বাংলাদেশে গর্ভপাত

বাংলাদেশে গর্ভপাত বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অবৈধ, যদিও মাসিক সঞ্চালনকে বিকল্প হিসেবে কাজে লাগানো হয়। বাংলাদেশে এখনো ১৮৬০-এর প্যানাল কোড চালু রয়েছে, যেখানে প্ররোচিত গর্ভপাতকে আইন বহির্ভূত হিসেবে গণ্য করা হয় যদিনা এটি নারীর জন্য হুমকিস্বরূপ হয়।[১][২]

মহিলাদের বাচ্চা নষ্ট করা

ঐতিহাসিকভাবে, গর্ভপাত একসময় প্রচলিত ছিল, বিশেষকরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী বছরে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭২ সালে, যুদ্ধের সময়ে যেসব নারী ধর্ষিত হয়েছিল, তাদের জন্য গর্ভপাত বৈধ করে দেয়া হয়েছিল।[২] ১৯৭৬-এ, বাংলাদেশ জাতীয় জনসংখ্যা নীতি গর্ভধারণকালে ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে গর্ভপাতকে বৈধতা দিতে পদক্ষেপ নিয়েছিল।[৩]

১৯৭৯ সাল থেকে বাংলাদেশে গর্ভপাতের বিকল্প হিসাবে মেন্সট্রুয়াল রেগুলেশনের অনুমতি দেয়া হয়েছে কারণ এক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় না। [২][৩] ২০১২ সালে বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন মেডিকেল ব্যবস্থাপনায় গর্ভপাতের জন্য মিফেপ্রিস্টোন এবং মিসোপ্রোস্টল কে বৈধতা দেয়।[৪]

মেন্সট্রুয়াল রেগুলেশন সম্পাদনা

পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৯৭৯ সাল থেকে বাংলাদেশে মেন্সট্রুয়াল রেগুলেশন প্রচলিত, যেখানে একটি রজঃস্রাব না হবার পর জরায়ুর ভিতরের বস্তু বের করে আনা হয় যাতে গর্ভধারণ সম্ভব না হয়।[১] এটি সহজ এবং সস্তা একটি পদ্ধতি। এনেস্থেশিয়া ছাড়াও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।[৫]

২০১৩ সালে বাংলাদেশের ১০ টি ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের ৬৫১ জন নারীর অনুমতি নিয়ে মেন্সট্রুয়াল রেগুলেশনের উপর একটি গবেষণা করা হয়, যারা তাদের মাসিক থেকে প্রায় ৬৩ দিন পিছিয়ে পরেছিল। তাদের ২০০ মিলিগ্রাম মিফেপ্রিস্টোন এবং পরবর্তীতে ৮০০ মিলিগ্রাম মিসোপ্রোস্টল দেয়া হয়। গবেষণায় দেখা যায় যে ৯৩ শতাংশ নারী কোন সার্জারি ছাড়াই জরায়ু খালি করতে সক্ষম হন, ৯২ শতাংশ নারী ওষুধ এবং এই সংক্রান্ত অন্যান্য চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন।[৬]

যদিও মেন্সট্রুয়াল রেগুলেশন সেন্টারে কোন টাকা নেয়া হয় না, তবুও আর্থ সামাজিক বাঁধা এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নারীদের এসব সেন্টারে যাওয়া থেকে বিরত করছে।[৬] ১০ সপ্তাহের অধিক সময়ের গর্ভাবস্থা হলে সেন্টারগুলো সেবার বিনিময় অর্থ নিয়ে থাকে, অনেক নারী এসব সেন্টার সম্পর্কে জানেনই না, আবার অনেক নারী তার স্বামীর বাঁধার কারণে এসমস্ত সেন্টারে যেতে পারেন না। ফলে তারা অবৈধ গর্ভপাতের দিকে ঝুঁকেন।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Fact Sheet: Menstrual Regulation and Induced Abortion in Bangladesh"। Guttmacher Institute। সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৭ 
  2. "Bangladesh"Abortion Policies: A Global Review (DOC)। United Nations Population Division। ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৭ 
  3. "Country Profile – Bangladesh"Asia Safe Abortion Partnership। ১১ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৭ 
  4. Zaidi, Shahida; Begum, Ferdousi; Tank, Jaydeep; Chaudhury, Pushpa; Yasmin, Haleema; Dissanayake, Mangala (৩০ মার্চ ২০১৪)। "Achievements of the FIGO Initiative for the Prevention of Unsafe Abortion and its Consequences in South-Southeast Asia"। International Journal of Gynecology & Obstetrics126ডিওআই:10.1016/j.ijgo.2014.03.015 
  5. Laufe, Leonard E. (অক্টোবর ১৯৭৭)। "The Menstrual Regulation Procedure"। Studies in Family Planning। Population Council। 8 (10): 253–256। জেস্টোর 1966015ডিওআই:10.2307/1966015 
  6. Alam, Anadil; Bracken, Hillary; Johnson, Heidi Bart; Raghavan, Sheila; Islam, Noushin; Winikoff, Beverly; Reichenbach, Laura (জুন ২০১৩)। "Acceptability and Feasibility of Mifepristone-Misoprostol For Menstrual Regulation in Bangladesh"। International Perspectives on Sexual and Reproductive Health। Guttmacher Institute। 39 (2): 79–87। জেস্টোর 41959959 
  7. Islam, Mohammad Amirul; Padmadas, Sabu S.; Kabir, Mohammad (৬–১০ নভেম্বর ২০০৪)। Evaluation of reported induced abortion in Bangladesh: Evidence from the recent DHS। 132nd Annual Meeting of the American Public Health Association। 

টেমপ্লেট:Abortion in Asia