নালাপত বালামনি আম্মা (১৯০৯-২০০৪) একজন ভারতীয় কবি ছিলেন, যিনি মালয়লাম ভাষায় সাহিত্যচর্চা করতেন। তাকে মাতৃত্বের কবি বলা হয়। আম্মা, মুথাসসি, মাঝুভিন্তে কথা তার উল্লেখযোগ্য লেখনী।[১] তিনি পদ্মভূষণ, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, আসান পুরস্কার, এঝুথাচান পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।[২][৩] তিনি বিখ্যাত লেখিকা ও নারী অধিকারকর্মী কমলা সুরাইয়ার মা।[৪]

বালামনি আম্মা
জন্ম(১৯০৯-০৭-১৯)১৯ জুলাই ১৯০৯
পুন্নায়ুরকুলম, মালাবার, মাদ্রাজ প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৪(2004-09-29) (বয়স ৯৫)
কোচি, কেরালা, ভারত
পেশাকবি
ধরনকবিতা
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারপদ্মভূষণ, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, সরস্বতী সম্মান, আসান পুরস্কার, এঝুথাচান পুরস্কার
দাম্পত্যসঙ্গীভি. এম. নায়ার
সন্তানকমলা সুরাইয়া, সুলোচনা মোহনদাস, মোহনদাস, শ্যাম সুন্দর

জীবনী সম্পাদনা

১৯০৯ সালে জন্ম নেওয়া নালাপত বালামনি আম্মা কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেন নি। তিনি তার মামা কবি নালাপত নারায়ণ মেননকে দেখে সাহিত্যচর্চা করতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তার মামার ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকা বই পড়ে তিনি বিপুল জ্ঞান আহরণ করেছিলেন।

১৯ বছর বয়সে ভি. এম. নায়ারের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার স্বামী মালয়লাম পত্রিকা দৈনিক মাতৃভূমিতে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও কাজ করেছেন কলকাতার ওয়ালফোর্ড ট্রান্সপোর্ট কোম্পানিতে সিনিয়র অফিসার হিসেবে। ভি. এম. নায়ার ১৯৭৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

বালামনির আম্মার চার জন সন্তান ছিল। তাদের নাম হল: কমলা সুরাইয়া, সুলোচনা নালাপত, মোহনদাস ও শ্যাম সুন্দর। কমলা সুরাইয়া তার লেখা একটি কবিতা অনুবাদ করেছিলেন।

২০০৪ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে আলৎসহাইমারের রোগে ভুগছিলেন।[৫]

সাহিত্যকর্ম সম্পাদনা

তিনি বিশটিরও বেশি কবিতা সংগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ১৯৩০ সালে তার লেখা কবিতা কুপ্পুকাই প্রকাশিত হয়। সাহিত্য নিপুণ পুরস্কার জেতার মাধ্যমে তিনি সাহিত্যচর্চার জন্য প্রথম পুরস্কার জিতেন। ১৯৫৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তার রচিত কবিতাগুলো নিয়ে নিবেদ্যম শিরোনামে একটি বই প্রকাশিত হয়। তার মামা নালাপত নারায়ণ মেননের স্মৃতিকে উৎসর্গ করে শোকগাথা লোকান্থারাঙ্গালিল রচনা করেছিলেন।[৬]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তিনি আম্মামুথাসসি লেখার জন্য মালয়লাম সাহিত্যে সুবিখ্যাত।[৭] তাকে আচুথান নাম্বুত্রি 'মানব মহিমার দূত' বলে অভিহিত করেছেন।[৮] তিনি আরও বলেছিলেন যে, বালামনি আম্মার কবিতা তার জন্য অনুপ্রেরণা।

১৯৬৩ সালে তিনি কেরালা সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার জিতেছিলেন। ১৯৬৫ সালে তিনি জিতেছিলেন কেন্দ্র সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। ১৯৮৯ সালে তিনি জেতেন আসান পুরস্কার। এর চার বছর পর ১৯৯৩ সালে ভাল্লাথোল পুরস্কার পান। সেই বছর তিনি ললিতাম্বিকা অন্তরাজানম পুরস্কার জেতেন। ১৯৯৫ সালে তিনি সরস্বতী সম্মান ও এঝুথাচান পুরস্কারে ভূষিত হন। এর দুই বছর তিনি এন. ভি. কৃষ্ণ ওয়ারিয়র পুরস্কারে ভূষিত হন।

১৯৮৭ সালে তিনি রাষ্ট্রের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ লাভ করেন।[৯]

কবিতা সংগ্রহ সম্পাদনা

  • কুদুম্বিনি (১৯৩৬)
  • ধার্মামার্গাথিল (১৯৩৮)
  • স্ত্রী হৃদয়ম (১৯৩৯)
  • প্রভাঙ্কুরাম (১৯৪২)
  • ভাভানায়িল (১৯৪২)
  • ঊঞ্জালিন্মেল (১৯৪৬)
  • কালিক্কোত্তা (১৯৪৯)
  • ভেলিচাথিল (১৯৫১)
  • আভার পাদুন্নু (১৯৫২)
  • প্রণামাম (১৯৫৪)
  • লোকান্থারাঙ্গালিল (১৯৫৫)
  • সোপানাম (১৯৫৮)
  • মুথাসসি (১৯৬২)
  • মাঝুভিন্তে কথা (১৯৬৬)
  • আম্বালাথিলেক্কু (১৯৬৭)
  • নাগারাথিল (১৯৬৮)
  • ভেয়িলারুম্বল (১৯৭১)
  • আম্রুথামগামায়া (১৯৭৮)
  • সন্ধ্যা (১৯৮২)
  • নিবেদ্যম (১৯৮৭)
  • মাথ্রুহৃদয়ম (১৯৮৮)
  • টু মাই ডটার (মালয়লাম)
  • কুলাক্কাদাভিল

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. George, K. M. (১৯৯৮)। Western influence on Malayalam language and literatureSahitya Akademi। পৃষ্ঠা 132। আইএসবিএন 978-81-260-0413-3 
  2. "Padma Awards" (পিডিএফ)। Ministry of Home Affairs, Government of India। ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২১, ২০১৫ 
  3. "Literary Awards"Government of Kerala। ২৪ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  4. Weisbord, Merrily (২০১০)। The Love Queen of Malabar: Memoir of a Friendship with Kamala Das। McGill-Queen's University Press। আইএসবিএন 978-0-7735-3791-0 
  5. "Balamani Amma no more"Indian Express। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১১ 
  6. "A prolific writer"The Hindu। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৪। ২৮ জানুয়ারি ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  7. "Balamaniamma" (Malayalam ভাষায়)। Malayala Manorama। ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১১ 
  8. "Balamaniyamma remembered"The Hindu। ৮ অক্টোবর ২০০৪। ৩১ অক্টোবর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১১ 
  9. "Padma Bhushan Awardees"Government of India। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১