ফ্যান্টাসি (১৯৩৮-এর ম্যাগাজিন)

(ফ্যান্টাসি (১৯৩৮ ম্যাগাজিন) থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ফ্যান্টাসি একটি ব্রিটিশ পাল্প-কল্পবিজ্ঞান ম্যাগাজিন যা ১৯৩৮ থেকে ১৯৪৯ সালের মধ্যে তিনটি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। সম্পাদক ছিলেন টি. ষ্ট্যানহোপ স্পৃগ; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে, তিনি আরএএফ-এ নিবন্ধিত হন এবং পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। প্রকাশক, জর্জ নিউনেস লিমিটেড উচ্চ সম্মানী প্রদান করত, যার ফলে স্পৃগ ভাল মানের লেখা সংগ্রহ করতে পারতেন, তার মধ্যে ছিল জন উইন্ডহ্যাম, এরিক ফ্রাঙ্ক রাসেল এবং জন রাসেল ফেয়ারনের লেখা গল্প।

দ্বিতীয় সংখ্যার প্রচ্ছদ, শিল্পী সেরগে দ্রিগিন অঙ্কিত

প্রকাশনা ইতিহাস সম্পাদনা

প্রথম মার্কিন কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা, অ্যামাজিং স্টোরিস ১৯২৬ সালে প্রকাশের পরপরই যুক্তরাজ্য তা আমদানি করেছিল, মার্কিন বাজারের অন্যান্য পত্রিকাও প্রকাশের পরই যুক্তরাজ্যে পাওয়া যেত। যাইহোক ১৯৩৪ সালের পর্ব পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে কোন কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশ হয়নি, মূলত পিয়ারসনের স্কুপস প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত, যা ছিল কিশোরদের জন্য ট্যাবলয়েট ফরম্যাটের সাপ্তাহিক। শীঘ্রই হেইডেন ডিমক, স্কুপস-এর সম্পাদক, প্রাপ্তবয়স্কদের উপযোগী আরও পরিশীলিত গল্প পেতে শুরু করলেন; তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের উপযোগী কাহিনীর দিকে পত্রিকার লক্ষ্য পরিবর্তন করলেন কিন্তু মাত্র বিশটি সংখ্যা প্রকাশের পর পিয়ারসন বিক্রি মন্দার জন্য পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়। স্কুপস-এর ব্যর্থতা ব্রিটিশ প্রকাশকদের এই বার্তা দিয়েছিল যে ব্রিটেনে কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা চলবে না।[১]

ব্যর্থতা সত্ত্বেও, মাত্র এক বছরের মধ্যে, নিউনেস, দ্য স্ট্যারন্ড পত্রিকার প্রকাশক,  কল্পবিজ্ঞানসহ চারটি ঘরানার নতুন পাল্প পত্রিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনাটি টি. ষ্ট্যানহোপ স্পৃগের অভিপ্রায়, যিনি একজন নতুন সম্পাদক হিসেবে ১৯৩৪ সালে নিউনেসে যোগদান করেছিলেন। [২] স্পৃগ ওয়াল্টার জিলিংসের সাহায্য কামনা করলেন, যিনি একজন ব্রিটিশ কল্পবিজ্ঞান পড়ুয়া এবং ১৯৩০ সাল থেকে এর ফ্যান সার্কেলে সক্রিয় ছিলেন। পাশাপাশি ভাল গল্পের খোঁজে ছিলেন, এবং এরিক ফ্রাঙ্ক রাসেল ও জন রাসেল ফেয়ারনের কাছ থেকে গল্প আদায় করতে সমর্থ হন। তা সত্ত্বেও অন্য তিন শিরোনাম- এয়ার স্টোরিস, ওয়ার স্টোরিস এবং ওয়েষ্টান স্টোরিস সমূহ ১৯৩৫, ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হলেও, কল্পবিজ্ঞান শিরোনামেরটা প্রকাশ হতে বেশ বিলম্ব হয়েছিল।[২][৩] স্পৃগ পরবর্তীকালে স্মরণ করেন যে নিউনেসকে গল্পেরগুলোর গুরুত্ব উল্লেখ একটি স্মারকলিপি জারি করেছিলেন; যা ছিল "এই বিলম্ব লেখকদের চূড়ান্ত অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দেবে"।  প্রকল্পটি পনেরো মাস পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। [২]

জিলিংস পরবর্তীতে উইলিয়াম হ্যানিম্যানের অধীন কোম্পানি দ্য ওয়ার্ল্ড ওয়ারক, ১৯৩৭ সালে টেলস অব ওয়ান্ডার নামে একটি পাল্প কল্পবিজ্ঞান ম্যাগাজিন প্রকাশে প্রভাবিত হন। এটির সাফল্য নিউনেসকে তাদের আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে অনুপ্রানিত করে, এবং ১৯৩৮ সালে ফ্যান্টাসি প্রকাশিত হয়,[৩] যাতে শুধু বর্ষ উল্লেখ করা থাকত, পরবর্তী সংখ্যা ছয় মাস পর এবং তৃতীয় বা শেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল জুন ১৯৩৯ সালে এবং যথারীতি শুধু বর্ষ উল্লেখ করে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে স্পৃগ একজন বৈমানিক হিসেবে নাম লেখান, যদিও চতুর্থ সংখ্যা প্রস্তুত করা হয়েছিল, যুদ্ধের কারণে কাগজের সংভাগ বা রেশনিং শুরু হলে, নিউনেস ম্যাগাজিনটি বন্ধ করে দেবার সীদ্ধান্ত নেয়। [২]

