বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা চরিত্র
বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা চরিত্র বা “ডিটেকটিভ” বলতে সেই সব কল্পচরিত্র বোঝায় যারা রহস্যোপন্যাসে কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসাবে রহস্য উন্মোচন করে। এরা মূলত শৌখিন গোয়েন্দা, পুলিশ কর্মকর্তা বা স্পাই অর্থাৎ গুপ্তচর। বইগুলো রহস্যোপন্যাস, অপরাধকাহিনী বা স্পাই থ্রিলার। সেই চরিত্রগুলো বিখ্যাত যেগুলো সিরিজগ্রন্থে পুণঃপুণঃ উপস্থাপিত।
গল্প
সম্পাদনাগোয়েন্দা শ্রেণীর বর্ণনাত্মক গল্পে নরহত্যা বা চুরি জাতীয় বিশেষ কোন সমস্যা থাকে। পরবর্তীতে পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীর সুক্ষ্মবুদ্ধি ও সন্ধান-তৎপরতায় এর মীমাংসা হয়।[১] বাংলায় পাঁচকড়ি দে, সুনেন্দ্র মোহন ভট্টাচার্য্য প্রমুখ লেখকগণ গোয়েন্দা গল্প রচনা করে সবিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।[২] এছাড়া পঞ্চানন ঘোষালের অভিজ্ঞতালব্ধ 'পুলিশ কাহিনী' পরিচিতি লাভ করেছিল।[৩]
উপন্যাস
সম্পাদনাগোয়েন্দা উপন্যাসের আখ্যানভাগ অতি জটিল ও সর্পিলগতিসম্পন্ন। ঘটনার অভাবনীয় বিন্যাস ও লোমহর্ষক অদ্ভুত কাহিনী-সৃষ্টিতে এই শ্রেণীর উপন্যাসের কৃতিত্ব। এদের মধ্যে জীবনের কোন গভীর তত্ত্ব বা তথ্যালোচনা থাকে না। জীবনের নারকীয় দিকটিই এতে উদ্ভাসিত হয়।[৪] তন্মধ্যে - বনফুলের পঞ্চপর্ব, শরচ্চন্দ্র সরকারের গোয়েন্দা কাহিনী, অম্বিকাচরণ গুপ্তের গোয়েন্দা গল্প (১৩১৫), ক্ষেত্রমোহন ঘোষের আদরিণী (১৮৯৪) উল্লেখযোগ্য।
- জয়ন্ত -মানিক, বিমল-কুমার, হেমন্ত, ইন্সপেক্টর সতীশ - হেমেন্দ্রকুমার রায়
- ফেলুদা (প্রদোষ চন্দ্র মিত্র) - সত্যজিৎ রায়
- কাকাবাবু -সন্তু, বিশ্বমামা - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
- ব্যোমকেশ বক্সী - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
- পরাশর বর্মা - প্রেমেন্দ্র মিত্র
- মিতিন মাসি - সুচিত্রা ভট্টাচার্য
- গোগোল, অশোক ঠাকুর - সমরেশ বসু
- কল্কেকাশি - শিবরাম চক্রবর্তী
- নীলাদ্রি সরকার, ইন্সপেক্টর ব্রহ্ম - সৈয়দ মুস্তফা সিরাজ
- অর্জুন - সমরেশ মজুমদার
- কৌশিক রায় - নারায়ণ দেবনাথ
- তিন গোয়েন্দা, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা, নাসের পাশা - রকিব হাসান
- মিসির আলি - হুমায়ূন আহমেদ
- টুনটুনি ও ছোটাচ্চু - মুহম্মদ জাফর ইকবাল
- দস্যু মোহন - শশধর দত্ত
- মহিমচন্দ্র - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- কিরীটী রায়, বিরুপাক্ষ রায় - নীহাররঞ্জন গুপ্ত
- রাপ্পা রায় - সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়
- রবার্ট ব্লেক - দীনেন্দ্রকুমার রায়
- কৃষ্ণা- প্রভাবতী দেবী সরস্বতী
- পি কে বাসু, শার্লক হেবো - নারায়ণ সান্যাল
- গোয়েন্দা গর্জন - হিমানীশ গোস্বামী
- দেবেন্দ্রবিজয়-অরিন্দম - পাঁচকড়ি দে
- চঞ্চল - বুদ্ধদেব বসু
- দীপক চ্যাটার্জী - স্বপনকুমার
- গোয়েন্দা গার্গী - তপন বন্দ্যোপাধ্যায়
- মেঘনাদ - স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়
- দীপক রায় - অজেয় রায়
- নিশীথ রায় - তুষারকান্তি চট্টোপাধ্যায়
- গন্ডালু - নলিনী দাশ (লেখিকা)
- কিকিরা (কিঙ্কর কিশোর রায়) - বিমল কর
- ইন্দ্রনাথ রুদ্র, নারায়ণী - অদ্রীশ বর্ধন
- গুপি-পানু-ছোটমামা - লীলা মজুমদার
- ট্যাঁপা-মদনা - আশাপূর্ণা দেবী
