বানৌজা পদ্মা (২০১৩)

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর টহল জাহাজ

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) পদ্মা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পদ্মা-শ্রেণীর প্রথম ব্যাচের পেট্রোল ক্রাফট বা টহল জাহাজ। এটি গণচীনের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত হয়। বর্তমানে জাহাজটি ৩১ পেট্রোল ক্রাফট স্কোয়াড্রোন এর অধীনে সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[১][২][৩][৪][৫][৬]

ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা পদ্মা
নির্মাণাদেশ: ২ মে, ২০১০
নির্মাতা: খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড
অভিষেক: ৮ অক্টোবর, ২০১২
কমিশন লাভ: ২৪ জানুয়ারি, ২০১৩
মাতৃ বন্দর: খুলনা
শনাক্তকরণ: পি৩১২
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: পদ্মা-শ্রেণীর টহল জাহাজ
ওজন: ৩৫০ টন
দৈর্ঘ্য: ৫০.৪ মিটার (১৬৫ ফু)
প্রস্থ: ৭.৫ মিটার (২৫ ফু)
উচ্চতা: ১৩.৭ মিটার (৪৫ ফু)
গভীরতা: ১.৯০ মিটার (৬.২ ফু)
ড্রাফট: ৪.২ মিটার (১৪ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × ৩,০৪১ অশ্বশক্তি (২,২৬৮ কিওয়াট) বিশিষ্ট এমটিইউ ডিজেল ইঞ্জিন (জার্মানি);
  • ১ × ১২০ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য);
  • ১ × ৪৯ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি ইমারজেন্সি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য);
  • জেডএফ ৭৬০০ ট্রান্সমিশন (জার্মানি);
  • ২ × শ্যাফট
গতিবেগ: ২১ নট (৩৯ কিমি/ঘ; ২৪ মা/ঘ)
সীমা: ১,৫০০ নটিক্যাল মাইল (২,৮০০ কিমি; ১,৭০০ মা)
সহনশীলতা: ৭ দিন
নৌকা ও অবতরণ
নৈপুণ্য বহন করে:
১টি
লোকবল: ৪৫ জন
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • ১ × ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান);
  • ১ × ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র‍্যাডার (জাপান)
রণসজ্জা:
  • ২ × টুইন ব্যারেল ৩৭ মিমি কামান;
  • ২ × এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
  • ৬ × কিউডব্লিউ-২ ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ যোগ্য বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র;
  • সামুদ্রিক মাইন
টীকা: ১ × এফার ১৫৫এম ডেক ক্রেন (ইতালি)

ইতিহাস সম্পাদনা

সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মানের পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২ মে, ২০১০ সালে খুলনা শিপইয়ার্ড এবং প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর এর মধ্যে জাহাজ নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ৮ অক্টোবর, ২০১২ সালে জাহাজটিকে প্রথম বারের মত পানিতে ভাসানো হয়। ২৪ জানুয়ারি, ২০১৩ সালে বানৌজা পদ্মা বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। জাহাজটি নির্মাণকালে চায়না ক্ল্যাসিফিকেশন সোসাইটি (সিসিএস) এর নীতিমালা অনুসরণ করা হয়।

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো সম্পাদনা

বানৌজা পদ্মা জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫০.৪ মিটার (১৬৫ ফু), প্রস্হ ৭.৫ মিটার (২৫ ফু) এবং গভীরতা ৪.১ মিটার (১৩ ফু)। জাহাজটির ওজন ৩৫০ টন এবং জাহাজটিতে রয়েছে ২টি ৩,০৪১ অশ্বশক্তি (২,২৬৮ কিওয়াট) বিশিষ্ট এমটিইউ ডিজেল ইঞ্জিন (জার্মানি), ১টি ১২০ কিলোওয়াট বিশিষ্ট সিএটি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য), ১টি ৪৯ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সিএটি ইমারজেন্সি জেনারেটর (যুক্তরাজ্য), জেডএফ ৭৬০০ ট্রান্সমিশন (জার্মানি) এবং ৪টি শ্যাফট। যার ফলে জাহাজটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ২১ নট (৩৯ কিমি/ঘ; ২৪ মা/ঘ)। সমুদ্রপৃষ্ঠ অনুসন্ধানের জন্য এটি ১টি ফুরুনো ডিআরএস৪ডব্লিউ র‍্যাডার (জাপান) এবং ১টি ফুরুনো এফএআর-৩৩২০ চার্ট র‍্যাডার (জাপান) দ্বারা সজ্জিত। এছাড়াও জাহাজটি ৪৫ জন সদস্য নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম।

রণসজ্জা সম্পাদনা

বানৌজা পদ্মা জাহাজটির আকার আয়তন অপেক্ষাকৃত ছোট হলেও নদী এবং উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। শত্রু জাহাজ মোকাবেলা, চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ২টি টুইন ব্যারেল ৩৭ মিমি বিমান বিধ্বংসী নেভাল গান যা সর্বোচ্চ ৮.২ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম;
  • ২টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
  • সামুদ্রিক মাইন;
  • ৬টি কিউডব্লিউ-২ ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ যোগ্য বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "PATROL CRAFT – Khulna Shipyard Ltd" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২০ 
  2. "Tender specification of main engine" (পিডিএফ)Directorate General Defense Purchase (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৪ 
  3. "First Bangladesh made warship launched"। The Daily Star। ৯ অক্টোবর ২০১২। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  4. "'Padma' latest Bangladesh Navy warship"। BDNews24.com। ২৪ জানুয়ারি ২০১৩। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  5. "Bangladesh still aiming for sub purchases"upi.com। United Press International, Inc। ২৭ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৫ 
  6. "সশ্রস্ত্র বাহিনী দিবসে চাঁদপুরে উন্মুক্ত ছিল বানৌজা পদ্মা ছবি ও প্রতিবেদন: মুহাম্মদ মাসুদ আলম চাঁদপুর.টিভি-Chandpur.tvFacebook"