বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান
বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান হল ভারতের একটি জাতীয় উদ্যান, যা মধ্যপ্রদেশের উমারিয়া জেলায় অবস্থিত। ১০৫ বর্গকিলোমিটার (৪১ বর্গমাইল) আয়তন বিশিষ্ট বান্ধবগড়কে ১৯৬৮ সালে একটি জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয় এবং তারপর ১৯৯৩ সালে টাইগার রিজার্ভ হয়ে ওঠে। বর্তমান মূল এলাকাটি ৭১৬ বর্গকিলোমিটার (২৭৬ বর্গমাইল) জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে।
বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান) | |
![]() একটি বাঘ, যেটি বান্ধবগড়ের বাঘিনী সীতা ও পুরুষ চার্জারের বংশধর | |
অবস্থান | মধ্যপ্রদেশ, ভারত |
নিকটবর্তী শহর | উমারিয়া |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪১′৫৮″ উত্তর ৮০°৫৭′৪৩″ পূর্ব / ২৩.৬৯৯৪৪° উত্তর ৮০.৯৬১৯৪° পূর্ব |
আয়তন | ৭১৬ বর্গকিলোমিটার (২৭৬ বর্গমাইল) |
স্থাপিত | ১৯৬৮ ১৯৯৩ সালে ব্যাঘ্র প্রকল্প |
দর্শনার্থী | ১,০৮,০০০ |
কর্তৃপক্ষ | মধ্যপ্রদেশ বন বিভাগ |
ওয়েবসাইট | forest.mponline.gov.in/ |
এই উদ্যানে রয়েছে বিশাল জীববৈচিত্র্য। উদ্যানটিতে চিতাবাঘ এবং বিভিন্ন প্রজাতির হরিণের একটি বড় প্রজনন জনসংখ্যা রয়েছে। রেওয়ার মহারাজা মার্তান্দ সিং ১৯৫১ সালে এই অঞ্চলে প্রথম সাদা বাঘ ধরেছিলেন। মোহন নামের সাদা বাঘ,এখন স্টাফ ও রেওয়া মহারাজাদের প্রাসাদে প্রদর্শন করা হয়। ঐতিহাসিকভাবে গ্রামবাসী এবং তাদের গবাদি পশুরা বাঘের থেকে হুমকির মুখে ছিল। উদ্যানের আশেপাশে খনি খনন কার্যক্রম বাঘের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। উদ্যানটির নামটি এলাকার সবচেয়ে বিশিষ্ট পাহাড় থেকে এসেছে, কথিত আছে যে পাহাড়টি লঙ্কার উপর নজর রাখার জন্য ভগবান রামচন্দ্র তাঁর ভাই লক্ষ্মণকে দিয়েছিলেন। দুর্গটি গন্ড রাজবংশের রাজা তৈরি করেছিলেন। (বান্ধব = ভাই, গড় = দুর্গ)।[১]
গঠন
সম্পাদনাজাতীয় উদ্যানের তিনটি প্রধান জোন হল তালা, মাগধী ও খিতৌলি। জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে তালা হল সবচেয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চল, এখানে প্রধানত বাঘ পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে, এই তিনটি রেঞ্জ বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের 'কোর' নিয়ে গঠিত যার মোট এলাকা ৭১৬ বর্গকিমি।
প্রাণীজগত
সম্পাদনাখাদ্য শৃঙ্খলের শীর্ষে বাঘের সঙ্গে, এখানে কমপক্ষে ৩৭ টি প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। বন কর্মকর্তাদের মতে, এখানে ২৫০ প্রজাতির পাখি, প্রায় ৮০ প্রজাতির প্রজাপতি, বেশ কয়েকটি সরীসৃপ রয়েছে। কিন্তু অনেকের কাছে ছবিসহ প্রায় ৩৫০ টি পাখির প্রজাতির তালিকা রয়েছে। তৃণভূমির সমৃদ্ধি ও প্রশান্তি বর্ষাকালে প্রজননের জন্য জোড়া সরু সারসকে আমন্ত্রণ জানায়।
গৌড়ের পুনঃপ্রবর্তন
সম্পাদনাবান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে গৌড়ের একটি ছোট জনসংখ্যা ছিল, কিন্তু গবাদি পশু থেকে রোগের কারণে তাদের সকলেই মারা যায়। গৌড়দের পুনঃপ্রবর্তনের প্রকল্পে কিছু গৌড়কে কানহা জাতীয় উদ্যান থেকে বান্ধবগড়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ৫০ টি প্রাণী ২০১২ সালের শীতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। এই প্রকল্পটি মধ্যপ্রদেশ বন বিভাগ, ভারতের বন্যপ্রাণী প্রতিষ্ঠান এবং তাজ সাফারিস দ্বারা প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় সম্পাদিত হয়েছিল।[২]
পরিবহন
সম্পাদনাবান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানটি নিকটতম প্রধান শহর জব্বলপুর থেকে সড়ক পথে প্রায় ৪.৫ ঘন্টা (~ ২০০ কিমি) দূরে। জব্বলপুর শহরটি দিল্লি, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর, হায়দ্রাবাদ, পুনে ইন্দোরের সঙ্গে বিমান ভ্রমণের মাধ্যমে খুব ভালভাবে সংযুক্ত। বান্ধবগড়ের মূলধারার উড়ানের জন্য বিমানবন্দর সুবিধা নেই, তবে জবলপুর শহর, যা বান্ধবগড়ের নিকটতম শহর, ভারতের প্রধান শহরগুলির সঙ্গে ভাল বিমান যোগাযোগ রয়েছে। বেসরকারি চার্টাররা বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানের কাছে অবতরণ করতে পারে, উমারিয়া জেলায় চার্টার প্লেনের জন্য একটি ছোট এয়ার-স্ট্রিপ সুবিধা রয়েছে। জবলপুর বিমানবন্দর বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যানে পৌঁছানোর সর্বোত্তম বিকল্প কারণ, এটি এয়ারইন্ডিয়া, স্পাইসজেট ও ইন্ডিগোর মত বিমানসংস্থার মাধ্যমে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ, ও ভোপালের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।
ট্রেন
সম্পাদনাট্রেনে ভ্রমণ আরেকটি ভালো বিকল্প। ট্রেনে করে উমারিয়া জংশন পর্যন্ত যাত্রা করা যায় এবং এর পরে জাতীয় উদ্যানে পৌঁছানোর জন্য একটি ক্যাব বা ট্যাক্সি ভাড়া করতে হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Bandhavgarh National Park"। Madhya Pradesh Tourism। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ "Reintroduction of Gaur (Indian Bison) in Bandhavgarh National Park"। ২০১৩-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাউইকিভ্রমণ থেকে বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান ভ্রমণ নির্দেশিকা পড়ুন।