বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ একাডেমি

মেরিন ফিশারীজ একাডেমি (MFA)[১] বা বাংলাদেশ মেরিন ফিশারীজ একাডেমি (BMFA)[২] মৎস্য শিল্প, বণিক জাহাজ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মেরিটাইম শিল্পগুলিতে প্রবেশ করতে আগ্রহী ক্যাডেটদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাডেট, ডেক অফিসার এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশের অর্জিত বিশাল ব্লু ইকোনমির বিশাল সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আরোহণ এবং প্রসেসিং করার জন্য তথা আধুনিক মৎস্য জাহাজ পরিচালনার জন্য দক্ষ এবং যোগ্য মেরিন ফিশারিজ ক্যাডেট তৈরি করা হয়।[৩] ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি শুধুমাত্র এই সংস্থাগুলির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের একটি জাতীয় সংস্থা। মেরিন ফিশারিজ একাডেমী থেকে পাস করে এর এক্স-ক্যাডেট বেশির ভাগ বিদেশগামী জাহাজে কর্মরত রয়েছে। অনেকেই পিএইচডি করে বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছেন। অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন মেরিন ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছেন। এমনকি বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিয়াল চাকরিতেও খুবই সম্মানের এবং মর্যাদায় কাজ করছেন। এই একাডেমীর ক্যাডেটদের অনেকেই বিসিএস দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবেও সমান দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। অনেকেই বাংলাদেশের নেভিতে যোগদান করে দক্ষতার সাথে কাজ করছেন।

বাংলাদেশ মেরিন ফিশারীজ একাডেমী
নীতিবাক্যLearn to serve
ধরনসরকারী
স্থাপিত১৯৭৩
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি
অধ্যক্ষক্যাপ্টেন মোহাম্মদ হাসান,(জি),বিসিজিএমএস,পিএসসি,বিএন।
অবস্থান
ফিস হারবার, ঈছানগর, কর্ণফুলী, চট্টগ্রাম
,
বাংলাদেশ
সংক্ষিপ্ত নামBMFA
ওয়েবসাইটwww.mfacademy.gov.bd

অবস্থান সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলি উপজেলার অন্তর্গত চর পাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর এলাকায় অবস্থিত।

ইতিহাস সম্পাদনা

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রের সম্পদ আরোহণ করার জন্য ১৯৭৩ সালে ততকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় বাংলাদেশে মেরিন ফিশারিজ একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের স্কলারশিপ এ অত্র একাডেমী থেকে প্রচুর ক্যাডেট দেশ বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের সহিত কাজ করছেন। বাংলাদেশ ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএফডিসি) এর অধীনে ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ সালে যাত্রা শুরু করে এবং ২০ এপ্রিল, ১৯৮৮ সালে এটি মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি প্রকল্প হিসেবে আগত।[৪].কিন্তু ১ জুলাই, ১৯৯৩ সালে একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাজস্ব বাজেটে এটি স্থানান্তর করা হয়।এরপর থেকে এটি একাডেমী মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের অধীনে কাজ করছে। একাডেমীর কার্যকরী কর্তৃত্ব প্রিন্সিপালের উপর ন্যস্ত হয়, যার তিনটি সহযোগী সংগঠন রয়েছে, যথা: একাডেমিক কাউন্সিল, বোর্ড অব স্টাডিজ এবং বোর্ড অফ ডিসিশন।

পাঠ্যক্রম সম্পাদনা

এ প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের, অধীনে পেশাদার স্নাতক (অনার্স) কোর্স প্রদান করে।[৩] এই সমস্ত স্বীকৃত কোর্সগুলি, বাংলাদেশ ও অন্যান্য জায়গায় স্বীকৃত। ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণের মোট সময়কাল চার বছর। একাডেমিতে পেশাদার এবং একাডেমিক বিষয়গুলির তাত্ত্বিক দিকগুলি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ১ম ও ২য় বর্ষের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছরের সমাপ্তিতে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বারা পরিচালিত বছরের চূড়ান্ত পরীক্ষায় যোগদান করে থাকে। ৩য় বছরের অন্যান্য শিল্প প্রশিক্ষণ, অনুশীলন এবং সহকারী কোর্স জুড়ে দেয়। এই কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত হলে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, অধীনে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারপরে সামুদ্রিক মৎস্য একাডেমী ট্রেনিংটি পাস করলে স্নাতক সার্টিফিকেটের পুরস্কার প্রদান করে।

ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পাদনা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, এর অধীনে মেরিন ফিশারীজ একাডেমীতে বিএসসি (সম্মান) নটিক্যাল , বিএসসি (সম্মান) মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিএসসি (সম্মান) মেরিন ফিসারিজে ভর্তির জন্য আবেদনকারীর আগ্রহী পুরুষ নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়ে থাকে। এক প্রার্থী কোন এক কোর্সের জন্য অথবা তিনটি কোর্সের জন্য আবেদন করতে পারে। এই পরীক্ষাটি এইচএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও সাধারণ জ্ঞান, যা নটিক্যাল / মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেরিন ফিশারীজ গ্রুপ, নটিক্যাল / মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের গণিত এবং মেরিন ফিশারিজ গ্রুপের জীববিজ্ঞান উভয়ের জন্য সাধারণ বিষয়। যদি কেউ তিনটি বিভাগীয় কোর্সের জন্য আবেদন করেন তবে তাকে একটি পরীক্ষা নটিক্যাল এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের জন্য ও অন্য একটি পরীক্ষা মেরিন ফিশারিজ গ্রুপের জন্য দিতে হবে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Welcome to Bangladesh Marine Fisheries Academy"Marine Fisheries Academy। ২৪ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৯ 
  2. "Ctg Marine Fisheries Academy: Principal's removal demanded"Priyo News। ২০১৬-০৪-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-২৫ 
  3. এম হাসান জামান খান (২০১২)। "মেরিন ফিশারিজ একাডেমী"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  4. "Marine Fisheries Academy"mfacademy। ২৪ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা