ফ্রান্সিস ম্যাককিনন

ইংরেজ ক্রিকেটার

ফ্রান্সিস আলেকজান্ডার ম্যাককিনন, ৩৫তম ম্যাককিননের ম্যাককিনন, ডিএল (ইংরেজি: Francis MacKinnon; জন্ম: ৯ এপ্রিল, ১৮৪৮ - মৃত্যু: ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৭) লন্ডনের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৭৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ফ্রান্সিস ম্যাককিনন
আনুমানিক ১৮৭৮ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ফ্রান্সিস ম্যাককিনন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামফ্রান্সিস আলেকজান্ডার ম্যাককিনন
জন্ম(১৮৪৮-০৪-০৯)৯ এপ্রিল ১৮৪৮
প্যাডিংটন, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৭(1947-02-27) (বয়স ৯৮)
ফরেস, স্কটল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ১৭)
২ জানুয়ারি ১৮৭৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৭০কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
১৮৭৫ - ১৮৮৫কেন্ট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৮৮
রানের সংখ্যা ২,৩১০
ব্যাটিং গড় ২.৫০ ১৫.৭১
১০০/৫০ ০/০ ২/৭
সর্বোচ্চ রান ১১৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ৩৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন ফ্রান্সিস ম্যাককিনন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

শৈশবকাল সম্পাদনা

ডব্লিউ জি গ্রেসের তিন মাস পূর্বে ফ্রান্সিস ম্যাককিননের জন্ম হয়। ফোকস্টোনের কাছাকাছি কেন্টের অ্যাক্রাইজ পার্কে জন্মগ্রহণকারী ফ্রান্সিস ম্যাককিনন হ্যারো স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। হ্যারোতে অবস্থানকালে প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ পাননি। তবে, কেমব্রিজে অবস্থানকালে ১৮৭০ সালে ঐতিহাসিক খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। অক্সফোর্ডের শেষ তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করে লাইট ব্লুজকে নাটকীয়ভাবে দুই রানে জয় এনে দিয়েছিলেন।

কেমব্রিজের সেন্ট জোন্স কলেজে ভর্তি হন। ১৮৭১ সালে সেখান থেকেই স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছিলেন তিনি।[১] কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ক্রিকেট খেলায় অংশ নেন ও ব্লুধারী হন। ১৮৭০ সালের সুপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। শৌখিন ক্রিকেটার হিসেবে ১৮৭০ সালে এমসিসি দলে যোগদান করেন। ঐ দলে ১৮৭০ থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৮৭০ সাল থেকে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সিস ম্যাককিননের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮৭৫ সালে কেন্টের পক্ষে প্রথম খেলতে শুরু করেন। কেন্টের পক্ষে দশ বছর খেলেন। ১৮৮৪ সালে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৮ ও ২৯ রান তুলেন। অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে এটিই কাউন্টি দলের একমাত্র জয় ছিল। যুদ্ধকালীন এমসিসি’র সভাপতি স্ট্যানলি ক্রিস্টোফারসন খেলায় ৩/১২, উইকেট-রক্ষক এমসি কেম্প ও অ্যালেক হার্ন খেলায় ৭/৬০ লাভ করে দলটির তিনজন জীবিত খেলোয়াড় ছিলেন। ঐ বছরে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে তিনি ১১৫ ও ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১০২ রান তুলেছিলেন। ৩৩ গড়ে রান তুলেন ও লর্ড হ্যারিসের ৪১ গড়ের পর দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ফ্রান্সিস ম্যাককিনন। ২ জানুয়ারি, ১৮৭৯ তারিখে মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল।

১৮৭৮-৭৯ মৌসুমে লর্ড হ্যারিসের অধিনায়কত্বে ইংরেজ দল অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। বর্ষীয়ান হ্যারোভীয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লুধারী ও টেস্ট ক্রিকেটার ফ্রান্সিস ম্যাককিনন এমসিসি দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য ছিলেন। দলটিতে ইয়র্কশায়ারের জর্জ ইউলিটটম এমেট - এ দুজন পেশাদার ক্রিকেটার থাকলেও শক্তিধর ব্যাটসম্যানের কমতি ছিল না। ঐ সফরে তিনি তার একমাত্র টেস্টে অংশ নেন। ও ৫ রান তুলেন তিনি। দুইবারই ফ্রেড স্পফোর্থের শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। তন্মধ্যে, তার প্রথম আউটটি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম হ্যাট্রিকের দ্বিতীয় শিকার ছিল।[২] পূর্ণাঙ্গ শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে একমাত্র খেলায় অংশ নেন। ঐ টেস্টে তার দল দশ উইকেটে পরাজয়বরণ করেছিল।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৮৭১ থেকে ১৮৯৩ সময়কালে রয়েল ইস্ট কেন্টে ইয়ুম্যানরির ক্যাপ্টেন ছিলেন। ১৮৮৬ সালে সম্মানসূচক মেজর পদে উপনীত হন। এরপর তিনি পদত্যাগ করেন। তাসত্ত্বেও, ১৪ মার্চ, ১৯০০ তারিখে পুনরায় নিযুক্ত হন।[৩] ১৯০০ থেকে ১৯০২ সময়কালে কেন্টের শান্তিবিষয়ক বিচারপতি ও ডেপুটি লেফটেন্যান্টের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯০৩ সালে পিতার মৃত্যুর পর ম্যাককিনন ক্ল্যানের ৩৫তম প্রধান হিসেবে ম্যাককিননের ম্যাককিনন উপাধি ধারণ করেন।

১৮৭০ সালে নির্বাচিত হন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এ খেলার প্রতি তার ভালোবাসা ও প্রবল আগ্রহ বজায় ছিল। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে ইংল্যান্ড দলের খেলাগুলোর প্রতিবেদন লিখতে বসতেন। কাউন্টি ক্রিকেট থেকে চলে আসার বাষট্টি বছর পরও খেলার সাথে চমৎকার সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। ১৮৮৯ সালে কেন্টের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ১৮৮৮ সালে এডমিরাল প্রথম ব্যারন হুডের জ্যেষ্ঠা কন্যা সম্মানীয়া এমিলি হুডের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির এক পুত্র ও এক কন্যা ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় পিতার ক্রিকেট সফরে সন্তানেরা গিয়েছিল। ১৯৩৪ সালে এমিলির দেহাবসান ঘটে।

দেহাবসান সম্পাদনা

৮ নভেম্বর, ২০০৯ তারিখে নিউজিল্যান্ডের এরিক টিন্ডিলের দেহাবসানের পর বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটারের সম্মাননা লাভ করেছিলেন।[৪] ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৭ তারিখে ৯৯ বছর বয়সে স্কটল্যান্ডের ফরেস এলাকায় ফ্রান্সিস ম্যাককিননের দেহাবসান ঘটে। ৯৮ বছর ৩২৪ দিন বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। ঐ সময়ে তিনি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার ছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "MacKinnon, Francis (MKNN865FA)"A Cambridge Alumni Databaseকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় 
  2. "The Demon strikes three times"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৮ 
  3. "নং. 27173"দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ মার্চ ১৯০০। 
  4. Jack Kerr dies at 96, Cricinfo, 29 May 2007.

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী
জেমস লিলিহোয়াইট
বয়োজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার
২৫ অক্টোবর, ১৯২৯ - ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৭
উত্তরসূরী
রেজিনাল্ড অ্যালেন