বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো নারী সৈনিক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৩ সালে, এ বছর সংবাদপত্রে হঠাৎ বিজ্ঞাপন আসে যে 'সেনা চিকিৎসা শাখা' (আর্মি মেডিকেল কোর, এএমসি) তে মহিলা সৈনিক ভর্তি করা হবে। ২০১৫ সালের জানুয়ারীতে এই 'প্রথম নারী সৈনিক ব্যাচ' তাদের এক বছর মেয়াদী মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করে।[][][][][] প্রথমবার শুধু চিকিৎসা শাখায় (মেডিকেল কোরে) নারীদেরকে সৈনিক হিসেবে নেওয়া হলেও পরে নারীদেরকে করণিক কোরে (আর্মি কোর অব ক্লার্ক, এসিসি), সিগনালস কোরে, ইএমই (ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স) কোরে, ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে, অর্ডন্যান্স কোরে, মিলিটারি পুলিশ কোরে এবং এএসসি (আর্মি সার্ভিস কোরে) সৈনিক হিসেবে নেওয়া হয়।[]

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মহিলা সৈনিকদের কুচকাওয়াজ, বিজয় দিবস, ২০১৫
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন নারী সৈনিক, ২০১৮ সালে তোলা ছবি

২০০০ সালে সর্বপ্রথম সেনা ক্যাডেট হিসেবে (৪৭তম দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী) নারীরা যোগদান করেন এবং নারীরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই 'সেনা চিকিৎসা শাখা' (আর্মি মেডিকেল কোর) তে চিকিৎসক হিসেবে যোগ দিতে পারেন, ২০১৮ সালে দেশের সর্বপ্রথম নারী মেজর জেনারেল হন সুসানে গীতি[]

সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্ট, গোলন্দাজ রেজিমেন্ট এবং সাঁজোয়া কোরে নারীরা যোগদানের সুযোগ পাননা, যদিও গোলন্দাজ রেজিমেন্টে নারীরা কর্মকর্তা হতে পারেন। ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম নারী ছত্রীসেনা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় যদিও নিয়োগপ্রাপ্ত নারী ক্যাপ্টেনটি পদাতিক বা সাঁজোয়া রেজিমেন্টের কেউ ছিলেননা।[] ২০১৫ সালে সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো দুইজন নারী কর্মকর্তা বৈমানিকের মর্যাদা লাভ করেন।[] আবার ২০১৯ সালে চারজন নারী লেঃ কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন এবং তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন গোলন্দাজ রেজিমেন্টের এবং অন্যজন ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের।[১০][১১]

কোর অনুযায়ী নারী

সম্পাদনা
কোর/রেজিমেন্ট নারীরা সৈনিক এবং কর্মকর্তা হতে পারেন
সাঁজোয়া কোর  
গোলন্দাজ রেজিমেন্ট  /  (শুধু কর্মকর্তা)
ইঞ্জিনিয়ার্স কোর  
সিগনালস কোর  
পদাতিক  
সেনা উড্ডয়ন  /  (শুধু কর্মকর্তা)
সার্ভিস কোর  
মেডিকেল কোর  
অর্ডন্যান্স কোর  
ইএমই কোর  
আরভিঅ্যান্ডএফসি  /  (শুধু কর্মকর্তা)
ডেন্টাল কোর  
মিলিটারি পুলিশ  
এডুকেশন কোর  /  (শুধু কর্মকর্তা)
ক্লার্ক কোর  

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "সেনাবাহিনীতে প্রথম বারের মতো যুক্ত হলো নারী সৈনিক"সময় টিভি। ২৯ জানুয়ারী ২০১৫। 
  2. "টাঙ্গাইলে সেনানিবাসে প্রধানমন্ত্রীঃ চ্যালেঞ্জিং পেশায় অংশগ্রহণ নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখবে"দৈনিক প্রথম আলো। ৩০ জানুয়ারী ২০১৫। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. কামনাশীষ শেখর (৩০ জানুয়ারী ২০১৫)। "সেনাবাহিনীতে নারী সৈনিকঃ 'প্রমাণ করব, নারীরাও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে'"দৈনিক প্রথম আলো। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "প্রথম ৮৭৯ নারী সৈনিকের শপথ গ্রহণ; নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখবে : প্রধানমন্ত্রী"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৩০ জানুয়ারী ২০১৫। ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "আর পিছিয়ে থাকবে না নারীরাঃ নারী সৈনিকদের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ৩০ জানুয়ারী ২০১৫। ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. "সৈনিক পদে নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী"এনটিভি। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫। ২০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. "বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম নারী মেজর জেনারেল; ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী ডাক্তার হিসেবে ক্যাপ্টেন পদবিতে যোগদান করেন"ঢাকা ট্রিবিউন। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮। ২০ মে ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  8. "বাংলাদেশের প্রথম নারী ছত্রীসেনা"বিবিসি বাংলা। ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৩। ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "আকাশে উড়লেন সেনাবাহিনীর দুই নারী পাইলট"দৈনিক প্রথম আলো। ২৮ অক্টোবর ২০১৫। ১৪ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  10. "ফাইটিং ফোর্সের প্রথম ব্যাটালিয়ন আধিনায়ক হলেন চার নারী সেনা কর্মকর্তা"দৈনিক প্রথম আলো। ২৪ জানুয়ারী ২০১৯। ৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  11. "লেফটেন্যান্ট কর্নেল হলেন ৪ নারী"দৈনিক ইত্তেফাক। ২৪ জানুয়ারী ২০১৯। 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা