা ও শচীন্দ্র লালদের মৈত্রী উদ্যানের উদ্বোধনে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ মুখ্যমন্ত্রীর"jagarantripura.com। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমানের ভাস্কর্য মূর্তি শহিদ মিনারে দুই ধারে স্থাপন করা হয়েছে৷ এই উদ্যানে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরোধের জন্য গড়ে তোলা হয়েছিল কয়েকটি বাঙ্কার, তার নিদর্শন রাখা হয়েছে৷ এখানে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে কবর চিহ্ণিত করে নতুন করে কবর গড়ে তোলা হয়েছে৷ এই উদ্যানের দেওয়ালে উৎকীর্ণ রয়েছে ভারত-বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত৷ রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি স্ট্যাচু, ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, জলাশয় ও তার উপর ঝুলন্ত সেতু৷ 
  7. "চোত্তাখলায় ভারত-বাংলাদেশ মত্ররী উদ্যানের উদ্বোধন ভারত বাংলাদেশের মিত্রীর বন্ধনকে সুদুঢ় করতেএই উদ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেঃ মুখ্যমন্ত্রী" (পিডিএফ)tripura.gov.inত্রিপুরা সরকার। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২৫দেওয়ালে উৎকীর্ণ রয়েছে ভারত-বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। রয়েছে ভারতের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও শেখ মুজিবর রহমানের চিঠি। স্মৃতি সৌধের কাছেই রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দুটি পূর্ণাবয়ব মুর্তি। 
  8. রনি, আবু সালেহ (২১ মার্চ ২০১৭)। "সংগ্রামের অনন্য ইতিহাস ত্রিপুরার রাজপ্রাসাদেও"সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২৫তিনি জানান, মৈত্রী উদ্যানে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আদলে প্রতিকৃতি ও আমাদের জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে'স্মৃতিসৌধ'সহ ১৪টি ম্যুরাল ও টেরাকোটা নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।