ফ্রিজীয় সাহিত্য বলতে নেদারল্যান্ডসের উত্তরের ফ্রিসলান্ড প্রদেশ ও ফ্রিজীয় দ্বীপপুঞ্জে কথ্য ফ্রিজীয় ভাষায় (যা মূলত পশ্চিম ফ্রিজীয় উপভাষা) লেখা রচনাবলিকে বোঝায়।

পূর্ব ফ্রিজীয় এবং উত্তর ফ্রিজীয় ভাষাগুলিতে তেমন কোন সাহিত্য রচিত হয়নি। ১৩শ শতকের আগে ফ্রিজীয় ভাষায় লেখা কোন সাহিত্য পাওয়া যায় না। আবার ১৮শ থেকে ২০শ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এই ভাষায় তেমন কোন সাহিত্যই রচিত হয়নি। প্রাচীন ফ্রিজীয় রচনাগুলির মধ্যে আছে আইনের সমষ্টি, জার্মানীয় গাথা ও কবিতাসমূহ।

নব্য পশ্চিম ফ্রিজীয় সাহিত্যের শুরু হয়েছিল ১৭শ শতকে, Gijsbert Japiks (১৬০৩-১৬৬৬)–এর লেখাগুলির মাধ্যমে। ১৬০৯ সালে রচিত Wouter en Tialle ছিল এ ভাষায় রচিত প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম। ১৫৮১ সালে ফ্রিসলান্ড যখন ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্রের অংশে পরিণত হয়, তখন সাধারণ কৃষকের মুখের ভাষা হিসেবে ফ্রিজীয় ভাষার অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। Japiks-এর নানা সাহিত্যকর্মে (যার মধ্যে ১৬৬৮ সালে প্রকাশিত Friesche Rymlerye "ফ্রিজীয় চরণসমূহ" উল্লেখযোগ্য) ফ্রিজীয় ভাষার বহুমুখিতা ও সমৃদ্ধ বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় এবং এগুলি ফ্রিজীয় ভাষাকে সম্ভাব্য বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করে। তবে ১৯শ শতকের রোমান্টিক পর্বে এসেই একটি জাতীয় সাহিত্য হিসেবে ফ্রিজীয় সাহিত্য বিকশিত হতে শুরু করে। এ সময় Halbertsma ভ্রাতৃবৃন্দ - Eeltsje, Joast, and Tsjalling – "নব্য ফ্রিজীয় সাহিত্য" নামে একটি আন্দোলনের সূচনা করেন। তারা রোমান্টিক ধাঁচের গদ্য ও পদ্যের এক সংগ্রহ রচনা করেন, যার নাম Rimen en Teltsjes (১৮৭১, "ছন্দ ও গল্প")। এগুলির প্রভাবে ১৯শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এক সমৃদ্ধ ফ্রিজীয় লোকসাহিত্যের উত্থান ঘটে। সমসাময়িক সাংস্কৃতিক ভাষাতাত্ত্বিক ও কবি Harmen Sytstra প্রাচীন জার্মানীয় চরণের রীতিতে রচনা করেন ফ্রিজীয়দের বীরত্বময় ইতিহাস। ১৯১৫ সালে Douwe Kalma তরুণ ফ্রিজীয় আন্দোলন শুরু করেন, যার মাধ্যমে তরুণ ফ্রিজীয় লেখকেরা অতীতের ফ্রিজীয় সাহিত্যের সংকীর্ণ প্রাদেশিকতা ও নীতিধর্মিতা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস পান। অবশ্য এর আগেই Simke Kloosterman-এর গীতিকবিতায় ও গল্প-উপন্যাসে এবং Reinder Brolsma-র মনোবৈজ্ঞানিক আখ্যানগুলিতে এই বিচ্ছিন্নমুখিতার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। Kalma নিজে ফ্রিজীয় কবিতা, নাটক, অনুবাদ সাহিত্য, সাহিত্যিক ইতিহাস ও সাহিত্য সমালোচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ফ্রিজীয় সাহিত্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ত্বদের মধ্যে ছিলেন প্রবন্ধকার E.B. Folkertsma এবং কবি Fedde Schurer, Obe Postma ও Douwe Tamminga। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে ফ্রিজীয় সাহিত্য জাতীয়তাবাদ ও বহু ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি থেকে দূরে সরে যায়। এ পর্বে Anne Wadman সমালোচনা, প্রবন্ধ রচনা ও উপন্যাসের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেন। বর্তমান ফ্রিজীয় গদ্য ও পদ্য সাহিত্যে বিষয়বস্তু ও লিখনকৌশলে বৃহত্তর পশ্চিম ইউরোপীয় সমাজের প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়।

আরও দেখুন সম্পাদনা