বাংলার বিশ্ব ঐতিহ্য

(বাংলা অঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ্য থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বাংলার বিশ্ব ঐতিহ্য বা বঙ্গ অঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ্য বলতে মূলত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ এবং ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ অর্থাৎ সমগ্র বঙ্গ অঞ্চলের যে সকল স্থাপত্য-স্থাপনা, এলাকা ও সংস্কৃতি জাতিসংঘের সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত সেসবকে বোঝায়। বর্তমানে বঙ্গ অঞ্চলে মোট ১৪টি বিশ্ব ঐতিহ্য রয়েছে, যার মধ্যে ৬টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, ৭টি অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ১টি প্রামাণ্য ঐতিহ্য রয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো হলো মসজিদের শহর বাগেরহাট,[১] সোমপুর মহাবিহার,[২] সুন্দরবন,[৩] সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান[৪], দার্জিলিং হিমালয়ান রেল[৫]শান্তিনিকেতন[৬] অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলো হলো বাউল সঙ্গীত,[৭] জামদানি,[৮] মঙ্গল শোভাযাত্রা,[৯] শীতল পাটি,[১০] কলকাতার দুর্গাপূজা[১১]ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র,[১২] এবং রমজানে মাসে পালিত ইফতার[১৩] বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ[১৪]

বাংলার বিশ্ব ঐতিহ্য
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য

বর্তমানে বাংলা অঞ্চলের ১৪টি বিশ্ব ঐতিহ্যের মধ্যে এককভাবে ১০টি বাংলাদেশে ও ৪টি ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। বাংলাদেশের মসজিদের শহর বাগেরহাট, সোমপুর মহাবিহার, সুন্দরবন এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, দার্জিলিং হিমালয়ান রেল ও শান্তিনিকেতন - এ ছয়টি স্থান ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তর্ভুক্ত। অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাউল সঙ্গীত, অসাধারণ শৈল্পিক কারুকাজে বুনিত জামদানি শাড়ি, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রতিবছর আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র, রমজানে পালিত ইফতার এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার দূর্গাপূজা। এছাড়া মহাস্থানগড়, লালমাই-ময়নামতি, লালবাগ কেল্লা, হলুদ বিহার এবং জগদ্দল বিহার - এই পাঁচটি স্থানকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে (২০২২ পর্যন্ত)।

বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সম্পাদনা

বাংলা অঞ্চলে ইউনেস্কো স্বীকৃত ৬টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে। এগুলো হলো: মসজিদের শহর বাগেরহাট,[১] সোমপুর মহাবিহার,[২] সুন্দরবন,[৩] সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান[৪], দার্জিলিং হিমালয়ান রেল[৫] এবং শান্তিনিকেতন[৬] ইউনেস্কো ১৯৮৫ সালে ষাট গম্বুজ মসজিদসোমপুর মহাবিহারকে,[১][২] ১৯৮৭ সালে সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানকে,[৪] ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে[৩], ১৯৯৯ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলকে[৫] এবং ২০২৩ সালে শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।

মসজিদের শহর বাগেরহাট সম্পাদনা

 
মসজিদের শহর বাগেরহাট

মসজিদ শহর বাগেরহাট (ইতিহাসে খলিফতাবাদ নামে পরিচিত) বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখানে ৩৬০টি মসজিদ, সরকারি ভবন, সমাধিসৌধ, সেতু, রাস্তা, পানি ট্যাংক এবং অন্যান্য সরকারি ভবন রয়েছে যা পোড়া ইট দিয়ে নির্মিত।[১] মসজিদগুলো ১৫ শতকে বাংলার সালতানাত আমলে নির্মিত হয়েছিল, যার মধ্যে ষাট গম্বুজ মসজিদটি সবচেয়ে বড়। অন্যান্য মসজিদগুলোর মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাইর মসজিদ, নয়গম্বুজ মসজিদ, খান জাহানের সমাধি, বিবি বেগনী মসজিদ এবং রণবিজয়পুর মসজিদ। মসজিদগুলো বাংলার সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহ কর্তৃক সুন্দরবনে নিযুক্ত তুর্কি সামরিক কর্মকর্তা উলুঘ খান জাহানের শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল। এই স্থানটি বাংলা সালতানাতের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। বাগেরহাটে সালতানাত যুগীয় স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন রয়েছে। ঐতিহাসিক শহরটিতে ৫০টিরও বেশি স্থাপনা রয়েছে যা ইন্দো-ইসলামি স্থাপত্যের আদলে স্থানীয় শৈলীতে নির্মিত হয়েছে। এটিকে কখনও কখনও 'খান জাহান শৈলী'ও বলা হয়।