বিষয়বস্তু ও সমালোচনা সম্পাদনা

প্রথম সংখ্যার প্রধান গল্প ছিল এ. প্রেস্টিজিয়াকোমোর "মিনেস অব দ্য মেটাল ম্যান", যা ১৯৩৩ সালে আরগসি ব্রিটিশ পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পের পুনর্মুদ্রন, কিন্তু বাকি সকল গল্পই ছিল নতুন। জন উইন্ডহ্যাম, এরিক ফ্রাঙ্ক রাসেল এবং জন রাসেল ফেয়ারন সহ অন্যান্য লেখকেরা কল্পবিজ্ঞান জগতের লেখক ছিলেন না, কিন্তু নিউনেসের অন্যান্য ম্যাগাজিনে লেখালেখি করতেন:  জে. ই. গরডন এবং ফ্রান্সিস এইচ সিবসন। পি. ই. ক্লেটরের একটি আন্তঃনক্ষত্র ভ্রমণ নিয়ে একটি নিবন্ধ ছিল, যা স্কোপস পত্রিকায় প্রকাশিত রচনার ধারাবাহিক। নিউনেস লেখার জন্য ভালো মানের সম্মানী প্রদান করতেন, তাই তারা ভালো মানের লেখাও পেতেন, যার অধিকাংশই পরে যুক্তরাষ্ট্রে পুনপ্রকাশ হয়েছিল।[২] তার মধ্যে ছিল উইন্ডহ্যামের "বিয়ন্ড দ্য স্ক্রিন" (কল্পবিজ্ঞান গবেষক ও সমালোচক স্যাম মস্কুইথের মতে; "একটি চিত্তাকর্ষক গল্প");[৪] হ্যলিদি সাদারল্যান্ডের; "ভ্যালি অব ডোম"; এবং এরিক ফ্রাঙ্ক রাসেলের "ভ্যাম্পায়ার ফ্রম দ্য ভয়েড", যা ফান্টাস্টিক ম্যাগাজিনে ১৯৭২ সালে পুনঃপ্রকাশিত হয়েছিল, যা রাসেলের এজেন্ট নতুন গল্প হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। তখন সম্পাদক টেড হোয়াইট দাবী জানালেন এটি ত্রিশ বছরের পুরনো গল্প, তিনি তখন এটি অস্বীকার করেন, পরবর্তীতে স্বীকার করেন এটি একটি পুনঃপ্রকাশ: কল্পবিজ্ঞান গবেষক মাইক এসলে রাসেলের এই গল্পের ব্যাপারে মন্তব্য করে বলেন, "সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ"।[২]

ফ্যান্টাসির প্রধান চিত্রশিল্পী ছিলেন সেরগে দ্রিগিন, জন্মসুত্রে একজন রুশ শিল্পী, যিনি পিয়ারসনে কাজ করতেন এবং স্কুপ-এর সকল প্রচ্ছদ তৈরি করতেনl দ্রিগিন ভেতরের অলংকরনসহ তিনটি প্রচ্ছদই করেছিলেন।[৫] যদিও; তার কাজ "সাধারন" এবং "মাঝারি মানের" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে,[৫] কল্পবিজ্ঞান আর্টের গবেষক রবার্ট অয়েনবারগ তার দ্বিতীয় সংখ্যার প্রচ্ছদের প্রশংসা করেন, জি. আর ম্যালচের "উইংড টেরর" গল্পের অলংকরনকে বলা হয়ে থাকে "যথাযথ এবং তার করা সেরা কাজের অন্যতম"।[৫]

নির্ঘণ্ট বিবরন সম্পাদনা

ফ্যান্টাসি পাল্প বিন্যাসে প্রকাশিত হত, ১২৮ পৃষ্ঠা, এবং মূল্য ছিল ১/-। এর সকল সংখ্যাই সম্পাদনা করেছিলেন টি. ষ্ট্যানহোপ স্পৃগ এবং প্রকাশক ছিলেন জর্জ নিউনেস। ম্যাগাজিনটির কোন ভলিউম সংখ্যা উল্লেখ ছিল না; প্রতিটি সংখ্যায় শুধুমাত্র বর্ষ উল্লেখ থাকতো।

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. Ashley, Time Machines, pp. 127–131.
  2. Ashley (1985a), pp. 254–256.
  3. Harbottle & Holland (1992), p. 15–17.
  4. Moskowitz, Sam (March 1986).
  5. Weinberg (1988), pp. 97−98.

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  • Ashley, Mike (2000). The Time Machines:The Story of the Science-Fiction Pulp Magazines from the beginning to 1950. Liverpool: Liverpool University Press. ISBN 0-85323-865-0. 
  • Ashley, Mike (1985a). "Fantasy (1938−1939)". In Tymn, Marshall B.; Ashley, Mike. Science Fiction, Fantasy, and Weird Fiction Magazines. Westport CT: Greenwood Press. pp. 254–256. ISBN 0-313-21221-X. 
  • Harbottle, Phil; Holland, Stephen (1992). Vultures of the Void: A History of British Science Fiction Publishing, 1946–1956. San Bernardino CA: Borgo Press. ISBN 0-89370-415-6. 
  • Weinberg, Robert (1988). "Drigin, Serge R.". In Weinberg, Robert. A Biographical Dictionary of Science Fiction and Fantasy Artists. Westport CT: Greenwood Press. pp. 97–98. ISBN 0-313-24349-2.