- দারোগা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়
- জগাপিসি - প্রদীপ্ত রায়
- দময়ন্তী - মনোজ সেন
- গোয়েন্দা বরদাচরণ, শবর দাশগুপ্ত - শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
- সদাশিব - সংকর্ষণ রায়
- শান্ত-মোটু-শেলী - অনিল ভৌমিক
- সৃজনকাকা- দিলীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
- প্রলয় - দেবল দেববর্মা
- হুকাকাশি - মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য
- একেনবাবু - সুজন দাশগুপ্ত
- ভাদুড়ী মশাই - নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
- বাসব - কৃশানু বন্দ্যোপাধ্যায়
- অনুকূল বর্মা - কামাক্ষী প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
- পাণ্ডব গোয়েন্দা, তাতার, অম্বর চ্যাটার্জী - ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়[৬]
- শম্ভু ও ব্রজবিলাস - পরিমল গোস্বামী
- নীল ব্যানার্জী - গৌতম রায়
- রিমা খান - মলয় রায়চৌধুরী
- ইন্দ্রজিত রায় - দিলীপকুমার চট্টোপাধ্যায়
- দীপকাকু-ঝিনুক - সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়
- সোমনাথ সেন - সুভদ্র কুমার সেন
- শান্ত-কমল - ইকবাল আলমগীর কবীর
- জাকি আজাদ - লেখক শেখ আবদুল হাকিম
- জগুমামা - ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়
- মাসুদ রানা - কাজী আনোয়ার হোসেন
- জেফরি বেগ, নুরে ছফা - মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন
- বুধোদা, নীল চ্যাটার্জী - সৈকত মুখোপাধ্যায়
- অশোকচন্দ্র গুপ্ত (এসিজি) - অনীশ দেব[৭]
- আকিদা - অনির্বাণ বসু
- সুধাময় চৌধুরী - হীরেন চট্টোপাধ্যায়
- সিদ্ধার্থ সেন - অশোক দাশগুপ্ত
- পারিজাত বক্সী - হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়[৮]
- কালকেতু নন্দী - রূপক সাহা
- কেদার-বদ্রী - ঘনশ্যাম চৌধুরী
- গণেশ হালদার - রাধারমণ রায়
- বাবু-মিউ-রাজা-মোমা-বুয়া - শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
- রুদ্রাণী (গোয়েন্দা) - দেবারতি মুখোপাধ্যায়
- প্রখর রুদ্র - কৌশিক রায়
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সাহিত্য-সন্দর্শন", শ্রীশচন্দ্র দাশ, বর্ণ বিচিত্রা, ঢাকা, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, ১৯৯৫, পৃষ্ঠা-১৩০
- ↑ "খলনায়িকা থেকে গোয়েন্দা মেয়েরা কম যায়নি কিছুতেই"। www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৩।
- ↑ "বাংলাসাহিত্যে গোয়েন্দা গল্প"। Jugantor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০১।
- ↑ "সাহিত্য-সন্দর্শন", শ্রীশচন্দ্র দাশ, বর্ণ বিচিত্রা, ঢাকা, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, ১৯৯৫, পৃষ্ঠা-১২১
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বঙ্গের গোয়েন্দা-চরিত্র"। Prothomalo। ২০২১-০৫-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০১।
- ↑ "প্রয়াত পাণ্ডব গোয়েন্দার স্রষ্টা সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়"। Eisamay। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৭।
- ↑ "গোয়েন্দা এসিজি সমগ্র"। Goodreads (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৭।
- ↑ সেনগুপ্ত, সুকল্যাণী। "পারিজাত বক্সী—পাল্প ও মূলধারার দ্বন্দ্ব"। www.sillypoint.co.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৭।