 
ষাট গম্বুজ মসজিদ

ষাট গম্বুজ মসজিদ এই শহরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। এটি এই শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, অনন্য ও জনপ্রিয় স্থাপত্য।[১] মসজিদটির গায়ে কোনো শিলালিপি নেই। তাই এটি কে নির্মাণ করেছিলেন বা কোন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সে সম্বন্ধে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে এটি যে খান জাহান আলী নির্মাণ করেছিলেন সে সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ থাকে না। ধারণা করা হয় তিনি ১৫শ শতাব্দীতে এটি নির্মাণ করেন। এ মসজিদটি বহু বছর ধরে ও বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। পাথরগুলো আনা হয়েছিল রাজমহল থেকে। মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে বাইরের দিকে প্রায় ১৬০ ফুট ও ভিতরের দিকে প্রায় ১৪৩ ফুট লম্বা এবং পূর্ব-পশ্চিমে বাইরের দিকে প্রায় ১০৪ ফুট ও ভিতরের দিকে প্রায় ৮৮ ফুট চওড়া। দেয়ালগুলো প্রায় ৮·৫ ফুট পুরু। ষাট গম্বুজ মসজিদে গম্বুজের সংখ্যা মোট ৮১ টি, সাত লাইনে ১১ টি করে ৭৭ টি এবং চার কোনায় ৪ টি মোট ৮১ টি। কালের বিবর্তনে লোকমুখে ৬০ গম্বুজ বলতে বলতে ষাট গম্বুজ নামকরণ হয়ে যায়, সেই থেকে মসজিদটি ষাট গম্বুজ মসজিদ নামে পরিচিত।

মসজিদের শহর বাগেরহাট এবং ষাট গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো ষাট গম্বুজ মসজিদসহ সম্পূর্ণ বাগেরহাট শহরকেই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।[১][১৫]

সোমপুর মহাবিহার সম্পাদনা

 
সোমপুর মহাবিহার

সোমপুর মহাবিহার বা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। এটি পালবংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল দেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার নির্মাণ করেন। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন।[১৬]

ইউনেস্কোর মতে সোমপুর মহাবিহার দক্ষিণ হিমালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার। আয়তনে এর সাথে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের তুলনা হতে পারে। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্ম শিক্ষাদান কেন্দ্র ছিল। শুধু দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, মিয়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন।

সোমপুর মহাবিহার বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এটি বাংলাদেশের জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত।[১৬] ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।[২]

সুন্দরবন সম্পাদনা

 
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য

সুন্দরবন বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। পদ্মা, মেঘনাব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালীবরগুনা জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনাদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত।[১৭] সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি।[১৮] ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের সিংহভাগ ৬,৫১৭ বর্গ কিলোমিটার (৬৬%) রয়েছে বাংলাদেশে[১৯] এবং বাকি অংশ (৩৪%) রয়েছে ভারতের মধ্যে।[২০][২১] সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ক্ষুদ্রায়তন দ্বীপমালা। মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ, অর্থাৎ ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা, খাঁড়ি, বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল।[২২] বনভূমিটি, স্বনামে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানান ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমিরসাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। জরিপ মোতাবেক, বর্তমানে সুন্দরবনে মোট ১০৬টি বাঘ ও এক লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ চিত্রা হরিণ রয়েছে। সুন্দরবনে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ঘুরতে আসে। প্রতি বছর দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ করার মাধ্যমে প্রকৃতি থেকে বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন করে।

