বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান

ধর্ম ও বিজ্ঞান বিষয়ক ড. মরিস বুকাইলির গবেষণামূলক বই

বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান (ফরাসি: La Bible, le Coran et la Science), ধর্মতত্ত্বীয় তুলনামূলক একটি গবেষণা গ্রন্থ। ফরাসি পণ্ডিত ড.মরিস বুকাইলি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার পরে এটি লিখেছেন। ১৯৭৬ সালে বইটি লিখেছিলেন। লেখক বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে বাইবেল এবং কোরআন-এর বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন পরিচালনা করেছেন। বইটি আরবি সহ প্রায় সতেরোটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে।[১] ধর্ম ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিরুপণে লেখক তার গবেষণার জন্য তিনটি গ্রন্থ নির্বাচন করেন , এর মধ্যে দুটি হল ধর্মগ্রন্থ যথা কোরআনবাইবেল আর তৃতীয়টি হল বিজ্ঞান। এগুলোর অধ্যয়নের মাধ্যমে তার কাছে যে নিরিক্ষা পর্যবেক্ষণ বেরিয়ে এসেছে তা হল - ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা ঐশী গ্রন্থ একমাত্র আল-কোরআন। কারণ এতে বিজ্ঞানের সত্যের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু পাওয়া যায়নি । অথচ লেখকের মতে, আজ মানুষের কাছে যে গ্রন্থটি আছে, তারা যাকে পবিত্র বলে বর্ণনা করেন এবং তারা একে তৌরাত ও ইঞ্জিল বলে থাকেন, একত্রে যার নাম বাইবেল (নতুন সমাচার ও পুরনো সমাচার৷ সহ), পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে যে, এটি পৌরাণিক কাহিনী, ত্রুটি এবং দ্বন্দ্বে ভরা । মানুষের হস্তক্ষেপে ঝুটলানো হয়েছে ; কাজেই এটি ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা ঐশীবাণী হতে পারে না। এভাবে আরও এন্তার বক্তব্যে একটি সুদীর্ঘ গবেষণার ফল স্বরুপ ড.মরিস বুকাইলি রচনা করেন তার বিখ্যাত বই বাইবেল,কোরআন ও বিজ্ঞান" । বইটি ১৩৯৮ হিজরিতে (১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে) একই সাথে দুবার আরবিতে অনুবাদ করা হয়েছিল, যার একটির শিরোনাম বৈরুতে ছিল : "তৌরাত, ইঞ্জিল, কোরআন এবং বিজ্ঞান"। অন্যটি কায়রোতে (দারুল মাআরেফ) শিরোনাম : "আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন।" অনুবাদকদের নাম দুটি সংস্করণে উল্লেখ করা হয়নি। তারপরে এটি শেখ হাসান খালেদ (লেবাননের মুফতি) দ্বারা অনুবাদ করা হয়েছিল। ১৪০৭ হিজরিতে বৈরুতে ইসলামিক ব্যুরো দ্বারা মুদ্রিত হয়েছিল : "তৌরাত, ইঞ্জিল, কোরআন ও বিজ্ঞান" নামে[২]

বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান
লেখকমরিস বুকাইলি
মূল শিরোনাম'La Bible, le Coran et la Science'
দেশফ্রান্স
ভাষাফরাসি
বিষয়ধর্ম ও বিজ্ঞান
ধরনগবেষণা গ্রন্থ
প্রকাশিত১৯৭৬
মিডিয়া ধরনশক্তমলাট

ড.মরিস বুকাইলির বই এবং পদ্ধতি ব্যাপকভাবে বিশেষকরে দেশ বিদেশের মুসলিম ও অমুসলিম সাধারণ বা বোদ্ধা সর্বস্তরের পাঠক মহলে আলোচিত, সমালোচিত হয়েছে । একদিকে মুসলিমদের দ্বারা এটি প্রশংসিত হলেও অপরদিকে ইহুদি ও খ্রিষ্টবাদি পশ্চিমা পণ্ডিত, গবেষকরা এর সমালোচনা করেছেন ।[৩] তারা বইটিকে বিষয়ভিত্তিক[৪] ও অবৈজ্ঞানিক বলে মন্তব্য করেছেন ।[৪] বিভিন্ন স্থানে তার উপস্থাপিত বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপর তারা বিরোধিতা করেছেন।[৪] উদাহরণ স্বরূপ, গবেষক ট্যানার অ্যাডিসের মতো অনেক সমালোচক দেখতে পেয়েছেন যে, মরিস বুকাইলি মহাবিশ্ব, সমান্তরাল মহাবিশ্ব এবং দৃশ্যমান মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ প্রমাণ করতে যে রেফারেন্স এবং কোরানের আয়াতের উপর নির্ভর করে তিনি যে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও তার চিন্তাধারা উপস্থাপন করতে চেয়েছেন তা "স্পষ্টভাবে ভুল"।[৪] দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনুসারে যদিও মরিস বুকাইলির পদ্ধতি এবং বইগুলি "বেশিরভাগ মূলধারার পণ্ডিতদের দ্বারা অবজ্ঞা ও অস্বীকার করা হয়েছে"[৫] তবে বাইবেল কোরআন ও বিজ্ঞান বইটি সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে ইসলামিক ঐতিহ্যের প্রতি গর্বকে উন্নীত করেছে এবং নও মুসলিম সহ ইসলামের দিকে এমন অনেক ধর্মান্তরিতদের আকৃষ্ট করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. The Bible, The Qur'an and Science ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৭-০৯-২৭ তারিখে
  2. كتاب: لمحات في علوم القرآن واتجاهات التفسير، تأليف: الدكتور محمد بن لطفي الصباغ، الناشر: المكتب الإسلامي، الطبعة الثالثة 1990م، ص: 301.
  3. টেমপ্লেট:استشهاد بخبر
  4. Taner Edis. Ghost in the Universe. Quotes from page 14. Prometheus Books.
  5. টেমপ্লেট:استشهاد بخبر