বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ২০২২
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ২০২২ বলতে ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ সিলেট বিভাগসহ দেশটির পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর বিদ্যুৎহীন হওয়াকে বোঝায়।[১][২]
প্রেক্ষাপট
সম্পাদনাযমুনা সেতুর পূর্ব পাশের জাতীয় গ্রিডে দুপুর ২টা পাঁচ মিনিটে বিপর্যয় শুরু হয়, এই বিপর্যয়ের কারণে জাতীয় গ্রিড পূর্বাঞ্চলে সংযুক্ত পাওয়ার স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে গেলে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগসহ বাংলাদেশের ৩২ জেলা চার ঘণ্টা পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন ছিল।[৩] বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হয়,
ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ নেওয়ার সময় বিপর্যয়ের সূত্রপাত হয়।
এইদিন বিকাল থেকে বঙ্গভবন সহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ রিস্টোর হওয়া শুরু হয়, রাত নয়টায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে।[৪][৫]
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিডে সংকট তৈরি হয়। একই সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, এবং কুমিল্লা অঞ্চলে বরাদ্দের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছিল। এতে গ্রিডে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়, যার ফলে সিরাজগঞ্জ-আশুগঞ্জ উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং একে একে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হতে শুরু করে। বিতরণ কোম্পানির অব্যবস্থাপনা ও লোডশেডিং নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হওয়াও বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করে।[৬]
প্রভাব
সম্পাদনাবিপর্যয়ের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ সহ অন্যান শহরের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বঙ্গভবন এবং গণভবন বিদ্যুৎহীন ছিল।[৭][৮] বিদ্যুৎ না থাকায় শহরগুলোর রাস্তার বাতি ও বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল সবধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ ছিলো।[৯][১০] এর প্রভাবে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবাতেও বিঘ্ন ঘটেছে।[১১] এছাড়া হাসপাতালগুলোতেও বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হয়েছে।[১২] বিপর্যয় চলাকালে মোমবাতির ব্যাপক চাহিদা ও সংকট দেখা যায়।[১৩]
এর প্রভাব কয়েকদিন পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল, বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করতে দুই দিনের বেশি সময় লেগেছে যার কারণে দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে।[১৪]
পরবর্তীতে দায়িত্বে অবহেলার কারণে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের সহকারী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদের দুইজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।[১৫]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ News, Somoy। "বিপর্যয় কাটিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ | বাংলাদেশ"। Somoy News।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বিপর্যয় কাটিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ"। দৈনিক প্রথম আলো।
- ↑ https://www.prothomalo.com/bangladesh/t0hubuamni
- ↑ "বিদ্যুৎ ফিরেছে বঙ্গভবনে, আলো ফিরছে দেশে"। Newsbangla24।
- ↑ "বিদ্যুৎ এসেছে যেসব এলাকায়"। www.shomoyeralo.com।
- ↑ "বিদ্যুৎ বিপর্যয়: পোশাক কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত"। জাগো নিউজ।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বিদ্যুৎ বিপর্যয়: রাজধানীর রাস্তাঘাট অন্ধকার"। www.prothomalo.com।
- ↑ "বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রভাব টেলিযোগাযোগ সেবাতেও"। Newsbangla24।
- ↑ "বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে হাসপাতাল-বাসাবাড়িতে"। citynewsdhaka.com।
- ↑ "বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দোকানে মোমবাতি সংকট"। জাগো নিউজ।
- ↑ "বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ জানা যায়নি, বেড়েছে লোডশেডিং"। প্রথম আলো।
- ↑ "জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়: সাময়িক বরখাস্ত হচ্ছেন পিজিসিবির ২ কর্মকর্তা"। সমকাল (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৬।