ইউনেস্কো ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।[৩][২৩] এর বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশ বস্তুত একই নিরবচ্ছিন্ন ভূমিখণ্ডের সন্নিহিত অংশ হলেও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে সূচিবদ্ধ হয়েছে; যথাক্রমে 'সুন্দরবন' (বাংলাদেশ) ও 'সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান' (ভারত) নামে। এই সুরক্ষা সত্ত্বেও, আইইউসিএন রেড লিস্ট অফ ইকোসিস্টেম ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে ২০২০ সালের মূল্যায়নে ভারতের অংশের সুন্দরবনকে বিপন্ন বলে মনে করা হয়েছিল।[২৪] ১৯৯২ সালের ২১ মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান সম্পাদনা

 
সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত এলাকা।

সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার একটি জাতীয় উদ্যান, ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ। সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের প্রধান আকর্ষণ হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন বন্যপ্রাণীর মধ্যে একটি এবং সুন্দরবনই এর একমাত্র প্রাকৃতিক আবাসস্থল। সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানে অন্যান্য অনেক প্রজাতির প্রাণীও বাস করে, যার মধ্যে রয়েছে চিত্রা হরিণ, লোনা পানির কুমির, কেটো কচ্ছপ, স্বাদুপানির কুমির, সাপ, পাখি এবং মাছ। সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান পরিদর্শন করে।

সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের আয়তন ১,৩৩০ বর্গকিলোমিটার (৫১৪ বর্গ মাইল)। এটি ১৯৮৪ সালে জাতীয় উদ্যান হিসাবে ঘোষিত হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানকে স্বীকৃতি প্রদান করে।[২৫]

দার্জিলিং হিমালয়ান রেল সম্পাদনা

 
দার্জিলিং হিমালয়ান রেল

দার্জিলিং হিমালয়ান রেল হলো একটি ২-ফুট (৬১০ মিমি) ন্যারো গেজ রেলপথ যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত বিস্তৃত। এই রেলপথটি ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি হিমালয়ের দৃশ্যের মধ্য দিয়ে যায়। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলটি তার প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, স্থানীয় সংস্কৃতি ও পরিবেশের সাথে এর সংযোগ এবং হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর জন্য মূল্যবান। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক সম্পদ যা বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

দার্জিলিং হিমালয়ান রেল স্থানীয় সংস্কৃতি ও পরিবেশের সাথে সংযুক্ত কারণ এটি স্থানীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই রেলপথটি দার্জিলিংয়ের অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পের জন্য অপরিহার্য এবং এটি স্থানীয়দের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা। এটি হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকেও প্রদর্শন করে এবং এটি পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

দার্জিলিং হিমালয়ান রেলকে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৫] এটিকে "হিমালয়ের উপর নির্মিত একটি অসাধারণ রেলপথ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে যা "স্থানীয় সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ সংমিশ্রণ"।

শান্তিনিকেতন সম্পাদনা

 
শান্তিনিকেতন গৃহ

শান্তিনিকেতন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার একটি আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র। এটি ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর পুত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শান্তিনিকেতনকে একটি আধুনিক আশ্রমে রূপান্তর করেন এবং পরে এটিকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করেন। শান্তিনিকেতন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শিল্প ও সংস্কৃতি এবং শিক্ষার জন্য বিখ্যাত। এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসস্থল। বিশ্বভারতী একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় যা জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা প্রদান করে। এটি তার উন্মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা, ঐতিহ্যবাহী শিক্ষার উপর জোর দেওয়া এবং বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতি থেকে শিক্ষার্থীদের সংমিশ্রণের জন্য পরিচিত।

