বাংলাদেশে সীসা দূষণ

বাংলাদেশে সীসা দূষণ সীসার ফলে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ফলে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর উপর প্রভাবকে নির্দেশ করে। বাংলাদেশ সীসা দূষণে ৪র্থ সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ।[১] প্রায় ৭০% বুদ্ধিবৃত্তিক পঙ্গুত্ব সীসার ফলে হয়ে থাকে।[১] এর ফলে দক্ষতা হ্রাসে বার্ষিক ১.৬ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়। গড়ে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের রক্তে ৬-৮ মাইক্রোগ্রাম সীসা/ডেসিলিটার এ পাওয়া গিয়েছে যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত মাত্রা ৫ থেকে অনেক বেশি।[২] যদিও সীসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই, যেকোনো পরিমান সীসাই ক্ষতিকর।[৩] বাংলাদেশে খাদ্য ব্যবস্থা সীসা দূষণে আক্রান্ত।[৪] সীসার প্রধান উৎস সীসার ব্যাটারি,[৫] সীসা মিশ্রিত রঙ, সীসা পুনঃচক্রায়ন(রিসাইক্লিং), মাটি ও ধাতুর তৈজসপত্র(সীসার প্রলেপ হিসেবে), মসলা(খাদ্য বিষ হিসেবে হলুদের রঙ ও পরিমান বাড়াতে), ই-বর্জ্য, গয়না তৈরিতে, সোনার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে, ধর্মীয় গুড়ায়(পূজায় ব্যবহৃত) ও আয়র্বেদিক ঔষধে, আমদানি করা বাসমতি চালে।[৩][৬][৭][৮][৯]

মাধ্যম সম্পাদনা

হলুদ সম্পাদনা

বাংলাদেশে হলুদে ব্যবহৃত রঙে ২-১০% ভর সীসার পাওয়া গেছে।[১০] এক্ষেত্রে সীসা ও ক্রোমিয়াম এর অনুপাত ১.৩:১। ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমানে সীসাযুক্ত হলুদ পাওয়া গেছে। তবে, মোড়কজাত হলুদের ২৭টি নমুনার মধ্যে ২টিতে অতিরিক্ত সীসা পাওয়া গেছে।[১০]

বিস্তার সম্পাদনা

বাংলাদেশের আনুমানিক ৩ কোটি ৫৫ লাখ শিশু সীসা দূষণে আক্রান্ত।[১১] সীসা দূষণের প্রধান উৎস সীসা ব্যাটারি পুনঃচক্রায়ন ও হলুদে সীসা যোগ করা। জাহাজ ভাঙা শিল্প থেকে সীসা ও অ্যাসবেস্টস ছড়িয়ে পরে। ভারত থেকে আমদানি করা কোহিনুর বাসমতি চালেও সীসা পাওয়া গেছে।[১২] মুন্সিগঞ্জে একটি গবেষণায় দেখা গেছে ২০-৪০ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ৭৮% এর রক্তে অতিরিক্ত সীসা বিদ্যমান।[১৩]

প্রভাব সম্পাদনা

সীসার প্রভাবে শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়।[১৪]

আইন সম্পাদনা

সরকারি অনুমোদন ছাড়া কারো সীসা প্রক্রিয়াজাতকরণের অনুমোদন নেই।[১৫] তবে কেউ এই নিয়ম মান্য করে না। ইউনিসেফ ও পিউর আর্থ জাতীয় সংস্থা এই বিষয়ে আইন প্রয়োগ কার্যকরী করতে কাজ করছে।[১১][৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Lead pollution putting growth of children, nation at risk: Experts"The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৭-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৩ 
  2. Mitra, Amal K.; Haque, Akhlaque; Islam, Manirul; Bashar, S. a. M. K. (2009-01)। "Lead Poisoning: An Alarming Public Health Problem in Bangladesh"International Journal of Environmental Research and Public Health (ইংরেজি ভাষায়)। 6 (1): 84–95। আইএসএসএন 1660-4601ডিওআই:10.3390/ijerph6010084পিএমআইডি 19440271পিএমসি 2672336   এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. লেখা। "সিসার দূষণ নিয়ে ভাবনা, আর না, আর না"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Food chain in Bangladesh highly exposed to lead poisoning"New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৩ 
  5. Rahman, Dr Mahfuzar (২০২১-০২-০৭)। "Recycled lead-acid battery putting Bangladesh in danger"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৬ 
  6. "Regional Rapid Marketplace Screenings"Pure Earth (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৬ 
  7. "Bangladesh"Pure Earth (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৩ 
  8. মাহমুদ, ইফতেখার। "আমদানি করা বাসমতী চালে ক্ষতিকর সিসা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৬ 
  9. "UNICEF WeShare - Search Result"weshare.unicef.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৬ 
  10. Forsyth, Jenna E.; Nurunnahar, Syeda; Islam, Sheikh Shariful; Baker, Musa; Yeasmin, Dalia; Islam, M. Saiful; Rahman, Mahbubur; Fendorf, Scott; Ardoin, Nicole M. (২০১৯-১২-০১)। "Turmeric means "yellow" in Bengali: Lead chromate pigments added to turmeric threaten public health across Bangladesh"Environmental Research179: 108722। আইএসএসএন 0013-9351ডিওআই:10.1016/j.envres.2019.108722 
  11. "সীসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ শিশু: ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ চতুর্থ"www.unicef.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৩ 
  12. মাহমুদ, ইফতেখার। "আমদানি করা বাসমতী চালে ক্ষতিকর সিসা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৬ 
  13. Gleason, Kelsey; Shine, James P.; Shobnam, Nadia; Rokoff, Lisa B.; Suchanda, Hafiza Sultana; Ibne Hasan, Md Omar Sharif; Mostofa, Golam; Amarasiriwardena, Chitra; Quamruzzaman, Quazi (২০১৪-০৮-২৪)। "Contaminated Turmeric Is a Potential Source of Lead Exposure for Children in Rural Bangladesh"Journal of Environmental and Public Health (ইংরেজি ভাষায়)। 2014: e730636। আইএসএসএন 1687-9805ডিওআই:10.1155/2014/730636পিএমআইডি 25214856পিএমসি 4158309  
  14. Rahman, Dr Mahfuzar (২০২১-০২-২৮)। "Lead: Killer in the kitchen"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৬ 
  15. "পুরাতন/অকেজো লেড এসিড ব্যাটারীর সীসা দূষণ" (পিডিএফ) 

আরো দেখুন সম্পাদনা