বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি ভবন

বিজিএমইএ ভবন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিলে অবস্থিত ১৬ তলা বিশিষ্ট ভবন। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তি স্থাপন করেন । ২০০৬ সালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এর উদ্বোধন করেন। এটি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির পুরোনো সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত।[২]

বিজিএমইএ ভবন
মানচিত্র
সাধারণ তথ্য
অবস্থাউঁচু ভবন
অবস্থানহাতিরঝিল
ঠিকানাকারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল
শহরঢাকা
দেশবাংলাদেশ
নির্মাণকাজের আরম্ভ উদযাপন১৯৯৮
নির্মাণকাজের সমাপ্তি২০০৬
খোলা হয়েছে২০০৬
বন্ধ১৬ এপ্রিল ২০১৯
ধ্বংসপ্রাপ্ত২০১৯
স্বত্বাধিকারীবিজিএমইএ
ভূমিমালিকবাংলাদেশ রেলওয়ে [১]
উচ্চতা
ছাদ পর্যন্ত১৬ তলা
শীর্ষ তলা পর্যন্তক্লাব, সুইমিং পুল, সভাকক্ষ, মিলনায়তন
কারিগরী বিবরণ
উপাদানইট ও পাথর
তলার সংখ্যা১৬ তলা
অন্যান্য তথ্য
গাড়ি রাখার স্থানহ্যাঁ

বিবরণ সম্পাদনা

বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে বিজিএমইএ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ভবন থেকে সংঠগনের সকর কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ১৬ তলা বিশিষ্ট ভবনে দুটি বেসমেন্ট ছিলো। চারটি তলা বিজিএমইএর দাফতরিক কাজে ব্যবহার হতো। বাকি তলাগুলোতে দুটি ব্যাংকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি হলেও আইনি জটিলতায় তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। ভবনটি শীর্ষ দুই তলায় বিলাসবহুল অ্যাপারেল ক্লাব, সদস্যদের ব্যবহারের জন্য সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগার, রেস্তোরাঁ, সভাকক্ষ এবং বৃহৎ আকারে মিলনায়তন ছিলো। ১৯৯৯ সালে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। যা ২০০১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয়।[৩]

ভাঙ্গার নির্দেশ সম্পাদনা

২০১০ সালে বাংলাদেশের একটি দৈনিকে সংবাদপত্রে বিজিএমই ভবন অবৈধ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আসে এবং বিজিএমইএ ভবনটি অবৈধভাবে খালের ভূমি দখল করে নির্মিত হয়েছে উল্লেখ করে ৩ এপ্রিল ২০১১ তারিখে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিচারপতিদের বেঞ্চ ভবনটি সংগঠনটির নিজস্ব অর্থায়নে ভবন ভাঙ্গার নির্দেশ দেয়।[১][৪] আদালতের রায়ে বলা হয়, ‘দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিল প্রকল্পে বিজিএমইএ ভবন ক্যান্সারের মতো এবং যদি ভবনটি অবিলম্বে সরানো না হয় তবে এটি হাতিরঝিল নয়, পুরো ঢাকা শহরের ক্ষতি করবে’ । বিজিএমইর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টে আপীল আবেদন করা হলে ৮ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে তৎকালিন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ উচ্চ আদালতের রায় ঠিক রেখে ভাঙ্গার জন্যে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়। ২ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে বিজিএমইএ মুচলেকা দিয়ে পুনরায় আদালতের কাছ থেকে এক বছরের জন্যে সময় পায়।[৩] ১২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে বেঁধে দেয়া সময়ের মেয়াদ শেষ হয় এবং ১৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে রাজউক ভবনটি সীলগালা করে।[১]


স্থানান্তর সম্পাদনা

পুরোনো ভবন সিলগালার হয়ে যাওয়ায় ঢকার উত্তরায় দুটি উঁচু ভবনে বিজিএমইএর নতুন সদর দফতর স্থানান্তর হয়। এ দুটি ভবনের ভেতেরর পরিমাণ ৪ লাখ ৬৪ হাজার বর্গফুট। এ মধ্যে ৩ লাখ বর্গফুট দাফতরি কাজে ব্যবহার করবে বিজিএমইএ। এতে প্রদর্শনী কেন্দ্র ছাড়াও ৭৫০ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মিলনায়তন, দুটি সেমিনার কক্ষ এবং সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিংপুল রয়েছে। [৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "বিজিএমইএ ভবন সিলগালা"দৈনিক যুগান্তর। ১৬ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯ 
  2. "নিজস্ব খরচে অবিলম্বে ভবন ভাঙার নির্দেশ বিজিএমইএকে"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৮ নভেম্বর ২০১৬। ২৮ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯ 
  3. "নতুন ভবনে যাচ্ছে বিজিএমইএ"প্রথম আলো। ২৮ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯ 
  4. "DSCC to remove illegal structures from Beribadh, recover canal"দ্য ডেইলি স্টার। ২৩ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