শান্তিনিকেতন তার শিল্প ও সংস্কৃতি জন্যও বিখ্যাত। এখানে অনেকগুলো জাদুঘর, গ্যালারি এবং আর্ট স্কুল রয়েছে। এটি বাউল সঙ্গীত, নৃত্য এবং অন্যান্য লোকশিল্পের জন্যও পরিচিত।

ইউনেস্কো ২০২৩ সালে শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৬]

অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পাদনা

বাংলা অঞ্চলে বর্তমানে ৭টি অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। এগুলো হলো- বাংলা অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বাউল সঙ্গীত,[৭] বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি,[৮] বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের ঢাকায় প্রতিবছর আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা,[৯] সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি,[১০] পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের দুর্গাপূজা,[১১] ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র[১২] এবং ইফতার[২৬] ইউনেস্কো ২০০৫ সালে বাউল সঙ্গীতকে,[৭] ২০১৩ সালে জামদানিকে,[৮] ২০১৬ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে,[৯] ২০১৭ সালে শীতল পাটিকে,[১০] ২০২১ সালে কলকাতার দুর্গাপূজাকে[১১] এবং ২০২৩ সালে ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র[২৭] এবং রমজান মাসে পালিত ইফতার'কে[২৬] অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য-এর অন্তর্ভুক্ত করে।

বাউল সঙ্গীত সম্পাদনা

 
একজন বাউল একতারা হাতে বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করছেন।

বাউল সঙ্গীত বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতের একটি অনন্য ধারা। এটি বাউল সম্প্রদায়ের নিজস্ব সাধনসঙ্গীত। বাউলরা সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে থেকে জীবনকে দেখেন এবং তাদের গানেও সেই দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে। বাউল সঙ্গীতের মূল বিষয়বস্তু হলো ঈশ্বরপ্রেম, মানবতাবাদ, সামাজিক সংস্কার, প্রকৃতি, প্রেম ও জীবনবোধ।

বাউল সঙ্গীতের উদ্ভব সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য জানা যায় না। তবে অনুমান করা হয় যে, খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতক কিংবা তার আগে থেকেই বাংলায় এ গানের প্রচলন ছিল। বাউল গানের প্রবক্তাদের মধ্যে লালন সাঁই, পাঞ্জু শাহ, সিরাজ সাঁই এবং দুদ্দু শাহ প্রধান। এদের ও অন্যান্য বাউল সাধকের রচিত গান গ্রামাঞ্চলে ভাবগান বা ভাবসঙ্গীত নামে পরিচিত। বাউল সঙ্গীত বাংলার সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শুধুমাত্র একটি সঙ্গীতধর্মী ধারাই নয়, এটি একটি দার্শনিক ও সামাজিক ধারাও বটে। বাউল সঙ্গীতের মাধ্যমে বাউলরা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনাকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেন।

ইউনেস্কো ২০০৫ সালে বিশ্বের মৌখিক এবং দৃশ্যমান ঐতিহ্যসমূহের মাঝে বাউল গানকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে।[৭] ইউনেস্কোর মতে, বাউল সঙ্গীত "একটি অসাধারণ সৃষ্টি যা মানবতার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং সৃজনশীলতার একটি অমূল্য সম্পদ"। বাউল সঙ্গীতের বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে এটি একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে। এটি বাংলার সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে।

জামদানি সম্পাদনা

 
জামদানি বুননের ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি

জামদানি হলো একটি সুতি ও সোনালি সুতার মিশ্রণে তৈরি করা বিশেষ ধরনের মসলিন কাপড়। এটি শতাব্দী ধরে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার দক্ষিণ রূপসীতে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তৈরি করা হয়। জামদানি উৎপাদন মুঘল সম্রাটদের দ্বারা অর্থায়ন করা হত। কিন্তু ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় কারখানায় তৈরি কাপড়ের আমদানি বৃদ্ধি এবং স্থানীয় শিল্পের প্রতি অবহেলার কারণে জামদানিমসলিন শিল্পের দ্রুত পতন ঘটে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে জামদানির উৎপাদন আবার বাড়তে শুরু করেছে। জামদানি সাধারণত সুতি এবং সোনালি সুতা দিয়ে তৈরি করা হয়।

ইউনেস্কো ২০১৩ সালে জামদানি বয়নের ঐতিহ্যকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৮] ২০১৬ সালে জামদানি শাড়িকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।[২৮]

মঙ্গল শোভাযাত্রা সম্পাদনা

 
মঙ্গল শোভাযাত্রা

মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রতি বছর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে আয়োজিত একটি নতুন বর্ষবরণ উৎসব। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে এটি প্রবর্তিত হয়। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব হিসাবে সারাদেশে এটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।[২৯]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সহোযোগীতায় প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরের শাহবাগ-রমনা এলাকায় এই আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।[৩০] শোভাযাত্রায় চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন ধরনের প্রতীকী শিল্পকর্ম বহন করা হয়। এছাড়াও বাঙালি সংস্কৃতির পরিচয়বাহী নানা প্রতীকী উপকরণ, বিভিন্ন রঙ-এর মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়। তবে একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে প্রায় প্রতি জেলাসদরে এবং বেশ কিছু উপজেলা সদরে পহেলা বৈশাখে ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ আয়োজিত হওয়ায় এটি বাংলাদেশের নবতর সর্বজনীন সংস্কৃতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আবেদনক্রমে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে নভেম্বরমঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে।[৩১][৩২]

শীতল পাটি সম্পাদনা

 
শীতল পাটির বুনন

শীতল পাটি এক ধরনের মেঝেতে পাতা আসন বা গালিচা। এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যগত কুটির শিল্প। মুর্তা বা পাটি বেত বা মোস্তাক নামক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে এগুলো তৈরি হয়ে থাকে। হস্তশিল্প হিসাবে এগুলোর যথেষ্ট কদর রয়েছে। শহরে শো-পিস এবং গ্রামে এটি মাদুর ও চাদরের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সাজসজ্জা দ্বারা সজ্জিত মাদুরকে নকশি পাটিও বলা হয়।[৩৩]

ইউনেস্কো ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের শীতল পাটি বুননের ঐতিহ্যগত হস্তশিল্পকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[১০]

কলকাতার দুর্গাপূজা সম্পাদনা

 
কলকাতার দূর্গাপজা

শারদীয়া দুর্গাপূজা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের বৃহত্তম উৎসব। কলকাতার সবচেয়ে প্রাচীন দুর্গাপূজাটি বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়িতে আয়োজিত হয়। কলকাতার দ্বিতীয় প্রাচীনতম দুর্গাপূজাটি হলো শোভাবাজার রাজবাড়ির পূজা। বিংশ শতাব্দীতে কলকাতায় বারোয়ারি বা সর্বজনীন পূজা জনপ্রিয় হয়। কলকাতায় প্রায় ২০০০ সার্বজনীন পূজা অনুষ্ঠিত হয়।[৩৪] এটি বাঙালি সনাতনী সমাজে অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। কলকাতার দুর্গাপূজার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো থিম পূজা। এই সকল পূজায় মণ্ডপগুলো বিভিন্ন বিখ্যাত মন্দির বা ভবনের আদলে নির্মাণ করা হয়। কলকাতার দুর্গাপূজায় ব্যবহৃত বেশিরভাগ মাটির দুর্গাপ্রতিমা কুমারটুলি অঞ্চলে তৈরি করা হয়। কুমারটুলির প্রতিমা শিল্পীরা কলকাতার দুর্গাপূজার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ইউনেস্কো কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই উৎসবকে মানবতার জন্য আবহমান অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। প্যারিসে অনুষ্ঠিত ২০২১ খ্রিস্টাব্দের আবহমান বিশ্ব সংস্কৃতি রক্ষা সংক্রান্ত ইউনেস্কোর আন্তঃসরকারি কমিটির ষোড়শ সম্মেলনে (১৫ই ডিসেম্বর) কলকাতার দুর্গাপূজা তালিকাভুক্তির স্বীকৃতি লাভ করে।[১১]

ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র সম্পাদনা

 
ঢাকায় একটি রিকশার পিছনে অঙ্কিত চিত্র।

ঢাকার রিকশা একটি সাংস্কৃতিক আইকন যা শহরের দৃশ্যপটকে চিহ্নিত করে। এটি একটি সাধারণ পরিবহন মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি একটি শিল্পকর্ম হিসাবেও বিবেচিত হয়। রিকশার গায়ে আঁকা রঙিন চিত্রগুলো শহরের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির প্রতিফলন।

রিকশাচিত্রের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এটি প্রথম ১৯ শতকের শেষের দিকে চীনে উদ্ভূত হয়েছিল। রিকশাগুলো তখন থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকায়, রিকশাচিত্রের ঐতিহ্য ১৯০০-এর দশকে শুরু হয়েছিল। রিকশাচিত্রের শিল্পীরা সাধারণত তাদের শিল্পের জন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য, ধর্মীয় চিত্র এবং লোককাহিনী থেকে অনুপ্রেরণা নেন। তারা বিভিন্ন রঙ এবং আকার ব্যবহার করে তাদের চিত্রগুলোকে প্রাণবন্ত করে তোলে। রিকশাচিত্রের শিল্পীরা সাধারণত তাদের কাজের জন্য পেইন্ট, ব্রাশ এবং স্প্যাচুলা ব্যবহার করেন। রিকশাচিত্র শুধুমাত্র একটি সৌন্দর্যমূলক শিল্প নয়, এটি ঢাকার অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশও। রিকশাচিত্র শিল্পীরা তাদের কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা তাদের চিত্রগুলো বিক্রি করে বা রিকশা ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করে।

ইউনেস্কো ২০২৩ সালে ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্রকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৩৫][২৭][৩৬] এই স্বীকৃতি রিকশাচিত্রের শিল্পীদের এবং তাদের কাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এটি রিকশাচিত্রকে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে নিয়ে আসতে এবং এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণে সহায়তা করবে।

ইফতার সম্পাদনা

 
বাংলাদেশের একটি মসজিদে আয়োজিত ইফতার

রমজান মাসে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য নিয়ে মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল পানাহার ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকে। একে রোজা বা সাওম বলা হয়। সূর্যোদয়ের পরে মুসলিমরা হালকা পানাহারের মধ্য দিয়ে রোজা ভাঙে, যাকে ইফতার নামে অভিহিত করা হয়। এটি মুসলিমদের নিকট একটি পবিত্র উৎসবের ন্যায়।

ইফতার নিয়ে ইউনেস্কো বলেছে, পবিত্র রমজানে মাগরিবের আজানের পর ইফতার করা হয়। মুসলিমরা একত্র হয়ে ইফতার করেন। এতে পারিবারিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মজবুত হয়। এ ছাড়া ইফতারের মাধ্যমে একাত্মতা, উদারতা ও সামাজিক যোগাযোগ বাড়ে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইফতারের খাবারের ধরন ভিন্ন। অনেক দেশে শুধু চা, দুধ ও খেজুর খেয়েই ইফতার করা হয়। আবার অনেক দেশে এটি ঘিরে করা হয় বিশাল আয়োজন। আর ইফতারের খাবার বানাতে শুধু প্রবীণেরাই নন, প্রায়ই হাত লাগান পরিবারের তরুণ সদস্য, এমনকি শিশুরাও।

বাঙালি মুসলিম সমাজেও সাড়ম্বরে ইফতার পালন করা হয়ে থাকে। ইফতারে শুধু মুসলিমরাই নয়, মুসলিমদের দাওয়াতে অন্যান্য ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে ইফতারে পানাহার করারও নজির রয়েছে। যা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক বড় ভিত্তি। বাংলাদেশ মুসলিম বিশ্বের আওতাভুক্ত হওয়ায় এবং আবহমানকাল ধরে এই অঞ্চলের বাঙালি মুসলিমরা সাড়ম্বরে ইফতার পালন করায় ইফতার বাংলা অঞ্চলের অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর বতসোয়ানা প্রজাতন্ত্রের কাসানে অনুষ্ঠিত অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুরক্ষার জন্য ইউনেস্কোর আন্তঃসরকারি কমিটির ১৮তম অধিবেশনে ইফতারকে বিশ্ব অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়।[২৬]

বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য সম্পাদনা

বর্তমানে বাংলা অঞ্চলে ইউনেস্কো স্বীকৃত ১টি বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ভাষণ এই ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত।

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সম্পাদনা

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিরাট জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তিনি উক্ত ভাষণ বিকাল ২টা ৪৫ মিনিটে শুরু করে বিকাল ৩টা ৩ মিনিটে শেষ করেন। উক্ত ভাষণ ১৮ মিনিট স্থায়ী হয়। এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তিনি বলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” ভাষণে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বাঙালিদের পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।

