বিজন কুমার শীল
অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল একজন বাংলাদেশী অণুজীববিজ্ঞানী। তিনি সার্সের কুইক টেস্টের আবিষ্কারক।[২] গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান বিজ্ঞানী।
বিজন কুমার শীল | |
---|---|
জন্ম | ১৯৬১ |
জাতীয়তা | পাকিস্তানি (১৯৬১-১৯৭১) বাংলাদেশী (১৯৭১-বর্তমান) |
নাগরিকত্ব | ![]() |
শিক্ষা | পিএইচডি |
মাতৃশিক্ষায়তন | বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় |
পরিচিতির কারণ | সার্সের কুইক টেস্টের আবিষ্কারক |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | অণুজীববিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | গণবিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যাল |
পৃষ্ঠপোষক | গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র[১] |
শিক্ষাজীবন সম্পাদনা
কৃষক পরিবারের সন্তান নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় ১৯৬১ সালে জন্মগ্রহন করেন বিজন কুমার শীল। বাবা রসিক চন্দ্র শীল ও মা কিরণময়ী শীল। বাবা মায়ের ২ ছেলে ও ৪ মেয়ের মধ্যে পঞ্চম সন্তান বিজন। নাটোর বনপাড়ার সেন্ট যোসেফ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষে ভর্তি হন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।[৩] সেখানে স্নাতক হন ভেটেরিনারি সায়েন্স বিষয়ে। এখান থেকেই তিনি অণুজীববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।[৪] তিনি ১৯৯২ সালে পিএইচ ডি সম্পন্ন করেছেন ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
কর্মজীবন সম্পাদনা
ড. বিজন কুমার শীল সিংগাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুকাল শিক্ষকতা করেন। এরপর ঐ চাকরি ছেড়ে জয়েন করেন এমপি নামক একটা বায়োলজিকস আমেরিকান কোম্পানিতে, ওটার মালিক ছিলেন যুগোস্লাভিয়ার একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। এরপর নিজেই বায়োলজিক্যাল রিয়েজেন্ট তৈরি ও ব্যবসা শুরু করেন। সম্প্রতি তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্টে। সেখানে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মনোযোগ দেন গবেষনায়।[৫]
অর্জন এবং অবদান সম্পাদনা
৯০-এর দশকে বিজ্ঞানী বিজন শীল ব্ল্যাকবেঙ্গল প্রজাতির ছাগলের সংক্রামক রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন। ২০০২ সালে তিনি ডেঙ্গুর কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ২০০৩ সালে তিনি সার্সের কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন যা করোনা ভাইরাস এর পূর্বসূরী। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সার্স প্রতিরোধে যে ক’জন বড় ভূমিকা রেখেছেন, ড. বিজন শীল তাদের একজন। সার্স প্রতিরোধ তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য তিনি পিপিআর এবং আফলা টক্সিন এর প্রতিশেধকও দেশীয় পদ্ধতিতে আবিষ্কার করে প্রান্তিক খামারীদের আশার মুখ দেখিয়েছেন।[২] অণুজীববিজ্ঞান নিয়ে ১৪টি উদ্ভাবনের পেটেন্ট রয়েছে বিজন কুমার শীলের নামে।
সার্স করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণের পদ্ধতি আবিষ্কার সম্পাদনা
২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল তখন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।[৬] ‘র্যাপিড ডট ব্লট’ পদ্ধতিটি ড. বিজন কুমার শীলের নামে পেটেন্ট করা। পরে এটি চীন সরকার কিনে নেয় এবং সফলভাবে সার্স মোকাবেলা করে।’
‘তারপর তিনি সিঙ্গাপুরেই গবেষণা করছিলেন ডেঙ্গুর ওপরে। গবেষণা চলাকালে তিনি দুই বছর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন।
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "করোনাভাইরাস: কোভিড-১৯ শনাক্তে যেভাবে কাজ করবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট - BBC News বাংলা"। bbc.com। ২৫ এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ মে ১৩, ২০২০।
- ↑ ক খ "করোনা থেকে বাঁচতে বিজ্ঞানী ড. বিজন শীলের কিছু পরামর্শ"। banglatribune.com। এপ্রিল ১৬, ২০২০। এপ্রিল ২১, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৭, ২০২০।
- ↑ "করোনাযুদ্ধে বিজ্ঞানী বিজন"। prothomalo.com। ২৮ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৭, ২০২০।
- ↑ কে এই ড. বিজন, একুশে টেলিভিশন; ১৮ মার্চ ২০২০
- ↑ দেশে ২০০টাকায় করোনাভাইরাস কীট আবিস্কারক কে এই ড. বিজন?, ডাক্তারপ্রতিদিনডটকম
- ↑ যেভাবে করোনার কিট আবিষ্কার করল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, আন্দোলনএকাত্তরডটকম; ২০ মার্চ, ২০২০