বশীর আল-হেলাল
বশীর আল-হেলাল (৬ জানুয়ারি ১৯৩৬ - ৩১ আগস্ট ২০২১) একজন বাংলাদেশী লেখক, কথা সাহিত্যিক এবং ঔপন্যাসিক।
বশীর আল-হেলাল | |
---|---|
![]() বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক | |
জন্ম | মুর্শিদাবাদ জেলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) | ৬ জানুয়ারি ১৯৩৬
মৃত্যু | ৩১ আগস্ট ২০২১ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮৫)
পেশা | কথাসাহিত্যিক, ইতিহাসকার, অনুবাদক |
ভাষা | বাংলা, উর্দু, ইংরেজি |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ![]() |
উল্লেখযোগ্য রচনা | একাত্তরের গণহত্যা: হামুদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট (অনুবাদ), ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, কালো ইলিশ, শিশিরের দেশে অভিযান, আমাদের বিদ্বৎসমাজ |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, লেখিকা সংঘ পুরস্কার |
সক্রিয় বছর | বাংলা একাডেমি (১৯৬৯-১৯৯৩) |
দাম্পত্যসঙ্গী | ফিরোজা বেগম |
সন্তান | লায়েকা বশীর |
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
বশীর আল-হেলালের জন্ম ৬ জানুয়ারি ১৯৩৬ মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামের মীর পাড়ায় । তালিবপুর মুর্শিদাবাদের একটি বৃহৎ ও বিখ্যাত গ্রাম। তালিবপুরে জন্মেছিলেন প্রখ্যাত পল্লীগীতি শিল্পী আব্দুল আলীম ও ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদ আবুল বরকতসহ শত কবি-সাহিত্যিক, সংগ্রামী ও বিপ্লবী। বাবার কাছে পড়াশুনায় হাতেখড়ি হওয়ার পর তিনি ভর্তি হন তালিবপুর পাঠশালায়। এরপর ভর্তি হন তালিবপুর গ্রামের এইচ.ই হাইস্কুলের প্রাইমারী সেকশনে। সেখানে তিনি ৬ষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ৭ম শ্রেণীতে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। রাজশাহীতে এক বছর পড়াশোনা করার পর সেতাবগঞ্জ হাই স্কুলে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৪ সালে কলকাতা সরকারি কলেজ থেকে আই এ পাশ করেন। এরপর তিনি জলপাইগুড়ির এ.সি কলেজে বাংলায় আনার্সে ভর্তি হন। এই কলেজ থেকে ১৯৫৭ সালে আনার্স পাশ করার পর তিনি কলকাতায় চলে যান। সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বংলায় এম.এ ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বংলায় এম.এ পাশ করেন।
ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা
বশীর আল-হেলাল ১৯৬৯ সালে ফিরোজা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ফিরোজা বেগম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তাদের পরিবারও দেশবিভাগের পর ভারত থেকে পূর্ববাংলায় চলে আসেন। এই দম্পতির একছেলে ও একমেয়ে।
কর্মজীবনসম্পাদনা
এম এ পাশ করার পর বশীর আল-হেলাল কলকাতায় হজ কমিটিতে চাকুরি নেন। তখন মাওলানা আযাদের ছেলে আকরাম খান কলকাতা থেকে একটি পত্রিকা বের করতেন। পত্রিকাটি সপ্তাহে ৩ দিন বের হতো। এটা মুসলমানদের পত্রিকা ছিল। হজ কমিটিতে চাকুরির পাশাপাশি তিনি এই পত্রিকায়ও চাকুরি করতেন। ১৯৬৯ সালে সহ-অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হলেন বাংলা একাডেমিতে। এরপর তিনি বাংলা একাডেমিতে উপাধ্যক্ষ হন। সর্বশেষে তিনি বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছর তিনি বাংলা একাডেমিতে চাকুরি করেছেন। সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে ড. এনামুল হকের অবদান সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন ‘বাংলা একাডেমীর ইতিহাস’ গ্রন্থে।[১]
গ্রন্থাবলিসম্পাদনা
গল্পগ্রন্থসম্পাদনা
- প্রথম কৃষ্ণচূড়া
- আনারসের হাসি. আগামী প্রকাশনী
- বিপরীত মানুষ
- ক্ষুধার দেশের রাজা
- গল্পসমগ্র (প্রথম খণ্ড). মাওলা ব্রাদার্স[২]
- কাণ্ডারী. বিজয় প্রকাশ
উপন্যাসসম্পাদনা
- কালো ইলিশ (১৯৭৯)
- ঘৃতকুমারী (১৯৮৪)
- শেষ পানপত্র (১৯৮৬)
- নূরজাহানদের মধুমাস (১৯৮৮)
- শিশিরের দেশে অভিযান. মাওলা ব্রাদার্স (১৯৯০)[২]
- যে পথে বুলবুলিরা যায়. জোনাকী প্রকাশনী (২০১৪)[৩]
- জীবনের সুখ. অনন্যা (২০০৯)
ইতিহাসগ্রন্থসম্পাদনা
- ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস. বাংলা একাডেমি (১৯৮৫), দ্বিতীয় সংস্করণ আগামী প্রকাশনী থেকে
- বাংলা একাডেমির ইতিহাস. বাংলা একাডেমি
- ভাষা আন্দোলনের সেই মোহনায়. সূচীপত্র
ভাষা ও সাহিত্য সমালোচনাসম্পাদনা
- বাংলাভাষার নানান বিবেচনা. আগামী প্রকাশনী (২০০০)
- আমাদের বিদ্বৎসমাজ. দিব্যপ্রকাশ
- বাংলা গদ্য. দিব্যপ্রকাশ
- আমাদের কবিতা. দিব্যপ্রকাশ
- প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ. বাংলাদেশ শিশু একাডেমি (এপ্রিল ১৯৯৭)
- তাঁদের সৃষ্টির পথ. বাংলা একাডেমি
- কিশোর বাংলা উচ্চারণ মঞ্জুরি. প্যাপিরাস
সম্মাননা ও পদকসম্পাদনা
- আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১)
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৩)
- লেখিকা সংঘ পুরস্কার (২০০২)
- গৌরী ঘোষাল স্মৃতিসম্মান, কলকাতা (২০০২)
- অধ্যাপক আবুল কাসেম পুরস্কার (২০০৪)
- তমদ্দুন মজলিস মাতৃভাষা পদক (২০১৫)[২]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ দৈনিক আমার দেশ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ রিপোর্ট, স্টার অনলাইন (২০২১-০৮-৩১)। "গবেষক ও কথাসাহিত্যিক বশীর আল-হেলাল মারা গেছেন"। The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-৩১।
- ↑ "বশীর আলহেলাল এর বইসমূহ"। রকমারি। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)