২০১৭ সালের ৩০শে অক্টোবর, ইউনেস্কো ৭ই মার্চের ভাষণকে "ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ" (বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।[৩৭] এই ভাষণ ইন্টারন্যাশনাল 'মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার'-এ গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টারি ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো অন্তর্ভুক্ত করেছে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Historic Mosque City of Bagerhat" [ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট]। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  2. "Ruins of the Buddhist Vihara at Paharpur" [পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষ]। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  3. "The Sundarbans" [সুন্দরবন]। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  4. "Sundarbans National Park" [সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান]। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র (ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  5. "Mountain Railways of India" [ভারতের পাহাড়ি রেলপথ]। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  6. "Santiniketan" [শান্তিনিকেতন]। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  7. "UNESCO - Baul songs" [ইউনেস্কো - বাউল সঙ্গীত]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  8. "UNESCO - Traditional art of Jamdani weaving" [ইউনেস্কো - জামদানি বুননের ঐতিহ্যবাহী শিল্প]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  9. "UNESCO - Mangal Shobhajatra on Pahela Baishakh" [ইউনেস্কো - পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  10. "UNESCO - Traditional art of Shital Pati weaving of Sylhet" [ইউনেস্কো - সিলেটের শীতল পাটি বুননের ঐতিহ্যবাহী শিল্প]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  11. "UNESCO - Durga Puja in Kolkata" [ইউনেস্কো - কলকাতার দুর্গাপূজা]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  12. "UNESCO - Rickshaws and rickshaw painting in Dhaka" [ইউনেস্কো - ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  13. "UNESCO - Iftar/Eftari/Iftar/Iftor and its socio-cultural traditions" [ইফতার/ইফতারী এবং এর সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য]। ich.unesco.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৩ 
  14. "'বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য' বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ – DW – 31.10.2017"dw.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৭ 
  15. "ষাট গম্বুজ মসজিদ"www.archaeology.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২০ 
  16. "পাহাড়পুর"প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  17. Pani, D. R.; Sarangi, S. K.; Subudhi, H. N.; Misra, R. C.; Bhandari, D. C. (2013). "Exploration, evaluation and conservation of salt tolerant rice genetic resources from Sundarbans region of West Bengal" (PDF). Journal of the Indian Society of Coastal Agricultural Research. 30 (1): 45–53.
  18. নিয়াজ আহমদ সিদ্দিকী (২০১২)। "সুন্দরবন"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  19. খসরু চৌধুরী (২৩ জুলাই ২০১০)। "সুন্দরবনের হারানো মাছ" (ওয়েব)দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা। পৃষ্ঠা ২৫। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৪, ২০১০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  20. Pani, D. R.; Sarangi, S. K.; Subudhi, H. N.; Misra, R. C.; Bhandari, D. C. (২০১৩)। "Exploration, evaluation and conservation of salt tolerant rice genetic resources from Sundarbans region of West Bengal" [পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অঞ্চল থেকে লবণ সহনশীল ধানের জেনেটিক সম্পদ অনুসন্ধান, মূল্যায়ন ও সংরক্ষণ] (পিডিএফ)Journal of the Indian Society of Coastal Agricultural Research30 (1): 45–53। ২৬ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৯ 
  21. "Sundarbans Tiger Project" [সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প]। ২০ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০০৮ 
  22. খসরু চৌধুরী (২৩ জুলাই ২০১০)। "সুন্দরবনের হারানো মাছ" (ওয়েব)দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা। পৃষ্ঠা ২৫। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৪, ২০১০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  23. "Monitoring mangrove forest dynamics of the Sundarbans in Bangladesh and India using multi-temporal satellite data from 1973 to 2000" [১৯৭৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত মাল্টি-টেম্পোরাল স্যাটেলাইট ডেটা ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনের গতিশীলতা পর্যবেক্ষণ করা]। Estuarine, Coastal and Shelf Science (ইংরেজি ভাষায়)। 73 (1-2): 91–100। ২০০৭-০৬-০১। আইএসএসএন 0272-7714ডিওআই:10.1016/j.ecss.2006.12.019 
  24. "Indian Sundarbans mangrove forest considered endangered under Red List of Ecosystems, but there is cause for optimism" [ভারতের অংশের সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বন বাস্তুতন্ত্রের লাল তালিকার অধীনে বিপন্ন বলে বিবেচিত, তবে আশাবাদের দিকও রয়েছে]। Biological Conservation (ইংরেজি ভাষায়)। 251: 108751। ২০২০-১১-০১। আইএসএসএন 0006-3207ডিওআই:10.1016/j.biocon.2020.108751 
  25. Centre, UNESCO World Heritage। "Sundarbans National Park" [সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান]। UNESCO World Heritage Centre (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-৩১ 
  26. "UNESCO - Iftar/Eftari/Iftar/Iftor and its socio-cultural traditions" [ইফতার/ইফতারী এবং এর সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য]। ich.unesco.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৩ 
  27. "ইউনেসকোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র"www.kalerkantho.com। ২০২৩-১২-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৬ 
  28. "Jamdani Sari gets GI registration certificate" [জামদানি শাড়ি জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল]। The Daily Star 
  29. Habib, Haroon। "Dramatic dawn" [নাটকীয় ভোর]। The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-৩০ 
  30. "মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১৮ 
  31. হোসেন, মোছাব্বের (১৪ এপ্রিল ২০১৭)। "মঙ্গল শোভাযাত্রার বিশ্ব স্বীকৃতি এল যেভাবে"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৮ 
  32. "২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর ইউনেসকো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সাংস্কৃতিক হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করে"unesco official site। ২০১৬-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-৩০ 
  33. জিনাত মাহরুখ বানু (২০১২)। "নকশি পাটি"। সিরাজুল ইসলাম ও আহমেদ এ. জামাল। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি 
  34. "I Love Durga Pooja and Navratri" [আমি দুর্গাপূজা এবং নবরাত্রি ভালোবাসি]। The Times Of India 
  35. "UNESCO - Rickshaws and rickshaw painting in Dhaka" [ইউনেস্কো - ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র]। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  36. "Rickshaws and Rickshaw painting in Dhaka inscribed on the UNESCO Representative List of the Intangible Cultural Heritage of Humanity" [ঢাকার রিকশা ও রিকশাচিত্র ইউনেস্কোর মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত]। ইউনেস্কো। ৬ ডিসেম্বর ২০২৩। 
  37. "The Historic 7th March Speech of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman" [বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ]। UNESCO (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৩